somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পথ চলতে পথের বাঁকে

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পথ চলতে পথের বাঁকে
- যাযাবর জীবন

এইতো সেদিন
অনেক দিন পর খুব হঠাৎ
কেন জানি বাইরে লাঞ্চ করতে ইচ্ছে হলো
তুই তো খুব ভালো করেই জানিস
একা খাওয়ার অভ্যাস নেই
তাই সাধারণত: লাঞ্চ করা হয় না
তবু সেদিন কি যে হলো?
সকালে নাস্তা করিনি বলেই বোধহয়
ভর দুপুরে একটু পেটে টান পড়লো
কেন জানি তোর খুব পরিচিত সেই
রেস্টুরেন্টটার কথা মনে পড়ে গেলো;
অনেকটা পথ আমার জন্য, হাঁটতে হয় আজকাল
তোর মত লাটসাহেবা তো আর নই
যে কালো জীপে, টিনটেড কালো গ্লাসে মুখ ঢেকে চলব!
অগত্যা পায়ে হেঁটেই গন্তব্য পথ যাত্রা
একটু সময় লাগলো
পৌঁছে গেলাম পথ হাঁটায়
পথ যতই লম্বা হোক না কেন
কোন এক সময় তো পথ ফুঁড়োয়।

রেস্টুরেন্টে ঢুকেই খুব আকস্মিক
ধাক্কা খেলাম যেন হাজার ভোল্টের ইলেকট্রিক;

কোনার টেবিলে কে বসে?
যদিও পেছন থেকে তবুও একটুও অসুবিধা হয় নি চিনতে;
আরে বোকা যতই চুল উল্টে ভোল পাল্টাস না কেন
তোকে সামনে কিংবা পেছন থেকে
এক পলকের একটু দেখাই আমার জন্য যথেষ্ট।

অনেক অনেক দিন পর দেখলাম তোকে
খুব হঠাৎ করেই
একদম অনিচ্ছাকৃত অজান্তে;
আমি দেখতে চাই নি
কেন যেনও চোখটা আটকে গেলো
আঠার মত
পলক ফেলতে কষ্ট হচ্ছিল খুবই
তবু খুব সহসাই বোধোদয় হলো;
ঘুরে দাঁড়ালাম চট করে পেছন ফিরে
তোর চোখ যাতে না পড়ে আমার তরে;
হয়ত ইতস্তত করবি
হয়তোবা একটু অস্বস্তি
কি দরকার তোকে বিব্রত করে?
খুব অন্তরঙ্গ ঘনিষ্ঠ বসে ছিলি তোরা দুজনে
হয়তো অর্ডার দিয়ে লাঞ্চের অপেক্ষায়
কিংবা লাঞ্চের সমাপ্তিতে একটু সময় পার করায়
হাতে হাত রেখে
যেমনটি করতাম আমরা দুজনে মিলে
বাইরে কোথাও খেতে গেলে।

তোর হাতটাতেই আড়চোখ চলে গেল
কেন জানি
তোর হাত নেই তোর কাছে
ওটা বন্দী হয়ে আছে তোর সাথীর হাতের মুঠোয়;
কেন জানি খুব বড় একটা ধাক্কা লেগেছিল বুকে
খুব সহসাই ঝটকা ইলেকট্রিক ভোল্ট, হঠাৎ করে
হয়তো পুরনো কথা মনে পড়ে,
আমার হাতটাও কেন জানি
বড্ড বেয়ারা হয়ে উঠলো খুব সহসাই
কখন যে পাশের টেবিলে রাখা গ্লাসটা ভেঙ্গে গেল
চোখের নিমিষে মুঠোর চাপে;
এই যাহ্‌, এ কি হলো?
ভাগ্যিস তুই পেছন ফিরে বসেছিস
কিংবা মত্ত দুজনে দুজনার মাঝে
খেয়াল করিস নি, বেঁচে গেলাম বাবা;
আমার আসলে কিছু মনে করার নেই
ঝটকা লাগারও কিছু নেই
আমিও তো ঠিক এমনই করতাম
কোন এক সময়
তোর পাশে আমি এলে;
হাত কেটে রক্ত ঝরছে, ওয়েটার দৌড়ে এলো
সাদা ন্যাপকিন হাতে;
বুকের ক্ষরণেও কি রক্ত ঝরে?
নাহ আজ আর লাঞ্চটা হলো না এখানে
থাক অন্য কোনো দিন;
ওয়েটারের পকেটে কটি টাকা বকশিশ গুঁজে দিয়ে
উল্টো পথে হাঁটা ধরলাম রাস্তার দিকে।

আমি দিবাস্বপ্ন দেখতে চাই নি
তবু তোকে দেখে ফেলেছিলাম
খুব সহসাই কোন এক বিষণ্ণ বিকেল বেলায়
লাল শারীতে বড্ড মানিয়েছিল তোকে
এখনো চোখে লেগে আছে;
সে দিন থেকে কেন যেন বিকেলটাই বদলে গেলো
আমার কাছে, খুব সংগোপনে;
এখন আর বিকেল দেখি না
দুপুর গড়িয়ে বিকেল আসে
বিকেলের ম্লান আলো সন্ধ্যেয় গড়ায়
গড়াক; প্রকৃতির নিয়মে;
আমার কি এসে যায়?
হাত বাড়িয়ে এখন আর ছোঁয় না
আমার হাত অন্য কারো হাত
আমি চলি আমার নিয়মে;
তুই হাতে নিয়ে বসে থাক নতুন প্রিয়ার হাত
তুই খেলিস প্রেম খেলা তোর নিয়মে;
ইচ্ছে নাকি স্বেচ্ছাচারিতা
আমি জানি না
জিজ্ঞাসা করি নি কখনো
জানতে ইচ্ছে হয় না।

এ জীবনে দেখতে চাই নি তোকে আর
তবু দেখতেই হলো
প্রকৃতির খেলা হয়তো
অথবা ভাগ্যের নির্মম পরিহাস নয়তো;
হয়, এটা প্রায়শই: হয়
আমার সাথে হতেই হয়;
ন-মানুষের ভাগ্যে অনেক বড় একটা "না" ছাপ
মেরে দিয়েছেন ওপরওয়ালা
পরিত্রাণ? এ জন্মে হবে না বোধহয়।

তোকে দেখতে চাই না কখনই আর
তবু আমার চাওয়া আর না চাওয়ায়
যাবে আসবে কার?
তোর; না কি ঐ নিষ্ঠুর ওপরওয়ালার?
এভাবেই না চাইতেও দেখা হয়ে যাবে
আবার হয়তো
কোন এক রেস্টুরেন্টে কিংবা কোন জানা আর অজানা
রাস্তার ধাঁরে
পথ চলতে পথের বাঁকে, বারে বারে।

এখন আর এ নিয়ে ভাবি না খুব বেশী
নিয়তির খেলা খেলছে নিয়তি
আমি, তুই, আমরা খেলার পুতুল
শুধু চেয়ে চেয়ে দেখি;
খুব মাঝে মাঝে দেখা হয়ে গেলে
তোর সাথে
এখনো কেন জানি ঝাপসা হয়ে ওঠে
চশমার কাঁচ দুটো, অন্ধকার হয়ে
ও কিছু নয় রে, চোখের জলীয় বাষ্প
সময়ের সাথে সাথে উবে যায় হাওয়ায়
ঠিক তোর মত।

তোকে এভাবে দেখতে চাই নি
তবু দেখতে হলো
তোকে নিয়ে আর কিছু লিখতে চাই নি
তবু কলমটা হাবিজাবি এঁকে গেল;
আমি শুধু একটু ঘুমাতে চেয়েছিলেম
গভীর শান্তির ঘুম
চেতনার জগত থেকে অচেতন জগতের গভীর আত্ম-ধ্যানে
যেখানে নির্জনতা কথা কইবে নীরবতার সাথে
মাটির অনেক গভীর তলদেশে
একেবারে মাটি হয়ে, মাটিতে মিশে।


২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×