জাতীয় তথ্যভাণ্ডার এবং মাঠপর্যায় থেকে আসা ভোটারের সংখ্যায় ব্যবধান প্রায় সাড়ে চার লাখ। অবশ্য নির্বাচন কমিশন নিজেদের সংখ্যাকেই সঠিক দাবি করে বলছে, তথ্যভাণ্ডার নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো অবকাশ নেই।
Published : 25 Sep 2013, 07:52 PM
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, হালনাগাদের পর দেশের মোট ভোটার ৯ কোটি ১৯ লাখ ৪৮ হাজার ২২৪ জন। অন্যদিকে মাঠপর্যায় থেকে পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনে মোট ভোটার ৯ কোটি ১৪ লাখ ৯৩ হাজার ৩১৯ জন।
এ হিসেবে একই সংস্থার দুই স্তরের ভোটারের সংখ্যায় ব্যবধান চার লাখ ৫৪ হাজার ৯০৫।
গরমিলের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ সাদিক বলেন, “ভোটার সংখ্যা নিয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের জাতীয় তথ্যভাণ্ডারের তথ্যই সঠিক। জেলা বা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্য ভুল। কোনোভাবেই তথ্যভাণ্ডার নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই।”
তথ্যভাণ্ডারের মোট ভোটার সংখ্যার সঙ্গে মাঠের তথ্যের গরমিলের বিষয়টিও অবগত নন বলেও জানান তিনি।
সচিব জানান, এর আগেও গত ফেব্রুয়ারিতে ইসি সচিবালয়ের একজন উপসচিব দেশের মোট ভোটারের সংখ্যার চেয়ে ৫ লাখ বেশি দেখিয়ে তথ্য দিয়েছিলেন। সে কারণে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল।
ইসি সচিবালয়কে মঙ্গলবার পর্যন্ত তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের তথ্য দিয়েছে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ। সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত সারসংক্ষেপে বলা হয়, সারাদেশের ৯ কোটির বেশি ভোটারের মধ্যে পুরুষ ৪ কোটি ৬১ লাখ ১১ হাজার ৫৪৭ জন ও মহিলা ৪ কোটি ৫৮ লাখ ৩৬ হাজার ৬৭৭ জন।
২০১২-১৩ সালে হালনাগাদের সময় ৭০ লাখ ১৭ হাজার ৫২১ জন নতুন ভোটার হয়েছে। এসময় ৭ লাখ ৪১ হাজার ৬৯ জন মৃত ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। ভোটার স্থানান্তর হয় ৪ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৪ জন।
দশম সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে ভোটার সংখ্যা অনুপাতে ভোটকেন্দ্রের তালিকা চায় ইসি সচিবালয়।
ইতোমধ্যে ইসির মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা ৩০০ আসনের ৩৬ হাজার ৯৫৪টি ভোটকেন্দ্রের তথ্য পাঠিয়েছে।
ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানান, মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাঠানো তথ্য একীভূত করে ৩০০ আসনে ৯ কোটি ১৪ লাখ ৯৩ হাজার ৩১৯ জন ভোটার সংখ্যা হয়েছে। কিন্তু এতে পুরুষ ৪ কোটি ৬১ লাখ ৫৬ হাজার ৯৯০ জন ও নারী ৪ কোটি ৫৮ লাখ ৬১ হাজার ৭৮০ জন ভোটার দেখানো হয়েছে।
পুরুষ এবং নারী ভোটারের সংখ্যা যোগ করলে দাঁড়ায় ৯ কোটি ২০ লাখ ১৮ হাজার ৭৭০ জন।
এর আগে গত ৩ জুলাই ৩০০ সংসদীয় আসনের পুনর্বিন্যস্ত সংসদীয় আসনের সীমানা গেজেট আকারে প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। নতুন সীমানার নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক ভোটার সংখ্যা ইসি সচিবালয়কে দিয়েছে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ।
এতে ৩০০ সংসদীয় আসনে ৯ কোটি ১৯ লাখ ৪৩ হাজার ৬৮৯ জন ভোটার সংখ্যা রয়েছে।
ইসি সচিবালয়ের উপসচিব (নির্বাচন পরিচালনা) মিহির সারওয়ার মোর্শেদ জানান, ভোটার হালনাগাদ একটি চলমান প্রক্রিয়া। মৃতদের বাদ দিয়ে স্থানান্তর ও ভোটারযোগ্যরা অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। কোনোভাবেই ভোটার সংখ্যা নিয়ে বড় পরিসরের তারতম্য হওয়ার সুযোগ নেই।
মাঠপর্যায়ের তথ্য পর্যালোচনার বিষয়ে এ কর্মকর্তা জানান, “নতুন সীমানা হয়েছে কোথাও কোথাও। তথ্যভাণ্ডারের তথ্যই চূড়ান্ত ও সঠিক। জেলা থেকে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাঠানো তথ্যগুলো পর্যায়ক্রমে আসনভিত্তিক যাচাই-বাছাই করতে হবে। কোনো ভুল রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।”