1st August to 30th August
১ আগস্ট, ২০১৩:
১) জামায়াতের সাথে 'নিষিদ্ধ' শব্দটার পরিচয় অনেক পুরাণো। ১৯৫৯, ১৯৬৪ তে তাদের জন্মভূমি পাকিস্তানেই নিষিদ্ধ হয়েছিলো। ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে। এবার কেবল নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। রাজনীতিও নিষিদ্ধও হয়ে যেতে পারে। তবে এসব তো জামায়াতের কাছে নতুন কিছু না, না-কি?
২) খুব উপযুক্ত সময়ে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট। এর চেয়ে পারফেক্ট টাইম সম্ভবত: পাওয়া যেত না। জামায়াত এখন মাদ্রাসা ছাত্র জড় করে বড়সড় আন্দোলন, জ্বালাও-পোড়াও-ভাঙো আন্দোলনে যেতে পারবে না সহজে। হরতালের কারণে ঈদের কেনাকাটা ব্যাহত হলে ধর্ম বেঁচে কেনা শেষ রেপুটেশনটুকুও যাবে। যদিও জামায়াত যে কোনো কিছু করতে পারে। পাগলা কুত্তা কোনো প্রানীকে কামড়াতে না পারলে ঘুরে নিজের পাছায় কামড় বসায়। যখন দ্যাখে নিজেই ব্যথা পাচ্ছে তখন গিয়ে গাছের গুঁড়িতে কামড় বসায়।
৩) অনেকেই নিবন্ধন বাতিল নিয়ে খুশি না। তাদের মূলকথা, জামাত অন্যদলের ছায়ায় আবার ফিরে আসবে। চূড়ান্ত নিষিদ্ধ হওয়ার আগে পর্যন্ত কিচ্ছু হবে না। কিছু না হোক, অন্য দলের আড়ালে নির্বাচন করতে আসলেও জামাতের মূলনীতি ভাঙতে হবে। জামাতের মূলনীতিতে নারীরা নেতা হতে পারবে না, অন্য ধর্মের কেউ নেতা হতে পারবে না; এসব থেকে বের হতে হবে। দাড়িপাল্লা মার্কাটাও আর দেখতে হবে না। জামাতি ট্যাগ নিয়ে গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা ব্যবহার করতে পারবে না। এটাও কম বিজয় না। মনে করিয়ে দেই, গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম দাবীই ছিলো জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা। বহুদিন সুর করে শ্লোগান দিয়েছি, 'জামাত-শিবিরের রাজনীতি, আইন করে নিষিদ্ধ করো।'
৪) জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করা হতে পারে, এটা কয়েক মাস আগেও চিন্তার বাহিরে ছিলো। গোলাম আজমের রায়ের পরে তো দুরাশায় পরিনত হয়েছিলো। সরকারকে এটার জন্য কৃতিত্ব না দেওয়াটা অন্যায় হবে।
৫) জামাত সাথে থাকার কারণে বিএনপি সমর্থক অনেকেই চক্ষুলজ্জার খাতিরে অনলাইনে কিছু লিখতো না। সরাসরি যেহেতু জামাত নির্বাচন করছে না তাই এবার সে রাস্তাটা খানিকটা পরিষ্কার হলো।
৬) বাই দ্যা ওয়ে, এই স্ট্যাটাসটা বিরিয়ানি খেতে খেতে লিখছি। পরিবেশ পরিস্থিতি খাবারের স্বাদ পরিবর্তন করে দেয়। ক্ষুধা পেটে পোড়া রুটি লাগে পূর্ণ চন্দ্রের মত। পরিস্থিতি এমন, আজকের বিরিয়ানি খেতে লাগছে অমৃতের মত।
৭) Feeling Euphoric...
৩ আগস্ট, ২০১৩:
কেবল মা ফোন করে জানালো ছোট ভাই এ প্লাস পেয়েছে। আমার ছোট্ট পরিবারের এই সুখের দিনে ওকে একটু জড়িয়ে ধরার মত, 'কী খাবি চল' বলার মত কেউ নেই এই মুহূর্তে। বাপি রোগী দেখে বেড়াচ্ছে একখানে, আমি আছি আরেকখানে। মায়ের মুখের তৃপ্তির হাসিটাও দেখা হলো না। মা নিজেই রেজাল্টটা পেয়েছে অফিসে বসে! ওহ্ִ, মেডিকেল প্রফেশনস, ইউ নেভার মেক আওয়ার হ্যাপিনেস ফুলফিলড!
১) নিউজিল্যান্ডের জেমস ফ্রাঙ্কলিন, ইংল্যান্ডের রবি বোপারা, অস্ট্রেলিয়ার ক্যামেরন হোয়াইট এবং স্টিভেন স্মিথ; এই প্লেয়ারগুলোর মাঝে একটা মিল আছে। একটা সময় পর্যন্ত মনে হয়েছে দলে এদের রোল কী সেটা এরা তো জানেই না, টিম ম্যানেজমেন্টও ঠিক বুঝে ওঠেনি। একটা সময় এসে এদের প্রত্যেকেই ব্যাটিংয়ের দিকে ঝুকেছে। এবং শেষমেশ সেখানেও পুরোপুরি সফল না। এতকিছু টেনে আনার কারণ স্টিভেন স্মিথকে নিয়ে হঠাৎ মুগ্ধতা। ক্যারিয়ারের শুরুতে লম্বা টার্ণে বল করতে পারায় ওকে শেন ওয়ার্ণ-ম্যাকগিলদের উত্তরসুরি ভাবা হতো। টুকটাক ব্যাটিং পারায় অস্ট্রেলিয়া দলে যুগপরিবর্তনের সময়টাতে 'মিনি অলরাউন্ডার' রোলে খেলানো হলো বেশ কিছুদিন। এবং একটা সময়ে এসে স্টিভেন স্মিথের পরিচয় হয়ে গেলো স্লগার, গায়ে সেটে গেলো 'টি-টুয়েন্টি স্পেশালিস্ট' তকমা!
অস্ট্রেলিয়া এমনটা করেছে ক্যামেরন হোয়াইটের ক্ষেত্রেও। নিউজিল্যান্ড ফ্রাঙ্কলিনের ক্ষেত্রে, ইংল্যান্ড বোপারার ক্ষেত্রে। অথচ প্রত্যেকেই দারুন স্কিলড ব্যাটসম্যান। দিলশানই শুধু এই একই ধরণের পরিস্থিতি থেকে বের হতে পেরেছে। অন্তত ক্যারিয়ার রেকর্ড সেটাই বলবে। অস্ট্রেলিয়ার প্লেয়ারদের অভিষেকের ট্রেডিশন অনুযায়ী স্টিভেন স্মিথ এখনও ছেলে- ছোকড়া গোছের, মাত্র ২৪। এবং এই অল্প বয়সেই ও ফায়নালি ওর রোলটা বুঝতে পেরেছে। ব্যাটিংকেই বেছে নিয়েছে। অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য নামী দামী ব্যাটসম্যানদের তুলনায় স্মিথকে যথেষ্ট স্কিলড লেগেছে। অন্যান্য ব্যাটসম্যানরা যখন খাবি খাচ্ছে তখন অ্যান্ডারসন-ব্রড-সোয়ানদের খেলতে ও বরং তুলনায় কম বেগ পেয়েছে। গত ইনিংসটা তো স্রেফ দৃষ্টিনন্দন ছিলো।
২) মাইকেল ক্লার্ক ক্যাপ্টেন হিশেবে কতটুকু ভালো সে বিবেচনায় না গিয়েও বলে দেওয়া যায় বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সাহসী ক্যাপ্টেনের নাম মাইকেল ক্লার্ক। অ্যাশেজের মত একটা সিরিজে, যখন ২-০ তে পিছিয়ে, আগের টেস্টে স্রেফ উড়ে গেছে ইংল্যান্ডের কাছে, সমর্থকদের কাছে এই টেস্টটা ড্র করাও বড় ব্যাপার(অন্তত সেটা ধবল ধোলাইয়ের হাত থেকে বাঁচাতে পারে), ক্রিজে দু'জন হাফ সেঞ্চুরী করে অপরাজিত, রান উঠছে ওভারপ্রতি প্রায় ছয় করে, আর ওভার পনেরো ব্যাটিং করে বাকি পনেরো ওভার ছেড়ে দিলেও ৬০০ প্লাস রানের সাইকোলজিক্যাল বেনিফিটটা পায়; এই অবস্থায় কি-না ও জেতার সম্ভাবনা ধরে রাখতে ডিক্লেয়ার করে দেওয়ার মত সাহস দেখালো! টেস্টের নাম-তারিখ ধরে মনে নেই, তবে আগেও ক্লার্ককে একাধিকবার এমন রিস্ক নিতে দেখেছি। ক্যাপ্টেন শুড বি হ্যাভ দ্যাট বিলিভ অ্যান্ড কারেজ।
৩) অ্যালিস্টার কুক যতই প্রলিফিক হোক, ইংল্যান্ডের এই দলটাতে কেভিন পিটারসেন আমার সবচেয়ে প্রিয়। ক্রিজে গেঁথে পড়ে থাকলাম। পেসারদের বাউন্স ডাক করে, বডিলাইন বল কোনো রকমে ঠেকিয়ে একটা স্কোর দাঁড় করালাম; এটা আমার জন্যে দৃষ্টি সুখকর না। কেপিকে একটা শর্ট-পিচে পরাস্ত করুক, পরেরটাই ও শিওর পুল করবে। লাভ দ্যাট টাইপ অফ অ্যাটিচিউড। দেয়ার নট মেনি সাচ ডোমিনেটিভ ব্যাটসম্যান পারসিস্টস।
৪) শুধুমাত্র অ্যাশেজের স্বার্থে হলেও এই টেস্ট অস্ট্রেলিয়ার জেতা দরকার। মিনিমাম ড্র। তা না হলে আর দুই দিনের মাঝেই এবারের অ্যাশেজের সমাপ্তি ঘটবে। যে যাকেই সমর্থন করুক অ্যাশেজের মৃত্যু চাওয়াটা সমীচীন হবে না।
৫) লাভ উইথ হোয়াইট কস্টিউম, রেড বলস।
৪ আগস্ট, ২০১৩:
১) স্কুল-কলেজ-মেডিকেল দিয়ে মোটামুটি হাজার খানেক সহপাঠীর সাথে ক্লাস করেছি। ফেসবুক বন্ধু তালিকা দুই হাজারের দিকে দৌড়াচ্ছে। সৌভাগ্য, এতগুলো বন্ধু হয়নি। এতগুলো নামই মনে রাখতে পারতাম না। শেষে কে আবার ডাল-ভাত-তরকারির সাথে মাইন্ডও খেয়ে বসে থাকতো, কে জানে! ওহ্ִ, মাঝখানে একটা ফোঁড়ন কেটে নেই, ছোটকাল থেকে এই কমন উপদেশটা শুনে এসেছি, 'মানুষের মত মানুষ হতে হবে' কিন্তু। বহুদিন পর্যন্ত 'মানুষের মত মানুষ' কী ঠিক বুঝে উঠতে পারতাম না। তবে 'বন্ধুর মত বন্ধু' কী সেটা বোঝার ক্ষমতাটা নিয়ে জন্মেছি। এবং কয়েকটা ভোঁদড়-ভোঁদড়ির সাথে ফেবিকলের মত আটকে গেছি এ জীবদ্দশাতে। সংখ্যাটাকে সুনীলের একটা উপন্যাসের নাম দিয়ে সবচেয়ে সুন্দর প্রকাশ করতে পারি; "একা এবং কয়েকজন"। 'একা' শব্দটা টানার একটা ব্যাখ্যা আছে আমার কাছে। দিনশেষে নিজের থেকে প্রিয় বন্ধু আর কেউ নয়। দার্শনিক চিন্তাটা বাদ দিয়ে বাকিদের কথা বলি, এই যেমন ধরেন, এই স্ট্যাটাসে লিখে দিলাম, আমার বৌ তো আমারই সাথে তোদের পিয়া, মৌসুমী, বর্ষারাও আমার। ড্যাম শিওর, ওরা এই স্ট্যাটাস পড়বে এবং ত্যানা পেঁচাতেও পারে মাগার কেউ ডাল-ভাতের সাথে মাইন্ড খাবে না! তবে সমস্যা হলো, মেয়ে বন্ধুদ্বয়ের প্রেমিকের নামটা মেনশন করা গেলো না। আফটার অল, আমি উসাইন বোল্টের ভক্ত, টাইসন গে'র না!
২) ক্রিকেটে আজ অনেক কিছু ঘটে গেছে। এক, সকালে ঘুম ভেঙে ফেসবুকে আসতেই দেখি সাকিব টি-টুয়েন্টিতে সেরা বোলিং ফিগারের রেকর্ড করে ফেলেছে। তড়িঘড়ি করে ইউটিউবে দেখলাম। ৪ ওভার, ১ মেডেন, ৬ রানে ৬ উইকেট! ক্রিকইনফোতে খোঁজ নিলাম সাথে সাথেই। মনটাই ভেঙে গেলো। সেরা বোলিং রেকর্ডটা কাউন্টি দল সমারসেটের অরুল সুপ্পিয়াহয়ের। গ্লামারগনের বিপক্ষে ৩.২ ওভারে ৫ রানে ৬ উইকেট। ১ টা মাত্র রানের ব্যবধান! ব্যাটে-বলে সাকিবের সময়টা ভালো যাচ্ছিলো না। ওর ক্যালিবার হিশেবে আনলে কাউন্টিতে 'প্রায়' ব্যর্থ হয়েছে। সিপিএলে আজকের দুর্দান্ত বোলিং পারফরমেন্সটা ধরেও ৩ ম্যাচে মাত্র ৭ রান এবং ৭ উইকেট। সো হোয়্যাট, টেক এ বো আওয়ার সুপারম্যান।
দুই, দুপুরে ক্রিকইনফোতে দেখলাম, ওয়ানডে বোলিং র্যাংকিংয়ের শীর্ষ বোলারের নাম রবীন্দ্র জাদেজা! ক্রিকেট বিশ্বে সাম্প্রতিক সময়ে এত ট্রল আর কেউকে নিয়ে হয়েছে বলে জানা নেই। স্যার ডন ব্রাডম্যান আর স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডসের পর ওই সম্ভবত বিশেষ কারণে 'স্যার' উপাধিটা বাগিয়ে নিয়েছে। এবং সেই জাদেজা আজ শীর্ষে! স্রেফ উপাখ্যান। গত এক বছরে সারা বিশ্বের তাবৎ বোলারকে টপকে সবচেয়ে বেশি উইকেট ওর। ইকোনমি রেটও ৪ এর নিচে!
তিন, ইংল্যান্ডে যা হচ্ছে তা কতটুকু ক্রিকেটের চেতনার সাথে যায়, আমার জানা নেই। এই তৃতীয় টেস্ট পর্যন্ত প্রায় সবগুলো ভুল ডিসিশনের শিকার হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এবং আজ যা হলো সেটা তো অবিশ্বাস্য। ব্যাড লাইটে ব্যাটসম্যানের খেলতে অসুবিধা না হলে খেলা কন্টিনিউ হওয়ার কথা। ব্যাটসম্যান ক্লার্ক খেলতে রাজি, আম্পায়ার আর ফিল্ডিং দল রাজি না। হোয়্যাট দ্যা..……!
৩) খুলনা যাচ্ছি। অনেকদিন পর। রাত ৯ টায় বাস ছেড়েছে ময়মনসিংহ থেকে। সব ঠিক থাকলে সকাল ৯ টার মাঝে শহরতলিতে ঢুকে যাবো। প্রিয় শহর। বুক ভরে দু'টো শ্বাস নেবো। দরজা খুলতেই মা কে জড়িয়ে ধরবো। কোনোকিছুর সাথেই বাড়ি ফেরার আনন্দের তুলনা হয়না। জন ডেনভার, জোরসে গাও:
'কান্ট্রি রোড, টেক মি হোম
টু দ্যা প্লেস, আই বিলং'
৬ আগস্ট, ২০১৩:
বাড়ি আসার পর থেকে আর ফেসবুকে নেই, আছি মা-বাপির বুকে।
৮ আগস্ট, ২০১৩:
১) সব ভূঁড়িওয়ালা, আধবুড়ো অথবা গাজাখোর সদৃশ পুরুষের সাথে একজন করে অসম্ভব সুন্দরী মায়াবতী থাকে। আর সব সুদর্শন পুরুষের সাথে একজন করে কোঁকড়া চুলের পেট মোটা মহিলা। প্রকৃতি ইদানিং বড় বেশি অসামঞ্জস্য প্রিয়। সে যাই হোক, ঈদের মার্কেটে গেলে ক্রমাগত এই দৃশ্যগুলো চোখের সামনে চলে আসে এবং বড় ধরণের সহ্য ক্ষমতার পরীক্ষা দিতে হয়।
২) ঈদের চাঁদের একটা মাহাত্ম্য আছে। এই চাঁদ এতই সরু যে চাইলেই এই চাঁদে সাঈদী-শুয়োর বা কুত্তার ছবি জুড়ে দিয়ে অপবিত্র করা যাবে না।
৩) সেই সন্ধ্যা থেকে একটার পর একটা পটকার আওয়াজ কানে আসছে। মধুর আওয়াজ। চাঁদ দেখার আগেই এই আওয়াজ বুঝিয়ে দেয় আগামীকাল ঈদ। পাকিস্তানের কোনো তরুণের কানেও শব্দ এসেছে আজ। কিন্তু এ শব্দ ছিলো কোটেয়ায় মসজিদের পাশে জানাজায় আত্মঘাতি বোমা হামলার শব্দ। পাকিস্তানের তরুণেরা ঈদের খবর পেলো আত্মঘাতি বোমা হামলায় ২৪ জনের মৃত্যুর মাধ্যমে। বাংলাদেশে যেনো কখনোই এই অবস্থা দেখতে না হয়।
৪) ট্যাগিং শুরু হয়েছে। সবার ট্যাগিংয়ে খুব আপত্তি। আমার একবিন্দু আপত্তি নেই। রিপিট অ্যাগেইন, একটুও আপত্তি নেই। একটা ছবিতে মাত্র কয়েকজনকে ট্যাগ করা যায়। এত বন্ধু থাকতে আপনি আমার কথা স্মরণ করে ট্যাগ করছেন; এতে বরং আমি কৃতজ্ঞ, আনন্দিত। আমাকে যত্ত খুশ ট্যাগ করতে পারেন। হ্যাপি ঈদ, হ্যাপি ট্যাগিং।
৫) ঈদ মোবারক। ফেসবুকের সকল বন্ধু-শত্রু, স্যার-ম্যাডাম, সিনিয়র-জুনিয়র; সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা।
৯ আগস্ট, ২০১৩:
১) শিরোনামহীনের সেলফ টাইটেলড অ্যালবাম 'শিরোনামহীন', জলের গানের 'অতল জলের গান', কৃষ্ণকলির 'বনফুল' আর প্রিন্স মাহমুদের 'নিমন্ত্রন' শুনলাম। সত্যি কথা স্মীকার করতে কুন্ঠা না করেই বলি, শিরোনামহীনে যথেষ্টই ভালো লাগা থাকলেও 'প্রিয়' বলি না। হেভি মেটাল আমার সাথে যায় না অথবা আমি হেভি মেটালের সাথে যেতে পারি না। জলের গানের গানগুলো ভিন্ন মাত্রার। তবে ভিন্ন মাত্রা বুঝতে হলে মাত্রাজ্ঞানটা আবশ্যক।
বাই দ্যা ওয়ে, অনুপ বললো, রণি, পড়শির থ্রি বের হইছে, জানিস? 'থ্রি' শব্দটা শুনে চমকে তাকানোর পর বললো, আরে, অ্যালবামের নাম 'পড়শি থ্রি'।
২) জাফর ইকবালের লেখা, প্রয়াত সজল খালেদের পরিচালনায় ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ব্যানারে 'কাজলের দিনরাত্রি' দেখলাম। 'দীপু নাম্বার টু' বানানোর আপ্রান চেষ্টাটা মারা খেয়েছে বাজেটের কাছে। ইদানিং কালের কিছু নাটক-টেলিফিল্মের বাজেটও এই সিনেমার থেকে ঢের বেশি, এ কথাটা প্রায় বিনা তর্কে বলে দেওয়া যায়। গান বা ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, কোনোটাই অর্থপূর্ণ এবং গল্পের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ লাগেনি। কাহিনী টেনেটুনে লম্বা করার চেষ্টা ছিলো। কিছু কিছু যায়গায় অভিনয়ও অ্যামেচার ছিলো বলেই মনে হয়েছে। তারপরেও গড়পরতা সিনেমাটা ভালোই। ব্যতিক্রমী কিছু করার তীব্র চেষ্টাটা দেখা গেছে শেষপর্যন্ত।
বাই দ্যা ওয়ে, সিনেমার সমালোচনা করার বিন্দুমাত্র যোগ্যতা আমার নেই। এগুলো শুধুই আমার ব্যক্তিগত অভিমত।
৩) ঈদের অনুষ্ঠান রেখে অ্যাশেজ দেখি। আমার কাছে এবারের অ্যাশেজের সবচেয়ে বড় হতাশার নাম শেন ওয়াটসন। টেকনিক্যালি এত সলিড একজন ব্যাটসম্যান টানা ৬ ইনিংস ধরে ব্যর্থ। কিছুদিন আগের ভারত সিরিজেও ওয়াট্টো ওর ছায়া হয়েই ছিলো।
আরেকটা ব্যাপার, বর্তমান বাহাতি ব্যাটসম্যানরা সম্ভবত গ্রায়েম সোয়ান আর মোহাম্মদ হাফিজের মুখোমুখি হতে চায় না। একগাদা বাহাতি থাকায় সোয়ান অস্ট্রেলিয়ার জন্য স্রেফ মূর্তিমান আতংক হয়ে দেখা দিচ্ছে।
১১ আগস্ট, ২০১৩:
সাহায্যের হাত পাতা ধাতে নেই। তবু খানিকটা বাধ্য হচ্ছি। আগামী দু'-তিন দিনের মাঝে বি-নেগেটিভ রক্ত দিতে পারবেন খুলনার এমন কেউ বন্ধু তালিকায় আছেন? সবচেয়ে কাছের এক বন্ধুর মা'র ক্যান্সার।
যোগাযোগ: ০১৭১৬১০৮৮০০
১২ আগস্ট, ২০১৩:
১) দিনটাকে 'বিশেষ' বলে দেওয়া যায়। মা'র সবচেয়ে প্রিয় বান্ধবীর মেয়ের বিয়ে। অনুপের মা'র ক্যান্সার ধরা পড়ায় যাবো না বলে দিয়েছিলাম। পরে মা একা যেতে পারবেনা বলে ক্যাজুয়াল ড্রেসেই ধরে নিয়ে গেলো। যাই হোক, যে প্রসঙ্গে ছিলাম, বয়সে একটু বড় হওয়াতে ও অতি উপদেশ ঝাড়তো; এইটা পড়, এভাবে পড়, এত ঘন্টা পড় ব্লা ব্লা ব্লা। তাই 'মিস অ্যাডভাইজার' বলে ডাকতাম। একটেলে প্রায় হাজার খানেক এসএমএস চালাচালি আর ডিজুস ফ্রি টাইমটা কিছুটা ইউটিলাইজ হয়েছে ওর সাথে। ফ্রি আজ বিয়ের শাড়িতে দেখেই ডাকলাম ওহে 'মিসেস অ্যাডভাইজার', শেষমেশ হয়েই গেলো?
ডেকে পাশে রেখে অনেক গল্প-গুজব করলো। শেষমেশ উঠে আসতে চাইলে বললো, 'বসে থাক, আমার বর এসে দেখুক তার পতিন বসে আছে'!
বলেই ফেললাম, 'বছর দুয়েক পরে পৃথিবীতে আসতি তাহলে তো পতিনের 'ন' টা ঝেড়ে ফেলা যেত'!
২) আগে মা আমাকে আর রূপলকে বসিয়ে উপদেশ দিতো, বয়ান ঝাড়তো। এবার বার দুয়েক আমি আর রূপল মাকে বসিয়ে বোঝালাম বেশ কিছু ব্যাপারে! বাংলালিংক ব্যবহার না করলেও দিন বদলে বিশ্বাস করি।
৩) অ্যাশেজ দেখছি আর আশা করছি ভষ্মদারের আকর্ষণটা শেষ ম্যাচ পর্যন্ত যাবে।
১৩ আগস্ট, ২০১৩:
কুচবিহারের বিশেষ আদালতে ফেলানি হত্যা মামলার বিচার শুরু হচ্ছে আজ থেকে। গত বারো বছরে সীমান্তে প্রায় হাজারখানেক মৃত্যুর বিচার একজনের মাধ্যমে হলেও তো শুরু হলো শেষ পর্যন্ত।
গোলাম আজমের মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
যুদ্ধাপরাধী সংগঠন হিসেবে জামায়াতের বিচার করার জন্য প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে তদন্ত সংস্থা। মামলা দায়ের করা স্রেফ সময়ের ব্যাপার।
গত ৫ ও ৬ মে মতিঝিলে হেফাজতের সমাবেশ এবং সেখানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানকে ঘিরে অসত্য তথ্য প্রচারের অভিযোগে মানবাধিকার সংগঠন, অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খানকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
উগ্রপন্থী গোষ্ঠী আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসীমউদ্দিন রহমানী সহ তার ৩০ অনুসারীকে গ্রেফতার করেছে বরগুনা পুলিশ।
স্বাধীন বাংলাদেশে একটা পাকিস্তানি দলের ডাকা হরতাল এবং আকসু কতৃক আশরাফুলের ফিক্সিং কেলেঙ্কারির তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের মহাগুরুত্বপূর্ণ দিনটা শুরু হলো টিভি খুলেই গোটা কয়েক ভালো সংবাদ দিয়ে। শুভ সকাল বাংলাদেশ।
১৫ আগস্ট, ২০১৩:
১) ৫ ই আগষ্ট খুলনা পৌছে ময়মনসিংহে ফেরার টিকেট কাটতে বের হওয়ার সময় মা যখন বলেছিলো, নিবন্ধন বাতিল হওয়াতে জামায়াত লাগাতার হরতাল দিতে পারে, সে হিশেবে শুক্রবারের টিকেট কাটা শ্রেয় হবে; তখন বলেছিলাম, মা, লিখে রাখতে পারো, ১৪ তারিখে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে দিলেও ১৫ তারিখে হরতাল দেবে না। কারণ, ওইদিন তাদের নেত্রীর ৫ জন্মদিনের ১ টা জন্মদিন। এখন ময়মনসিংহগামী বাসে। সামথিং ইজ ভেরি প্রেডিক্টেবল ইন পলিটিক্স।
২) সর্বশ্রেষ্ট বাঙালির কথা গর্বভরে স্মরণ করতে গেলে জাতির সর্বশ্রেষ্ট কুলাঙ্গারদের কথাও চলে আসে। দেখতে হয় এখনও বঙ্গবন্ধু হত্যার ৬ জন আসামী বহাল তবিয়তে আছেন এবং এদের ২ জনের অবস্থান সম্পর্কে সরকার ওয়াকিবহাল হওয়ার পরেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকান্ডের ৩৮ বছর পরেও!
বঙ্গবন্ধু ছিলেন বলেই দেশ পেয়েছি শুধু তাই নয়, বঙ্গবন্ধুর চেতনা-সাহস-স্বপ্ন নিয়ে একটা জাতি এখনও বেঁচে আছে। নির্মম হলেও সত্য দীর্ঘ একটা সময় বহুদিন ইতিহাসকে বাক্সবন্দি করে রাখা হয়েছিলো। ইতিহাসের পৃষ্ঠা থেকে বিকৃত করা কুটিল কিছু শব্দসমগ্র ইচ্ছাকৃত ভাবে যোগ করা হয়েছিলো পাঠ্যবইয়ে পর্যন্ত! তবে ইতিহাস এমন কিছু যাকে আসলেই লুকিয়ে রাখা যায় না। যায়ও নি। অনলাইন দেখে কিছুটা অনুমান করি যে আবার একটা প্রজন্ম সঠিক ইতিহাস জেনে বড় হচ্ছে। তাই দেখি, প্রকাশ্যে 'হু দ্যা হেল শেখ হাসিনা ইজ' বলেও 'শেখ মুজিব আর ত্রিশ লক্ষ শহীদের দেশে থাকি, বঙ্গবন্ধুর চেতনায় বিশ্বাস করি' বলা লোকের অভাব নেই। ফকির লালের গান থেকে লিখি,
'ষড়যন্ত্রের শিকার কিন্তু
বঙ্গবন্ধু মরে নাই
মার্চ মাসের ভাষণ আমি
ঘুমে থাইকা শুনতে পাই
থানা-পুলিশ ডাইকা আনো
খুন-খারাপি করতে চাই
বঙ্গবন্ধু বাইচা আছে
বাঙালিরা বাইচা নাই।'
৩) শেষ বিকেলে সূর্যের পশ্চিম দিকে অস্ত যাওয়া খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। ভোর হলে মোরগের ডাক শুনতে পাওয়াটাও খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন বা শোক দিবসে অনলাইনে কিছু ল্যাঞ্জা বের হয়ে যাওয়াও খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। ইতিমধ্যে কয়েকটা হয়েও গেছে দেখলাম। স্বাভাবিক। সে যাই হোক, একটা কথা ভেবে খুব ভালো লাগে, তুমি ভাই ছাগু হও আর হাগু হও যদি নিজেকে বাংলাদেশি পরিচয় দেও, সার্টিফিকেটে জাতীয়তা 'বাংলাদেশি' লেখো, তাহলে তুমি সারাজীবনেও অস্বীকার করতে পারবা না যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান তোমার পিতা না।
৪) বোলোগাররা খুব খ্রাপ! তারা বোলোগ দিয়ে ইন্টারনেট চালায়। তারা খুঁজে-খুঁজে নাকি বের করে ফেলেছে খালেদা জিয়ার পাঁচটা জন্মদিন!
~ ম্যারেজ সার্টিফিকেটে: ৪ আগষ্ট, ১৯৪৪
~ ভোটার রেজিস্টারে: ১৫ আগষ্ট, ১৯৪৬
~ স্কুল সার্টিফিকেটে: ৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৬
~ প্রধানমন্ত্রীর শপথ রেজিষ্টারে: ১৯ আগষ্ট, ১৯৪৭
~ প্রেস সেক্রেটারি অনুযায়ী: ১৫ আগষ্ট ১৯৪৭
বাই দ্যা ওয়ে, কার তিনটা হাত, কার শরীরে সর্বোচ্চ তিল ছিলো এসব রেকর্ড 'গিনেজ বুক অফ রেকর্ডস' রাখতে পারে অথচ পৃথিবীর একটা মানুষের ৫ টা জন্মদিন, রিপিট অ্যাগেইন, ৫ টা জন্মদিন, তা তোমাদের চোখে পড়ে না? হোয়্যাট দ্যা 'পুক'! আই সে, হোয়্যাট দ্যা 'পুক'!
১৬ আগস্ট, ২০১৩:
১) কদিন আগে এক বড় বোনের বিয়েতে গেছিলাম। বিয়ের আগের রিলেশন, স্থায়িত্ত্ব, ব্রেক-আপ, এসব নিয়ে কথা হচ্ছিলো। কথায় কথায় বলে বসলো, 'বুঝলি রণি, কিছু বিরল ব্যতিক্রম বাদে এমবিবিএসের ৬ বছরে যেসব ছেলে এবং মেয়েদের প্রেমের হিস্ট্রি নেই তাদের হয়তো শারীরিক সমস্যা আছে নতুবা এতটাই কুৎসিত যে হিস্ট্রি তৈরি করারই যোগ্যতা ছিলো না'। আই এগ্রি।
২) মাঝে মাঝে দুর্লভ কিছু ঘটনার সাক্ষী হই। এতটাই অবাক হই যে তাৎক্ষনিক কিছু বলা বা লেখার ক্ষমতাটাও হারিয়ে ফেলি। সাম্প্রতিক একটা ঘটনা বলি। কয়েকদিন আগে ভীষণ কাছের এক বন্ধুর প্রচন্ড প্রয়োজনে 'বি-নেগেটিভ' রক্তের প্রয়োজন লিখে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। দিয়েই একটু পরপর লগ-ইন করে দেখছিলাম রক্তের কোনো সন্ধান পাওয়া গেলো কি-না। বারবার ঢুকে দেখি, অমুক লাইক ইয়োর স্ট্যাটাস, তমুক লাইক ইয়োর স্ট্যাটাস। কিন্তু রক্তের খোঁজ মেলে না। দিন শেষে দেখলাম ৭-৮ টা শেয়ারের বিপরীতে প্রায় গোটা পঞ্চাশেক লাইক! ভেবে নিলাম, জরুরী রক্ত চেয়ে পোষ্টে একেকটা লাইক দিলে সম্ভবত একেক ফোঁটা রক্ত দান করা হয়। আমার বন্ধুরা পোষ্টটাতে লাইক দিয়ে ৫০ ফোঁটা রক্ত দান করেছিলেন। আমি কৃতজ্ঞ। বান্দিয়া, এ ঋণ শুধবো আমি কেমন করে?
৩) ইদানিং অনলাইনে প্রচুর ইতিহাস চর্চা হয়। আমি বসে বসে লম্বা লম্বা পোষ্ট পড়ি। ক্যাপশন থাকায় ব্লগ পড়তে তুলনামূলক দ্বিগুন স্বচ্ছন্দ বোধ করি। অনেক কিছু শিখি। ১৫ তারিখে একটা তথ্য জানলাম, বঙ্গবন্ধুর বেরিবেরি হয়েছিলো। যেটা আগে জানতাম না। আজ শামসুর রাহমানের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী। ব্লগে কিছু অজানা তথ্য জানলাম। শামসুর রাহমান কয়েকটা ছদ্মনামে লিখতেন: সিন্দবাদ, লিপিকার, চক্ষুষ্মান, মৈনাক, জনান্তিকে, নেপথ্যে। আরেকটা, শামসুর রাহমান আইয়ুব খানকে বিদ্রুপ করে যে কবিতাটা লিখেছিলেন, সেটার নাম ছিলো 'হাতির শুড়'।
৪) আগামীকাল থেকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ শুরু হচ্ছে। আমার মত ফুটবলখোরের জন্যে এর থেকে ভালো সংবাদ আজকে আর কিছুই নেই। স্প্যানিশ লা লীগা দেখি শুধু বার্সা-রিয়ালের জন্যে, জার্মান লীগ বায়ার্ণ-ডর্টমুন্ডের জন্যে। ইতালিয়ান লীগ তুলনামূলক অনেক কম্পিটিটিভ। কিন্তু এসব লীগের খেলা দেখে একটুও শান্তি পাই না। ক্যামেরার কাজ অতিমাত্রায় খারাপ থাকে। আর খেলাগুলো হয় আমার জন্যে ধরতে গেলে অসময়ে, মাঝরাতে অথবা সন্ধ্যায়। সেদিক থেকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের তুলনাই হয়না। যে কেউ যে কেউকে হারিয়ে দেয় যখন তখন। আজ ফ্যান্টাসি প্রিমিয়ার লীগে একটা দলও দাঁড় করালাম। লিভারপুলের পাড় সমর্থক আমি এবং আগামীকাল প্রিমিয়ার লীগ শুরুই হচ্ছে লিভারপুল-স্টোক সিটির ম্যাচ দিয়ে। ক্যান্ট ওয়েট এনিমোর!
৫) শুভ রাত্রি।
১) গতকাল সকালে বাসে উঠে দেখি সব সিটের পাশে স্ট্যান্ড আছে শুধু 'সি থ্রি' সিটটার পাশে নেই। ওটাই আমার সিট। বাস একবার কষে ব্রেক মারলো। কেউ পড়লো না, একজন আদ্যোপান্ত ঘর্মাক্ত আধ-বুড়ো ব্যাটা হুমড়ি খেয়ে পড়লো। সেটাও আমার উপর। ১৩ ঘন্টার ক্লান্তিকর জার্নি শেষ করে রুমে এসে দেখি বাকি তিনজনের তিনটা মাল্টি-প্লাগই ঠিক আছে, একটা মাল্টি-প্লাগ নষ্ট। এবং সেটাই আমারটা! বাই দ্যা ওয়ে, 'অভাগা যেদিকে যায়, সাগর শুকিয়ে যায়' প্রবাদটা যেন কার? উনাকে মুকুলের চা খাওয়াইতাম।
২) খুলনার বাতাসে একটা শান্তি-শান্তি গন্ধ পাই। ওই বাতাসের অনুপস্থিতি আমাকে এতই ভোগায় যে বছর পাঁচেক ময়মনসিংহে থাকতে বাধ্য হওয়াতে এখন আমার অ্যাজমা হওয়ার উপক্রম। খুলনা শহরটার মধ্যে জ্যাম নেই, বায়ুদুষণ নেই। চিল্লা-পাল্লা নেই। অথচ যথেষ্ট আধুনিক। তবে হ্যা, অতটা জাকজমকও নেই অবশ্য। গোছানো, শান্ত একটা শহরতলি। জীবনানন্দ ধানসিঁড়ি তীরে বারবার ফিরে আসতে চেয়েছিলেন। আমি নিবেদনপক্ষে বাকি জীবনটা ওই শহরবন্দি হয়ে কাটাতে চাই।
৩) আসার পথে বাস বিভিন্ন স্ট্যান্ডে দাঁড়াতে দাঁড়াতে এসেছে। এবং সব জায়গাতেই মোটামুটি ৭ই মার্চের ভাষণ বেজেছে। এবং প্রতিবারই একটুক্ষণ শোনার পরেই আবিষ্কার করেছি শরীরের রোম খাড়া হতে শুরু করেছে; যেন জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি চলে। বাংলাদেশীদের ইতিহাস ৪২ বছরের হলেও বাঙালির ইতিহাস তো হাজার বছরের। বাংলা ভাষাতে কে, কবে, কোথায় এমন ভাষণ দিতে পেরেছে যা ৪২ বছর পরেও রক্তে নাচন চোলে? রোমকূপগুলো জাগিয়ে তোলে?
৪) বৃষ্টি দিয়ে সকালটা শুরু হলো। শুভ সকাল, 'মাইমেনসিংহ'। বেহেই ভালা আছুইন?
১৭ আগস্ট, ২০১৩:
১) জানি এই কথার কোনো ভিত্তি নেই, তবু আমার অবচেতনে অনেকবার মনে হয়েছে তারেক মাসুদের অ্যাক্সিডেন্টটা পরিকল্পিত ছিলো। 'মাটির ময়না' আরেকবার দেখলাম। ছাপ্পান হাজার বর্গমাইলে তারেক মাসুদ একবারই জন্মায়।
২) একটা জিনিস খেয়াল করেছি, আমার যেসব বন্ধু বা পরিচিতরা দেশান্তরী হয়েছে তারা দেশ সম্পর্কে যতটা খবরাখবর নেয়, আমরা ততটা খোঁজ খবর রাখি না। মাঝে মাঝে অনলাইন চ্যাটে ছোট ছোট বিষয়ে তাদের জানাশোনা আর নিজের অজ্ঞতা দেখে চমকে উঠি। বেশিরভাগ প্রবাসীই দেশটাকে খুব অনুভব করে বলেই অনুভূত হয়। আর আমি, আমরা দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা বুঝি না। পেস্ট থাকতে ব্রাশ করি কাঠ কয়লা দিয়ে।
৩) বন্ধু @[100000824406564:অমিত] এ অবধি যতগুলো মেয়ের কাছে জান-জান্টুস-সোনা-বেইবি-পুতুশ ডাকগুলো শুনেছে, আমার ধারণা আমার হাতে-পায়ে মিলে ততগুলো আঙুল নেই। আর যতবার ওই ডাকগুলো শুনেছে আমার শরীরে সম্মিলিত ভাবে ততগুলো চুল এবং লোম নেই!
৪) স্ট্যারিজের গোলে মৌসুমের প্রথম ম্যাচেই জিতেছে লিভারপুল। সাথে আর্সেনাল গেছে হেরে। কিছুক্ষণ আগে বোল্টের ১৯.৬৬ সেকেন্ডের ২০০ মিটার জয় দেখলাম। মনটা বিশেষ রকম ভালো।
১৮ আগস্ট, ২০১৩:
১) সারে'র হয়ে নটিংহ্যামশায়ারের বিপক্ষে যেদিন ১৬৯ রান করে ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি টেনে দিলেন, সেটা বেশ সম্মানজনক সমাপ্তি ছিলো রিকি পন্টিং নামের এক গ্রেটের জন্যে। কী মতিগতি হলো কে জানে, ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লীগে খেলতে চলে গেলেন অ্যান্টিগুয়া হকসবিলসয়ের হয়ে। যা হওয়ার তাই হচ্ছে। বারে বারে ব্যর্থ হচ্ছেন দ্যা লিজেন্ড। এবং মাঝে মাঝে এমন সব ব্যাটিং পজিশনে পান্টারকে প্রমোট করা হচ্ছে যে ব্যাপারটা অপমানকরই লাগছে। তবে সবচেয়ে দৃষ্টিকটূ লাগছে স্যামুয়েলস ক্যাপ্টেন থাকার পরেও নিজে এগিয়ে গিয়ে ক্যাপ্টেনসির চেষ্টা করাতে। খুলনা থাকতে একদিন দেখলাম, রিকির একটা ফিল্ডিং চেঞ্জ স্যামুয়েলস আবার পরিবর্তন করে দিলো। রিকি, ডোন্ট ডেস্ট্রয় ইয়োর রেপুটেশন, প্লিজ!
২) কাইল জার্ভিস, বর্তমান জিম্বাবুয়ে দলে ব্রেন্ডান টেইলরের পর আমার মতে সেরা খেলোয়াড় একটা কাউন্টি দল, খুব সম্ভবত ল্যাঙ্কাশায়ারের জন্যে জিম্বাবুয়ে জাতীয় দল থেকে সরে দাঁড়ালেন মাত্র ২৪ বছর বয়সে। অর্থনৈতিক সিকিউরিটি যে এখনও বড় একটা টোপ সেটা জার্ভিস আরেকবার দেখিয়ে দিলো। জার্ভিসের যে কোয়ালিটি আর ইংল্যান্ডের পিটারসেন, ট্রট, মরগান, কিসওয়েটার এবং অতি সম্প্রতি বয়েড র্যানকিনের যে হিস্ট্রি তাতে একদিন জার্ভিসকেও ইংল্যান্ড দলে দেখা গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবেনা।
৩) রিয়াল মাদ্রিদের দু'জন খেলোয়াড় খুব পছন্দের। জাবি আলোনসো আর ইকার ক্যাসিয়াস। জাবির কারণটা অবশ্য ও একসময় লিভারপুলের ছিলো বলে। এবার আরেকটা পছন্দের প্লেয়ার রিয়ালে যোগ দিয়েছে। ইস্কো। ট্রান্সফার মার্কেটে বার্সেলোনাকে হারিয়ে দিয়েছে মাদ্রিদ। ইস্কো, ইল্লারামেন্দি, কারভাজাল যোগ হয়েছে। যোগ দিতে পারে গ্যারেথ বেলও। উল্টো দিকে এক নেইমারকে যোগ করে বার্সেলোনা হারিয়েছে ভিয়া, আবিদাল, থিয়াগোকে। লোনে গেছে কুয়েনকা। মুয়েনসা-ফন্টাসরা গিয়ে ব্যাক-আপ অপশনগুলোতেও ফাঁকা ফাঁকা ভাব। প্রচন্ড সমস্যার পরেও একটা কোয়ালিটি ডিফেন্ডার যোগ করতে পারেনি। থিয়াগো সিলভা, মারকুইনহোস, ডেভিড লুইজ, ড্যানিয়েল অ্যাগার ফিরিয়ে দিয়েছে বার্সাকে। সাথে টিটো ভিয়ানোভার ক্যান্সারের কারণে সরে দাঁড়ানোতে যোগ হয়েছে ইউরোপিয়ান ফুটবলে একদম আনকোরা কোচ টাটা মার্টিনো। সব মিলে নাজুক অবস্থা। সে যাই হোক, মেসি-নেইমার-সানচেজ, এই তিন সাউথ আমেরিকানের কম্বো দেখবো বলে টিউন করলাম। সুপার সানডে।
১৯ আগস্ট, ২০১৩:
১) কিছু দূর্লভ প্রানশক্তির মানুষের সাথে পরিচিত হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে ফেসবুকে এসে। এক দাদার সাথে পরিচয় হয়েছে। 'সংখ্যালঘু' নির্যাতনের পর বলেছিলেন এ দেশ আমাদের জন্যে নয়। গোলাম আজমের কন্ট্রোভার্সাল রায়ের পর বলে দিয়েছিলেন এ দেশে থাকবেন না। তিনিই সমমনা আর কয়েকজনকে নিয়ে সবকিছু ভুলে, ব্যক্তিগত জীবন সিঙেয় তুলে দিন রাত দৌড়াচ্ছেন পথশিশু আর সুবিধাবঞ্চিত কিছু শিশুকে অক্ষরজ্ঞান দানের জন্যে।
আরেকজন ক'দিন আগে নক করে বললো, ভাই, জামালপুরের কেউ পরিচিত আছে আপনার? ওখানে একজন মহিলা রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। যেভাবেই হোক উনাকে সাহায্য করতে হবে। আপনি প্লিজ যেভাবেই হোক উনার আশেপাশের কারো কনট্যাক্ট নাম্বার ম্যানেজ করে দেবেন।
দেশটাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখার এবং সেসবের জন্য সর্বোচ্চ প্রানশক্তি ঢেলে দেওয়ার মানুষও নেহাৎ কম নেই। সমস্যাটা অন্যখানে। এই স্বপ্নগুলো যারা দেখেন, তাদের অর্থ নেই। আর যারা অর্থের পাহাড়ে বসে আছেন, দেশকে নিয়ে তাদের স্বপ্নটাই নেই! স্যাড বাট ট্রু।
২) সিলেট এবং ফতুল্লা স্টেডিয়ামের সংস্কারের অগ্রগতি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছে আইসিসির পরিদর্শক দল। কক্সবাজার স্টেডিয়াম পরিদর্শনের পর ইতিবাচক মতামত দিলে টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের মূল শংকাটা দূর হয়।
৩) বাপি ডাক্তারদের একটা ট্রেনিংয়ে গতকাল মালয়েশিয়া গেছে একটা সরকারি ট্যুরে। এরপর থেকে মা আমাকে ফোন দিয়ে দিনের মাঝে একাধিকবার জিজ্ঞাসা করছে, 'রণি, তোর বাপি আর ফোন দিছিলো? আচ্ছা আমার ফোন থেকে কল করা যাবে না? ওইখানে ফোন দিবো কিভাবে?' বললাম, 'কুল মা, কুল'!
৪) ফেসবুক মারফত একটা পেজ চোখে পড়লো, @[378737168916337: আমরা ঐশীর ফ্যান]। না, মোটেই অবাক হইনি। ফেসবুকে আরও দুর্ধর্ষ সব পেজ দেখেছি। বছর পাঁচেক ফেসবুক ব্যবহার করেও কোনো পেজ খোলার আইডিয়া মাথায় আসেনি। এটা দেখে আসলো। পেপারে পড়লাম ঐশীর বয়ফ্রেন্ডের নাম রনি, রিপিট অ্যাগেইন, রনি। তাই ভাবলাম 'আমিই ঐশীর বয়ফ্রেন্ড' নামে একটা পেজ খুলেই ফেলি। এক বন্ধুকে বললাম। ও বললো, পেজ দেখে রনি নামের আরেকজন এসে দাবী করতে পারে সেও ঐশীর বয়ফ্রেন্ড, তখন কী করবি? তার থেকে বরং 'আমরা ঐশীর বয়ফ্রেন্ড' নামেই পেজটা খোল! আমিও 'লাইক' দিমুনে।
#ক্যামনে_পারো?
২২ আগস্ট, ২০১৩:
১) ভেবেছিলাম বোমা ফুটাতে না পারি ২১ আগষ্টটা অন্তত একটা পটকা ফুটিয়ে উদযাপন করি। ফ্যাসিবাদী, নাস্তিক, জালেম সরকার সে উপায়ও রাখেনি। পটকা বিক্রিও নাকি আইনত দন্ডনীয়!
২) অ্যাশেজ শুরু হয়েছে। স্টিভের শেষদিকে আর রিকির প্রায় পুরোটা জুড়ে টেস্টে হারতে ভুলে যাওয়া অস্ট্রেলিয়াকে শেষ কবে জিততে দেখেছি সেটাই মনে করতে পারছি না। হারতে ভুলে যাওয়া দলটা এখন জিততেই ভুলে গেছে। পালাবদল। ধারণা করা হতো অস্ট্রেলিয়ার নিবেদনপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পরিনতিটা ভোগ করতে হবে না। কিন্তু আদতে তো সেটাই হতে যাচ্ছে বলে ঠাওর হচ্ছে। গত ম্যাচেই অ্যাশেজের ইন্টারেস্ট শেষ হয়ে গেছে। দেখছিও না। ক্রিকইনফোতে দেখলাম শেন ওয়াটসন সেঞ্চুরী করেছে। ওর সেঞ্চুরী মানে দুর্দান্ত কিছুই করে দেখিয়েছে ওভালে। এমন সময় উইলো খুললো যখন অ্যাশেজের শেষ ছাই চাপা আগুনটুকুও নিভে গেছে। চাই এই ম্যাচটাও অস্ট্রেলিয়া হারুক। ক্ষত নিয়ে দেশে ফিরুক। কয়েক মাস পরেই নেক্সট অ্যাশেজ। সেটা উপভোগ্য হতে ক্ষতটা দরকার হবে।
৩) একজন জানালো একটা স্পোর্টস পেজের অ্যাডমিন বানিয়ে দেবে, আমি পেজটা চালাবো কি-না। বললাম, 'ভাই পেট চালানোর ব্যাবস্থা করতে ব্যস্ত আছি। আগে পেট চালানো নিশ্চিত হোক, তারপর পেজ চালানোটা ভেবে দেখা যাবে।'
৪) খুব ব্যস্ত দিন যাচ্ছে। গানগুলো না থাকলে মরেই যেতাম। এলিটা শুনি। দারুন একটা লিরিক্স:
'কাঁচের দেয়াল ভাঙার মত
তোমায় ভাঙি ইচ্ছে মত
আমার কেন ভালো লাগেনা
কোনোকিছুই তোমার মত
যখন তুমি একা থাকো
আগুন জ্বলে আলোর মত
নিজের কাছে লুকিয়ে রাখি
স্বপ্নগুলো তোমার মত।'
২২ আগস্ট, ২০১৩:
১) পরিচিতদের অতি আতলামি মার্কা পোষ্টেও লাইক দেই। 'গুড মর্নিং-গুড নাইট' বা 'হাই গাইজ, আজ এত্ত গরম কেন?' টাইপের পোষ্টেও লাইক মারি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই লাইক দেওয়ার সাধারণত বড় কোনো কারণ থাকে না। বেশ কিছুদিন আগে একবার একজনের একটা দুই লাইনের স্ট্যাটাসে লাইক দিলাম। মনে হলো বুদ্ধদেব বসুর কোনো কবিতার লাইনে পড়েছিলাম। একটু পরে দেখি, ইনবক্সে একজন ম্যাসেজ দিয়েছে, সাথে ওই স্ট্যাটাসের লিংক দিয়ে জিজ্ঞাসা করা 'এই স্ট্যাটাসে কেন লাইক দিছেন? ওমুক লাইনে নারীদের অবমাননা করা হয়েছে'। গালি দেওয়া ম্যাসেজেরও নরম সুরে উত্তর দেই। উনাকে লিখলাম, 'আমার মনে হয়েছে এই লাইন দু'টো বুদ্ধদেব বসুর একটা কবিতায় পড়েছিলাম, সেকারণে। তো অসুবিধাটা কী হয়েছে?' উত্তর এলো, 'কোন বই? কোন কবিতা? লিংক দেন'। আবার লিখলাম, 'খুলনা গেলে দিতে পারবো হয়তো। আমার কাছে এই মুহূর্তে বইটা নেই'। পরের ম্যাসেজে লিখলো, 'আপনার কাছ থেকে এটা আশা করিনি ভাই'। সর্বশেষ মেজাজ কন্ট্রোল করে লিখলাম, 'কী আশা করেন? বেগম রোকেয়া-তসলিমা নাসরিনের লেখা ছাড়া আর কিছুতে লাইক দিতে পারবো না?' আর রিপ্লাই আসেনি।
এরপর প্রোফাইলে লিখে রেখেছিলাম, আমার একাউন্টে আমি একনায়কতন্ত্রে বিশ্বাস করি। হাবিজাবি যাই লিখি কেউকে পড়তে বলি না। এবং কেউকে কৈফিয়ত দিতেও বাধ্য না।
২) এই মাসের ১৭ তারিখ একজন ইনবক্সে লিখেছে, 'আপনি এত বড় বড় স্ট্যাটাস দেন কেন? পড়তে ১২ টা বেজে যায়। আর স্ট্যাটাস তো না যেন নিউজ বুলেটিন'। উত্তরে লিখলাম, 'আমার বড় বড় স্ট্যাটাসে সমস্যা থাকলে অ্যাভয়েড করেন। রেস্ট্রিক্ট আর ডোন্ট শো ইন দ্যা নিউজ ফিড নামে অপশন আছে। আরও অসুবিধা হলে আনফ্রেন্ড এবং ব্লক বলেও দু'টো অপশন আছে। আমার জন্য আপনার ১২টা কেন বাজাবেন? দুপুর ১২ টায় তীব্র রোদ থাকে। মাথা পুড়ে যায়'। আর রিপ্লাই আসেনি।
৩) ইনবক্স পাবলিক করা উচিত না। করিও না। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে না করে থাকা যায়না বলেই আজ করা। আরেকটা ইনবক্স নাম উল্লেখ না করে সরাসরি তুলে দিলাম।
: kodin dhore ektana ku kam kortesi tai ki sorir ta ektu kharap lagse.
ইচ্ছামানুষ রণি: কী কুকাম?
:
sex.
ইচ্ছামানুষ রণি: সেক্স কুকাম, এটা জানতাম না। আপনি অবিবাহিত?
:
jai hok ko din daily korci tai sorir emon.
:
aj ki krbo vabsi. Busy? Ans koi?
:
amar treat ki?
ইচ্ছামানুষ রণি: কিসের ট্রিটমেন্ট? সমস্যা কী? আমি ডাক্তার না এখনও।
৪) আমার নামে প্রমান সহ তীব্র একটা অভিযোগ দিয়েছে একজন। আমি না-কি কমেন্টের উত্তর দেই না। মেনে নিয়েছি। আই সে, দেই। তবে কিছু মিসিং থেকে গেছে। আফটার অল, 'ভালো হয়েছে লেখাটা' বা 'এইটার সাথে একমত না' কথাগুলোর রিপ্লাই খুঁজে পাই না। আমার ব্যর্থতা। তবে আমি সব কমেন্ট পড়ি।
৫) পুরো স্ট্যাটাসটা 'আমি-আমি-আমি-আমি' তে ভরে গেছে। শেষটাও আমি দিয়ে করি। ফেসবুকে গত কয়েক বছরে আমার সবচেয়ে প্রিয় লেখক @[100002566502374: Zia Arefin Azad]। বেশ কিছুদিন ব্যস্ততার পরে আবার ফিরেছেন। এবং আবার কিছু অনিয়মিত লেখা আর স্কেচের জন্যে অপেক্ষা করে বসে আছি। একজন ইংরেজির প্রফেসর এত দারুণ বাংলাতে লিখেন, এটা হজম করতেই অনেকদিন কেটে গিয়েছিলো আমার। মুগ্ধতা আছে আরও অনেক ব্যাপারে। সেগুলো থাক। আমি চ্যাট করি খুব কম। সাধারণত কেউকে চ্যাটে নকও করি না। কিন্তু ভাইয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা আলাদা। তাকে ডিস্টার্ব করতে উন্মুখ থাকি! আরও একটা ব্যাপার, উনার স্ট্যাটাসে উনাকে সবাই ডাকে 'স্যার', আর মাঝখান থেকে আমি ডেকে আসি 'ভাইয়া'! ওয়েলকাম ব্যাক!
২২ আগস্ট, ২০১৩:
'দিস গায় হ্যাজ বলস'; গতকাল রাতে মাইকেল ক্লার্ককে নিয়ে এই লাইনটা লিখবো ভেবেও ভুলে গেছিলাম লিখতে। অ্যাশেজের মত মানসম্মান জড়িত একটা সিরিজে ৩-০ তে পিছিয়ে থেকেও ধরতে গেলে চতুর্থ দিনের পিচে (একদিন বৃষ্টিতে খেলা হয়নি) ৪৪ ওভারে মাত্র ২২৭ রানের টার্গেট দিয়ে ডিক্লেয়ার করে দিতে 'বলস' লাগে। সেটা সাহস হোক আর হ্যাডম হোক, একমাত্র মাইকেল ক্লার্কেরই আছে এই মুহূর্তে। ট্রট-পিটারসেনের আক্রমনে এক পর্যায়ে ইকোনমি শেষ কয়েক ওভারে ৮ উইকেট হাতে রেখে মাত্র ৫ এ নেমে আসার পরেও ক্লার্ক ডিফেন্সিভ ফিল্ডিং সেট করেনি। বোলারদের দিয়ে দু'টো করে বাউন্সার আর ওয়াইডে বল করতে নির্দেশনা দেয়নি। ক্লার্কের এই সাহসিকতা সহজে ভোলা যাবেনা। ইতিহাস সাহসীদের মনে রাখে।এজন্যই পরাজিত হয়ে হেক্টর স্থান পেয়ে যান গ্রীক মিথোলজিতে।
পড়লাম, ব্রড-অ্যান্ডারসন-কেপি মিলে নাকি অ্যাশেজ জয় উদযাপন করেছে ওভালের পিচে মূত্র বিসর্জন করে। খেলা শেষ, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিদের বিপক্ষে হেসেখেলে অ্যাশেজ জয়, উদযাপন একটু করতেই পারে, একটু পাগলামো বা বাড়াবাড়িই হয়ে গেছে, এ আর এমন কী; এটা ভেবে ব্যাপারটা অ্যাভয়েড করতে গিয়ে ভাবলাম আজকে যদি ভারত বা পাকিস্তানকে হারিয়ে সাকিব-তামিম-রাজ্জাকরা এই একই কাজটা করতো তাহলে এতক্ষণে সারা ক্রিকেটবিশ্বে 'জেন্টেলম্যানস্ִ গেমসে এসব কী অসভ্যতা?', 'এর উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত' বলে বয়কট-নাসের হুসেইন-গাভাস্কার-শাস্ত্রী-মিয়াদাদরা মুখে ফ্যানা তুলে ফেলতেন। অথচ এখন কেউ কিছু বলবে না। হয়তো ইসিবি লোক দেখানো 'ম্যাচ ফির ২৫% জরিমানা' দেখিয়ে সব চুকেবুকে দেবে। সেজন্যেই দেখতে হয় আইপিএলে শ্রীশান্ত-অজিত চান্দিলা-অঙ্কিত চাহানদের বিরুদ্ধে আগে অভিযোগ এবং চার্জশীট গঠন করা হলেও আকসুর প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডসনের সব চিন্তা আশরাফুলের ফিক্সিং নিয়ে! দাউদ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে আইপিএল এবং এসএলপিএলে ফিক্সিং অভিযোগ থাকলেও আকসুর মাথায় ভাজ সেলিম চৌধুরীদের নিয়ে! বিসিবিকে দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করানো নিয়ে। কী এক অস্বাভাবিক দ্বৈত নীতি!
একটা সাম্যবাদী কবিতার লাইনে পড়েছিলাম, 'দুনিয়া জুড়ে এক জাতি আছে, সে জাতির নাম মানুষ জাতি'। ওই কবিতাটার সাথে মিলিয়ে লিখে দেওয়া যায়, 'ক্রিকেট জুড়ে এক নীতি আছে, সে নীতির নাম দ্বৈত নীতি'।
২৭ আগস্ট, ২০১৩:
অতি সাম্প্রতিক ঝঞ্জা বিধ্বস্ত জিম্বাবুয়ে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতেই পাকিস্তানকে হেসে খেলে হারিয়ে দিয়েছে। পাকিস্তানের যেকোনো পরাজয় ভীষণ তৃপ্তির। সে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হোক, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হোক অথবা (অদূর ভবিষ্যতে) সাইপ্রাস বা ভ্যাটিক্যান সিটির বিপক্ষেই হোক।
২৮ আগস্ট, ২০১৩:
প্রাইভেট মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় ৩০% এরও কম নাম্বার পেয়ে ভর্তির ব্যাপারে প্রথম-আলোতে আজকের শিরোনামে দারুণ একটা অনুসন্ধানী প্রতিবেদন দিয়েছে। তবে রিপোর্টটা কয়েকটা দিক থেকে বেশ অপূর্ণই লাগলো। কিছু স্মৃতিচারণ করি। ২০০৭ এর ভর্তি পরীক্ষায় বাড়ি বাড়ি এসে প্রশ্ন বিক্রি হলো পরীক্ষার আগের দিন। খুলনায় আমি যে স্যার ইকবাল রোডে থাকি, ওই রোডেরই এক ছেলে ভর্তি পরীক্ষার পরেরদিন জানিয়েছিলো, মাত্র ১ লাখ টাকায় আগের রাতে ওকে দিতে চেয়েছিলো প্রশ্ন। কিন্তু টাকাটা দিতে হবে বিনা শর্তে। আর ওকে নিয়ে যাবে রাতের বেলা বাসা থেকে। পরীক্ষা দেওয়ার আগে খোঁজও জানাবে না। এই ঝুকি নিতে চায়নি বলেই ওই পরিবার, বিশেষ করে ওর বাবা প্রশ্ন কেনেনি। পরেরদিন ওর থেকে অনেক খারাপ রেজাল্ট করা ক্লাসমেটদের চান্স পাওয়ার কথা বলে তার চোখে সে কী আফসোস!
ওইবার এসএসসি-এইচএসসিতে মাত্র ৭০-৭৫ স্কোর নিয়েও পাবলিক মেডিকেলে টিকে গেছে অনেকেই। পরেরবারও হলো। তবে তুলনামূলক 'যথেষ্ট' কম। এবং, হাতে নাতে প্রমান ছাড়া এটা প্রায় নিশ্চিত ভাবে বলে দেওয়া যায়, প্রতি বছরই কম বেশি এটা হচ্ছেই। প্রথম-আলোর রিপোর্টে সেসব কই? সরকারি চাপ? চাকরি যাওয়ার ভয়? অনুসন্ধান হলে সম্পূর্ণ ভর্তি প্রক্রিয়ার উপরই হওয়া উচিত। শুধু প্রাইভেট সেক্টরের কেন? প্রাইভেট সেক্টরে কি আলাদা ভর্তি পরীক্ষা হয়? গতবার বা তার আগেরবারই তো একটা প্রতিবেদনে দেখেছিলাম ভর্তি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নাম্বার পাওয়া ছেলেটার এসএসসি-এইচএসসি স্কোর আটের ঘরে। হতেই পারে। কিন্তু হাজার-হাজার ডাবল এ+ এর যুগে ব্যাপারটা বেশ কৌতুহলদ্দীপকই বটে।
নেক্সট, মাঝে মধ্যেই প্রফেশনাল পরীক্ষার একটা দু'টো প্রশ্ন আগের রাতে ফাঁস হয়। মেডিকেল রিলেটেড যে কেউই ব্যাপারটা ভালোই জানেন। সেগুলোর উপর কোনোদিন প্রতিবেদন হতে দেখিনি। অবশ্য হররোজ বিসিএসের প্রশ্ন ফাঁস হওয়া দেশে এ বড়ই 'নগন্য' ঘটনা!
পুরো সেক্টরে যেখানে ছড়ানো ছিটানো দূর্নীতি আর শত সহস্র নিয়ম নীতিমালার ফাঁক ফোঁকর সেখানে মাত্র কয়েকটা প্রাইভেট মেডিকেলের জন্যে শিরোনামে সব প্রাইভেট মেডিকেলকে ইন্ডিকেট করে একতরফা একই দোষে দোষারোপ করাটা একটা শীর্ষস্থানীয় পত্রিকার কাচ থেকে অনভিপ্রেতই বটে। শিক্ষা ব্যবস্থার এত বড় একটা বিষয় সম্পর্কে প্রতিবেদনটা আরও বস্তুনিষ্ঠ হওয়া উচিত ছিলো বলেই মনে হয়েছে।