somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পৃথিবির সর্ববৃহৎ স্থাপনা গুলো- সবচেয়ে উচু আকাশচুম্বি ভবন সমুহ

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আধুনিক যুগের একটি অন্যতম আবিস্কার হচ্ছে আকাশচুম্বি ভবন গুলো। একটা বিল্ডিং কত উচু পর্যন্ত নির্মান করা যায় এটা নিয়ে উনিশ শতকের শুরুতে বিস্তর গবেষনা শুরু হয়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বাস্তবে এগুলো প্রয়োগ করা যাচ্ছিল না। ফলে এগুলো কাগজে কলমেই রয়ে যায়। আইফেল টাওয়ার তৈরির পর ব্যাপারটা আর এক ধাপ এগোয়। সব চেয়ে বড় সমস্যা ছিল ভুমিকম্প, ভবনের নিজস্ব ওজন, বাতাসের প্রচন্ড চাপ, এর আকার আকৃতি এগুলো নিয়ে। আস্তে আস্তে নির্মান উপকরন এর উন্নতির ফলে সব গুলো সমস্যা এখন সমাধান হয়ে সৃস্টি হয়েছে বিষ্ময়কর সব স্থাপনা। মজার একটা তথ্য দেই। পৃথিবিতে প্রথম আকাশচুম্বি ভবন এর ডিজাইন করেন কে জানেন?

আমাদের বাংলার এক মেধাবি সন্তান।


ফজলুর রহমান খান

আসেন দেখি পৃথিবির সবচেয়ে উচু ভবন গুলো।
১০) Kingkey 100


KK100 এর অফিশিয়াল নাম। চিনের সেংজেং শহরে অবস্থিত। এটি একটি অফিস কাম হোটেল বিল্ডিং। এটি সম্পুর্ন ভাবে মিশ্র নির্মান সামগ্রী দিয়ে নির্মিত। এগুলা একধরনের নতুন ধরনের নির্মান সামগ্রি। আমরা সাধারনত ইট, বালি, সিমেন্ট এগুলো চিনি। এর বাইরেও প্রচুর নির্মান সামগ্রি আছে। যেমন আমাদের দেশে কাঠের বিকল্প হিসেবে প্লাইউড নামক এক ধরনের মিশ্র নির্মান সামগ্রি ব্যবহার করা হয়।(আরো জানতে চাইলে এইখানে গুতা দেন )
২০০৪ সালে এটির ডিজাইনের কাজ শুরু হয়। ২০০৭ এ এটির কনস্ট্রাকশন এর কাজ শুরু হয়। মোটামুটি ২০১১ তে এর কাজ শেষ হয়। Sir Terry Farrell এর আর্কিটেচারাল ডিজাইন ফার্ম TFP Farrells এর মূল ডিজাইন এ একটা চায়না কোম্পানি Huasen Architectural & Engineering Designing Consultants Ltd. কাজ করে।( যারা নতুন আর্কিটেকচারাল ডিজাইন এ পরাশুনা করতেছেন বা করার ইচ্ছা আছে উনাকে এখনি গুরু মানা শুরু কইরা দেন। আমার জীবনে দেখা সেরা আর্কিটেক্ট দের একজন) স্ট্রাকচারাল ডিজাইন করে Arup নামে একটা ব্রিটিশ স্ট্রাকচারাল ফার্ম।


১৪৪৯ ফিট উচ্চতা এবং ২৩৬৮০৬০ স্কয়াফিট ফ্লোর স্পেস নিয়ে দালানটি দারিয়ে আছে। সর্বোমোট ১০০ টি ফ্লোর আছে উপরে আর বেইজে আছে ৪টি। ৬৬ লিফট এর সাহায্যে আপনাকে উপরে তোলার ব্যবস্থা আছে। লিফট গুলার স্পিড ৯ মিটার/সেকেন্ড। ২০০০ গাড়ি পার্কিং এর ব্যববস্থা আছে। প্রথম ৬৮ টি ফ্লোর ব্যবহার করা হয় অফিস স্পেস হিসাবে, এর উপর ২২ টি ফ্লোর ব্যবহার করা হয় ৬ তারা বিশিষ্ট লাক্সারিয়াস হোটেল এর জন্য। আর উপরের ৪ টি ফ্লোর ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট হিসাবে। একদম উপরে একটা বাগান আছে।অবাক লাগে এত উপরে কিভাবে এই বাগান টা করল আর ওই গোল শেইপটা আনল।(চিন্তা কইরেননা আমি জানি কেমনে করছে। পোস্ট বেশি বড় হইহেছে দেইখা লিখলাম না।B-)B-)B-))


আমার কাছে ভাল লাগছে এ ঢোকার গেটটা। দেখেন কি চমৎকার একটা কাজ করছে।
কোন কলাম ছারা শুধু টপ সাপোর্টের মাধ্যমে ঝুলাইয়া দিছে।



৯) Willis Tower (Formerly Sears Tower)


পুরান মাল নতুন নামে আসছে। আম্রিকার ইলিনয়স অঙ্গরাজ্যের বিখ্যাত সিকাগো শহরে অবস্থিত। ১৯৭০ সালে এটার নির্মান কাজ শুরু হয়। ১৯৭৪ সালে শেষ হয়। পুরাটাই অফিসিয়াল কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়। মজার ব্যপার হল এটা নির্মানের পর হতে ২৫ বছর একটানা বিশ্বের এক নাম্বার সবচেয়ে উচা দালান ছিল। আর্কিটেকচারাল এবং স্টাকচারাল ডিজাইন করে Skidmore Owings & Merrill নামের একটা ডিজাইন ফার্ম।( আর্কিটেক্টরা দেইখা লইয়েন বসদের কাজ ;););))


সর্বোমোট উচ্চতা ১৪৫১ ফিট এবং ৪৪৭৭৭৮৭ স্কয়ারফিট ফ্লোর স্পেস আছে। ফ্লোর আছে ১০৮ টি আর বেইজমেন্ট আছে ৩ টি ফ্লোর। ১০৪ টা লিফট আছে যাদের সর্বোচ্চ গতিবেগ ৮ মিটার/ সেকন্টে।

৮) Zifeng Tower


চায়নারা একটা মাল। যা বানায় এক একটা বিস্ময় হয়ে থাকে। পুরা নাম Nanjing Greenland Financial Center চিনের নানজিং শহরে অবস্থিত। পুরো ভবনটি হোটেল এবং অফিস এর জন্য ব্যবহার করা হয়। এতে কম্পোজিট নির্মান সামগ্রি ব্যবহার হয়েছে। ২০০৪ সালে ডিজাইন এর কাজ শুরু হয়। ২০০৫ এ নির্মান কাজ শুরু হয়। ২০১০ এ নির্মান কাজ শেষ হয়।


ডিজাইন করেছে Skidmore Owings & Merrill। এই আর্কিটেক্ট ফার্মটা বিশ্বে আকাশ চুম্বি ভবন বানানোর জন্য সেরা। স্ট্রাকচারাল ডিজাইনও এরা করেছে।
ভবটির উচ্চতা ১৪৮০ ফিট আর ফ্লোর স্পেস আছে ১,৪৮০,৩৫০ স্কয়ার ফিট। মাটির উপরে মোট ৬৬ টি ফ্লোর আছে আর বেইজমেন্টে আছে ৫ টি।
৫৪ টা লিফট আছে যাদের গতি ৭ মিটার/সেকেন্ট। গাড়ির জন্য আছে ১২০০ টি কার পার্কিং এর ব্যবস্থা।

৭) Petronas Towers


এইদুইটারে চিনেনা এমন পাবলিক খুব কম আছে। তার পরও বলি মালেয়শিয়ার কুয়ালালামপুরে অবস্থিত এই ভবনটি। ভবনটি ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে উচ্চতম ছিল। মোট ৮৮ টি ফ্লোর এবং ৪,২৫২,০০০ স্কয়ার ফিট ফ্লোর স্পেস নিঢে ভবনদুটি দারিয়ে আছে।
পুরো উচ্চতা ১৪৮৩ ফিট। ৭৮ টা লিফট দিয়া এটি কার্যক্রম চালায়। আর্কিটেকচারাল ডিজাইন করেছেন César Pelli । বস আর্কিটেক্ট। এত চমৎকার সব ডিজাইন করেছেন যা বলে শেষ করা যাবেনা। আর স্ট্রাকচারাল ডিজাইন করেছে Thornton Tomasetti নামের একটা স্ট্রাকচারাল ডিজাইন ফার্ম। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্ট্রাকচারাল ডিজাইন ফার্ম গুলার মধ্যে অন্যতম।


মজার ব্যপার হচ্ছে এর চুরায় অবস্থিত দুইটা স্টিল বার। এক একটার উচ্চতা ২৪১ ফিট এবং ওজন ১৭৬ টন। একটা চুড়া ৫০ টা অংশে বিভক্ত এবং বানাতে সময় লেগেছে প্রায় ১৯ সপ্তাহ। এখন প্রশ্ন হল এত ওজনের একটা চুরা এত উপরে কেমনে তুলল আর শুধু শুধু সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যই কি এগুলা করা হয়েছে। উত্তর হল না। এগুলা ভুমিকম্প বা যে কোন কারনে ভবনের কম্পনের সময় এর ভারসম্য বজায় রাখতে সহযোগিতা করে।

৬) International Commerce Centre


আবার চায়না। এইবার হংকং এ। এটাও একটা হোটেল কাম অফিস টাইপ বিল্ডিং। ডিজাইন শুরু হয় ২০০০ সালে। মুল কাজ শুরু হয় ২০০২ তে আর শেষ হয় ২০১০ তে। আর্কিটেকচারাল ডিজাইন করেছে Kohn Pedersen Fox Associates । এরা বর্তমানে পৃথিবীর সেরা কিছু আর্কিটেকচারাল ফার্ম এর মধ্যে অন্যতম। স্ট্রাকচারাল ডিজাইন করেছে আবার সেই Arup । ইউনিক এক একটা কাজ করছে তারা।


খুব চমৎকার একটা এন্ট্রান্স করেছে। আমার কাছে খুব ভাল লেগেছে।
সর্বোমোট উচ্চতা ১৫৮৮ ফিট। গ্রাউন্ডের উপরে ১০৮ টি ফ্লোর আর নিচে বেইজমেন্ট ফ্লোর আছে ৪টি। ১৭০০ গাড়ি পার্কিং এর সুব্যবস্থা আছে ভবনটিতে। ফ্লোর স্পেস হল ২,৯৫০,০০০ স্কয়ার ফিট। ৮৩ টি লিফট রয়েছে যাদের গতি প্রতি সেকেন্টে ৯ মিটার।


এখানে পৃথিবীর সবচেয়ে উপরে অবস্থিত সুইমিং পুল আর বার পাওয়া যাবে যা ১১৮ তলাতে রয়েছে। এছারা ১১৭ তলাতে একটা প্রেসিডেনশিয়াল স্যুট আছে(৩০০০০ স্কয়ার ফিট এর) যার এক রাতের খরচ পরবে ১,০০,০০০ হংকং ডলার।

৫) Shanghai World Financial Center


গনচীনের সাংহাই শহরে অবস্থিত। অন্যরকম একটা ডিজাইন। পুরো ভবনটি হোটেল কাম অফিস হিসাবে ব্যবহ্রত হয়। ডিজাইন এর কাজ শুরু হয় ১৯৯৭ সালে। আর কন্সট্রাকশন শুরু হয় ১৯৯৭ সালে। সময়ের বিচারে এটা সবচেয়ে বেশি সময় নিয়ে বানানো আকাশ চুম্বি ভবন গুলার মধ্যে একটা। আর একটা ব্যপার হল চিনের এই মুহুর্তের সবচেয়ে উচু ভবন হল এইটা।


আর্কিটেকচারাল ডিজাইন করেছে Kohn Pedersen Fox Associates । তিন বসের ফার্ম। আর স্ট্রাকচারাল ডিজাইন করেছে Leslie E. Robertson Associates । এই ফার্মটাই ওয়ার্লড ট্রেড সেন্টার ডিজাইন করেছে। যেটা লাদেন ভাঙল। ভবনটির উচ্চতা ১৬১৪ ফিট। আর মোট ফ্লোর এরিয়া হল ৪,১০৭,৫০৮ স্কয়ার ফিট। মাটির উপর ১০১ টি ফ্লোর আছে। আর নিচে মানে বেইজমেন্ট আছে ৩টি। ৯১ টি লিফট ১০ মিনিট/ সেকেন্টে গতিতে উপর নিচে চলচলে সহযোগিতা করে। গাড়ির জন্য রয়েছে ১১০০ টি কার পার্কিং সুবিধা।


ভবনটির সবচেয়ে চমৎকার দিক হল এর টপে হাতলের মত বিশাল এই লবিটা তৈরি করা। হঠাৎ করে ফ্লোর শেষ করে আবার এত উপরে মাত্র দুইটা সাপোর্ট এর উপর এতবড় একটা লবি তৈরি করা ডিজাইনারের মুন্সিয়ানা বলতে হবে। কারন বাতাসের প্রচন্ড চাপ উপেক্ষা করে এত বড় বড় স্টিল ফ্রেম এত উপরে তোলা আমারদের চিন্তার বাইরে।

৪) Taipei 101


এটা তাইওয়ানের তাইপেই তে অবস্থিত। ভবনের নামও সে অনুসারে রাখা হয়েছে। ১০১ নামের মাহাত্ম মাহাত্ম বুঝেছেন?? জি এটা ১০১ তলা। তাই এই নাম। ১৯৯৯ সালে নির্মান কাজ শুরু হয়। শেষ হয় ২০০৪ সালে। অত্যান্ত দ্রুত গতিতে কাজ করা হয়। এশিয়াতে এই মুহুর্তে সর্বোচ্চ ভবন হল এইটা। পুরোটা বিভিন্ন কোম্পানির অফিস হিসাবে ব্যবহ্রত হয়।
তাইওয়ান এর কাছে এটি একটি গর্বের বিষয়। আর্কিটেকচারাল ডিজাইন করেছে C.Y. Lee & Partners Architects/Planners আর স্ট্রাকচারাল ডিজাইন করেছে Thornton Tomasetti । এই ফার্মটা আরও একটা স্কাইস্ক্রাপার এর ডিজাইন করেছে। বলেন তো কোনটা??


ভবনটির উচ্চতা ১৬৬৭ ফিট। আর সর্বোমোট ফ্লোর এরিয়া ২,০৮১,৭৫০ স্কয়ার ফিট। ভুমি থেকে উপরে ১০১ টি ফ্লোর আছে। আর নিচে আছে ৫ টি। লিফট আছে ৫১ টি। যাদের গতি ১৬.৫ মিনিট/সেকেন্ট। প্রায় ২০০০ গাড়ি পার্কিং এর ব্যবস্থা আছে।



এই জিনিষ টা এই ভবনের ডিজাইনকে একটা ইউনিক ডিজাইন হিসাবে উপস্থাপন করেছে। এটা একটা ৬৬০ টনের গোলক যেটা একটা পেন্ডুলামের মত কাজ করবে। কেন? তাইপেইতে ঘন ঘন বেশ ভাল রকমের ভুমিকম্প হয়। তো এই ভুমিকম্পে এতবড় একটা দালান রক্ষার জন্য ডিজাইনাররা চিন্তা করলেন এমন একটা সিস্টেমের যেটা ভুমিকম্পের সময় ভবন যেই দিকে দুলবে সেটা ঠিক তার উল্টা দিকে দুলে ভবনটিকে স্থির করে রাখতে সাহায্যকরবে। পেন্ডুলামটিকে নারানোর জন্য বিশাল একটা হাইড্রোলিক সিস্টেমের ব্যবহার করা হয়েছে।ভবনটিতে আরো কিছু চমৎকার ব্যপার স্যপার আছে। পোস্ট বড় হবে বলে লিখলাম না।

৩) One World Trade Center


লাদেন আম্রিকার দুইটা বিল্ডিং ভাইঙ্গা ফালাইছিল মনে আছে?? জি এই দুইটার উপর এই দালানটা বানানো হইতাছে। এখনো শেষ হয় নাই। তবে আগামি বছর শেষ হবে বলে ঘোষোনা দিয়েছে নির্মান কারি প্রতিষ্ঠান। এর আর একনাম ফ্রিডম টাওয়ার। ২০০৫ সালে প্রস্তাবনা আর ডিজাইন এর কাজ শুরু হয়। মুল নির্মান কাজ শুরু হয় ২০০৬ সালে। পুরাটাই অফিস হিসাবে ব্যবহ্রত হবে।


ভবনটির আর্কিটেকচারাল ডিজাইন কেরেছে skidmore owings & merrill এবং স্ট্রাকচারাল ডিজাইন কেরেছে WSP Cantor Seinuk ।তবে পুরো কমপ্লেক্স টা ডিজাইন করেছেন Daniel Libeskind । তিনি কিন্তু বেশ ভাল একটা প্রতিদন্দিতা করে এটার ডিজাইনার হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
ভবনট ভুমি থেকে ১০৪ টি ফ্লোর রয়েছে আর বেইজমেন্ট আছে ৫টি। এছারা এর সর্বোমোট ফ্লোর এরিয়া হচ্ছে ৩,৫০১,২৭৪ স্কয়ার ফিট। টাওয়ার সহ এর উচ্চতা ১৭৭৬ ফিট। ৭৩ টি লিফট রয়েছে যাদের প্রতি সেকেন্টে গতি ১০ মিটার


মজার ব্যপার হচ্ছে এটার এন্টেনা টি। এত উপরে তিনটি ধাপে এটির কাজ করা হয়। মুলত ভবনটির উচ্চতা বেশি হওয়ার একটি মুল কারন হচ্ছে এই এন্টেনাটি। তবে আমার কাছে এর সম্পর্কে বেশ ভাল তথ্য নেই। পরে এক সময় দেয়ার চেষ্টা করা হবে।

২) Makkah Royal Clock Tower Hotel(Abraj Al Bait)


পবিত্র হারাম শরিফের পাশেই এই ভবটি অবস্থিত। অনেকেই বিষয়টি জানেননা যে এটি বিশ্বের দ্বিতীয় উচ্চতম ভবন। এছারা এটি পৃথিবীর সবচেয়ে উচ্চ ক্লক টাওয়ার(ঘরি যুক্ত টাওয়ার), সবচেয়ে বৃহৎ ঘড়ি এবং সর্ববৃহৎ ফ্লোর এরিয়া সহ হোটেল কমপ্লেক্স। মুলত হজ করতে আসা হাজিদের একসাথে এবং কাবার খুব কাছাকাছি থাকার সুবিধা করে দেয়ার জন্য এটি নির্মান করা হয়। ভবনটি নির্মান করার জন্য অটোমন সম্রাজ্যের আমলের অনেক পুরানো মসজিদ আর বাড়ি ( আজাদ দুর্গ সহ) ভেঙ্গে ফেলা হয়। যা নিয়ে তুরস্ক আর বেশ কিছু ইসলামি দেশের সাথে আল সৌদ এর কুটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটে।মুল ভবনটি ছারাও এখানে আরো ৬টি আলাদা ভবন রয়েছে যাদের প্রত্যেকে ৪০ তলার উপরে।লিস্ট টা নিচে দেয়া হল।
Tower Height Floors Completion
Hajar 260 metres (850 feet) 48 2011
ZamZam 260 metres (850 feet) 48 2011
Maqam 250 metres (820 feet) 45 2012
Qibla 250 metres (820 feet) 45 2011
Marwah 240 metres (790 feet) 42 2008
Safa 240 metres (790 feet) 42 2007


২০০২ সালে এটার প্রস্তাবনা আর ডিজা্ইন এর কাজ শুরু হয়। নির্মান কাজ শুরু হয় ২০০৪ সালে আর শেষ হয় ২০১২ সালে। পুরো কমপ্লেক্সটির মালিক বিন লাদেন গ্রুপ। কি চেনা চেনা লাগে। এটা সম্পর্কে পরে আসতেছি। আর্কিটেচারাল, স্ট্রাকচারাল সহ যাবতীয় ডিজাইন এবং সুপারভিশন এর কাজ করেছে Dar al-Handasah Shair & Partners নামক লেবানন ভিত্তিক বিশ্বের শীর্ষ স্থানিয় এই ফার্মটি। মুল ডিজাই করেছেন আর্কিটেক্ট Mahmoud Bodo Rasch ।নির্মানকারি প্রতিষ্ঠান, মালিক, এবং ডেভলপার হল বিন লাদেন গ্রুপ । জ্বি এরাই ওসামা বিন লাদেন এর নিকটাত্বিয় স্বজন। এদের সাথে আল সৌদ পরিবারের দহরম মহরম সম্পর্ক। আবার আল সৌদ এর কাছে আমেরিকা তেলের বিনিময়ে অস্ত্র বেচত। এবার বুঝা গেল লাদেন সন্ত্রাসী করার জন্য এত অর্থ এবং অস্ত্র কোথায় পেত??
ভবনটির উচ্চতা ১৯৭২ ফিট। মূভবনটিতে ভুমি থেকে ১২০ টি ফ্লোর আছে। আর বেইজমেন্টে আছে ৩টি। সর্বোমোট ফ্লোর এরিয়া আছে ৩,৩৪৩,৬৬০ স্কয়ার ফিট। ৯৬ টি লিফট ব্যবহৃত হয় মুল ভবনটিতে। এখানে একটি মসজিদ আছে যেখানে একসাথে ১০,০০০ লোক নামাজ পরতে পারে। এক সাথে ১০০০ এর উপর গাড়ি পার্কিং করতে পারবে। একটি ২০ তলা শপিং শল আছে। এছারা এখানে পুরো কমপ্লেক্সটিতে একসাথে ১,০০,০০০ লোক থাকার ব্যবস্থা আছে।


এবার আসি এটির সবচেয়ে মজার বিষয় টি নিয়ে। এই ঘরিটি এই মুহুর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ঘরির মর্যদা নিজের করে নিয়েছে। কেন??
কারন এর আকার, আয়তন এবং অবস্থান। ১৪১ ফিট বাই ১৪১ ফিট এটির আকার। চারদিকে মুখ করে এটি তৈরি করা হয়েছে। আর একদম উপরের চাদ যুক্ত মিনারটি ২৭১ ফিট লম্বা। সৌদি সরকারি হিসাব মতে এটি নির্মান করতে ব্যায় হয় সর্বোমোট ১৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার।

১) Burj Khalifa


এইটা সম্পর্কে সবাই কমবেশি জানি। ইউনাইটেড আরব আমিরাতের দুবাই শহরে অবস্থিত। ২০০৩ সালে এটার প্রস্তাবনা এবং ডিজাইন এর কাজ শুরু হয়। নির্মান কাজ শুরু হয় ২০০৪ সালে। ২০১০ সালে এসে মাত্র ৬ বছরে এর নির্মান কাজ শেষ হয়। পৃথিবিতে যত ভবন আছে উচ্চতার দিক দিয়া একটাও এটার ধারে কাছেও নাই। মুল মালিক হচ্ছে Emaar Properties নামক একটি দুবাই ভিত্তিক কোম্পানি।


পুরো কমপ্লেক্স টি প্রায় ৩০,০০০ এর উপর ঘরবাড়ি নির্মান করেছে। এছারা এখানে প্রায় ৯ টি হোটেল কোম্পানি রয়েছে। ৭.৫ একর জমির উপর একটি পার্ক আছে, আছে কমপক্ষে ১৯টি আবাসিক টাওয়ার ভবন, এছারা ১২০০+ দোকান নিয়ে আছে The Dubai Mall । আছে ৩০ একর জায়গার উপর মানুষ্য নির্মিত এতটি কৃত্তিম লেক।


মুল ভবনটি ২৭১৭ ফিট উচু। ভুমি থেকে উপরে ১৬৩ টি ফ্লোর আছে। নিচে মানে বেইজমেন্ট আছে ১টি। প্রায় ৩০০০ গাড়ি পার্কিং এর সুব্যবস্থা আছে। আর্কিটেকচারাল এবং স্ট্রাকচারাল ডিজাইন করেছে (ডিটেইলিং) Skidmore Owings & Merrill । চিনছেন?? মুল আর্কিটেক্ট হচ্ছেন Adrian Smith (এই লোকের ক্যরিয়ারে ছোটখাট কোন বিল্ডিং নাই)। আর স্ট্রাকচারাল ডিজাইন করেছেন William F. Baker (আর এক বস)। কন্সট্রাকশন কন্ট্রাকটর হচ্ছে Samsung C&T Corporation ।


মজার ব্যপার হচ্ছে এত উপরে যখন উঠা হয়। সবচেয়ে বড় প্রবলেম হয় বাতাস। তার উপর মরুভুমির দেশ। তো এ সমস্যা ডিজাইনাররা কিভাবে
সমাধান করলেন?? তারা যেটা করলেন তা হল পুরো ভবন টাকে একটা তিনকোনা আকারে ডিজাইন করলেন। কারন এতে বাতাস খুবসুন্দর ভাবে পাস করে যেতে পারবে। কিন্তু তার পরও যে চাপ থাকে তাতে যেকোন সাধরন গ্লাস ভাঙার জন্য যথেস্ট। তো এই সমস্যার সমাধান দেখতে হলে আপনাদের কে মিশন ইম্পসিবল ৪ দেখতে হবে। উত্তর পেয়ে যাবেন।



পোস্টের প্রথমেই আপদের যে ওস্তাদরে দেখাইছিলাম উনি কিন্তু একটা স্কাইস্ক্রাপার ডিজাইন করছেন। এবং সেটাই প্রথম। আগের পোস্টের ৯ নাম্বার যে ভবনটা দেখসেন সেইটা। এখন পর্যন্ত উনাকে স্কাইস্ক্রাপার ডিজাইনের জনক মানা হয়। এবং ওই ভবনটার সাথে উনার নাম ওতোপ্রতো ভাবে জরিত। পৃথিবির সকল স্কাইস্ক্রাপার আার্কিটেক্টরা উনাকে ওস্তাদ এবং নিজেদেরকে শিষ্য মেনেনেন এক কথায়। দুঃখের ব্যপার হল আমরা একটা প্রযন্ম তৈরি হচ্ছি যারা এই সব লোকদের সম্পর্কে একদমই জানিনা। আমার এই পোস্ট টিকে এই সফল বাঙালি আর্কিটেক্ট কে উৎসর্গ করলাম




বি: দ্র: পোস্টটি আমার আর একটি ওয়াচে থাকা আইডি ইঞ্জি: বশর ছিদ্দিকী তে আগেই লিখিত। এখন এই সেইফ আইডিতে আবার লিখলাম। যারা আগে পরেছেন। তাদের সময় নস্ট করার জন্য দুঃখিত।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৪০
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

সততা হলে প্রতারণার ফাঁদ হতে পারে

লিখেছেন মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম নাদিম, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৯

বিষয়টি আমার ভালো লেগেছে। ক্রেতাদের মনে যে প্রশ্নগুলো থাকা উচিত:

(১) ওজন মাপার যন্ত্র কী ঠিক আছে?
(২) মিষ্টির মান কেমন?
(৩) মিষ্টি পূর্বের দামের সাথে এখনের দামের পার্থক্য কত?
(৪) এই দোকানে এতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০, কিংবা ২/১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, বুঝবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



আপনার পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, তখন খোঁজ নিলে দেখবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

কোন বিষয়ের উপর অনেক মানসম্পন্ন পোষ্ট লিখলেও সামুতে আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×