somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার ছুডু বেলা-১ :( :(

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমি যখন প্রথম প্রাইমারি শেষ করে হাই স্কুলে যাই তখনকার ঘটনা।
প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা হেটে স্কুলে যাইতাম। আগেই বলে রাখি আমাদের গ্রামের বাড়ি বরিশালের তালতলির একবোরে প্রত্যেন্ত অঞ্চলে। স্কুলের শিক্ষক ছাত্র নির্বিশেষে সবার প্রধান পরিধানের বস্ত্র ছিল লুঙ্গি এবং জামা। আমাদের হিন্দু একজন ইংরেজির স্যার ছিলেন মনিন্দ্র চন্দ্র যিনি একাই প্যান্ট নামক বস্ত্র পরতেন যাকে ছোটদের ভাষায় বলা হত ঠোঙ্গা।

সার্ট গেন্জিতে কোন বাধ্যবাধকতা ছিল না। কিন্তু লুঙ্গি ছিল একটা কমন পোষাক। তো আমি ছোট থেকেই লুঙ্গি পরিধান শাস্ত্রে খুব দুর্বল ছিলাম। কোন ভাবেই বজ্জাতের লুঙ্গিটা আমার পরনে ৪ মিনিটের বেশি থাকত না। যার কারনে প্রতি ৪ মিনিটে এই বিদঘুটে বস্ত্র আমাকে খুলে আবার সযোরে বাধতে হত। দেখা যাইত স্যার বলল সাবাইরে পরিক্ষার খাতা বিলি কর। আমি খাতা দেয়ার মাঝখানে লুঙ্গিখানা এক হাত দিয়ে ধরে আর একহাত দিয়ে অতি কস্টে খাতা বিলি করতেছি। একদিন ক্লাসে স্যার দারা করাইলেন পরা জিজ্ঞেস করার জন্য। আমি পরা বলতে শুরু করছি ওমনি দেখি লুঙ্গি খানা পিছনের হারামজাদা ঠেঙ দিয়া টান দিছে। তারাতারি ইজ্জত বাচাইতে লুঙ্গি খানা টাইনা ধরলাম। হঠাৎ স্যার এর চোখ পরল। স্যার কয় কিরে তোরে জিগাইলাম পরা তুই লুঙ্গি টাইনা ধরসস কেন?? কি কমু।
তার পর যা ঘটল তার বলার কথা না। এত গুলা পোলামাইয়ার সামনে স্যার আমারে লুঙ্গি বান্ধার প্রাকটিস করাইলেন। /:) /:)

সবচেয়ে দুঃখ জনক ঘটনা ঘটছিল একবার ধানের দিনে। উঠানে নতুন কাটা ধানের উচু পাজার উপর থেকে লাফের প্রাকটিস করছিলাম আমরা বারির সব সমবয়সি কাজিন রা। সবাই লুঙ্গি মাল কাচা মাইরা নিছিলাম যাতে কোন দুর্ঘটনা না হয়। তো ঠিক উঠানের সামনের দিকে বারির সব মেয়েরা বসছিল সাথে ছিল গ্রামের কিছু উঠতি সুন্দরি। আমি খুব হাক ডাক করে সবার দৃস্টি আকর্ষন করলাম "দেখ এই আমি লাফ দিতাছি''। বড্ড শরমের কথা। খেয়াল করি নাই লাফ দেয়ার আগে আমার কাচা যে খুলে গেছে। ফলাফল যা হবার তাই হইল। মাটিতে ল্যন্ড করার পর আমি ''এক পোষাকে"। উপরে তাকাইয়া দেখি আমার বজ্জাত লুঙ্গিখানা হাওয়ায় ভাসিতেছে। X(( X(( X((

একবার স্কুলের সামনের মাঠে ক্লাস শেষে ফুটবল খেলতাছিলাম। লুঙ্গি মাল কাচা মাইরা জোরছে সবাই মিল্লা বলে পিছে দৌরাইতাছিলাম। হঠাৎ কইরা এক হারামজাদা লুঙ্গি ধইরা টান দিল। অর্ধেক শালার হাতে রইয়া গেল আর বাকি অর্ধেক আমার পায়ে বাইজা মাটিতে রইয়া গেল। আর আমি ??
আমি আর বল গোল বারের ভিতর ইজ্জত রক্ষার জন্য জালের মধ্যে হান্দাইয়া গেলাম। হালার পুতে তার পর ৪ দিন টানা স্কুলে আয় নাই। আর যেই দিন আইছে সেই দিন আমার ছিরা লুঙ্গিডা এন্টিক হিসাবে নিয়া আইছে সবাইরে দেখানোর লাইগা। স্যার তো আরো এক কাঠি সরেস। তিনি সেইটা এখনো সযত্নে রাইখা দিছেন। :( :(

গত বছর যখন স্কুলে গেলাম একটা প্রোগ্রামে স্যার আমারে চুপি চুপি বলতেছেন বাসার তোমার সেই লুঙ্গিটা এখনো আমার কাছে আছে। স্যার এখন রিটায়ার্ট। বৃদ্ধ মানুষ একা একা থাকেন। মনে হয় মাঝে মধ্যে আমাদের এই জিনিষ গুলা দেখেন। :( :(

আরো অনেক মজার স্বৃতি আছে ছোটবেলার। আস্তে আস্তে লিখব।
আমার শৈশব আর কৈশর কেটেছে গ্রামে। এমন একটা গ্রামে যেখানে বিদ্যুৎ ছিলনা। টিভি, ক্যাসেট আর সিনেমা ছিল না। ছিলনা আধুনিক অনেক কিছুই। অথচ এখন সেই গ্রামে কাটানো দিন গুলোকেই জীবনের স্বর্নালি সময় মনে হয়।
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

EU বাংলাদেশ, আফ্রিকা ও আরবদের সাহায্য করার চেষ্টা করে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১০ ই জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৩



EU বাংলাদেশকে বিবিধভাবে সাহায্য করে আসছে স্বাধীনতা সংগ্রামের শুরু থেকে; বিশেষ করে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গুলোকে সচল করার জন্য সহযোগীতা করতে চায়। আমাদের দেশে ও আফ্রিকায় ভালো যা ঘটছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে কোকের আতারোট শিল্প অঞ্চলের কারখানা: ফিলিস্তিনি স্টেইটহুড, স্বনিয়ন্ত্রণ অধিকারকে অসমম্মান করে।

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১০ ই জুন, ২০২৪ রাত ১১:১৭

কোকা-কোলার পূর্ব জেরুজালেমের আতারোট শিল্প অঞ্চলের কারখানাটিকে ঘিরে শুরু থেকেই তীব্র বিতর্ক আছে। এই এলাকাটি আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের অধিকৃত এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

জঘন্যতম রেফারির বলি বাংলাদেশ

লিখেছেন অধীতি, ১১ ই জুন, ২০২৪ রাত ১২:২১

আজকে রেফারি খেলছে মূল খেলা। গতকালকে পাকিস্তান লর্ডগিরি করে হারছে কিন্তু এই দিক থেকে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে গেছে। দুইটা ওয়াইড দেয়নি। রেফারি তিনটা আউট দিছে তাড়াহুড়ো করে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিপক্ক প্রেম: মানসিক শান্তি

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১১ ই জুন, ২০২৪ রাত ২:৩০






জীবনের নির্দিষ্ট একটি সময়ে পৌঁছানোর পর, মানুষ যখন পরিপক্ক হয়ে ওঠে, তখন প্রেমের মাপকাঠি বদলে যায়। তখন আর কেউ প্রেমে পড়ার জন্য শুধু সৌন্দর্য, উচ্ছ্বলতা, কিংবা সুগঠিত দেহ খোঁজে না।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রবীন্দ্রনাথের শেষ কটা দিন কেমন কেটেছিল?

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১১ ই জুন, ২০২৪ সকাল ১০:১১




১৯৪১ সালে জীবনের শেষ দিনগুলোয় অসুখে ভুগছিলেন কবি। সারা জীবন চিকিৎসকের কাঁচি থেকে নিজেকে বাঁচিয়েছেন, এবার বুঝি আর তা সম্ভব নয়। হোমিওপ্যাথি, অ্যালোপ্যাথি চলছেই। কিন্তু কিছুতেই কিছু... ...বাকিটুকু পড়ুন

×