রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিলের দাবিতে সুন্দরবনমুখী লংমার্চ খুলনা পৌঁছেছে। যাত্রা শুরুর পর চতুর্থ দিন শুক্রবার খুলনায় পৌঁছান লংমার্চে অংশগ্রহণকারী কয়েক হাজার মানুষ।
Published : 27 Sep 2013, 05:13 PM
বিকালে জনসভা শেষে এখানেই রাতযাপনের কথা রয়েছে তাদের। শনিবার সকালে চূড়ান্ত গন্তব্য দিগরাজের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে সুন্দরবন রক্ষার এই লংমার্চ।
শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে যশোর থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা হন আন্দোলনকারীরা। পথে যশোরের নওয়াপাড়া ও খুলনার ফুলতলায় দুটি পথসভা হয়। দুপুর ২টার দিকে তারা দৌলতপুরে পৌঁছান।
ফুলতলা বাস স্ট্যান্ডে পথসভায় তেল- গ্যাস- খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ- বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, “বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনেক বিকল্প আছে, অনেক স্থান রয়েছে। সেই বিকল্প পথে না গিয়ে সরকার ভারতীয় আধিপত্যের তাঁবেদারি করে সুন্দরবন ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে।
প্রকৌশলী শহীদুল্লাহ বলেন, “ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার কর্পোরেশন (এনটিপিসি) নিজেদের দেশে তিনটি রাজ্যে এই ধরনের কয়লাভত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে গিয়ে প্রত্যাখাত হয়েছে। সেই এনটিপিসি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের নামে সুন্দরবন ধ্বংসের প্রকল্প হাতে নিয়েছে।”
সুন্দরবন রক্ষা করে দেশের স্বার্থ অক্ষুন্ন রাখতে জনগণকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
দুপুর আড়াইটায় ফুলতলা থেকে লংমার্চ নগরীর দৌলতপুর বীনাপানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আরেকটি জনসভায় মিলিত হয়। জাতীয় কমিটির স্থানীয় আহবায়ক ও সাবেক এমপি শেখ সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন।
সভা শেষে লংমার্চের বহর খালিশপুরের শিল্পাঞ্চলে একটি পথসভা করে। লংমার্চকারীরা স্থানীয়দের মধ্যে প্রস্তাবিত রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষতিকর দিক নিয়ে প্রচারপত্রও বিলি করে।
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, আগামী ২২ অক্টোবর ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিস্থাপন হবে। তবে কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হলে সুন্দরবন হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছে পরিবেশবিদসহ রামপালের বাসিন্দারা।
এই প্রতিবাদের অংশ হিসাবেই মঙ্গলবার ঢাকা থেকে লংমার্চ শুরু করেন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রবিরোধীরা। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার ঘোষণা শুনে রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিস্থাপন প্রতিহতেরও ঘোষণা দিয়েছে তেল -গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি।
২৮ সেপ্টেম্বর বাগেরহাটের মংলা উপজেলার দিগরাজ এলাকায় সমাপনী সমাবেশ ও ঘোষণাপত্র পাঠের মধ্য দিয়ে এ লংমার্চ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
সাংস্কৃতিক সংগঠন
ঢাকা থেকে রামপালের উদ্দেশ্যে সুদীর্ঘ এই লংমার্চে অংশ নেয়াদের উজ্জীবিত রাখতে বিভিন্ন পরিবেশনায় সরব আছে আটটি সাংস্কৃতিক সংগঠন।
সংগঠনগুলো হচ্ছে, সমগীত, গায়েন, এই বাংলা, ঐকিক, চারণ, বিবর্তন, উদীচী ও সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন। প্রথম চারটি সংগঠন সাংস্কৃতিক মঞ্চের ব্যানারে একসঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালন করছে।