ইরাকের কুর্দিস্তানে বিনা বিচারে ৭৯ বাংলাদেশি আটক আছেন বলে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে খোঁজ নিতে বাগদাদে বাংলাদেশ মিশনকে নির্দেশ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
Published : 28 Sep 2013, 12:27 PM
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মো. শামীম আহসান শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিষয়টি জানার পর বাংলাদেশ মিশন ইরাকি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।
“প্রকৃত ঘটনা বের করার পাশাপাশি আটকদের অবস্থা এবং এ পরিস্থিতিতে সরকারের করণীয় সম্পর্কে ধারণা দিতে তাৎক্ষণিকভাবে মিশনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।”
এ বিষয়ে রোববার সাংবাদিকদের বিস্তারিত তথ্য জানানো যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
কুর্দিস্তানের অনলাইন সংবাদপত্র রুদাও এক প্রতিবেদনে বলেছে, অনুপ্রবেশের অভিযোগে এসব বাংলাদেশি কয়েক মাস ধরে বিনা বিচারে আটক রয়েছে। তাদের স্বদেশের বদলে ইরান পাঠানো হতে পারে।
কুর্দিস্তান প্রদেশের রাজধানী সুলাইমানির বন্দিশিবিরের প্রধান হিয়া শেখ আলী বলেন, এই বন্দিদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য আদালতের আদেশের অপেক্ষায় রয়েছেন তারা।
“আমরা তাদের থাকা-খাওয়ার সব ব্যবস্থাই করেছি,” বলেন তিনি।
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাকে শ্রমিক সঙ্কটের কারণে অনেকে কাজের জন্য দেশটিতে পাড়ি দিচ্ছে, এর মধ্যে বাংলাদেশিরাও রয়েছে। কুর্দিস্তানে মূলত পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে অভিবাসী শ্রমিকরা।
আটকে থাকা বাংলাদেশি আমজাদ আলী বলেন, “বাড়ি বিক্রি করে এখানে এসেছি উপার্জনের আশায়। এখন যদি খালি হাতে ফিরতে হয়, এর উত্তর কে দেবে?”
গত আট মাস ধরে আটক রয়েছেন আমজাদ আলী। “প্রতিদিনই তারা বলে, আদালতে পাঠাবে, কিন্তু পাঠায় না। এখন শুনছি, আমাদের ইরান পাঠানোর চিন্তা করছে তারা।”
কুর্দিস্তান প্রদেশের সঙ্গে ইরানের বিশাল সীমান্ত। ইরাকি কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ইরান সীমান্ত দিয়েই অবৈধভাবে ঢোকার প্রবণতা বেশি।
আটক মুহাম্মদ আতিক বলেন, “আমরা খুব গরিব, কাজ দরকার, তাই অবৈধভাবে এসেছি।”
ধরা পড়ার আগে কয়েকমাস কাজ করতে পেরেছিলেন এই ব্যক্তি। আটকের খবর বাড়িতে জানাননি তিনি।
প্রাদেশিক পুলিশ জানিয়েছে, তারা এই পর্যন্ত ১৮০ বাংলাদেশিকে আটক করেছে। এর মধ্যে বেশিরভাগকেই ফেরত পাঠানো হয়েছে। আর কিছু সংখ্যককে বিভিন্ন কোম্পানির কাজ নিয়ে ছাড়া পেয়েছে।
আতিক জানান, আটকের সময় তাকে জানানো হয়েছিল তিন মাসের মধ্যে তাকে ফেরত পাঠানো হবে। এখন আট মাস পেরিয়ে গেলেও তার কোনো সুরাহা হয়নি।
“ফিরতে হলে আমি দেশেই ফিরতে চাই, ইরানে নয়,” বলেন তিনি। আতিকের মতো আটক শামসু মিয়াও ইরান না যাওয়ার পক্ষে।