somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এখন সচেতন জনগণ আরো সচেতন

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতার পালাবদলের জন্য একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সব দলের অংশগ্রহণে আনন্দমুখর পরিবেশে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হোক সেটাই দেশবাসীর প্রত্যাশা; কিন্তু তাদের এ প্রত্যাশা কি পূরণ হবে? নির্বাচন-পূর্ব আবহাওয়া বার্তায় এ রকম আভাস খুব কমই মিলছে। বরং একটা দুর্যোগের আশঙ্কায় দেশবাসী আজ শঙ্কিত।
বিরোধী দল বলছে, নির্বাচন হতে হবে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে এবং এ দাবি সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের দাবিও বটে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দল বলছে, তাদের অধীনেই আসন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ ব্যাপারে তারাও অনমনীয়। প্রয়োজনে বিরোধী দল তথা জনসাধারণের আন্দোলনকে তারা কঠোর হাতে দমন করবে। এর ফলাফল যে ভয়াবহ একটা বিশৃঙ্খলা সে কথা কে না বুঝছে? ক্ষমতাসীন দল জানে, তাদের জনপ্রিয়তায় যে ধস নেমেছে, তাতে সুষ্ঠু নির্বাচনে তারা আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। সুতরাং যেকোনো উপায়েই হোক তাদের অধীনেই নির্বাচন করতে হবে।
এই বিশ্বাস এখন দৃঢ়মূল হয়েছে যে, ক্ষমতাসীন দলের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। এবং এর পরিণাম হবে খুবই খারাপ। রাতের আঁধারে যারা অন্যের বিলবোর্ড দখলের মতো অনৈতিক ও বেআইনি কাজ করছে, যারা প্রশাসনকে চরমভাবে দলীয়করণ করেছে এবং নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ও শক্তিশালী করার পরিবর্তে যারা একে দুর্বল করার প্রয়াসে লিপ্ত তারা যে নির্বাচনকে নিজেদের পক্ষে প্রভাবিত করবে তা বুঝতে হলে কোনো বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই।
যেখানে রাজনীতি ব্যর্থ নেতা-নেত্রীরা তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ এবং প্রতিহিংসাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন, জনগণের মতামতের কোনো মূল্য নেই, যেখানে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন, সেখানে পরিবর্তনটাই সবচেয়ে জরুরি, পদ্ধতিটা মুখ্য নয়। আর তাই আজকাল জনগণ ‘গণতন্ত্র’ শব্দটিকে ভয় পান। আমরা ’৭২-এর পর থেকেই দেখছি, এ দেশে গণতন্ত্রের দোহাই দিয়েই গণতন্ত্রকে হরণ করা হয়েছে, জনগণের অধিকারকে খর্ব করা হয়েছে। গণতন্ত্র শব্দটিকে রাজনৈতিক দল পৈতৃক সম্পত্তি হিসেবে অর্জন করেছে যেন। আমাদের দেশের রাজনীতিবিদদের ধারণা- চুরি করে হোক, সন্ত্রাস করে হোক, জনগণের অংশগ্রহণহীন, তথাকথিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এলেই গণতন্ত্র রক্ষা পায়।
এখন সচেতন জনগণ আরো সচেতন। তারা পরিবর্তন চান। এর মধ্যেই রয়ে গেছে মৃতপ্রায় গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ। আর তাই পরিবর্তন আসতেই হবে।
রাজনৈতিক আকাশে ঘন কালো মেঘ। যেকোনো সময় একটি বিশাল রাজনৈতিক ঝড় বাংলাদেশকে লণ্ডভণ্ড করে দিতে পারে। অস্তিত্বের সঙ্কটে ডুবে যাওয়া জাতি তখন আর সীমাহীন আনুগত্য নিয়ে চুপ করে থাকবে না। তাদের প্রার্থনার ভাষাও বদলে যাবে। প্রতি ফোটা রক্তের ভেতর তৈরি হবে ঘৃণা, যা মুছে ফেলার শক্তি কোনো দলেরই হবে না। হয়তো এখনো কিছুটা সময় হাতে আছে বিভাজন রেখাটিকে মুছে ফেলার। জনগণের চাওয়া-পাওয়াকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়ার।
ব্যক্তিগত স্বার্থ নয়, নয় প্রতিহিংসাÑ দেশ এবং জাতির স্বার্থকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। যদিও ইতিহাস বলে, আমাদের রাজনীতিবিদেরা সময়ের দাবিকে বুঝতে পারেন না। জনগণের নাড়ি বোঝার ক্ষমতা তাদের নেই। যে কারণে বারবার এ দেশে রাজনৈতিক পরিবর্তন এসেছে অন্যভাবে। সেটা কতটা শুভ বা অশুভ ছিল সে বিতর্কে না গিয়েও বলা যায়, জনগণই অনন্যোপায় হয়ে পরিবর্তন চেয়েছিলেন।
অতীত থেকে আজো আমরা শিক্ষা নিতে পারিনি। পারিনি অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে। তাই সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে ভাবতে যতটা ভালো লাগে, বাস্তবে হয়তো তা হবে না। হয়তো আসন্ন বিশাল ঝড়টাই নির্ধারণ করবে জাতির ভবিষ্যৎ। তবুও আশাবাদী হতে ক্ষতি নেই। কারণ আমরা তো জানি, আশাই শুধু আশা দিতে পারে আরেকবার স্বপ্ন দেখার।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নজরুলের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আমার গাওয়া ৩টি নজরুল গীতি শেয়ার করলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৫ শে মে, ২০২৪ রাত ২:১৩

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রাণপুরুষ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৩০৬ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে এক গরিব পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন স্বাধীনতা ও সাম্যের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেট্রোরেল পেয়েছি অথচ হলি আর্টিজানে নিহত জাপানিজদের ভুলে গেছি

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৫ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:১১

জাপানে লেখাপড়া করেছেন এমন একজনের কাছে গল্পটা শোনা৷ তিনি জাপানে মাস্টার্স করেছিলেন৷ এ কারণে তার অনেক জাপানিজ বন্ধু-বান্ধব জুটে যায়৷ জাপান থেকে চলে আসার পরেও জাপানি বন্ধুদের সাথে তার যোগাযোগ... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুদ্ধে নিহত মনোজ দা’র বাবা

লিখেছেন প্রামানিক, ২৫ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৭১ সালের এপ্রিলের ছব্বিশ তারিখ। দেশে তখন ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ শুরু হয়েছে। উচ্চ শিক্ষিত এবং কলেজ পড়ুয়া ছাত্রদের নিয়েই বেশি সমস্যা। তাদেরকে খুঁজে খুঁজে ধরে নিয়ে হত্যা করছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিয়ে থেতে ভাল্লাগে।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৫ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৯

আমার বিয়ে বাড়ির খাবার খেতে ভালো লাগে। আমাকে কেউ বিয়ের দাওয়াত দিলে আমার খুসি লাগে। বিয়ের দিন আমি সেজে গুজে বিয়ে বাড়িতে আয়োজন করা খাবার থেতে যাই। আমাদের এলাকায় বর্তমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

উসমানীয় সাম্রাজ্যের উসমান এখন বাংলাদেশে

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২৫ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২০



জনপ্রিয় ''কুরুলুস উসমান'' সিরিজের নায়ক Burak Ozcivit এখন বাংলাদেশে। বিগত কয়েক বছর ধরে তার্কির অটোমান সাম্রাজ্যের বিভিন্ন সুলতানদের নিয়ে নির্মিত সিরিজগুলো বিশ্বব্যপী বেশ সারা ফেলেছে। মুসলিমদের মাঝেতো বটেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×