বরাবরের মতো এবারো ব্যক্তি শ্রেণীর কর দাতাদের আয়কর বিবরণী (রিটার্ন) দাখিলের সময় বাড়িয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
Published : 30 Sep 2013, 02:18 PM
বোর্ডের আয়কর নীতি বিভাগের সদস্য সৈয়দ আমিনুল করিম জানান, এবার রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ানো হয়েছে এক মাস।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “যারা এখনো রিটার্ন জমা দেননি তারা আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত জমা দিতে পারবেন।”
নিয়ম অনুযায়ী, ৩০ সেপ্টেম্বর ছিল বিবরণী জমা দেয়ার শেষ দিন।
আমিনুল করিম বলেন, “ঈদ-পূজা মিলিয়ে অক্টোবরে ১০ থেকে ১২ দিনের মতো ছুটি থাকবে। তার আগে করদাতাদের একটি প্রস্তুতির বিষয় আছে। মূলত এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই সময় বাড়ানো হযেছে।”
অবশ্য এবার ই-টিআইএন চালু করা নিয়ে জটিলতাও রিটার্ন জমার সময় বাড়ানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে।
সময় বাড়ানোর বিষয়ে এনবিআরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয়কর অণুবিভাগের সাম্প্রতিক সম্প্রসারণ এবং পুনর্গঠনের কারণে অধিকাংশ করদাতার আয়কর সংক্রান্ত অধিক্ষেত্র (সার্কেল ও জোন) পরিবর্তিত হয়েছে।… এছাড়া সম্প্রতি করদাতাদের জন্য ই-টিআইএন কার্যক্রম চালু হয়েছে। নতুন ও পুরনো করদাতারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে টিআইএন নিবন্ধন ও পুনর্নিবন্ধন করে ই-টিআইএনসহ রিটার্ন দাখিল করছেন।
“ইন্টারনেটে টিআইএন রেজিস্ট্রেশন ও রি-রেজিস্ট্রেশন একটি নতুন পদ্ধতি হওয়ায় করদাতাদের এ পদ্ধতিতে স্বচ্ছন্দ হতে আরো সময় দেয়া প্রয়োজন বলে বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠন ও ট্যাক্সেস বার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে জাননো হয়েছে। এ অবস্থায় করদাতাদের সুবিধার্থে ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতাদের আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হলো।”
এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, অনলাইনে ই-টিআইএন পদ্ধতিতে পুনর্নিবন্ধনে ১০ অঙ্কের জায়গায় ১২ অঙ্কের ই-টিআইএন নম্বর দেয়ার ক্ষেত্রে কর সার্কেল ও জোন পরিবর্তনের কারণে করদাতারা ঝামেলার মুখোমুখি হচ্ছেন।
“এছাড়া আসন্ন ঈদুল আযহা ও দুর্গাপূজার কারণে ব্যবসায়ী করদাতাদের পক্ষে সময়মত আয়কর রিটার্ন দাখিল কর সম্ভব হবে না।”
এই যুক্তিতে ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের আয়কর বিবরণী জমা দেয়ার সময় এক মাস বাড়ানোর দাবি জানায় ব্যবসয়ীদের এ সংগঠন।
প্রতি বছর ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রিটার্ন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও প্রতি বছরই ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন মহলের দাবিতে শেষ মুহূর্তে এই সময় বাড়ানো হয়। গত বছর দুই দফায় এই সময় বাড়ানো হয় দেড় মাস।
রাজস্ব বোর্ডের হিসাবে, দেশের ৩৫ লাখ লোকের নামে কর সনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) থাকলেও নিয়মিত রির্টান জমা দেন ১৭ লাখের মতো। এর মধ্যে কর দিয়ে থাকেন দশ লাখ লোক।
গত ১৬ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকাসহ বিভাগীয় ও জেলা শহরে আয়োজিত আয়কর মেলায় এক হাজার ১১৭ কোটি ৪০ লাখ ২৩ হাজার ৪৩৯ টাকার রাজস্ব আদায় হয়, যা গত বছরের চেয়ে সোয়া তিনশ কোটি টাকা বেশি। গত বছর কর মেলায় ৯৭ হাজার করদাতা কর পরিশোধ করেন, যাতে সরকারের ঘরে রাজস্ব আসে ৮৩৮ কোটি টাকা।
এবারের মেলায় রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার কোটি টাকা।
সরকারের মেয়াদের শেষ বছরে এবার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ৬৭ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা, যার মধ্যে ৪৮ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা আসবে আয়কর বাবদে।