স্বাধীনতার পর পাকিস্তানি বাহিনীকে সহায়তাকারী বাঙালিদের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে খন্দকার মাহবুব হোসেনের ভূমিকার কথা তুলে ধরে তার এখনকার তৎপরতার সমালোচনা করেছেন আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম।
Published : 02 Oct 2013, 11:22 PM
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ডের রায়ের সমালোচনাকারী মাহবুবের প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “১৯৭২ সালে কোলাবরেটর আইনে যখন বিচার চলছিল, তখন ঢাকার একটি ট্রাইব্যুনালে বিশেষ পিপির দায়িত্ব পালন করেন মাহবুব হোসেন। এখন সেই ঘাতকদের পক্ষ নিয়ে তিনি কথা বলছেন।”
মুক্তিযুদ্ধের পর শুরু হওয়া বিচার কার্যক্রম বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে থেমে যায়। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৯৭৩ সালের আইন সংশোধন করে যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু করেছে।
এই পর্যন্ত রায়ে জামায়াতে ইসলামীর পাঁচ শীর্ষনেতার সাজা হয়েছে, এর মধ্যে মৃত্যুদণ্ড হয়েছে চারজনের। সপ্তম রায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মাহবুব হোসেন যুদ্ধাপরাধের বর্তমান বিচারের সমালোচনা করে আসছেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মাহবুব হোসেন মঙ্গলবার সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায়ের পর একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের বিচারক ও বিচার সংশ্লিষ্টদের বিচারের হুমকিও দেন।
তিনি বলেন, “এই বিচারটি একটি প্রহসনের বিচার, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বিচার।যারা এই প্রহসনের বিচারে সম্পৃক্ত ছিল, ইনশাল্লাহ বাংলার মাটিতে তাদেরও বিচার হবে।”
তার ওই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বুধবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কামরুল বলেন, “বিচারক ও বিচার সংশ্লিষ্টদের বিচারের হুমকি দেয়া আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বড় অন্তরায়। তার (মাহবুব হোসেন) এই হুমকি আদালত অবমাননার সামিল।”
মাহবুব হোসেনের বিরুদ্ধে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেবে না জানিয়ে তিনি বলেন, “তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া যায়, আদালত সেই চিন্তা করবে, আমরা সেই অপেক্ষায় আছি।”
যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে মঙ্গলবার দেয়া রায় আইন মন্ত্রণালয়ের তৈরি এবং তা আগেই ফাঁস হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে গণহত্যায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত সালাউদ্দিন কাদেরের পরিবার ও বিএনপি।
কথিত রায় ফাঁসের সঙ্গে আইন মন্ত্রণালয়ের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “কোনো কিছু হলে সেখান (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল) থেকে হতে পারে।”
খসড়া রায় ফাঁসের তথ্য জানিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নিবন্ধক সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পর গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে বলে জানান তিনি।
“এর সঙ্গে কারা জড়িত তা অনুমান করা গেলেও তদন্ত করে তাদের মুখোশ উন্মোচন করা হবে।”