somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সিজোফ্রেনিয়া রোগী শনাক্ত করার উপায়

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর নিজস্ব চিন্তা ও আচরণের মধ্যে সমন্বিত ধারা বজায় থাকে না। তাদের ব্যক্তিগত ও গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হয়। নিজেকে তারা গুটিয়ে নেয়। এড়িয়ে চলে যে কোনো সামাজিক অনুষ্ঠান। একাকী জীবনের বৃত্তবন্দী চক্রে আটকে পড়ে তারা।এই রোগে মনের নানা ক্রিয়া-বিক্রিয়ার মাঝে সামঞ্জস্যপূর্ণ মিল হারিয়ে যায়, বিশৃঙ্খলার জট তৈরি হয় মনের ভেতর। ফলে ব্যক্তিত্বের কাঠামো নড়বড়ে হয়ে যায়, অধঃপতিত হয় ব্যক্তিত্বের নানা বৈশিষ্ট্য।
যদি চিকিৎসা না করা হয়, বা চিকিৎসা শুরু হতে বিলম্ব ঘটে তবে রোগ ক্রমান্বয়ে জটিল হতে থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অন্তর্নিহিত তীব্রতার কারণেও সিজোফ্রেনিয়া দীর্ঘায়িত ও কমপ্লেক্স হতে পারে।
সিজোফ্রেনিয়া শনাক্ত করার জন্য রয়েছে কিছু বৈশিষ্ট্য। কিন্তু সব সিজোফ্রেনিয়া রোগের বহিঃপ্রকাশ একই রকম ঘটে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্বতন্ত্র ধারার উপসর্গ দেখা যায় রোগীর ভেতর। সাধারণত সমস্যা শুরু হয় চিন্তার
অস্বাভাবিকতার মধ্য দিয়ে। চিন্তাশক্তির অস্বচ্ছতার কারণে ধাঁধার মধ্যে পড়ে যায় রোগী। যে কোনো বিষয়ই তখন তার কাছে জটিলতর মনে হতে থাকে। ধীরে ধীরে চিন্তার বিভ্রান্তির সঙ্গে যুক্ত হয় আবেগীয় সমস্যা-অ্যাংজাইটি কিংবা ডিপ্রেশনেও ডুবে যেতে পারে রোগী। জট পাকতে থাকা চিন্তার শুরু থেকেই দৃঢ় ও বদ্ধমূল ভ্রান্ত বিশ্বাসের আসন গেড়ে বসতে পারে রোগীর ভেতর। নিজের সঙ্গে নিজেই বিড়বিড় করে অনর্গল কথা বলতে পারে, একা একা হাসতে পারে, নতুন নতুন শব্দ তৈরি করতে পারে, অথবা পুরনো জানা শব্দের নতুন অর্থ বের করতে পারে রোগী। মনের চিন্তা এবং আবেগীয় অবস্থা আক্রান্ত হওয়ার পরই আচরণগত অস্বাভাবিকতা শুরু হয়। হঠাৎই সামঞ্জস্যপূর্ণ আচরণে বিঘ্ন ঘটতে পারে, অতি ধীরগতিতেও আচরণের নেতিবাচক পরিবর্তন চলে আসে সিজোফ্রেনিক্সদের ভেতর। ভয় কিংবা দৃঢ়মূল অলীক বিশ্বাসের কারণে রোগী নিজেকে গুটিয়ে নিতে পারে, সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ ছেড়ে দিতে পারে। ক্রমান্বয়ে নির্দিষ্ট গণ্ডিতে নিজেকে সেঁটে ফেলতে পারে, একাকী জীবনের বৃত্তবন্দী চক্রে আটকে যেতে পারে।
এমনও হতে পারে, রোগীর ভেতর আগ্রাসী ধ্বংসাত্মক উন্মাদনা জেগে উঠেছে, জিনিসপত্র ভাঙচুর করছে, অন্যকে আঘাত করছে। নিজস্ব কর্মকাণ্ডের যৌক্তিকতা অনুধাবন করতে পারে না বলেই রোগীর আচরণের সঙ্গে বাস্তবতার সম্পর্কে ছিন্ন হয়ে যায়, অবাস্তব জগতের গোলকধাঁধায় আটকে যায় রোগী। এ ধরনের সংকটজনক পরিস্থিতি সাইকিয়াট্টিক ইমারজেন্সি হিসেবে চিহ্নিত হয়। একপর্যায়ে রোগীর প্রত্যক্ষণে সমস্যা শুরু হয়ে যেতে পারে। একা একা আছে রোগী, আশপাশে কেউ নেই, কেউ কথা বলছে না; কিন্তু রোগী কানে কথা শুনতে পারে। কান খাড়া করে অনেক সময় কথা শোনার চেষ্টা করে। সিজোফ্রেনিয়া রোগের গুরুত্বপূর্ণ একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে কথা শোনার ব্যাপারে। সাধারণত রোগী দুই-তিনজন বা বহুজনের কথা শুনতে পায়। রোগীর মনে হতে থাকে কথাগুলো তাকে উদ্দেশ্য করেই বলা হচ্ছে। তবে কথা শোনার ব্যাপারে বহু বৈচিত্র্যতা রয়েছে। এমনও হতে পারে, নিজের চিন্তা নিজেই কানে শুনতে পায় রোগী। বিশ্বাস করে, সে যা চিন্তা করছে এগুলো তার চিন্তা নয়।
কারা এই রোগে ভোগে
সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পূর্বনির্ধারিত নির্দিষ্ট কোনো মাপকাঠি নেই। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা অতিমাত্রায় লাজুক, কিংবা নিজেই নিজের মাঝে ডুবে থাকে এমন ব্যক্তিত্বের মানুষই বেশি ভুগে থাকে এই রোগে। সিজোফ্রেনিয়া রোগের পারিবারিক ইতিহাস আছে, এমন জনগোষ্ঠীও রোগটিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। ১৫-৪৫ বছরের মধ্যে ব্যাধিটি শুরু হতে পারে। তবে আক্রান্ত রোগীদের পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, পুরুষের ব্যাধিটি শুরু হওয়ার গড় বয়স ২৮ বছর, মহিলাদের ৩২ বছর। ব্যতিক্রমধর্মী এক ধরনের সিজোফ্রেনিয়া আরও বিলম্বে শুরু হতে পারে। এটিকে বলে 'লেট অনসেট সিজোফ্রেনিয়া'। দেখা গেছে ৪৫ বছরের পর, এমনকি ৫০-৭০ বছরের মধ্যেও রোগটি শুরু হতে পারে।

মহিলাদের চেয়ে পুরুষরা বেশি হারে এবং বেশি জটিলতা নিয়ে আক্রান্ত হয়। অত্যধিক মানসিক চাপের মুখোমুখি হলেও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, সঠিক সময়ে চিকিৎসা পেলে রোগের উন্নতি ঘটে এবং রোগী সুস্থ হয়ে ওঠে।
নেট থেকে সংকলিত
আমার ব্লগে দেখুনঃ
http://ptohelp.blogspot.se
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (দ্বিতীয় অংশ)

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:০৫


আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (প্রথমাংশ)
আমাদের সদ্য খনন করা পুকুরটা বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেল। যা মাছ সেখানে ছিল, আটকানোর সুযোগ রইল না। আমি আর দুইবোন শিউলি ও হ্যাপি জালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×