হেফাজতবিরোধী মতিঝিল অভিযান নিয়ে বিকৃত তথ্য প্রচারের অভিযোগে দুই মাস আগে গ্রেপ্তার মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সেক্রেটারি আদিলুর রহমান খান শুভ্র জামিন পেয়েছেন।
Published : 08 Oct 2013, 05:18 PM
সাবেক এই ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলায় মঙ্গলবার ছয় মাসের জন্য জামিন দেয় হাই কোর্টের বিচারপতি বোরহান উদ্দিন ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের বেঞ্চ।
তাকে কেন স্থায়ী জামিন দেয়া হবে না, আদালত সেই রুলও দিয়েছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন আদিলের আইনজীবী মো. রুহুল আমিন ভূঁইয়া।
এই মামলায় জামিন হওয়ায় আদিল মুক্তি পেতে যাচ্ছেন কি না- জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান ওই আইনজীবী।
হেফাজতবিরোধী মতিঝিল অভিযান নিয়ে বিকৃত তথ্য প্রকাশের অভিযোগে গত ১০ অগাস্ট রাতে গুলশানে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার হন আদিল। তারপর থেকে কারাগারে রয়েছেন তিনি।
বিএনপি-জামায়াত সরকার আমলের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আদিলের পক্ষে উচ্চ আদালতে জামিন আবেদনের শুনানিতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এ জে মোহাম্মদ আলী এবং আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিনও ছিলেন।
আদিল যখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন, তখন অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন মোহাম্মদ আলী। তিনি এখন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি।
অন্যদিকে আমিন উদ্দিন আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের হয়ে কয়েক বছর আগে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ছিলেন। তখন সভাপতি ছিলেন এম আমীর উল ইসলাম।
আদিলের মামলায় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মমতাজ উদ্দিন ফকির। তাকে সহায়তা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মামুন।
আদিলকে গ্রেপ্তারের পর ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মতিঝিল অভিযান নিয়ে বিকৃত তথ্য ও ছবি প্রচারের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে অধিকারের সেক্রেটারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
‘নারীবিরোধী’ ১৩ দফা দাবিতে গত ৫ মে মতিঝিলে অবস্থান নেয়া হেফাজতে ইসলামীর তো-কর্মীদের গভীর রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে হটিয়ে দেয়া হয়।
রাতের ওই অভিযানে কেউ নিহত হননি বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলেও ডানঘেঁষা মানবাধিকার সংগঠন অধিকার এক প্রতিবেদনে বলে, ওই অভিযানে ৬১ জন নিহত হন।
এরপর গত ১০ অগাস্ট আদিলকে আটকের পর তাকে ৫৪ ধারায় করা একটি সাধারণ ডায়েরির আওতায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর গত ৪ সেপ্টেম্বর আদিল ও অধিকারের পরিচালক নাসিরুদ্দিন এলানের বিরুদ্ধে নতুন প্রণীত তথ্য প্রযুক্তি আইনে আদালতে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দাখিল করে গোয়েন্দা পুলিশ।
আদিল ও এলানের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলাটি চলছে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে। এ ট্রাইব্যুনালের বিচারক একেএম শামসুল আলম ১১ সেপ্টেম্বর অধিকারের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযোগ আমলে নেন।
দুই আসামির মধ্যে আদিল কারাগারে থাকলেও এলান পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।