somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দ্যা লটারী(গল্পের সারংশ অনুবাদ সহ)

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দ্যা লটারী
_______শির্লেয় জ্যাকসন
সাতাশে জুনের উষ্ণ সকালে, গ্রামের প্রায় সকল মানুষ জড়ো হচ্ছিল একটি মাঠে, যার একপাশে পোস্ট অফিস এবং আরেকপাশে ব্যাংক। প্রতিবছর এই গ্রামে এই দিনে লটারী হয়। ঐতিহ্যবাহী এই লটারী আশেপাশের অন্যন্য টাউনে ও গ্রামেও হয়, তবে একদিন আগে শুরু হয়! অন্যান্য টাউনে যদিও একদিন আগে শুরু হয় জনসংখ্যার আধিক্যের কারনে।কিন্তু এই গ্রামের জনসংখ্যা প্রায় দু'শ এর মত, যার কারনে প্রায় ঘন্টা দুয়েক এর বেশি লাগেনা এখানে লটারী শেষ হতে।

শিশুদের স্কুল গ্রীষ্মের বন্ধ চলছে, তাই এই সময়টাতে তাদের অবাধ চলাচলের মেলা! মাঠে দাড়িয়ে থাকা এই বাচ্চারা যদিও স্কুল নিয়েই কথা চলছে। এদেরি একজন ববি। সে এই মাঠে তার বন্ধুদের সাথে খেলছে, এবং খেলতে খেলতে তার পকেট নুড়ি পাথরে ভরিয়ে ফেলেছে এতক্ষনে।ববি, হ্যারি এবং ডিকি, এরা তিনজনে সবচেয়ে বেশি পাথর জমিয়ে ফেলেছে পুরো মাঠের ছেলেদের মধ্যে। শুধু ছেলেরাই পাথর জমাচ্ছে! মেয়েরা একপাশে দাড়িয়ে চুপচাপ গল্প কর যাচ্ছে। তাদের কেউ কেউ ছোট ভাই-বোনের হাত ধরে দাড়িয়েও আছে মাঠের একপাশে!

একটু পর একে এক দ্রুত আসতে শুরু করল প্রবীনরা। নিজেদের মধ্যেরই তারা কথা বলতে লাগতে। তাদের অধিকাংশই ছোট দলে বিভক্ত হয়ে আলোচনা করছিল, এবারের ফসল, কর এবং কেউ কেউ জোক বলছিল। যদিও সেখেত্রে আশ্চর্য বিষয় হল, জোক শুনে কিন্তু কেউ তেমন হাসলো না।

ববির বাবা ববিকে ডাকলো যখন ববি তার মায়ের ডাক শুনেও তার বাবা মায়ের কাছে আসলো না। বাবার ডাক শুনে দ্রুত ববি চলে আসলো। এই লটারী গ্রামের সকলের ফসল ভালোভাবে হবার জন্য হয়ে থাকে। যার সাথে জড়িয়ে আছে গ্রামের ভবিষ্যত, সকলের আহার এবং অন্যান্য চাহিদা!

দ্রুত লটারী শুরু হওয়ার তোরজোড় হতে লাগল, প্রায় একিসাথে সবাই চারদিক-থেকে ঘিরে দাড়াল। মি: সামার লটারী করার কাজে নিযুক্ত, তিনি মধ্যবয়স্ক। তিনি একটি কালো বাক্স বের করে আনলেন, যা বছরের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গ্রামবাসীর কাছে জমা থাকে।সেই কালো বাক্সটি দিয়েই প্রতিবছর লটারী সম্পন্ন হয়। যদিও তিনি বাক্সটি পরিবর্তনের প্রস্তাব দেন, কিন্তু কেউ সম্মত হয়না, কেননা এতে অর্থ এবং ঐতিহ্যের অপচয় হবে। মিঃ সামার মাঠে পৌছানর পর তিনি বাক্সটি রাখতে সাহায্য চাইলে সাহায্য করতে আসে মিঃ মার্টিন এবং তার বড় ছেলে। তারা স্টুলের উপর বাক্সটাকে রাখে, যা প্রায় সবার দৃষ্টিতেই প্রশংসনীয়। এরপর মিঃ সামার জানতে চাইলেন গ্রামের সবাই উপস্থিত কিনা লটারীর জন্য।

এই লটারী বাক্সটি এই গ্রামের সবচেয়ে প্রবীন ব্যক্তিটির চেয়েও পুরাতন। এর অবস্থা বেশ শোচনীয়, কিন্তু ঐতিহ্যবাহী হও্য়ার কারনে ফেলে দেয়া বা পরিবর্তন হয়নি! এর রং বর্তমানে কালো না, বরং ধুসর!

প্রতিটি ব্যাক্তি উপস্থিত জানতে গেলে জানা যায় মিসেস হাচিসেন পৌছে গেছেন। পাশের কিছু মহিলা তাকে দেখে বলে, "তোমার স্বামী ওখানে টেসি!"
এরপর অন্য একটি পরিবার থেকে কোন বড় পুরুষ না থাকায় পরিবারের কর্ত্রী কাগজ তুলবেন বলেন। সেটা যদিও কারো ভালো লাগলো না।

এরপর গ্রামের সকল পরিবারের একজন কর্তা একটি করে কাগজ তুলবে বাক্স থেকে, এই হল নিয়ম। সবাই একে একে কাগজ তুলে চিন্তিতভাবে দাড়িয়ে রইল। এরপর একসাথে সবাই কাগজ খুলে দেখল। গ্রামের প্রবীন এক ব্যাক্তি অন্য গ্রামে লটারী প্রথা উঠে যাওয়া নিয়ে রাগ করেন। কেননা তাদের বিশ্বাস, এই লটারী ভালো ফসলের জন্য করা হয়ে থাকে। আর পরিবর্তন স্বীকার করা কঠিন!

মিঃ হাচিসন এর কাগজে একটি কালো দাগ ছিলো, তারপরি টেসি চিৎকার করে বলে উঠে, "এটা ঠিক না। আমরা সময় পাইনি। আমাদের আবার পুনরায় ম্যাচ করার সুযোগ দেয়া হোক!" কিন্তু কেউ তার কথা মানলো না।

এরপর তাদের পরিবারে পাচ সদস্য, মিঃ ও মিসেস হাচিসন, তাদের দুই ছেলে ও মেয়েকেয়ে কালো বাক্সে পাচটা কাগজ রেখে একটা করে নিতে বলা হয়! একে একে তারা নেয়।

তাদের সবার কাগজ খুলতে নির্দেশ দেয়া হয়। সবাই খুললেও, মিসেস হাচিসন খুলতে চায়না। অতপর দেখা যায়, মিসেস হাচিসন এর কাগজেই কালো দাগ দেয়া হয়। এরপর তিনি চিৎকার করে আবার বলেন, "এটা ঠিক নয়," কিন্তু তার সময় হয়ে এসেছিল। তিনি বিজয়ী, এবং এরপর তাকে গ্রামের সবাই মিলে পাথর মেরে মেরে ফেলেন, এমনকি তার পরিবার ও তাকে পাথর ছুড়ে মারে! তাকে বলি দিয়ে গ্রামবাসী আরেকটি বছরের ফসলের সুভবিষ্যতের আশা দেখ! (সমাপ্ত)

গল্পটা পড়ে আমার মাথা হ্যাং করেছিল। তবে একটা কথাই বলি, আমরা স্যাক্রিফাইস করতে করতে আজকে এসেছি!
আজো ভালো থাকুন!

গল্পের লিংক(ইংরেজি): Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৫:১৮
২০টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×