আমি কিন্তু ভাল ছেলে। বেশ ভাল ছেলে। ছেলেদের সব ব্যাপারই আমার মধ্যে আছে। বন্ধুদের সাথে বসে মাঝে মাঝে মেয়ে দেখলে একটুআধটু শিস দেয়া কিংবা দুইএকটা 'রোমান্টিক' কথা ছুড়ে দেয়া, সবই করি। তবে ঝামেলা বাঁধে তখনই যখন অন্য কেউ আমার ছোট বোনকে টিজ করে। কেউ আমার ছোট বোনকে কিছু বললে আমার সহ্য হয়না। তাই দলবল নিয়ে গিয়ে হারামজাদাকে ঠেঙ্গিয়ে দিয়ে আসি। অন্যের বোনকে অপমান করতে কোন দ্বিধা না হলেও নিজের বোনের ব্যাপারে কোন ছাড় নয়। আপনারা সবাই ইদানীং দিল্লীর মেয়েটার জন্য খুব মায়া কান্না করছেন, সবাই ওর পক্ষে কথা বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলে ফেলছেন। আমি তো ঐদিনের পর থেকেই বলে আসছি, কেন ওই মেয়েটা এত রাতে বাইরে বের হয়েছিল। দোষ তো ওই মেয়েরই। অথচ দেখুন এই কথা গুলো বলার সময় আমার একটুও লজ্জা হলনা। আমার একবারও মনে হলনা রাত নয়টা এমন কত গভীর রাত নয়। সভ্যতার শুরুতে মানুষ যখন গুহায় থাকতো তখন তারা সন্ধ্যার পর আর গুহার বাইরে বের হতোনা, হিংস্র পশুর ভয়ে। আর এই সভ্য সমাজে আমি বড়ো গলা করে মেয়েদের ঠিক একই কথা বলছি, ছেলেদের কারনে। হাহ, নিজেকে হিংস্র পশুর সাথে তুলনা করে নিজেকে আমি বড়ো মনে করছি। একবারও নিজের হিংস্রতা থেকে নিজেকে বের করে আনার কথা বলছিনা। আমি অবশ্য আর একটা কথাও বলি যে, মেয়েদের রাতে বের হবার কি দরকার। অথচ দেখুন, সম্প্রতি মিরপুরে যে মেয়েটা নির্যাতিত এবং খুন হল সে তো একদম দিন দুপুরে- আমি এরপরেও মেয়েদেরকেই দোষ দেই। কি আমার মন মানসিকতা !! আমি উচ্চকণ্ঠে বলি মেয়েরা উগ্র পোশাক পড়ে বলে তারা নির্যাতিত হয়। অথচ আমি একবারও আমার আশেপাশে তাকিয়ে দেখিনা কত পরদানশিল মেয়েও একদম বিনাদোষে অপমানিত হচ্ছে। আমি মাথায় জেল, কানে দুল, ভ্রুতেও দুল, সবসময় থ্রি- কোয়াটার প্যান্ট, কানে চব্বিশ ঘণ্টা হেড ফোন, হাতে চুড়ির মতো করে ব্রেসলেট পড়ে থাকি। আপনারা চাইলে আমাকে নিয়েও প্রশ্ন তুলতে পারেন। জানতে চাইতে পারেন, আমি উগ্র পোশাক পড়লে কি কোন মেয়ে আমাকে অপমান করে কিনা ? না করেনা, কিন্তু আমি এরপরেও বারবার মেয়েদের দোষ দেই। নিজের হীনতা স্বীকার করে নিতে আমার অনেক বাঁধে। তাই বারবার মেয়েদের বিধিনিষেধ দড়ি দিয়ে বাধার কথা বলি, নিজেকে শোধরানোর কথা বলিনা। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে পড়ে এই যদি হয় আমার মন মানসিকতা তাহলে আমার পড়ালেখার কি দরকার? বাংলাদেশের তো বটেই, পৃথিবীর যত মেয়ে এযাবৎ নির্যাতিত হয়েছে, অপমানিত হয়েছে আমি তাদের সবার কাছে ক্ষমা চাইছি। কারন আমিও একজন ছেলে, আমি চাইলেই দায় এড়াতে পারবোনা। একটা নিতান্ত অপরিচিত মেয়েও যদি আমাকে দেখে কোন কারন ছাড়াই ভয় পায় তাহলেও আমি তাকে দোষ দিতে পারবোনা, এই ভয় পেতে আমিই তাকে শিখিয়েছি। সুতরাং দায় আমাকেই নিতে হবে। অন্তত নিজের মা, বোন, মেয়ে বন্ধুদের কথা ভেবে হলেও।
আলোচিত ব্লগ
কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।
আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন
এই হোটেল এর নাম বাংলা রেস্তেরা।
অনেক দিন পর আমি আজ এই হোটেলে নাস্তা করেছি। খুব তৃপ্তি করে নাস্তা করেছি। এই হোটেল এর নাম বাংলা রেস্তেরা। ঠিকনা: ভবেরচর বাসস্ট্যান্ডম ভবেরচর, গজারিয়া, মন্সীগঞ্জ। দুইটি তুন্দুল রুটি আর... ...বাকিটুকু পড়ুন
আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?
অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন
জলদস্যুরা কি ফেরেশতা যে ফিরে এসে তাদের এত গুণগান গাওয়া হচ্ছে?
জলদস্যুরা নামাজি, তাই তারা মুক্তিপণের টাকা ফেরত দিয়েছে? শিরোনাম দেখে এমনটা মনে হতেই পারে। কিন্তু আসল খবর যে সেটা না, তা ভেতরেই লেখা আছে; যার লিংক নিচে দেওয়া হলো।... ...বাকিটুকু পড়ুন
মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়
১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷
চলুন গল্পটা শুনে আসি৷
বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন