somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোটি কোটি জনগণের আবেগ, ভালবাসা, অধিকারের ব্যাপারে সম্পূর্ণ দায়িত্ব জ্ঞানহীন দুই জন ব্যক্তি চাইলেই 16 কোটি মানুষ ভাল থাকবে আর না চাইলে ভাল থাকবে না এই হাস্যকর নিয়ম চলতে পারেনা

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশের বৃহত্তর দুই রাজনৈতিক দলের দাবিকৃত অহিংস রাজনৈতিক কার্যকলাপের ফলশ্রুতিতে রাজনৈতিক সহিংসতা উত্তোরত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রধান দুই জোটের প্রধান দুই নেতার বক্তৃতার দাবী অনুযায়ী তাদের সমস্ত কর্মকান্ড অহিংস কিন্তু কার্যকলাপ অবলোকন করলে দেখা যায় সবই সহিংস, যেখানে রাজনৈতিক সংস্কৃতি জিঘাংসিত। বিগত দুই দশকেরও বেশী সময় ধরে ক্ষমতার পরিক্রমায় তথাকথিত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং মাননীয় বিরোধী দলীয় নেত্রী খলেদা দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন বা জনগণ তাদেরকে সেই দায়িত্বে অধিষ্ঠিত করেছেন বা দেশ পরিচালনার সুযোগ দিয়েছেন। তাদের ক্ষমতার সকল মেয়াদকালেই দেশ পরিচালনায় তাঁরা হয়েছেন চরম বিতর্কিত কারণ দেশ পরিচালনায় তাদের ভূমিকা ছিল অতর্কিত। জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে কাঙ্খিত নেতা নির্বাচন করতে পেরেছে কিন্তু তাদের প্রাপ্তি ছিল চরম অনাকাঙ্খিত। একজন পিতার মৃত্যুর কারণে অন্যজন স্বামীর মৃত্যুর কারণে পূনর্বাসিত হয়ে দলীয় প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন অত:পর সরকার প্রধান; এই প্রধান দুই নেতা ক্ষমতার পালা বদলে তাদের ক্ষমতার আদ্য করেছে সুদৃঢ়। ক্ষমতার ডাল-পালা বিস্তার করেছে গ্রাম-গঞ্জে, শহর-কুঞ্জে সকল ক্ষেত্রে। পাড়ায়-পাড়ায়, মহল্লায়-মহল্লায় কিছু প্রমত্ত বেকার যুবককে আর্থিক ভাবে পূনর্বসান করে দুই পক্ষের উপদলের সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে সেই উপদলের মতকে extremism-এ রুপদান করা হয়েছে এবং সেই রুপ স্থায়ী সামাজিক দ্বন্দে রুপ নিয়েছে। জনগণ সেই স্রোতে গা ভাসিয়ে তাদের স্বকীয়তার স্বক্ষমতা করেছে কুঞ্চ। খ্রিষ্টপূর্ব ৫ম শতকে এথেন্সে জন্ম নেওয়া 2 হাজার 5শ বছরের ঝানু গনতন্ত্র 40 বছরের তরুন বাংলাদেশের দুই দলের দুই নেতার দরজায় দরজায় ঠোকর খেয়ে খেয়ে স্থায়ী আশ্রয় খুঁজে বেড়াচ্ছে। আর বাকি 16 কোটি জনগণ গনতন্ত্র মারা গেলো মারা গেলো বলে চেচাচ্ছে কিন্তু বাঁচানোর দায়িত্ব কেউ নিচ্ছেনা।
শুনতে খুব অবাক লাগে যখন দেশের শক্তিশালী মিডিয়াগুলোর বিভিন্ন টক-শোতে বা অনুষ্ঠানে বলা হয়ে থাকে দেশের চলমান সঙ্কট বা সন্দিগ্ধ ভয়াবহ সঙ্কট নিরসনে প্রধান দুই দলের নেতাকে আলোচনায় বসতে হবে। মজার ব্যাপার হচ্ছে যারা এই মত দিয়ে থাকেন যে, বর্তমান প্রধান মন্ত্রী (যিনি ভবিষ্যতেও প্রধান মন্ত্রী হতে পারেন)এবং বিরোধী দলীয় নেতা (যিনি ভবিষ্যতে প্রধান মন্ত্রী হতে পারেন)এই দুইজন আলোচনায় বসলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, সমাধান হয়ে যাবে শুধু একথায় বলেননা বরঙ তারা এহেন মত দিয়ে গর্ব অনুভবও করেন। তারা যখন উপরোক্ত মত দিয়ে থাকেন তারা চেতনাযুক্ত জনগণের বোবাকান্না শুনতে পাননা। গণতান্ত্রিক রাজনীতির মহাগুরুভার শুধুমাত্র রাজনীতিবিদদের হাতে ছেড়ে দিয়ে টক-শো করে দুই নেত্রীর আলোচনার অলিক পরামর্শ দিয়ে তাতে হয়তো কর্পোরেটভুক্ত টিভি চ্যানেলগুলোর ডিজিটালায়িজড পদ্ধতিতে ভাঙানো সুযোগসমৃদ্ধ চেক পাওয়া যায় বা বুদ্ধিজীবির খাতায় নাম লেখানো যায় কিন্তু তাতে জনগণের স্বপ্নশাখায় নতুন কোন শাখা-প্রশাখা বিস্তার করেনা।
একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্দলিয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকবে; না মধ্যবর্তী সরকার থাকবে; না দলীয় সরকার থাকবে; না অন্যকোন সরকার থাকবে, না সর্বদলীয় সরকার থাকবে এটা কোনভাবেই জনগণের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বা সু-শাসনের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয় হতে পারে না। এটা সম্পূর্ণ ভাবে দুই নেতৃর পারস্পারিক আস্থা-অনাস্থা বা বিশ্বাসের সাথে জড়িত। কারণ চীন একদলীয় সরকার ব্যবস্থাতেও পৃথীবির মধ্যে সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক বর্ধিষ্ণু দেশ। কোটি কোটি জনগণের আবেগ, ভালবাসা, অধিকারের ব্যাপারে সম্পূর্ণ দায়িত্ব জ্ঞানহীন দুই জন ব্যক্তি চাইলেই 16 কোটি মানুষ ভাল থাকবে আর না চাইলে ভাল থাকবে না এই হাস্যকর নিয়ম চলতে পারেনা। হয় দুইজন ব্যক্তি তাদের বর্তমান অবস্থান থেকে সরে এসে জনগণের ভাল থাকার দায়িত্ব ভার গ্রহণ করবেন তা-না-হলে 16 কোটি জনগণের ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপর তাদের ভাল থাকা মন্দ থাকার বিষয়টি নির্ভর করবে। এটি মাইনাস টু সুত্র হোক বা অন্য কোন সূত্র হোক। প্লাস-মাইনাসের অংক একটি শিশুর হাতে-খড়ির অংক এ অংক জনগন এখন অনেক বোঝে। এখন অনেক জটিল অংকের সমাধান করতে হবে। মাত্র 2জন নেতৃ কেন্দ্রিক বন্দী চিন্তা থেকে 16 কোটি মানুষকেও বেরিয়ে আসতে হবে। একই চিন্তাই দুই দশকেরও বেশি সময় আটকে থেকে সেখানে বদ্ধ বায়ুর দূর্গন্ধ ছাড়চ্ছে এখন মুক্ত চিন্তার বাতাসে বুকভরে শ্বাস নিতে হবে।
দেশের ইতিহাসের পাতায় বিচরণ করে বেড়ান, দেখতে পাবেন, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য কোন নেতা সরাসরি জীবন উত্সর্গ করেন নি কিন্তু লক্ষ লক্ষ মানুষ 71-এ বা পরবর্তীতে নুর হোসনের মত যারা গনতন্ত্র পুনুরোদ্ধার করার জন্য জীবন দিয়ে গেছেন তারা সকলেই ছিলেন সাধারণ যদিও পরবর্তীতে জনদাবি অর্জন করে তারা অসাধারণত্ত্ব অর্জন করে গেছেন। নিজেদের বেঁচে থাকার তাগিদেই হোক বা যে কারণেই হোক এদেশের এই সাধারণ মানুষগুলো দেশের অর্থনীতির চাকাকে রেখেছে সচল আর নেতারা নির্বাচিত হবার পর কোটি কোটি জনগণের সেই চাকায় নিজের অর্থের চাকাকে রকেট গতিতে সচল করেছে কিন্তু সুশাসন বিষয়ে থেকেছে অচলায়তন বরং সেক্ষেত্রে ঘটেছে ক্রমোবনতি।
এটা কোনভাবেই মেনে নেওয়ারযোগ্য বিষয় নয় যে, আমরা নির্বাচনী কিছু ইশতেহারকে সামনে রেখে বা ভাল কিছু স্বপ্নকে সামনে রেখে কয়েকজনকে নির্বাচিত করে স্বপ্নের জাল বুনবো আর সেই জাল দিয়ে নির্বাচিতরা নিজেদের আখের গোছাবে কোন ভাবেই এটা মেনে নেওয়া যায়না। আমি যাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করব সেই ব্যক্তি নির্বাচিত হয়েই আবার আমারই পকেট কাটবে। এটা কোন সভ্য মানুষবসবাসরত গ্রহে চলতে পারে না। এ্খন সেই সময় এসেছে যে সময়টাতে সকল সত্ চিন্তাশীল সকলকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। লক্ষ লক্ষ মানুষের জনসমাবেশে একজন মানুষ বক্তব্যে মিথ্যাচার করবেন আর আমরা জনগণ সেই মিথ্যাকে রাজনৈতিক বক্তব্য বলে বৈধতা দেব এটা কোন নীতি শাস্ত্র বা কোন ধর্ম শাস্ত্রে নেই। এখন নতুন চিন্তা করার সময় এখন সত্যিকারের পরিবর্তনের সময়।
সকলকে ধন্যবাদ
14/01/2013 23:36:02
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৪৩
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাইনারি চিন্তাভাবনা থেকে মুক্তি: পূর্ণাঙ্গ তুলনার ধারণা এবং এর গুরুত্ব

লিখেছেন মি. বিকেল, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:৩০



সাধারণত নির্দিষ্ট কোন বস্তু যা শুধুমাত্র পৃথিবীতে একটি বিদ্যমান তার তুলনা কারো সাথে করা যায় না। সেটিকে তুলনা করে বলা যায় না যে, এটা খারাপ বা ভালো। তুলনা তখন আসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাড গাই গুড গাই

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

টান

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২


কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর
বিচ্যুতি ঠেকা‌তে ছু‌টির পাহাড়
দিগন্ত অদূর, ছ‌বি আঁকা মেঘ
হঠাৎ মৃদু হাওয়া বা‌ড়ে গ‌তি‌বেগ
ভাবনা‌দের ঘুরপাক শূণ্যতা তোমার..
কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর।
:(
হাঁটুজ‌লে ঢেউ এ‌সে ভাসাইল বুক
সদ্যযাত্রা দম্প‌তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরী

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৯

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরীঃ


১। নিজের সিভি নিজে লেখা শিখবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টোমাইজ করার অভ্যাস থাকতে হবে। কম্পিউটারের দোকান থেকে সিভি বানাবেন না। তবে চাইলে, প্রফেশনাল সিভি মেকারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×