ইনেশ প্রতিদিনের মতো রাইসার কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে সময়টা দেখে নিলো একবার।রাইসার ছুটি হতে আর পাঁচ মিনিট বাকি।এই সময়টুকু সিগারেট আর চা খেয়েই কাটাবে বলে ভাবলো ইনেশ।পাশের টঙ এর দোকানে গিয়ে চা আর সিগারেট দিতে বললো।
ক্লাস শেষ হতেই রাইসা বান্ধবীদের সাথে গেট দিয়ে বের হয়ে আসলো।গেট দিয়ে বের হতেই রাইসা দেখলো প্রতিদিনের মতো ঐ বখাটে ছেলেটা টঙ এর দোকানে বসে বিড়ি টানছে।সিগারেট খাওয়া একদমই দেখতে পারে না রাইসা।তবে ছেলেটার সিগারেট খাওয়ায় একটা জিনিস ভালো লাগে তার।ছেলেটা বেশ সুন্দর করে ধোঁয়া দিয়ে রিং বানাতে পারে।
ইনেশ রাইসাকে দেখেও না দেখার ভান করে।রাইসার দিকে সরাসরি তাকাতে তার ভয় লাগে।সিগারেট আর চায়ের বিল দিয়ে ইনেশ রাইসার পেছন পেছন যেতে লাগলো।আজকে সে ঠিক করেছে রাইসাকে তার মনের কথা বলে দেবে।বুক কাঁপছে তার এখনই।না জানি সামনে গেলে কি হয়!বুকে থু মেরে আল্লাহর নাম নিয়ে জোড়ে পা চালাতে লাগলো।এখন সে সরাসরি রাইসার সামনে দাঁড়াবে।
-রাইসা,তোমাকে একটা কথা বলতে চাচ্ছিলাম।আধা মিনিট সময় হবে তোমার?
রাইসা অবাক হয়ে গেলো বখাটে ছেলেটার কথা শুনে।এ আবার কেমন ছেলে!কথা বলার জন্য আধা মিনিট সময় চায়?
রাইসা মাথা নেড়ে সায় জানায় বলতে।রাইসার বান্ধবীরা সামনে এগিয়ে যায়।
-রাইসা তুমি যা বলবে আমি তাই শুনবো।তোমার জন্য সিগারেট খাওয়ায় ছেড়ে দেবো।যা যা করতে বলবে তাই শুনবো।তুমি যদি আমার পরের কথাটার উত্তরে হ্যাঁ বলো তবে..
রাইসা ক্রমশই অবাক হচ্ছে।রাইসা ভালো করেই জানে ছেলেটা তাকে প্রপোজ করবে।তবে এভাবে প্রপোজ করার ভঙ্গিটার সাথে সে পরিচিত নয়।
-আমার উত্তর না।এখন আপনি চলে যান।আর শুনুন আমার জন্য না নিজের জন্য সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিবেন।
কথাগুলো বলেই রাইসা চলে গেলো।ইনেশ চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো।কেনো যেনো একটু কষ্ট লাগছে তার।
সেদিনের পর থেকে ইনেশকে আর কোনদিন রাইসার সামনে কিংবা পেছন পেছন আসতে দেখা যায় নি।রাইসা অবাক হয়েছে।মনে মনে অবশ্য সে বেশ খুশি।
বখাটে ছেলেটা এখন আর টঙ এর দোকানে আসে না।সিগারেটের ধোঁয়া ছেড়ে রিং বানায় না।
কিন্তু কেউ জানে না একটা ছেলে চোখে কালো চশমা লাগিয়ে টঙ এর দোকানের উল্টোদিকের বেঞ্চিতে বসে থাকে।চশমার আড়ালে কোন একজনকে দেখে।বিশেষ কাউকে দেখে।