চট্টগ্রাম টেস্টের পঞ্চম দিন অনন্য এক রেকর্ড গড়েছেন অফ স্পিনার সোহাগ গাজী। প্রথম ইনিংসে শতক করার পর হ্যাটট্রিকসহ ৬ উইকেট পেয়েছেন তিনি।
Published : 13 Oct 2013, 01:20 PM
১৩৬ বছরের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে এমন নৈপুণ্যের এটাই প্রথম নজির।
আগের দিন নাসির হোসেন উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গার পর অতিথি ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে আর পেরেই উঠছিল না বাংলাদেশের বোলাররা।
পিটার ফুলটনের সঙ্গে কেন উলিয়ামসনের শতরানের জুটি ভেঙ্গে দলকে দারুণ এক ‘ব্রেক থ্রু’ এনে দেন সোহাগ। ফুলটন, উইলিয়ামসকে ফিরিয়ে দিয়ে স্বাগতিকদের উজ্জীবিত করে তোলা সোহাগের সেরাটা তখনো বাকি ছিল।
নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে বোল্ড করে অতিথিদের দ্রুত রান তোলার পরিকল্পনায় বাধ সাধেন পটুয়াখালীর এই তরুণ ক্রিকেটার।
ম্যাচের ৮৫তম ওভারে দ্বিতীয়, তৃতীয় আর চতুর্থ বলে কোরি অ্যান্ডারসন, বিজে ওয়াটলিং আর ডগ ব্রেসওয়েলকে ফিরিয়ে দিয়ে পৌঁছে যান অনন্য উচ্চতায়। আগের ২ হাজার ৯৬টি টেস্টে বিশ্বের আর কেউ যা পারেননি তাই ঘটিয়ে ফেললেন সোহাগ।
অভিষিক্ত অ্যান্ডারসন ঘূর্ণিতে বিভ্রান্ত হয়ে এলবিডব্লউর ফাঁদে পড়েন। পরের বলে মুশফিকের তৃতীয় প্রচেষ্টার ক্যাচে পরিণত প্রথম ইনিংসে শতক করা বিজে ওয়াটলিং।
সোহাগের হ্যাটট্রিকে দারুণ অবদান সাকিব আর হাসানের। ব্রেসওয়েলের ব্যাটের কানায় লাগা বলটি লেগ স্লিপে সাকিব ঝাঁপিয়ে তালুবন্দী করলে উল্লাসে ফেটে পড়ে গ্যালারি।
শেষ পর্যপন্ত ৭৭ রানে ৬ উইকেট নেন সোহাগ। এটি তার দ্বিতীয় সেরা বোলিং। গত বছরের নভেম্বরে ঢাকা টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষেকে ৬/৭৪ এখনো তার সেরা। সাত টেস্টের ছোট্ট ক্যারিয়ারে এ নিয়ে দুবার এক ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিলেন তিনি।
এর আগে গত বছর জাতীয় লিগেও বরিশাল বিভাগের হয়ে হ্যাটট্রিক এবং শতকের নৈপুণ্য দেখিয়েছিলেন সোহাগ।
সপ্তম টেস্ট খেলতে নেমে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ক্যারিয়ারের প্রথম শতকে পৌঁছান সোহাগ। দলকে ৫০১ রানে নিয়ে এই ক্রিকেটার অপরাজিত ছিলেন ১০১ রানে।
টেস্টে এটি কোনো বাংলাদেশী বোলারের দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক। এর আগে ২০০৩ সালে পেশোয়ারে পাকিস্তানের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন অলক কাপালী। সব মিলিয়ে এটি টেস্টে ৪০তম হ্যাট্রিকের ঘটনা। আর বোলার হিসেবে ৩৭তম।
টেস্টে শতক করা ও ৫ উইকেট নেয়ারও এটি কোনো বাংলাদেশীর দ্বিতীয় উদাহরণ। টেস্টে এর আগের এই অলরাউন্ড নৈপুণ্যটি সাকিবের। ২০১১ সালে ঢাকা টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৪৪ রান করার পাশাপাশি ৬ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। টেস্টে ক্রিকেটে এর আগে ২৮ বার এই নৈপুণ্য দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব।