somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খাটের স্ট্যান্ড দিয়ে দুলাভাই ছেলেটিকে ইচ্ছামত...

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

♥ বেদনাময়ী ভালবাসার
কাহিনী ♥
খাটের স্ট্যান্ড
দিয়ে দুলাভাই
ছেলেটিকে ইচ্ছা মতো পেটালো।
এক পা ও নড়লো না ছেলেটা।
পাথরের
মতো দাড়িয়ে থেকে মারগুলো হজম
করলো।
নড়ছে না দেখে দুলাভাই
আরও খেপে গেলো।
জোরে একটা ঘা দিলো পেটে।
কুত্তার বাচ্চা,ফের
যদি আমার
বাসার ত্রিসীমানায়
দেখি,একবারে পুতে ফেলবো।
ছেলেটা কাদতে কাদতে চলে গেলো।
আমি হতবাক্!ঘটনা কি?কিছুই
তো বুঝলামনা . . .
ছেলেটাকে ফলো করলাম্।
একটু
দুরে ড্রেনের
পাশে বসে ছেলেটা কাদছে।
বললাম্,
তুমি কে? দুলাভাই
তোমাকে মারলো কেন্?
ছেলেটা আরও
জোরে জোরে কাদতে লাগলো।
এমন বুক
ফাটা কান্না যা কিনা পাথরসম
কষ্টেই সম্ভব্।
পনেরো-ষোল বছরের কিশর্।
পরনে পুরনো লুঙ্গি।
গায়ে হাফ
হাতা শার্ট্।পায়ে রাবারের
স্যানডাল্। শ্যামলা-
ময়লা চেহারা।নিঃসন্দে
হে নিম্নবিত্তের ছেলে।কিন্তু
দুলাভাই ওকে মাড়লো কেন্?
বাসায় ফিরে দেখি আরেক
সিন্।
দুলাভাই বারান্দায়
বসে সিগারেট টানছে আর
রাগে ফুসছে।আপার
কোলে মাথা লুকিয়ে কাদছিল
আমার কিশোরী ভাগ্নি রুনা।
আপা ও কাদছে।
বললাম্,আপা ঘটনা কি? একটু
খুলে বল্! আপা চুপ থাকলো।
রাতে আপার কাছ
থেকে ঘটনাটা শুনলাম্।
---------
ছেলেটার নাম বেলাল্।রুনার
সাথে এক ক্লাসে বগুরায়
পড়তো।দুই বছর ধরে রুনার
পেছনে লেগে ছিল্।ক্সুল
ছুটির পর
রুনাকে ফলো করে বাসা পর্যন্ত
আসতো।কিন্তু
উত্ত্যক্ত করতো না।
রুনাকে নাকি মুখ ফুটে কিছু
বলতো না।রুনা একদিন ক্সুল
থেকে ফেরার
পথে স্যানডাল
দিয়ে পিটিয়েছে ছেলেটাকে।
তারপর
থেকে রুনাকে সে ফলো করতো না।
কিন্তু ক্সুলে ফ্যাল ফ্যাল
করে রুনার
দিকে তাকিয়ে থাকতো।
সারাক্ষন
আনমনা থাকতো।
পড়াশোনা ও করতো না।অথচ
আগে নাকি ভালো ছাত্র
ছিল্।
একবার রুনা টাইফয়েডে পাচ
দিন
ক্সুল যায় নি।
জানতে পেরে ছেলেটা তৃতীয়
দিন
বাসায় এসেছিল্।
আপা ঢুকতে দিতে চায়নি।
ছেলেটা নাকি আপার
পা ধরে বলেছিল্, একবার
দেখেই
চলে যাবো।
এরপর
ছেলেটিকে ভেতরে আসতে দেয়
আপা।হাজার হোক
নারীর মন্।পরে বুঝিয়ে-
সুঝিয়ে ছেলেটিকে বিদায়
করে।
পরের দিন ছেলেটা আর এক
কান্ড
ঘটায়্।সারা রাত আপার
বাসার
বাইরে শুয়ে-বসে কাটিয়ে দেয়্।
আর সহ্য্ করা যায় না।
ক্সুলের
হেডমাস্টারকে জানানো হয়্,ছেলেটার
বাবাকেও জানানো হয়্।
দুজনই তাকে গরু পেটা করে।
কোনো ফল হয় না।
বড়ং ছেলেটার
পাগলামি আরও
বাড়তে থাকে।
রুনাও নাকি বদলে যায়্।মন
মরা হয়ে থাকে।কথা কম
বলে।
অবস্থা বেগতি দেখে দুলাভাই
বগুড়া থেকে বদলি হয়ে নাটোরে চলে আসে।
ছয় মাস ভালোই গেল্।কিন্তু
ছেলেটা কোথা থেকে ঠিকানা সংগ্রহ
করে এখানে চলে আসে।
---------
বলা প্রয়োজন্, দুলাভাই
খাদ্য
অধিদপ্তরের ঊর্ধতন
নাকর্মকর্তা।আর্,র ু প্রথম
সারির সুন্দরী।
অন্য্ দিকে, ছেলেটার
বাবা বৌয়ের
রান্না করা ভাত্,মাছ্,ডিমের
ঝোল স্টেশনের বেন্চ
পেতে নিম্ন
আয়ের শ্রমিকদের
কাছে বিক্রি করে|এ
রকম পরিবারের
ছেলে দেখতে এবং বেশভূষায়
যেরকম
হওয়া উচিৎ,ছেলেটা ঠিক
তাই। এ ছেলের পাশে আমার
চাদমুখী ভাগ্নিকে কল্পনা করা গল্প্-
উপন্যাসেও বেমানান হবে।
পরদিন রুনার
কাছে জানতে চাইলাম্,
-ছেলেটির জন্য্
কি তোমার কষ্ট হয় না?
-খুব কষ্ট হয় মামা!ও ওরকম
করবে কেন্?সে কি আমার
যোগ্য্?
-ছেলেটা কি খারাপ্?
-খারাপ হবে কেন্?খুবি শান্ত
স্বভাবের্।
-তুমি কি ওকে ভালোবাস?
-কি যে বলেন মামা।এ রকম
একটা ছেলেকে কি ভালোবাসা যায়্?
একটু থেমে মাথা নিচু
করে বললো,
-
সে ভালো মতো পড়াশুনা করুর্,প্রতিষ্ঠি
ত হোক্।
-সে ক্ষেত্রে? -
সে ক্ষেত্রে আমি হয়তো ভাববো।
বুঝলাম্,ওর প্রতি ভাগ্নীর
করুনা আছে যা ভালোবাসায়
রুপান্তর হতে পারে।তাই
একটু
কঠোর হলাম্।বললাম্,
-খবরদার এমন
চিন্তা করবে না।
দুলাভাই
তোমাকে মেরে ফেলবে।জীবন
কোনো গল্প্-উপন্যাস নয়্।
-তা ঠিক মামা।
---------
১২ বছর পরের ঘটনা।
রুনা বাংলাদেশ
কৃষি ইউনিভার্সিটি থেকে ইন্জিনিয়ারিং পাস
করছে।বিয়ে দিয়েছি আমার
মেডিকেলের জুনিয়র এক
ডাক্তারের সাথে।দুটো বাচ্চা।
খুব সুখের সংসার্।
একদিন
কথাচ্ছলে রুনাকে বললাম্,
-সেই ছেলেটাকে কি তোমার
মনে পড়ে?
-কোন ছেলেটা মামা?
-ওই যে বগুড়ায় তোমার
সাথে পড়তো,
তোমাকে পাগলের
মতো ভালোবাসতো?
রুনা হেসে ফেললো।
-ও,সেই গেয়োটা।আগে হঠাৎ
হঠাৎ
মনে পড়তো,এখন আর
মনে পড়ে না।
-ওর জন্য্ কি তোমার
মাঝে মদ্ধে কষ্ট হতো?
রুনা আবার হেসে ফেললো।
-কি যে বলেন মামা,ওর জন্য্
আমার কষ্ট হবে কেন্?
-ওর নামটা না কি ছিল্?
ওর নামটা . . .
নামটা ভুলে গেছি মামা।
-সে কোথায়
আছে,কি করছে,কেমন
আছে কিছু জানো?
এবার রুনা ক্ষেপে গেল।
-কি বলছেন মামা!ওর খোজ
নেয়া কি আমার দায়িত্ব্?
মনে মনে বললাম্, অবশ্যই
দায়িত্ব ছিল্।
রুনার চোখের দিকে এক
দৃষ্টিতে তাকালাম্।
হায়রে নারী!যে তোমার
জ্বরে মুখটা একটিবার
দেখার জন্য্ আপার
পা ধরে কেদেছিল্,তুমি অসুস্থ
ছিলে বলে সারা রাত
বাইরে বসে কাটিয়ে দিয়েছিল্,তুমি তার
নামটাই ভুলে গেলে বেমালুম্?
কিন্তু আমি ভুলিনি।কারণ
আমি পুরুষ্।একজন পুরুষই
পারে আরেকজন পুরুষের
কষ্ট
কিছুটা হলেও বুঝতে . . .
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১২
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×