নামটা দেখে মনে হচ্ছে আমি হূমায়ুন আহমেদের ব্যাপারে অনেক কিছু জানি, তার বই মনে হয় সব মুখস্থ করে রেখেছি। কিন্তু ঘটনা হচ্ছে ছোটদের জন্য লেখা দু'তিনটে বই ছাড়া হূমায়ুন আহমেদের কোন বই-ই আমি পড়িনি। তবুও এই লেখাটা লেখার একটা কারণ আছে। সেটা হল রূপার ব্যাপারে আমি জানতে চাই।
গতকাল একটা অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছে। আমি একজনের সঙ্গে কথা বলছিলাম। এক পর্যায়ে সে আমাকে একটা কিছু জিজ্ঞেস করেছিল। আমি উত্তরটা জানতাম না কিন্তু সেটা বলতে চাছিলাম না। তাই বললাম, বলব না, বলব না। বলা যাবে না। আমি কিচ্ছু বলব না, হি হি হি হি!!!! বলব না।
অমনি সে আমাকে রূপা বানিয়ে দিল। আমি যাই বলি, সেটাতেই সে বলতে শুরু করল তুমি পুরাই রূপা। কোন পার্থক্য নাই। আমি তখন তাকে বললাম রূপার সাথে আমার কথা বলিয়ে দিতে, কারণ তাকে তো আমি চিনি না। আমি রাশেদ, তপু, রাশা, নারীনা, রূপালী- ওদেরকে চিনি। ওদের কথা প্রায়ই জাফর আংকেলকে জিজ্ঞেস করি। উনি হেসে দিয়ে বলে ওরা সবাই ভাল আছে। সে আবারো আমাকে রুপা বলে বসল।
আজকে স্কুলে গিয়ে সবাইকে রূপার কথা জিজ্ঞেস করলাম। আমার অধিকাংশ সহপাঠীরাই হূমায়ুন আহমেদের বই পড়ে কম। যারা পরে তারা বলল তারা সবাই নাকী রুপা হতে চায়। আমি কী অদ্ভুত! সবাই রূপা হতে চেয়েও পারে না আর আমি নাকী পুরোই রূপার মত অথচ রূপাকে আমি চিনি না।
যাহোক, আমি বলেছি যে দেখো, আমি হচ্ছি গিয়ে মীম। রূপা না। চরিত্র- বিষয়টা তো মানুষের জীবন থেকেই নেওয়া। তাই মিলে যেতেও পারে। পৃথিবীতে আসলে মানুষের মধ্যে যে বৈশিষ্টগুলো থাকে, তার সংখ্যা খুবই কম। একেকজনের মধ্যে একেক ধরনের বৈশিষ্টের সংমিশ্রণ থাকায় একজনের সাথে অন্যজনের মেলে না, কিন্তু তবুও কখনো মিলে যেতেও পারে। কিন্তু আমার একটা নিজস্ব অস্তিত্ব আছে এই পৃথিবীতে। আমি একজন সম্পূর্ণ আমার মত মানুষ হিসেবে জন্মেছি এই পৃথিবীতে। তবে কেন আমার অস্তিত্বকে রূপার মধ্যে হারিয়ে যেতে দেব আমি? কেন কেউ আমাকে রূপা বলে চিনবে আমার একটা নিজস্ব পরিচয় থাকা সত্বেও?
আমি কী ঠিক বলেছি? কার কী মত?