"তন যে জানো জাঁ যে-তন মসতূর নীস্ত
লেকে কাছ রা দীদে জাঁ দসতূর নীস্ত"
দেহ প্রাণ হইতে এবং প্রাণ দেহ হইতে লুক্কায়িত নহে, কিন্তু প্রাণকে কেহই দেখিতে পায় না। অথচ একে অপরের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত।
নিকট থেকে দুরে পদ্ধতি অবলম্বন করে গড়ে উঠে আধ্যাত্মিক বিশ্ববিদ্যালয়।
খ্রিস্টপূর্ব ৪৬৯ থেকে ৩৯৯ গ্রীসের দার্শনীক সক্রেটিস ডেলসির ম্যক্সিম 'Know Thyself' নীতি অনুসরণ করে যে তত্ত্ব দিয়েছেন তা আমাদের অনেকেরই জানা 'I Know That I Know Nothing' ডিপ্লোমেটিক উক্তির ব্যাখ্যা অনেকেই জানেন। আপনাকে জানার মত কঠিন জিনিস পৃথিবীতে কমই আছে।
আত্মকেন্দ্রিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোর সাথে আমরা সকলেই পরিচিত।
তবে সাধকগণের সঙ্গ না করিয়া অর্থাত্ গুরু না ধরিয়া সাধনার কোন স্তরেই পৌছানো সম্ভব নয় এ কথা অনেক গুণীজনে বলিয়া থাকিলেও ইহা কত টুকু সত্য তা আপনাদের নিকট জানিতে চাহিয়া শুরু করিলাম।
শিখন শেখানো কার্যাবলি পরিচালনার সময়ে কবি সুনির্মল বসুর সঙ্গে পরিচয় পাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল। তবে ঐ পরিচয় পর্ব শুধুই সবার আমি ছাত্র কবিতা থেকেই পাওয়া। সুনির্মল বসুর বাস্তব চিত্র কেমন তা জানি না তবে তিনি আধ্যাত্মিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ধন্য অধ্যাপক এ কথা আমি বলিতে পারি। আসুন এবার আত্মকেন্দ্রিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয় বস্তু ও অবকাঠামোর সাথে পরিচিত হই
আধ্যাত্মিকতার উত্পত্তিমূল
মানবদেহের আঙ্গসমূহঃ
চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, মুখ, মলদ্বার, জলদ্বার, রতিদ্বার, রজোদ্বার, সাঁইদ্বার, কাঁইদ্বার।
মানবদেহের বস্তুসমূহঃ দুগ্ধ, রতি, লালা, সাঁই, কাঁই (পঞ্চরসের সমাহার)
মানবদেহের বিষয়সমূহঃ
বয়স, আত্মা, কর্ম, পরিবার ও পেশা।
মানবদেহের শক্তিসমূহঃ
জ্ঞান, মন, বিচার, বুদ্ধি ও কামশক্তি।
মানবদেহের সদস্যসমূহঃ
ক. মানবদেহের বিষয়সমুহ:
নাভি মানবদেহের মূল কেন্দ্রবিন্দু ইহাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠেছে মানবদেহের সদস্যসমূহঃ
১। নাভির উপরের অংশ আকাশ, ঊর্ধ্বাঙ্গ, উচ্চাঙ্গ, আগধড় বা পশ্চিম
২। নাভির নিচের অংশ ভূমি,নিম্নাঙ্গ, পাতাল, পাছধড় বা পূর্ব
৩।হৃদপিণ্ডের অবস্থানের পার্শকে বাম পার্শ্ব বা উত্তর
৪।হৃদপিণ্ডের বিপরীতে ডান বা দক্ষিণ
৫। নাসিকা = বাঁশি
৬। গর্ভাশয় = পাতাল, আকাশ, স্বর্গ
৭। নর = অর্ধাঙ্গ
৮। নারী = অর্ধাঙ্গিনী
৯। নর নারী = পূর্নমানব বা মানুষ
১০। বীর্য = নারী চরিত্র
১১। আত্মা = নর চরিত্র
১২। সাঁই = চন্দ্র
১৩। কাঁই = সূর্য
১৪। জ্ঞান = গুরু
১৫। মন = শিষ্য
১৬। সুস্থতা = দিন, মঙ্গল,জোয়ার, উজান
১৭।আসুস্থতা = রাত, অমঙ্গল, ভাটা, ভাটি
১৮। নর = বৃন্দাবন, কৈলাস
১৯। নারী = নিধুবন, লীলাভূমি
খ. মানব দেহের মূলক সমূহঃ
মানব দেহের চল্লিশ মূলক
০১। এক নিরীক্ষ
০২। দুই ফল
০৩। তিন তাঁর
০৪। চাঁর দিক
০৫। পাঁচ ভূত
০৬। ষড়রিপু
০৭। সপ্তকর্ম
০৮। অষ্টাঙ্গ
০৯। নয়দ্বার
১০। দশইন্দ্র
১১। একাদশ রুদ্র
১২। দ্বাদশ নেতা
১৩। তের নদী
১৪। চৌদ্দ ভূবন
১৫। পনের চল
১৬। ষোল কলা
১৭। সতের পর্ব
১৮। আঠার ধাম
১৯। উনিশ রক্ষী
২০। বিশ জাত
২ ১। বাইশ মাথা
২২। চব্বিশ চন্দ্র
২৩। পচিশ গুণ
২৪। সাতাশ ঊর্ধ্ব
২৫। আটাশ দিন
২৬। ত্রিশ বছর
২৭। বত্রিশ দাঁত
২৮। ছত্রিশ রবি
২৯। চল্লিশ তলা
৩০। বায়ান্ন হাট
৩১। তেপ্পান্ন গলি
৩২। পঞ্চান্ন ধারা
৩৩। তেষট্টি বাই
৩৪। বাহত্তর কম্প
৩৫। আশি কর
৩৬। চুরাশি ফের
৩৭। ৩৬০ মূর্তি
৩৮। ৬৬৬ মাণ
৩৯। একহাজার মাস
৪০। ৬৬৬৬ মাত্রা
উপকারীতাঃ
১। সুস্বাস্থ্য
২। দীর্ঘায়ু
৩। সুখি পরিবার গঠন
৪। রতি নিয়ন্ত্রণ
৫। জন্ম নিয়ন্ত্রণ
৬। অনন্ত প্রশান্তিময় জীবন
আত্মশক্তিতে বিকশিত হতে এবং এর সুফল লাভ করিতে হইলে সাধনার বিকল্প নাই। সপ্তচক্রের শক্তি লাভ করিবার জন্য ধারাবাহিক ধ্যানের মাধ্যমে অতীন্দ্রিয় অনুভূতির অনুভব ও দর্শন
পাওয়া যায়। সপ্ত চক্র নিম্ন রুপঃ
১। সহস্রার চক্র =
২। আজ্ঞা চক্র =
৩। বিশুদ্ধ চক্র =
৪। অনাহত চক্র =
৫। মণিপুর চক্র =
৬। স্বাধিষ্ঠান চক্র =
৭। মূলাধার চক্র =
এই চক্র গুলো জয়লাভ করিতে অবশ্যই যোগ সাধনায় মত্ত্ব থাকিতে হয় বিধায় ইহাকে হিন্দুধর্ম ভিত্তিক সাধন বিধি মনে করে অনেক মুসলিম সূফি সাধকগণ ভিন্নমত পোষণ করেন এবং তাহারা সাধন চর্চার ম্যধম হিসেবে কতগুলো সুক্ষ্মলতীফা চিহ্নিত করেন যেমনঃ
১। ক্বালব =
২। রূহ =
৩। সির্ (রহস্য) =
৪। খফী (গোপন) =
৫। অখফী (নিহিত) =
৬। নফস্ =
৭। আব =
৮। আতশ =
৯।খাক্ =
১০। বাদ = শরীরের বায়বীয় গুণ
সূফিসাধক পীর ফকিরগণ এই লতীফা জাগ্রত করিবার উপায় বলে দেন। তবে তরিকা ভেদে এই বিষয়বস্তু জাগ্রত করার পদ্ধতির ভিন্নতা লক্ষ করা যায়।
এই মানুষে আছে রে মন
যারে বলে মানুষ রতন
লালন বলে পেয়ে সে ধন
পারলাম না চিনিতে।।
মানুষ ত্রিবীনে আবদ্ধ বা শৃঙ্খলায়ীত প্রানী যার তিনটি ক্ষমতা বা শক্ত আছে ১। দৈহিক শক্তি ২। মস্তিস্কের শক্তি ৩। আধ্যাত্মিক শক্তি
"পথ হারা পথিক আমি
প্রভু তুমি হও অন্তরজামি"
সম্পাদনায়ঃ আমি মূর্খ
গ্রন্থপঞ্জী
১। আধ্যাত্মিকবিদ্যা পরিচিতি বলন সাঁইজি
২। লালন দর্শন আবদেল মাননান
৩। লালন সাঁই ও উত্তরসূরি
৪। অগ্রন্থিত রচনাবলি আবদেল মাননান
৫। ভ্রান্তিবিলাস হাসানাত বেগ
৬। দিওয়ান ই শামস ই তাবরিজ
৭। মসনবীয়ে রূমী