somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ত্রিভকালের প্রান্তরে : 'গু' সমাচার ও একজন আবুলের গল্পের প্রস্তাবনা

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৮ই নভেম্বর ২০১২, রাত তখন বাজছিল ৪ টার কাছাকাছি, হয়তোবা আরো বেশীও হতে পারে। আমি বাথরুমে যাবার আগে সময় দেখিনি, দেখা উচিত ছিল। তাহলে আপনাকে পার্ফেক্ট সময়টা বলতে পারতাম। সময় জানাটা আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিলো, কারণ তার কিছুক্ষণ পরেই আমি তন্দ্রাদের বাসার দূর্গন্ধময় বাথরুমে গিয়েছিলাম। আপনি হয়তো ভাবছেন, বাথরুমে যাওয়া নিয়ে কাহিনী করছি কেন আমি?

কাহিনী করছি কারণ সবার জীবনেই কাহিনী আছে, প্রত্যেকটা মূহূর্তের এক একটি কাহিনী। এক একটি ফ্রেম নিয়ে এক একটি কাহিনী। সিঙ্গেল ফ্রেমের কাহিনী যেমন আছে, মাল্টিফ্রেমেরও আছে। 'পাদ' মারা যদি সিঙ্গেল ফ্রেমের হয়ে থাকে তাহলে পায়খানা করা হচ্ছে মাল্টিফ্রেমের কাহিনী, প্রথমে প্যান্ট খুলো (বেল্ট থাকলে আগে বেল্ট, আর পাঞ্জাবি পড়া থাকলে আগে পাঞ্জাবি), তারপর বদনা হাতে নিয়ে পজিশন করে বসে পড়া। আমি আবার হাই কমোডে হাগতে পারি না, মানে ইংলিশ কমোডে। অনেকের যেমন উচ্চতা ভীতি, মাকড়শা ভীতি, তেলাপোকা ভীতি আছে , আমার তেমন হাই কমোড ভীতি আছে। মেডিকেল সায়েন্সে হয়তো এই সংক্রান্ত কোন ফোবিয়া থাকলেও থাকতে পারে, 'হাইকমোডভিয়া',বা 'কমডোফোবিয়া '। অসম্ভব কিছু না, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিতে 'Taboo ' বা ডিসকোভারি চ্যানেলে 'sqamish ' এর কোন না কোন পর্ব দেখে থাকলে আমার হাই কমোড ভীতি আপনার কাছে মোটেই আশ্চর্যজনক মনে হউয়ার কথা না। আমার হাইকমোডোভিয়া নিয়েও হয়তো কোন একদিন এপিসোড দেখাতে পারে। হয়তোবা আমাকেই শো এর হোস্ট পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলবে,

"ইনি হচ্ছে 'সাব্বির আহমেদ ', যিনি কিনা গত ২২ বছর ধরে 'হাইকমোডোভিয়া ' নামক অত্যন্ত জটিল এবং হাস্যকর রোগে ভুগছে। যার কারণে হাইকমোডে বসা মাত্র উনার পোন্দের গু মাথায় উঠে যায়, হার্ট বিট বেড়ে যায়, হাত পা ঘামাতে শুরু করে, ব্লাড পেশার বেড়ে যায় কিন্তু তারপরও ...তারপরও উনার পোন্দে দিয়ে গু বাহির হয় না ..."

..অসম্ভব কিছু না। এই ভীতি থাকার কারণে আপনি চাইলে আমাকে 'গ্রামের অশিক্ষিত চাড়াল' বলে গালিও দিতে পারেন, আমি কিছুই মনে করবো না। আপনি হয়তো রাজকীয় ভাবে বসে জ্ঞানী ভাব ধরে হাগতে বেশী পছন্দ করলেও করতে পারেন, তবে আমি করি না। 'জ্ঞানী ভাব ধরা' বলতেই মনে পড়লো একজনের কথা। আমাদের সাথে ঢাকার শাহজাদপুরে এক ছেলে থাকতো, নাম সাইফ। সে আবার সকালবেলার প্রাতরাশের পর খবরের কাগজটা নিয়ে হাইকমোডওলা বাথরুমে ঢুকতো, আর বের হতো পুরো খবরের কাগজ শেষ করে। এর মধ্যে আমরা মাঝেমধ্যে ভুলেও যেতাম, বাথরুমে কেউ কি আসলেই আছে, নাকি নাই! কারণ কোন সাড়াশব্দ পেতাম না, এমনকি পানি খরচের শব্দও না! প্রথমআলো পত্রিকায় নূন্যতম ২৪ পৃষ্ঠা থাকে (ক্রোড়পত্র বাদে)। একমিনিট করে প্রতি পৃষ্ঠা পরলেও ২৪ মিনিট লাগবে। এখন সাইফ যদি প্রথম দলা ২ মিনিটে আর শেষ দলা ৫ মিনিটে বের করে, তাহলে তার পায়খানা ৯ মিনিটের মধ্যে শেষ হয়ে যাওয়া উচিত। আর বাকি ১৫ মিনিটে সে যদি পানি খরচ না করে পেপার পড়েই যায়, তাহলে তার গুয্যদ্বারে লেগে থাকা গু শুকিয়ে যাওয়ার কথা। আর আপনি যদি সায়েন্সের স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন, আপনি নিশ্চয়ই জানেন গু কি কি উপাদান দিয়ে গঠিত হয়ে থাকে। তাই সাইফের গু যদি বাদামি রঙ্গের হয়ে থাকে তাহলে bile আর bilirubin এর কারণে mucus আস্তরণ তৌরি যাবে। যার ফলে গুয্যদ্বারে লেগে থাকা গু ১৫ মিনিটে নরম থেকে কঠিন হয়ে যাবে, আর তা তখন পানি দিয়ে হালকা ঘষা দিলেও উঠবে না। তখন যা করতে হবে তা হচ্ছে, পানি দিয়ে প্রথমে হালকা ভাবে ভিজিয়ে রাখতে হবে আর তার দুই মিনিট পর নরম হয়ে গেলে গুয্যদ্বার পরিষ্কার করতে হবে। আপনি হয়তো ভাবছেন আমি গু নিয়ে এতো ব্যস্ত হয়েছি কেন। ব্যস্ত হতে হয়, 'গু ' গু বলে আমি মোটেই তাকে ছোট চোখে দেখি না। মানুষের হাত দেখে যেমন ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারে পামিস্টরা, আমি তেমন গু দেখে একটা মানুষ সম্পর্কে অনেক কিছুই বলতে পারি।আপনি হয়তো ভাবছেন আমি গুলপট্টি মারছি, বা ফাজলামো করছি। ...আমি মোটেও গুলপট্টি মারছি না, আবার ফাজলামোও করছি না।

মানুষের গু ছয় রকমের হয়ে থাকে। রকম না বলে ছয় রঙ্গের বলাটা মনে হয় ঠিক হবে। আর এসব রং খেয়াল খুশী মতো হয় না বরং নির্ভর করে মানুষের খাদ্যাভ্যাস, চাল -চলন, আর স্বাস্থ্যের উপর। অর্থাৎ একজন ব্যাক্তি কিভাবে জীবনযাপন করছে তা সহজেই ফুটে উঠে তার গুয়ের মাধ্যমে।

বেশিরভাগ মানুষের গু সাধারণত হালকা থেকে গাড় বাদামি রঙ্গের হয়ে থাকে। তাই আপনার গুয়ের রং যদি বাদামি বর্ণের হয়ে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে আপনি একজন আমজনতা। আমজনতা হউয়া খারাপ কিছু না, বাদামি গু ভালো স্বাস্থ্যেরও ইঙ্গিত করে থাকে। কারণ মৃত লাল রক্তের কোষের থেকে নির্গত বিলিরুবিন আর বাইলের সাথে মিশে বাদামি বর্ণ ধারণ করে থাকে এই গু। ইনফেকশন দ্বারা আক্রমণ হয় না বিধায় কোষ্ঠের বর্ণ বাদামি হয়।আর এই ধরণের গু মধ্যম ধাচের শক্ত হয়ে থাকে মুকাস আস্তরণের কারণে। তাই কারো গু যদি আপনি বাদামি বর্ণের দেখে থাকেন, তাহলে বুঝবেন ঐ ব্যক্তির চালচলন সাধারণ গোচের, মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির খেটে খাওয়া মানুষ। যার গু যত বেশী গাড় রঙ্গের হবে সে ততটাই সাধারণ।

কোষ্টের বর্ণ হলুদ হয়ে থাকে এক প্রকার সংক্রামকের কারণে, গিয়ার্ডিয়াছিছ হচ্ছে ঐ সংক্রামকের নাম। গিয়ার্ডিয়াছিস শব্দটা আসছে গিয়ার্ডিয়া থেকে, যা হচ্ছে একপ্রকার এনারোবিক প্রোটোজোয়ান পরজীবী। এই পরজীবী যতবেশী সংক্রামক হবে গু ততই হলুদ হবে। আর খুব বেশী বেড়ে গেলে ডায়রিয়া হউয়ার চান্স ৮০ ভাগ। তাই আপনি যখন দেখবেন কারও গুয়ের রং হলুদ, আপনি বুঝবেন ওর শরীরে ফ্যাট আছে, জীবনযাপন অনিয়ন্ত্রিত, লোভী, আবেগপ্রবণ আর বাচাল গোছের হয়ে থাকে। পার্টি পছন্দের দিক থেকে এরা বেশিরভাগ বিএনপির সাপোর্টার হয়ে থাকে। গু হলুদ হউয়ার আরেকটি প্রধান কারণ হল 'গিলবার্ট সিনড্রোম '। এই অবস্থা সাধারণত দেখা যায় পান্ডুরোগ এবং হাইপারবিলরেবিনিয়ার সময়, যখন রক্ত সঞ্চালনের সময় বিলিরুবিনের উপস্থিতি খুব বেশী বেড়ে যায়। অর্থাৎ যাদের গু হলুদ হয়ে থাকে তাদের ভেবেচিন্তে কাজ করার ক্ষমতা কম থাকে। 'ধুম ধাম, পুটকি উধাও' নীতিতে এরা বিশ্বাসী হয়ে থাকে। যদিও আমি বি.এন.পির সমর্থক নই,তবুও আমার গু কিন্তু বেশিরভাগ সময় হলুদ বর্ণের হয়ে থাকে।

গু কালো বা লাল রঙ্গেরও হতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে লাল রক্তের কোষ নাড়িভুড়িতে উপস্থিত থাকার কারণে এটা বেশিরভাগ সময় হয়ে থাকে। নাড়িভুড়িতে দীর্ঘক্ষণ থাকার কারণে এই কোষগুলো ভেঙ্গে ডাইজেস্টিভ এনজাইমে রূপান্তরিত হতে পারে না। এটাকে বলে মেলিনা, এবং এটা সাধারণত হয়ে থাকে মানবদেহের উপরিভাগ ডাইজেস্টিভ রাস্তায় রক্তপাত হউয়ার কারণে। এই রক্তপাত আবার বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে, হতে পারে সেটা পেপটিক আলসার থাকার কারণেই। এখন দেখার বিষয় হচ্ছে, আপনার গ্যাস্ট্রিকের বড়সড় সমস্যা আছে কিনা। যদি থেকে থাকে তাহলে আপনার লাল বা কালো গু হাগার একটা অপার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই যদি কারো গু এই বর্ণের হয়ে থাকে, বুঝবেন সে চরম মাত্রায় হতাশাগ্রস্থ। এই পৃথিবী আর তাকে চায় না। এই ধরনের ব্যক্তিরা হালকা গড়নের হয়ে থাকে, ভাবুক স্বভাব এদের মধ্যে চরমভাবে বিরাজমান। এদেরকে আপনি ৩ টাকা দামের সিঙ্গারা খাওইয়া ৩০০০ টাকার কাজ সহজেই করিয়ে নিতে পারবেন। এই গোত্রের বেশিরভাগ লোকের প্রথম পছন্দ 'দেশি গাঞ্জা'। আর 'চাইনিজ মোবাইলের ' প্রতি এরা কিছুটা দূর্বল হয়ে থাকে। সব থেকে মজার বিষয় হচ্ছে এদেরকে দেখে অনুমান করা সহজ যে এরা এই গোত্রের, যা অন্য গোত্রের ব্যক্তিদের জন্য অত্যন্ত কঠিন। আবার খাদ্যভাসের কারণেও কিন্তু গু লাল বর্ণের হয়ে থাকে, যেমন লালশাক, রু -আফজা বা অধিক পরিমাণে রেড মিট খাওয়ার কারণে। মূল পার্থক্য হচ্ছে আপনি গু দেখলেই বুঝতে পারবেন, কে গোত্রের কারণে আর কে ই বা রু -আফজার কারণে।

গু কালো বর্ণের হয়ে থাকে সাধারণত ঔষুধ সেবনের কারণে। কালো গু গঠন হয়ে থাকে খাদ্যে আয়রণের আধিক্যের কারণে। আমরা যে ভিটামিন খাই বা আয়রন ট্যাবলেট, এই আয়রন আমাদের বর্ণিল গু কে কালো বানিয়ে দেয়। কালো গু খারাপ না। তারাশঙ্কর 'কবি ' উপন্যাসে লিখেছেন,

"কালো যদি মন্দ তবে কেশ পাকিলে কাঁদ কেনে?"

ঔষুধ সেবন ছাড়া আপনি যদি কালো গু হেগে থাকেন তাহলে বুঝবেন আপনি একজন সুঠাম দেহের অধিকারী। কালো গুয়ের পুরুষ ব্যাক্তিদের ছেলে সন্তান হউয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে। ফাউ কথা বলছিনা, লজিক থেকেই বলছি। 'Y' ক্রোমজম গঠনে আয়রণের বিশেষ ভূমিকা আছে। তাই যার হবে কালো গু তার ছেলে শিশু হউয়ার সম্ভাবনা অইত্যাধিক। কালো গুয়ের মানুষেরা সাধারণত দৃড়চিত্তের হয়ে থাকে, কথা কম বলে, আর আবেগের চাইতে মাথা খাটিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে বেশী। এদের গায়ের রং কালো বা উজ্জ্বল শ্যামলা হউয়ার কিছুটা সম্ভাবনা থাকে। এরা মিথ্যাচার সাধারণত খুব একটা করে না, আর করলেও সেই মিথ্যা আপনি সহজেই ধরতে পারবেন।

কোষ্টের বর্ণ নীল, রূপালী, অথবা সবুজ বর্ণেরও হতে পারে। এই তিন বর্ণের গু আমার মনে হয় না আপনি ইহকালে দেখিবার সুযোগ পাইবেন। বড়জোর গ্রেপ সোডা খেয়ে গুয়ের বর্ণ নীলাভ করার একটা চেষ্টা করতে পারেন মাত্র। তা ও মনে হয়না কাজে দিবে। তাছাড়া কারও যদি থেলিয়াম পয়জনিং এ ভুগে Prussian Blue প্রয়োগের কারণে কোষ্টের বর্ণ নীলাভ হতে পারে। তবে হ্যাঁ, আপনি যদি অত্যাধিক পরিমাণে চিনি খেতে পারেন তাহলে ডাইজেস্টিভ এরিয়াতে Bile এর মাত্রা বাড়াতে তরল সবুজাভ গু হাগার এক অপূর্ব মূহুর্ত অবলোকন করার এক অনন্য সৌভাগ্য আপনি অর্জন করতে পারেন। এইসব বর্ণের গু আমার সচক্ষে দেখার সুযোগ হয়নি, তাই এদের ব্যাপারে আমি অজ্ঞই বলা চলে। তাই এই গোত্রের মানুষ কি রকম হবে, তা বলা আমার জন্য অসম্ভব।

আমি আগেই বলেছি, অসম্ভব কিছুই না। আপনি যে বিরক্ত হয়ে আমার লেখা পড়া বন্ধ করে দিয়েছেন তাও অসম্ভব না। আবার হয়তো করার মতোই কিছুই নাই দেখে হয়তো কান চুলকাতে চুলকাতে পড়ে যাচ্ছেন ভ্রু কুচকিয়ে, এবং চোখদুটো আধা খুলে। চোখদুটো আধা খুলে রেখেছেন কারণ এখন আপনি আরাম পাচ্ছেন। মানুষ যখন জাগ্রত অবস্থায় আরাম পায় তখন তার চোখদুটো আধা খোলা থাকে আর আধা বন্ধ থাকে। এটা আমার কথা না, এটা ডক্টর বেঞ্জামিনের কথা। তাই আপনি যেহেতু এখন কান চুলকাচ্ছেন তাই আপনার চোখ আধা খোলা থাকাটাই স্বাভাবিক। একটা পরামর্শ দিচ্ছি, কান চুলকানি বন্ধ করার পর যেটা দিয়ে চুল্কাছিলেন তা একটু নাক দিয়ে শুকে দেখবেন। এতে ছি ছি করার কিছুই নাই। আমরা আসলে কান থেকে যে খৈল বের করি তাকে যদি আপনি ময়লা বলে ছি ছি করেন তাহলে এটাকে অপমান করা হবে। এগুলো আসলে হচ্ছে একপ্রকার মোম যা আমাদের কানকে বাহিরের বাতাস আর পানি থেকে মুক্ত রাখে। আর এই খৈ লে কিন্তু এলকোহলও থাকে। তাই বলছিলাম শুকে দেখার জন্য। এলকোহলের ঘ্রাণও কিন্তু নেশা তৌরিতে সহায়ক। একবার শুকে দেখবেন কি?

যাইহোক আমি এখানে কান চুলকানি বা গু নিয়ে গোলটেবিল বৈঠক করার জন্য আসি নাই। আমি আসছি আমার জীবনের কাহিনী শোনানোর জন্য... একজন আবুলের কাহিনী ...

কাহিনী শুরুতেই একটু রস মার্কা কথা ঢেলে দিলে ভালো হয়, আপনার আগ্রহ জিইয়ে রাখতে পারবো। (একটা জিনিস লক্ষ্য করেছেন, মানুষ যে খুব আজব প্রাণী! জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত চেষ্টা করে যায় অন্যের আগ্রহ ধরে রাখার।জন্মের পর পরই কান্না জুড়ে দেয় সবার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য, আবার মৃত্যুর পরও সবাইকে কাঁদিয়ে সেই আগ্রহ কিছুক্ষণের জন্য হলেও জিইয়ে রাখে। বড়ই আজব প্রাণী...) এখন আমার আগ্রহ ধরে রাখার রসের কথাটা হচ্ছে, আমি গত ৭ বছর আমার বড় বোনের বান্ধবীর সাথে 'পলান টুক টুক ' খেলছি। প্রেমিকের ভাষায় যাকে বলে 'প্রেম ', আর মুরুব্বীদের ভাষায় যাকে বলে 'নষ্টামী '। আপনি হয়তো ভাবছেন এতে রসের কি হইলো!!! ভাবতেই পারেন, ভাবনা আপনার তয় তালগাছ আমার। কারণ সমীক্ষায় দেখা গেছে, ১৫-২৭ বছরের পুরুষদের ৬৭ শতাংশ তার থেকে বয়সে বড় মেয়েদের বা বেডিদের প্রতি আগ্রহ বেশী থাকে। মেয়েদের বেলায় বয়সের গন্ডিটা আবার একটু কম, তবে শতাংশের দিক দিয়ে বেশী। ১১-১৯, এই বয়সের মেয়েরা নাকি মাত্রাতিরিক্ত বয়সের পুরুষদের ব্যপারে 'বিশেষভাবে ' আগ্রহী হয়ে থাকে। বাপ - চাচা বয়সী লোকদের কাছে নাকি নিজেদের দেহ সপে দিতে কুন্ঠিত বোধ করে না! অভিজ্ঞতা বলে কথা... সপে তো দেওয়া যেতেই পারে। সাম্প্রতিক সময়ের প্যান্থারের এড দেখে তো মনে হয়, তারা ইতিমধ্যেই 'আসল পুরুষের ' মেডেল পেয়ে গেছে। যাইহোক, বেশিরভাগ পুরুষের মতো আমারও ম্যাচিউর ওমেন এক নম্বর পছন্দ। যদিও তন্দ্রার সাথে রিলেশন হউয়ার সময় এতো কিছু মাথায় ছিলো না। তখন মন ছিল নরম ভেজা মাটির মতো, আর নরম মাটি পাইলে তো বিলাইও নাকি হাগে!!!

আরেকটু রস ঢালি, আমি আবার অল্পতে বিশ্বাসী না। ঢালবো যখন বোতল উপুড় কইরাই ঢালবো। তাছাড়া কাষ্টমারও তো ধরা লাগবে। আমার তো মনে হয় কান চুলকানো যাদের শেষ তারাও হয়তো গেছে গা। যাইহোক লেখা যখন শুরু করছি তখন থামলে মান সন্মানের ব্যপার। মান -সন্মান আবার অনেক বড় জিনিস, আর নিজের কাছে নিজের মান সন্মান হাড়ানোও লজ্জার বিষয়। যাই হোক যে কথা বলছিলাম, তন্দ্রা আমার থেকে বড় হবার পাশাপাশি আরেকটা বিষয় আছে, যা আপনাদের সুড়সুড়ি একটু হলেও দিতে পারে। আর তা হচ্ছে, সে হিন্দু আর আমি মুসলিম। হিন্দু মেয়েদের যে মার্কেটে ডিমান্ড আছে সে বিষয়টা হয়তো আপনি কিছুটা হলেও ওয়াকিবহাল। কোন ক্ষেত্রে ডিমান্ড, তা হয়তো সহজেই বুঝতে পারছেন। তাই আর খোলসা করলাম না। যদিও আমি তাসলিমা নাসরীনের মতোই জানি, এখানে অনেকেই আছেন যারা সুশীল সমাজের মুখোশ পড়ে রসময় সাহিত্য চর্চা করতে পছন্দ করেন। কথা হচ্ছে এই বিষয়ে আমারও কোন আপত্তি নেই বা থাকা উচিত নয়। আরে ভাই শারীরবৃত্তীয় চাহিদা তো শরীরেরই একটি অংশ, নাকি। এটা নিয়ে এতো মাতামাতির কি আছে!! হিন্দু ধর্মে কামশাস্ত্র তো ধর্মেরই একটি অংশ, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে পাগান অনুসারীদের মতে স্ত্রী -লিংগম হচ্ছে একটি সর্গীয় ব্যপার। আর বিজ্ঞানীদের মতে জাগ্রত অবস্থায় মানুষ নাকি একমাত্র একটি কাজই পূর্ণ মনোযোগ, একনিষ্ঠ, আন্তরিক, এবং আনন্দের সহিত করতে পারে, আর তা হচ্ছে 'সংগম '। আর এই সংগমের কায়দা কানুন হিন্দু মেয়েরা জানে বিধায় তারা তা স্বতঃস্ফূর্তভাবে করতে পারে। যার কারণে উপমহাদেশে হিন্দু মেয়েদের এতো ডিমান্ড। যাঃ শালা বলেই তো দিলাম মুখ ফসকে!!!

যাইহোক সংগম স্বর্গীয় সুখ হোক আর নরকীয়, হিন্দু মেয়েদের ডিমান্ড থাকুক আর না থাকুক, আর আপনারা বিশ্বাস করেন আর না ই বা করেন, তন্দ্রার সাথে আমার গত ৭ বছরে অনেকবার রুমডেট হলেও আমরা কিন্তু সেই স্বর্গীয় সুখ উপভোগ করিনি একটি বারের জন্যও ... না আমি নৃপুংশক নই, আবার আমি ধজভঙ্গতেও ভুগছি না, এবং আমি সাধু গোত্রীয় মানুষও নই। আমি হাজি বংশের ছেলেও না, তন্দ্রার বাবাও কোন পুরোহিত নয়। আমি রবিন্দ্রনাথের চাইতেও এমিনেমের গালিগালাজ পূর্ণ গান শুনতে বেশী ভালোবাসি, তন্দ্রাও ইমরান হাসমির ছবি দেখতে পছন্দ করে। আমি গডে বিশ্বাসী না, যখন যা মন চায় তখন তা ই করি। তারপরও গত সাত বছরে আমরা একবারের জন্য হলেও চেষ্টা করিনি ... পাগানদের ভাষায় যা হচ্ছে স্বর্গীয় সুখ, আর আপনাদের ভাষায় যা হচ্ছে 'নষ্টামি '...একটি বারের জন্যও না... আর ঠিক এরকমই ছিল আমাদের ৭ বছরের ভালবাসা। 'ছিল ' বলছি কারণ এখন আর তা অবশিষ্ট নেই।

আমি বাথরুমে ঢুকেছিলাম ভোর ৪ টা বাজার কিছুক্ষণ আগে... মুখ ধুয়ে শেষ বারের মতো নিজেকে আয়নায় দেখছিলাম ... দাড়ি গোফ বড় লাগছিলো খুব, উপরের ঠোঁট দেখতে পাচ্ছিলাম না, চুলগুলো ছিলো এলোমেলো .. তেল না দেওয়ার কারণেই কিনা জানি না, লালচে লালচে দেখাচ্ছিল ... আর চোখগুলোর নিচে কালো কালো দুটি ছোপ.. তারপরও খুব শান্ত ছিলো চোখজোড়া ... মানিব্যাগ থেকে ব্লেডটি বের করেছিলাম ঠিক তারপরেই.. ব্লেডের উপরে লেখা 'Sharp'। ব্লেডটা কিনেছিলাম রাত সাড়ে দশটায়। তন্দ্রাদের বাসায় যাওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে, বাস থেকে নেমেই। ব্লেড কিনার পর হাতে নিয়েই মনে হলো, ২২ বছরের জীবনে এইটাই হচ্ছে আমার কিনা প্রথম ব্লেড। আমি ব্লেডটা ম্যানিব্যাগের সাইড পকেটে রেখেই ফোন দিয়েছিলাম তন্দ্রার বাবাকে। রাত তখন বাজে ১০টা ২০.. আমি বললাম, "স্লামালাইকুম...আমি চান্দিনায় এসেছি"। কান্নাতাড়িত কন্ঠে নাক টানতে টানতে তিনি আমাকে বললেন, "কোথায় তুমি? "

- আমি পালকি সিনেমা হলের সামনে। আজকে অনেক রাত হয়ে গিয়েছে, আমি আগামীকাল সকালে আপনার সাথে দেখা করতে চাচ্ছি।

- রাতে কোথায় থাকবা তুমি?

- আমি আমার ব্যবস্থা করে নিয়েছি, আপনি এ বিষয়ে চিন্তিত না হলেও চলবে।

তিনি বিড় বিড় করে কি যেন বললেন, তারপর কলটি কেটে দিলেন। আমি আমার রাতের থাকার ব্যবস্থা করে নিয়েছিলাম .. বন্ধ করা একটি দোকানের শিকল দিয়ে বেধেঁ রাখা বেঞ্চের উপর। খুব ক্ষিধে লাগছিল তখন, সারাদিনে এক বেলা খেয়েছিলাম সেদিন। আর তার থেকেও বেশী লাগছিল পানির পিপাসা। দোকানের পাশেই একটি টিউবওয়েল ছিল, সম্ভবত সেই পানির আর্সেনিকের মাত্রা ১০ এর কাছাকাছি হবে। আমি মুখে দিতেই মনে হলো আমি লোহার গুড়া মিশানো পানি মুখে দিয়েছি। ঐ পানি দিয়ে হাত - মুখ ধুয়েই ঢক ঢক করে পানি খেতেই মোবাইল ২য় বারের জন্য বেজে উঠেছিল। এবার কল করেছে তন্দ্রা, যার কারণে আমার এতোদূর ছুটে আসা। যার প্রতিটি কথার পরের কথা আমি জানতাম কি হবে। যার কাছে গেলেই আমি একটি অদ্ভুত ঘ্রাণ পেতাম, চোখ বন্ধ করে বুঝার চেষ্টা করতাম ঘ্রাণটা কিসের .. যাকে একা পেলেই দুহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরতাম খুব জোড়ে, দম নাকি তার বন্ধ হয়ে আসতো তারপরও ছাড়তাম না... যে কিনা অন্য কোনো মেয়ের ফিগার দেখে আমার উত্তেজিত হবার কথা বলার আগেই আমার গালে কষে সবার সামনে থাপ্পড় দিয়ে দিত। আমি তখন আশপাশে কেউ দেখছে কিনা নিশ্চিত হয়ে অই মেয়ের ফিগারের বাকি আলাপটুকু নিরাপদ দুরত্ব থেকে শেষ করার চেষ্টা করতাম। যে কিনা তার মন মতো কথায় সায় না দিলেই 'থু 'করে একদলা থুতু দিয়ে দিত আমার মুখে অথবা গালে.. কোন কোন সময় আমার গায়ে আর মাঝে মাঝে আসেপাশে কেউ না থাকলে একেবারে আমার মুখের ভিতরে। আরো একজায়গায় থুতু অবশ্য দিয়ে দিত মাঝে মাঝে, তা আমি আর বলতে চাচ্ছি না। না হয় এই লেখা আবার রসময় গুপ্তের সাহিত্যে পরিণত হয়ে যাবার আশঙ্কা আছে। যাইহোক তার থাপ্পড়ের চাইতেও এই থুতু দেওয়ার ভয়ে আমি তটস্থ থাকতাম বেশিরভাগ সময় কিনবা অপেক্ষা করতাম ঠিক এটার জন্যই...

টিউবওয়েলর পানি মুখ থেকে মুছতে মুছতে ভাবছিলাম এই মেয়ে শেষ আমার গায়ে থুতু মেরেছিল ১৩ই নভেম্বর, আর আজ ১৭ই নভেম্বর ... ৫ দিন ... মাত্র ৫ দিনে আমার জীবনের সবথেকে সুন্দরতম অধ্যায় শেষ হয়ে যাচ্ছে ... মাত্র ৫ দিন ...আর এদিকে মোবাইল ভাইব্রেট করেই যাচ্ছে ...


TO BE CONTINUED ...
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৫৬
৮টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×