ভুম ভুম ভুম…ভুমমমম! এক ঝটকায় আকাশের দিকে উড়তে লাগলাম। বোমা ফোটার বিকট আওয়াজে মাটি ফেটে গেল। পৃথিবী কেঁপে উঠল। তখনই নিজেকে গাছের ওপর আবিষ্কার করলাম।ঝুলন্ত বাদুড়ের মত ঝুলে আছি গাছের ডালে।বাদুড়তো আনন্দে ঝুলে থাকে।আর আমি দানবের তাড়া খেয়ে মহাদুঃখে ঝুলে আছি।মনে হচ্ছিলো মটমট করে ডাল ভেঙ্গে বুঝি ধপাস করে চিৎপটাং হয়ে পড়ে মাটির ফাটলে তলিয়ে যাব।নাহ্, আর নয়, পৃথিবীর মাটিতে আর নয়! শক্ত একটা ডাল ধরে ডালে বসে পড়ি।দুই পা ঝুলিয়ে চারিদিকে তাকাই।কেউ নেই।গাছেই থাকবো বলে দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিলাম।মানুষের সংগ ত্যাগ করলাম।গাছের পাতা দিয়ে ঘরের ছাউনি বুনলাম।ডাল-পাতা দিয়ে ঘরের বেড়া দিলাম।গাছের আজব আজব ফল খেলাম। উদরপূর্তি ভোজনের পর ঘুমিয়ে পড়ি।
ডুরুম ডুরুম ডুমমমম! এক নিমিষে পানির ওপর হঠাৎ ছিটকে পড়লাম।কারা যেন পঁচিশ বছর বয়সের গাছের কান্ড নিষ্ঠুরভাবে কেটে ফেলল, টেরই পেলাম না।পানির ওপর একটা ডিম ভাসছে।এটা মুরগী বা পাখির ডিম নয়। দৈত্যের মত বিশাল আকারের ডিম, চল্লিশ ফুটের মতো।ঢেউয়ের তালে তালে ওঠা নামা করছে।ডিমের ভেতর ঢুকে পড়লাম।বাহ্, কী চমৎকার ডিম বাড়ি! দু’টা রুম ও ছোট্ট একটা বাথরুমও রয়েছে ভেতরে।এমন রোমাঞ্চকর পরিবেশ আমাকে মুগ্ধ করল।নাহ্, আর নয়, পৃথিবীর গাছে আর নয়! পানির ওপর সারা জীবন থেকে যাব।
ধুম ধুম ধুমমমম! গুলির শব্দ।ডিম বাড়ি ভেঙ্গে খান খান হয়ে গেল।আমি পানির তলে তলিয়ে গেলাম।ওমা! সাগরের তলে একি? খাবারের রেস্টুরান্ট। মন্ডা মিঠাই, সন্দেশ, রসগোল্লা পেট পুড়ে খেলাম। নাহ্, আর নয়, পৃথিবীর পানির ওপর আর নয়! সাগরের তলদেশই আমি সারাটা জীবন কাটিয়ে দেবো।আচমকা আমার দশ বছরের বোন, তনিমা কাঁপা গলায় ডাক দিল, ‘ভাই…য়া, ও ভা…ইয়া, ওঠো। বাইরে দা, কুড়াল ও ছুরি নিয়ে মানুষ ছুটাছুটি করছে!’ আমি হকচকিয়ে উঠে বললাম, ‘আহা, দিলি তো সব পন্ড করে!’