somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শুন্যের গর্ভে- শেষ পর্ব( বিদায় বন্ধু...)

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

... কিছুদিন পরে আমার এক বন্ধুর আমন্ত্রনে আবার মালদোভিয়ায় যাই । ভেবেছিলাম দুয়েক সপ্তাহের মধ্যে ফিরে আসব। কিন্তু ইচ্ছে অনিচ্ছায় কেটে গেল নয় মাস। মস্কোতে যখন ফিরে আসলাম তখন আর সে হোস্টেলে না উঠে আমার এক বন্ধুর বাসায় গিয়ে উঠলাম সাবলেট হিসেবে। বছর দু-য়েক পরে দেশে ফিরে আসলাম।
এরমাঝে ওর সাথে দু-য়েকবার দেখা হয়েছে কিন্তু সে স্মৃতি ধোয়াটে হয়ে গেছে। তবে আমি যখনই যেখানেই ছিলামনা কেন ও সবসময়ই আমার খোঁজ খবর রেখেছ সরা সরি না হলে বন্ধু মারফত। আমিও চেস্টা করেছি ও কেমন আছে জানতে?
দেশে আসার কিছু আগে শুনলাম তন্ময় নাকি নামকরা এক প্রাইভেট ফার্মে চাকরি করে। এতদিন শুনেছি ও নিজে বেকার থেকে সবাইকে নাকি চাকরি দেয় এখন সে নিজেই চাকরি করে শুনে কিছুটা সস্তি হল।

দেশে কেটে গেছে ততদিনে এক বছরের কিছু অধিককাল সময়। রুশীয় স্মৃতি প্রায় ভুলে গিয়ে আমি আমার মত স্বদেশী বনে ব্যবসায় হাত পাকাচ্ছি।
ছুটির দিনে অলসএক দুপুরে আমার রুমে ছোটভাই এসে বলল-
‘মস্কো থেকে এক বন্ধু নাকি আমার সাথে দেখা করতে এসেছে।’
কে হতে পারে ভাবতে ভাবতে ড্রইং রুমের পর্দ সরাতেই চমকে উঠলাম ..। ও আমাকে দেখে উঠে দাড়িয়ে একটু লাজুক হেসে বলল- ‘কেমন আছ?’
-আরে আপনি যে- কেমন আছেন? (তন্ময় আমার দু-য়েক বছরের সিনিয়র ছিল। সে আমাকে তুমি' সন্মোধন করলেও আমি হয়তো তাকে আপনি করেই বলতাম? ভুলে গেছি একদম ভুলে গিছে!)
আঃ কত বছর পরে কথা হল আমাদের। তবুও এ্যাতদিনের অনভ্যাস, জড়তা কাটতে সময় লাগল তবে পারলামনা আর আগের মত ঘনিষ্ঠ হতে।কিছুটা ছাড়া ছাড়া প্রশ্ন উত্তরে চলল আমাদের আলাপ ।
- ওকে দেখে বিস্মিত আমি তবুও বিস্ময়টা ভিতরে গোপন রেখে জিজ্ঞেস করলাম ‘বাসা চিনলেন কি করে?’
‘মামুনের কাছ থেকে ঠিকানা নিয়েছি।’
‘ও ..। ওরা সব কেমন আছে?’
‘ ভালই। ব্যাবসা করছে। আগের থেকে অবস্থা এখন অনেক ভাল।’
কথা বলার সময় ওর দিকে তাকিয়ে দেখলাম অনেক শুকিয়ে গেছে । কন্ঠার হার বেরিয়ে গেছে। বলতে গিয়ে মনে হয় বারবার ঠোট শুকিয়ে আসছিল তাই একটু পর পরই ফ্যাকাশে জ্বিহ্বা খানিকটা বের করে ভিজিয়ে নিচ্ছিল ।চোখ জোড়া আরো বেশী গভীর ও উজ্জল মনে হচ্ছিল।
‘তারপর কিখবর বলেন?’
আবার লাজুক ভঙ্গিতে ফ্যাকাশে হেসে বলল- ‘এই আছি। তুমি কেমন?’
ছোট করে বললাম- ‘চলছে ।’
‘ রাশিয়া আবার কবে যাচ্ছেন। নাকি..?’
‘নাঃ। সামনের সপ্তাহেই চলে যাচ্ছি।’
‘ কি খাবেন?’
‘ কিছু না।' খানিকটা থেমে তার শুকনো ফ্যাকাসে ঠোটজোড়া ফের ভিজিয়ে নিয়ে বলল-'একটু ঠান্ডা পানি হবে ?’

পানির বদলে কোক খাওয়ালাম সাথে সামান্য নাস্তা ।
সেদিন সে আমার ওখানে মিনিট ত্রিশেক ছিল। সময়ের তুলনায় কথা হয়েছে সামান্যই। কেন যেন তার সাথে সহজ হতে পারিনি।
ফিরে যাবার সময় দরজার মুখে গিয়ে আচমকা ঘুরে সে খুব আন্তরিক ভাবে আমার হাত জোড়া ধরে বলল-‘সেদিনের ওই ব্যাপারটা ভুলে যেও।’
তার কথার মধ্যে এমন কিছু ছিল যে আমার চোখে জল এসে গেল। কিন্তু আবেগকে অতি কষ্টে দমন করে ক্লিস্ট হেসে তাড়াহুড়ো করে বললাম- ‘ও আমি ভুলে গেছি কবে!’
দরজা থেকেই বিদায় দিলাম। চলে যাবার পরে ভাবলাম ওর সাথে কিছুদুর এগিয়ে গেলে কি হত।
-তন্ময়ের সাথে সেই শেষ দেখা!

বছর খানেক পরে আমার রাশিয়া প্রবাসী বন্ধু 'জাকির' মস্কো থেকে আসলে ওকে নিয়ে ঘুরতে বেরুলাম। কথা প্রসঙ্গে তন্ময়ের কথা আসতেই ওর সারা মুখ জুড়ে বেদনার ছায়া ছড়িয়ে পড়ল ;বলল, তন্ময় নাকি খুব অসুস্থ! ‘কি সব ফাউল ডাক্তার দেখায় তারা ধরতে পারছেনা ওর কি রোগ।’
এখন ওকে নাকি দেখলে চেনাই যায়না, যেন বয়স একলাফে বেড়ে গেছে বিশ বছর।দেহ কঙ্কালসার।
ভীষন কষ্টে আমি কুঁকড়ে গেলাম! কি বলে?তাহলে কি ও শেষবারের মত আমার কাছে ক্ষমা চাইতে এসেছিল? নাঃ বাজে শঙ্কাটা মূহুর্তেই উড়িয়ে দিলাম।ওর কিছুই হবে না।
তারও মাস ছয়েক পরে মামুনের কাছে জানলাম ও নাকি এখন দেশে। আমি তার কাছে জানতে চাইলাম ওর কোন ঠিকানা আছে কি না?
সে দুঃখ প্রকাশ করে বলল নেই। পরক্ষনেই সগোক্তির মত করে বলল -'কন্ট্রাক্ট করেই বা কি হবে। কে জানে ও এত দিন বেচে আছে কিনা?'
-মানে? দারুন বিস্ময়ে অস্ফুট আর্তনাতের স্বরে আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম!
‘কেন তুই জানিস না?’ কপাল কুচকে সে অবাক দৃস্টিতে আমার দিকে তাকাল...
‘আমি শুনেছিলাম ও অসুস্থ।ডাক্তাররা নাকি ওর রোগ ধরতে পারছে না।ব্যাস এইটুকুই।’
‘ওর লিভার সিরোসিস হয়েছিল। মস্কোর ডাক্তাররা জবাব দিয়ে দিয়েছে।’
আমি চিৎকার করে শুধালাম ‘কি বলিস? কবে এসেছে দেশে?’
‘তা মাস দুয়েক হবে। ভারতে নিয়ে যাবার কথা ছিল নিয়েছে কিনা কে জানে?’
‘তোর সাথে শেষ কবে দেখা হয়েছিল ?’
‘আমিইতো ওকে ফ্লাইটে তুলে দিলাম। আমি মনে করেছি তুই সব জানিস। আসার সময় আমাকে জড়িয়ে ধরে কি কান্না ” কথা বলতে বলতে ওর কন্ঠে গাঢ় বাস্প জমল।
সে কান্না আমাকেও স্পর্শ করল।তবে চোখের কোল বেয়ে নয় হৃদয়ের গাত্র বেয়ে নিঃশব্দে -অতি সর্ন্তপনে ।
অনেক্ষন দুজনেই চুপচাপ। কথা হারিয়ে ফেরেছি যেন। মনের মাঝে আকুলি বিকুলি করছে অনেক অনেক অব্যাক্ত কথা যা হয়তো কখনোই বলা হবেনা।
বেশ খানিক্ষন পরে নিরবতা ভেঙ্গে ও বলল- মস্কোর শেষ দিনগুলোতে তন্ময়ের কথা;
‘হাসপাতালে ভর্তি হবার আগে মাঝে মধ্যেই অসুস্থ থাকত। চেহারা দেখে বোঝা যেত তার ভিতরের ভাঙন। পুরোনো বন্ধুদের কেউ মদ খেতে ডাকলে এড়িয়ে যেতে চেস্টা করত। কিন্তু তারা যখন তার পৌরষে আঘাত করে বলত ‘কি মিয়া সামান্য সর্দি কাশি হইছে তাতেই কাহিল? আপনি না খাইলে বোতলে মাইন্ড করবে ।’
তখন বাধ্য হত খেতে কিন্তু মদ গেলার সময় তার মুখের বিকৃত ভঙ্গী আর দেহের খিচুঁনী কারো চোখ এড়াত না।
আমি তাকে যখনই জিজ্ঞেস করতাম ‘আপনাকেতো অসুস্থ মনে হচ্ছে ভাল ডাক্তার দেখাচ্ছেন না কেন?’
তখন সে লাজুক হেসে মুখ উজ্জল চোখে চেয়ে বলত- ’ আরে মামুন ভাই ডাক্তার দেখায় কি হবে? আমাদের মত পোকা মাকর মরলেই কি আর বাঁচলেই কি।’
যেনি হাসপাতালে ভর্তি হবে সেদিন সকালেও সে আমার ওখানে একবার এসেছিল। প্রায় দিন দশেক পরে দেখা। আমিতো তার চেহারা দেখে আঁতকে উঠলাম। জিজ্ঞেস করলাম ‘আপনার এই অবস্থা ক্যান?’
প্রতিউত্তরে আবার সে লাজুক হেসে বলল ‘ দিন শেষ! অপরাধ করলে মাফ- টাপ কইরে দিয়েন।’
আমি তার কথার প্রতিবাদ করে বললাম ‘ কি যে আউল ফাউল কথা কন? ডাক্তার দেখান ইনশাআল্লাহ সব ঠিক হয়ে যাবে।’
সে এবার ভীষন কষ্ট করে উচ্চস্বরে হেসে উঠল ‘হা - হা । কাইল ডাক্তার দেখাইছিলাম। পরীক্ষা কইরা কইল হাসপাতালে আজকের মধ্যেই ভর্তি হইতে।- ভীষন ক্লান্ত কন্ঠে বলল, শরিরটা এত খারাপ লাগে? দোয়া কইরেন।’
আমি অবাক হলাম এই প্রথম সে হয়তো কারো কাছে দোয়া চাইল? প্রচন্ড প্রান প্রাচুর্যে ভরপুর সদাউৎফুল্ল কেয়ারলেস তন্ময়ের চোখে এই প্রথম দেখতে পেলাম বিষাদের ছায়া!
ব্যাস্ততার জন্য কয়েকদিন তার খবর নিতে পারি নাই। দুঃসংবাদটা পেলাম ওর এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু মারফত।
সেদিনই ছুটে গেলাম। হাসপাতালের ধবধবে সাদা বিছানায় পরে থাকা তার কঙ্কালসার দেহ দেখে আমি ভীষন চমকে উঠলাম! না দেখলে বিশ্বাস হয়না এতদ্রুত মানুষের মারিরিক অবস্থার এতটা অবনতি হতে পারে । মনে হচ্ছিল কোন সাকার মেশিন দিয়ে কেউ তার শরিরের অভ্যান্তরের সব অস্থি মজ্জা টেনে বের করে নিয়ে গেছে!
কাছে যেতেই ঘোলা চোখ মেলে সে তাকাল ঠোটের কোনে ফুটে উঠল এক চিলতে হাসি। সেটা বড় বিষাদের বড় কস্টের - যা এক নজর দেখলেই বোঝা যায়। আমি তার হাত ধরতেই দু ফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল চোখের কোল বেয়ে। -অস্ফুট স্বরে বলল, ‘প্রচন্ড ব্যাথা মামুন ভাই। সহ্য করতে পারি না। আমি মনে হয় আর বাঁচব না মামুন ভাই। ’
আমি জানি তার দিন ফুরিয়ে এসেছে তাই মিথ্যে সান্তনা-ই দিতে হল ‘ধ্যাত! কিচ্ছু হবে না। এসব আলসারের ব্যাথা ছোট্ট একটা অপারেশন করলেই ঠিক হয়ে যাবে। কোন চিন্তা কইরেন না।’
আমার মিথ্যে সান্তনায় সে কতটুকু আস্বস্ত হল কে জানে। চোখ বন্ধ করে শীর্ন হাতখানা সামান্য তুলে আমার হাতটা আলতো করে ধরে কিছুক্ষন পরে ছেড়ে দিয়ে বলল ‘যান।’
ফেরার পথে হাসপাতালের কতৃপক্ষের কাছে আমার ফোন নাম্বার রেখে বলে এসেছিলাম যে কোন প্রয়োজনে ফোন করতে।
দু’দিন পরেই ওখান থেকে ফোন এল - ‘ তন্ময়ের নাকি এমারজেন্সি রক্তের প্রয়োজন? রক্তের গ্রুপ ‘ও’ নেগেটিভ। ’
তখুনি ফোন করে পরিচিত অপরিচিত সবাইকে রক্তের গ্রুপ জিজ্ঞেস করলাম ? রক্ত দিতে সবাই আগ্রহী –কিন্তু একজন ছাড়া আর কারোই গ্রুপ ম্যাচ করলনা। মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। কথাচ্ছলে আমার এক রুশ বান্ধবীকে সে কথা বলতেই ও জানাল ‘ওর গ্রুপও নাকি ‘ও’ নেগেটিভ।’ আমি তাকে অনুরোধ করার আগেই নিজে থেকেই রক্ত দিতে চাইল!
তখুনি ওই দুজনকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটলাম। সেই রুশ মেয়েটা শুধু রক্ত দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি। অপরিচিত বিদেশী একটা ছেলেকে আমার অনুরোধ বা অনুমতির কোন তোয়াক্কা না করেই অনেকদিন সেবা করেছিল ।
তন্ময় ওকে বোন ডেকেছিল। রক্তের বোন - আপন বোনের মতই নয়কি?
দিন পনের পরে ডাক্তাররা বলল- ওর আর বাঁচার কোন আশা নেই। ভাল হয় শেষের কটা দিন দেশে গিয়ে আত্মীয় স্বজনের মাঝে অতিবাহিত করুক।’

ওর জমানো কোন টাকা ছিলনা। আমরাই কয়েকজন মিলে চাঁদা দিয়ে টিকিট কেটে ওকে পাঠানোর ব্যাবস্থা করলাম। কিন্তু সমস্যা হল ওর সাথে একজন বিশ্বস্ত গাইড কাম নার্স দরকার? দেশে আসতে লাগে প্রায় তেরো ঘন্টা।
ওখানে ও দেশে এয়ারপোর্ট ইমিগ্রেশন ঢাকা থেকে ফরিদপুর যাওয়া সব মিলিয়ে ন্যুনতম ঘন্টা বিশেকের ধাক্কা। একেতো চরম অসুস্থ তারপরে তাকে ছয় ঘন্টা পর পর কড়া ডোজে ব্যাথা নাশক ইন্জেকশন দিতে হয়। যখুনি ওষুধের ক্রিয়া কেটে যায় তখুনি নাকি সে তীব্র স্বরে আর্তনাত করে!
-কাকে পাঠাব? আমাদের সৌভাগ্য যে পরবর্তী ফ্লাইটেই আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর দেশে আসার কথা ছিল। তাকে তন্ময়কে টেক কেয়ার করার অনুরোধ করতেই সে রাজী হয়ে গেল।
তন্ময় ততদিনে ওর রোগের কথা জেনে গেছে। দেশে ফেরার কথা বলাতে প্রথমে ও রাজী হচ্ছিল না। পরে ওকে স্বান্তনা দিয়ে জানান হল ‘এই রোগের সবচেয়ে ভাল চিকিৎসা নাকি ভারতে হয়। সুস্থ হতে চাইলে তাকে দেশ হয়ে সেখানে যেতে হবে।’ আমরাও শুনেছিলাম ভারতে নাকি ক্যান্সারের খুব ভাল চিকিৎসা হয় ।
অবশেষে সে রাজী হলে কোন এক সন্ধ্যায় ব্যাথানাশক ড্রাগ পুশ করে একটা হুইল চেয়ারে করে এয়ারপোর্টে নিয়ে গেলাম। অনেকে গিয়েছিল সেদিন। সবাই জানত তন্ময়ের সাথে এই শেষ দেখা। ...পৃথিবির খুব কম সৌভাগ্যবানদেরই শেষ বিদায় এমন ঘটা করে হয়।
বিদায়ের আগে সে ঢুলু ঢুলু চোখে আমার কানের মুখটা এনে অতি কস্টে ভাঙ্গা ভাঙ্গা ফিস ফিস করে বলল,
‘আমি কি বাঁচব? আমার এখন খুব বাচতে ইচ্ছে করছে মামুন ভাই!’
কথা শেষে আমার হৃদয় চিরে বেরিয়ে এল দীর্ঘ- দীর্ঘ শ্বাস! আমার এই শ্বাস কি তাকে আর স্পর্শ করবে?
কি জানি? কোথায় সে? হয়তো চিরতরে হারিয়ে গেছে মহা শুন্যের গর্ভে?
...শেষ
ফুটনোটঃ তন্ময় মাত্র উনত্রিশ বছর বয়সে মারা যায়। যতদুর জানি বাংলাদেশে ফিরে আসার পরে তার পরিবার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে তাকে বাঁচিয়ে রাখবার জন্য। কোন আশা নেই জেনেও তারা উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রথমে ভারতে পাঠিয়েছিল পরে যুক্তরাষ্ট্র অব্দি।
তন্ময়(ছদ্মনাম) সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিল নব্বুইয়ে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে। ছাত্র রাজনীতির কারনেই হয়তো এরশাদ পরবর্তী ক্ষমতাসীন দলের রোষানলে পড়ে সে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল(আমার ধারনা-কিংবা অন্যের মুখে শুনেছি- সে কখনো বলেনি আমাকে।)
বন্ধু মামুনের জবানীতে শেষের এই অংশটুকু আমার লিখতে সময় লেগেছে সূদীর্ঘ তের বছর! শেষের এই অংশটুকু যতবার-ই লিখতে বসেছি ততবার-ই প্রচন্ড ভাবাবেগে নিজেকে সংযত করতে না পেরে লেখায় ক্ষান্ত দিয়েছি।
মৃত্যুর পরে একজন মানুষের সব গোপনীয়তা শেষ হয়ে যায় বলে আমি মনে করিনা- তাইতো তার ছদ্ম নাম দিলাম।
স্বভাবতই লেখাটা আমি আমার সেই ক্ষনজন্মা মৃত বন্ধুকে উৎসর্গ করছি। তন্ময় তার প্রতিভার অপচয় করেছে-জীবনটাকে নিয়ে খেলেছে। আমি চাইনা এই লেখার মাধ্যমে তন্ময়কে কেউ অনুসরন করুক। মহামূল্যবান এই জীবনকে তুচ্ছ ভাবার কোন কারন নেই।
আগের পর্বগুলোর জন্য:
পর্ব৭- Click This Link
পর্ব ৫ ও ৬- Click This Link
প্রথম পর্ব- Click This Link
২১টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মেট্রোরেল পেয়েছি অথচ হলি আর্টিজানে নিহত জাপানিজদের ভুলে গেছি

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৫ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:১১

জাপানে লেখাপড়া করেছেন এমন একজনের কাছে গল্পটা শোনা৷ তিনি জাপানে মাস্টার্স করেছিলেন৷ এ কারণে তার অনেক জাপানিজ বন্ধু-বান্ধব জুটে যায়৷ জাপান থেকে চলে আসার পরেও জাপানি বন্ধুদের সাথে তার যোগাযোগ... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুদ্ধে নিহত মনোজ দা’র বাবা

লিখেছেন প্রামানিক, ২৫ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৭১ সালের এপ্রিলের ছব্বিশ তারিখ। দেশে তখন ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ শুরু হয়েছে। উচ্চ শিক্ষিত এবং কলেজ পড়ুয়া ছাত্রদের নিয়েই বেশি সমস্যা। তাদেরকে খুঁজে খুঁজে ধরে নিয়ে হত্যা করছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিয়ে থেতে ভাল্লাগে।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৫ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৯

আমার বিয়ে বাড়ির খাবার খেতে ভালো লাগে। আমাকে কেউ বিয়ের দাওয়াত দিলে আমার খুসি লাগে। বিয়ের দিন আমি সেজে গুজে বিয়ে বাড়িতে আয়োজন করা খাবার থেতে যাই। আমাদের এলাকায় বর্তমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুর সামনের পাতার ৯টি পোষ্টে শুন্য (০ ) মন্তব্য।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৫ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০



আজকে সকালে একটু দেরীতে ( নিউইয়র্ক সময়, সকাল ৮:২১ ) সামুতে লগিন করলাম; লগিন করে আজকাল প্রথমে নিজের লগিন স্ট্যাটাস পরীক্ষা করি: এখনো সেমিব্যানে আছি। মোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহর সাহায্য

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৫ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৪০



দুই মেয়ের পরীক্ষা বিধায় আমার স্ত্রীকে লক্ষ্মীপুর রেখে আসতে গিয়েছিলাম। বরিশাল-মজুচৌধুরীর হাট রুটে আমার স্ত্রী যাবে না বলে বেঁকে বসলো। বাধ্য হয়ে চাঁদপুর রুটে যাত্রা ঠিক করলাম। রাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×