somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

১০ নভেম্বর, ১৯৮৭ এবং স্বাধীনভাবে মৃত্যুর অধিকার

১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একদল মুক্তিকামী সাহসী ছাত্র-জনতার কন্ঠ তৎকালীন সৈরাচারের বিরুদ্ধে স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত করছে ঢাকা’র জিরো পয়েন্ট এলাকার আকাশ বাতাস। হাজারো আন্দোলনকারীর মাঝে একজনকে সহজেই আলাদা করা যায়, সবার আগে দৃপ্ত পায়ে এগিয়ে চলা এক যুবক নূর হোসেনের বুকে লেখা “সৈরাচার নীপাত যাক” আর পিঠে “গনতন্ত্র মুক্তি পাক”।
মাত্র ভাত খেতে বসেছে এমন সময়ে মিছিলের ডাক শুনে ছুটে এসেছে, নিজেকে দমিয়ে রাখতে পারেনি নূর হোসেন।

সৈরাচারের হৃদয় কেঁপে উঠে ছাত্র-জনতার গর্জন দেখে, ক্ষমতায় টিকে থাকতে হলে নিশ্চিহ্ন করে দিতে হবে এই আন্দোলন। গর্জে উঠে পুলিশের থ্রি নট থ্রি- রাজপথে রক্তের বন্যা। বুকে ধারন করা গনতন্ত্রের স্বপ্ন নিয়ে নিথর নিস্তব্ধ হয়ে যায় নূর হোসেন এবং আরো দুই জন- কিশোরগঞ্জের ক্ষেতমজুর নেতা আমিনুল হুদা টিটো ও যুবলীগ নেতা নূরুল হুদা বাবুল।

নূর হোসেনদের রক্ত রাঙ্গিয়ে দেয় জনতার হৃদয়- ক্রোধ আর আক্রোশে ফেটে পড়ে লাখো গনতন্ত্রকামী মানুষ, জেগে উঠে বাংলার আপামর জনগণ, পতন হয় সৈরাচারের।

ত্রিশ লক্ষ জীবনের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার ৪২ বছর এবং নূর হোসেনদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে সৈরাচার পতনের ২২ বছর পরে আজ ১০ নভেম্বর, ২০১৩ সালে আমরা সত্যিই কি স্বাধীন! বাংলাদেশে সত্যিই কি গনতন্ত্র বিরাজমান! দুঃখজনক হলেও মনে উঁকি দেয় আজ এমন প্রশ্ন।

মাত্র দুইটি দল অথবা পরিবারের ইচ্ছামতো চলে আমাদের এই সুন্দর দেশটা, চালিত হই আমরা সাধারন জনগণ। আমরা চলতে বাধ্য হই, ভয় আর শংকা কড়ে কুড়ে খায় আমাদের হৃদয়কে প্রতিনিয়ত প্রতিমূহুর্তে। চারদিকে অন্যায় অসংগতি আর হীন স্বার্থ চরিতার্থে শুধুই হানাহানি, অশান্তির আগুন। কখনো এই দল অথবা পরিবার আবার কখনো ওই দল অথবা পরিবার। ছোট ছোট অন্যান্য দলগুলো বাদ পরবে ক্যান! ওরাও এদের সাথে মিলেমিশে চুষে খাচ্ছে আমজনতার রক্ত। ভয়ঙ্কর এদের রক্তের নেশা, সহসাই শেষ হবার নয়। এরা নিজেরা রক্ত দেয় না কখনোই, খেটে খাওয়া মানুষকে প্ররোচিত করে।

এরা এসি রুমে বসে পরিকল্পনা করে কিভাবে ক্ষমতায় গিয়ে সাধারন মানুষকে শোষণ নীপিড়ন করবে, কিভাবে নিজেরা সম্পদের পাহাড় গড়বে! কোমলমতি ছাত্র সমাজকে ক্ষণিকের লাভের হিসাব দেখিয়ে ঠেলে দেয় বন্দুকের নলের সামনে, নিজেদের আদরের সন্তানকে বিদেশে পাঠিয়ে দেয় যেন নিরাপদে লেখাপড়া শিখতে পারে। আর নির্মমভাবে খুন হয় বিশ্বজীত এবং মনির রা। এদের নিজেদের সন্তানের জীবনের মূল্য অসীম অপরিসীম কারন এই সন্তানরাই কোন একদিন আবার রক্ত চুষবে আমজনতার।

ক্ষমতার মোহে এরা অন্ধ, এতোটাই যে রাজনৈতিক হীন স্বার্থ উদ্ধারে মসজিদ মন্দির গীর্জায় আগুন দিয়ে সাধারন মানুষকে একে অপরের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়। ক্ষমতার স্বাদ পেতে এরা সেই সৈরাচার আর স্বাধীতা বিরোধীদের সাথে আঁতাত করে, বুকে বুক মিলায়। হীন রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারে এরা কখনো আস্তিক আবার কখনো নাস্তিক।

শুধুমাত্র ক্ষমতা এবং একমত্র ক্ষমতাই এদের ধ্যান-জ্ঞান। দেশ ও দশের ভলো এরা কখনোই ভাবেনি, ভাবছে না এবং ভাববেও না কোনদিন। কথায় কথায় এরা গনতন্ত্র আর স্বাধীনতার বুলি আওড়ায়, অন্তর সৈরতন্ত্র অথবা পরিবারতন্ত্রে আর পাপে ভরা। এই পাপ নাম জানা না জানা ত্রিশ লক্ষ মানুষ আর নূর হোসেনদের রক্তের সাথে বেইমানি আর বিশ্বাসঘাতকতার পাপ। এই পাপ শত মায়ের বুক খালি করার পাপ, সন্তানকে পিতৃহারা আর পিতাকে সন্তানহারা করার পাপ।

এরা রক্তচোষা, এরা হায়েনা, এরা রাক্ষস, এরা পাপী- এরা ক্ষমার অযোগ্য।
সময় এসেছে বাঙ্গালী জেগে ওঠো, বুঝে নাও নিজের অধিকার- স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার, প্রাণ ভরে হাসতে পারার অধিকার, ভয়-শংকাহীন বেঁচে থাকা ও মৃত্যুর অধিকার।

সময় এসেছে এদের বর্জন করার। হে বীরের জাতি আরেকবার গর্জে ওঠো, একটু অন্যরকম ভাবে ভাবতে শুরু করো ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে।

এই দেশটা তোমার আমার সবার, কারো বাপ অথবা কারো স্বামীর সম্পত্তি নয়।……….
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×