somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যন্ত্রমানব হওয়ার অপেক্ষায়!

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সম্পূর্ণ একটি যন্ত্রমানব হয়ে উঠার সক্ষমতা কবে অর্জন করবো তাই ভাবছি? তখন পারস্পরিক দ্বন্দ্বের অবসান ঘটবে নিশ্চয়ই । মনব মন বিচিত্র, এই বিচিত্রতার কারনও ব্যাখ্যা সমৃদ্ধ । জীবনাচরণের মূল ভিত্তি স্হাপিত হয় সেই জন্ম লগ্ন থেকেই। জন্মের পরপরই পরিবার ও সমাজ তাকে যে দিক্ষা দেয় সে সবই সমস্ত জীবনে বোধদয়ের গোপন মন্ত্র হিসেবে কাজ করে,এ কারনে মানুষের ভাবনার বড় অংশ পরাধীনও বটে! সে গ'ড়ে উঠে অন্যের মত করে, তাকে বলা হয় আমাদের সৃষ্টিকর্তার নাম আল্লাহ, সে তা বিশ্বাস করতে শেখে । তাকে বলা হয় আমাদের সৃষ্টিকর্তার নাম ভগবান, সে তা বিশ্বাস করতে শেখে। শৈশবের বৃত্তটি কজন ভাঙ্গতে পারে? বা কজনের ভেতর ভাঙ্গতে চাওয়ার ভাবনা তৈরি হয়? মানুষের বিচিত্র আচরণের বীজ রোপিত থাকে তার শৈশবের ঘটনা সমূহের অন্তর্ঘাতে । অবচেতন মনের তথ্য মুছে দেওয়ার ক্ষমতা মানুষেরা এখনো অর্জন করেনি । অবচেতন তথ্য ভান্ডারের অনির্বচিত বোধ মাঝে মাঝেই খেয়াল খুশি মত সচেতন দুনিয়ায় লব্ধ বোধ গুলোকে তছনছ করে দেয়। আমরা "হা" হয়ে যাই, "থ" বনে যাই, অপ্রত্যাশিত আচরণে মুষড়ে পড়ি! এমনটা প্রায়ই ঘটে আমরা আমাদের আপনজন এবং রাজনীতিবিদ সহ নানা মানুষের আচরণে মাঝে মাঝেই বিস্মিত হই। হ্রদ-যন্ত্র বন্ধ হয়ে কেউ কেউ মারাও পড়ে!মানুষের স্বাধীন আচরণ কতটুকু স্বাধীন? এখানে মানুষ বা নিজেকেই অসহায় লাগে। আমরা ভুল করি ক্রোধে উন্মাদ হই,খুব অল্পতেই অবিশ্বাসী হই, সন্দেহ প্রবনতা বাসা বাঁধে, হাসতে ভুলে যাই হতাশা জীবনকে করে তুলে বিষাক্ত! যদিও অনাকাঙ্খিত আচরণ বলয় থেকে আপাত মুক্তির পথও আছে। আমরা সন্তানকে কি ধরনের পরিপার্শ্ব দিচ্ছি, তার সামনে কোন ধরনের জগৎ আমরা গড়ে তুলছি তা একটা মহা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । এবং আমরা দ্রুত নিজেদের অবভ্য আচরণের সরূপ নির্ণয় করতে পারলাম কিনা এবং সে অনুযায়ী শুদ্ধির পথ খুঁজে পেলাম কিনা এটিও বড় বিষয়।

আগামী ৫০ বছরের ভিতর মানুষের জীবন-যাপন অনেক বেশি যান্ত্রিকায়ন হবে এবং জীবন চক্রের সকল তথ্য সহজে সংরক্ষণ ও সেগুলোর আদান প্রদানে যুগান্তকারী সাফল্য আসবে ।মস্তিষ্কের অনেক বেশি অংশ পরিকল্পিত ভাবে কাজে লাগানো যাবে। ইচ্ছামত ভাষা রূপান্তরের ব্যবস্থা থাকবে। সারাদিন আমি কোন কোন শহরে ঘুরে বেড়ালাম,কত মাইল ভ্রমন করলাম, গাড়িতে অফিস সহকর্মীর পাশে বসে আমার শরীরের উত্তাপ ভয়ানক মাত্রা অতিক্রম করেছিলো কিনা, হ্রদয় স্পন্দন কেমন ছিল, সারা দিনে কত গুলো মিথ্যা বলি, কতবার লোভ করি, কত ঘন্টা ঘুমানোর অভ্যাস,পছন্দের বিষয় কি কি, কতজন মানুষের সঙ্গে ঘুমিয়েছি, সপ্তাহে কত ঘন্টা হতাশ থাকি, উৎফুল্ল থাকি কত ঘন্টা, আমার আবেগের সত্য মিথ্যা রূপ ইত্যাদি সব তথ্য জানার আগ্রহে আমার সঙ্গীটি যখনি আমার হাতে হাত রাখবে ক্ষণিকের মধ্যেই সেন্সরের মাধ্যমে আমার দেহের ভেতর স্হাপিত চিপ থেকে সকল তথ্য তার মস্তিষ্কে ট্রান্সফার হবে, আমরা এনালাইজ হবো দ্রুত! মানুষ তখন সুখী থাকবে, শারীরিক অসুস্হতা দ্রুত নির্ণয় ও নিরাময় করতে পারবে । যে সমস্ত হরমোন মানুষকে হতাশ করে তুলে তা মুহূর্তেই নিয়ন্ত্রিত হবে,মানুষগুলো অতি সৎ হবে। ভার্চুয়াল মিটিং করে মানুষের পকেট বাঁচবে। শৈশবে তৈরি ভুল গুলো মস্তিষ্কের অবচেতন অংশ থেকে ঠিকঠাক করা যাবে । সততা ও সঠতা সেকেন্ডেই বুঝা যাবে! মানুষ জেনেশুনে প্রেমে পড়বে, সঙ্গী নির্বাচন করবে। "তারে দেখাতে পারি নে কেন প্রাণ । (খুলে গো)/কেন বুঝাতে পারি নে হৃদয়-বেদনা ।......." রবীন্দ্রনাথের কষ্ট আমাদের আর পরম্পরায় বইতে হবে না, প্রাণ হতে আমরা আমাদের অনুভূতি ট্রান্সফার করতে পারবো সহজে! এমনকি রাজনৈতিক সব অনিয়ম যাদুর মত উধাও হবে। নেতাদের জীবন ডাটা গণ মাধ্যমে প্রকাশিত হবে, দুর্নিতী দমন কমিশনও কপি পাবে! পদ্মায় তখন কয়েকশ সেতু হবে, পদ্মা সেতু- ১, পদ্মা সেতু-২, পদ্মা সেতু-১০০, তখন সব থাকবে খোলা মেলা দুর্নীতি মুক্ত।
আমাদের মনের ভাবনা যত বাহিরে আনা যাবে তত ভুল নির্ধারন সহজ হবে, সুযোগ সৃষ্টি হবে সংশোধনের। তখন সবার দৃষ্টিভঙ্গি কি এক থাকবে? না, তখন এখনকার মত অনেক দৃষ্টিভঙ্গিই থাকবে কিন্তু সে দৃষ্টিভঙ্গি প্রথাগত মিথ্যা/কুসংস্কার চিহ্নিত করে তা থেকে মুক্ত থাকবে। এখন যেমন খুব সামন্য বিষয়েও কোটি-কোটি মত ও মতাদর্শের মধ্যে মারামারি-কাটাকাটি হয় তখন এমন হবে না । আমরা অনেক বিষয়ে একমত হবো, যেমন রামূর বৌদ্ধমন্দিরে আক্রমন করা ঠিক ছিলো কিনা? রোহিঙ্গাদের সর্বশেষ আশ্রয় না দেওয়া উচিৎ হলো কিনা? হিন্দুদের বাংলাদেশ থেকে
খেদিয়ে ভারত পাঠানো জায়েজ কিনা? তারেক জিয়া পীর কিনা? জয় পুরো পুরি বাঙ্গাল কিনা? এমন সব বিভক্তি থাকবে না । আমরা কি সেকালে আবেগহীন হয়ে যাবো? মনে হয় না, কারন মস্তিষ্ক থেকে আবেগের হরমোন তো শেষ হবে না, আবেগ গুলো কেবল হয়ে উঠবে সত্য আবেগ! যে কোন পরিস্হিতিতে মানুষ তখন নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে পারবে, ছেলে-মেয়ে হাবিজাবি নেশা-ভাং খেয়ে দ্রুত নষ্ট হবে না। নিজেকে মানব যন্ত্র পরিচয় দিতে কেমন লাগবে? নিশ্চয়ই অভ্যাস হয়ে যাবে, নামটি ও হয়ে উঠবে যান্ত্রিক hUMA69#*11-007938!a-pin ।

৫০ বছর পর আমার বয়স কত হবে, আমি থাকবো তো তখন ? পাঠক এটাই এখন বড় সমস্যা! আরো দু-এক যুগ আগে হলে ভালো হতো, সবচেয়ে ভালো হতো যদি আজকেই হয়ে যেতাম যন্ত্রমানব! এক্ষণি সবটুকু বুঝে নিতাম তাকে অথবা সে বুঝে নিত আমায়! মানুষে মানুষে এক সহজ সম্পর্ক তৈরি হতো,থেমে যেতো সব অস্হিরতা সময়টা ভালো যেতো ।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মাটির কাছে যেতেই..

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

মাটির কাছে
যেতেই..


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ https://pixabay.com/

ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও

স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেলা ব‌য়ে যায়

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩০


সূর্যটা বল‌ছে সকাল
অথছ আমার সন্ধ্যা
টের পেলামনা ক‌বে কখন
ফু‌টে‌ছে রজনীগন্ধ্যা।

বাতা‌সে ক‌বে মি‌লি‌য়ে গে‌ছে
গোলাপ গোলাপ গন্ধ
ছু‌টে‌ছি কেবল ছু‌টে‌ছি কোথায়?
পথ হা‌রি‌য়ে অন্ধ।

সূর্যটা কাল উঠ‌বে আবার
আবা‌রো হ‌বে সকাল
পাকা চু‌ল ধবল সকলি
দেখ‌ছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৭



ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:১৪


কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়
আমার বাবা-কাকারা সর্বমোট সাত ভাই, আর ফুফু দুইজন। সবমিলিয়ে নয়জন। একজন নাকি জন্মের পর মারা গিয়েছেন। এ কথা বলাই বাহুল্য যে, আমার পিতামহ কামেল লোক ছিলেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙালী মেয়েরা বোরখা পড়ছে আল্লাহর ভয়ে নাকি পুরুষের এটেনশান পেতে?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:২০


সকলে লক্ষ্য করেছেন যে,বেশ কিছু বছর যাবৎ বাঙালী মেয়েরা বোরখা হিজাব ইত্যাদি বেশি পড়ছে। কেউ জোর করে চাপিয়ে না দিলে অর্থাৎ মেয়েরা যদি নিজ নিজ ইচ্ছায় বোরখা পড়ে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×