সর্বদলীয় মন্ত্রিসভা গঠনে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দেয়ার পর মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠক বসছে আগামী রোববার।
Published : 13 Nov 2013, 03:12 PM
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, রোববার সকাল ১০টায় সচিবালয়ে এই বৈঠক হবে।
তবে ওই বৈঠকে মন্ত্রিসভার পুরনো সদস্যরাই অংশ নেবেন, না পুনর্গঠিত মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বসবেন- সে বিষয়ে কিছু বলেননি সচিব।
তিনি বলেন, “মালয়শিয়ার প্রধানমন্ত্রী সোমবার বাংলাদেশ সফরে আসবেন। প্রধানমন্ত্রীর তার সঙ্গে বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। এ কারণে মন্ত্রিসভার বৈঠক হবে রোববার।”
গত সোমবার মন্ত্রিসভার সর্বশেষ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ‘তারিখবিহীন’ পদত্যাগপত্র তুলে দেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা, যার মধ্য দিয়ে নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
ওইদিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব সাংবাদিকদের বলেন, মহাজোট সরকারের মন্ত্রিসভার বর্তমান কাঠামোতে এটিই ‘হয়তো’ মন্ত্রিসভার ‘শেষ’ বৈঠক।
সংবিধান অনুযায়ী একজন মন্ত্রী পদত্যাগপত্র জমা দিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা কার্যকর হয়ে যাওয়ার কথা।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, এবার মন্ত্রীদের ক্ষেত্রে সেটি ঘটবে না। যারা সর্দলীয় সরকারের থাকবেন না, কেবল তাদের পদত্যাগপত্রই রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে।
অন্যদিকে সরকারের এ দাবি নিয়ে বিরোধী দলসহ টেলিভিশনে বিভিন্ন আলোচনায় প্রশ্ন তোলা হয়। বলা হয়, সংবিধান অনুযায়ী মন্ত্রীদের পদত্যাগপত্র তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হয়ে যায়। তা গ্রহণ করা বা নাকচ করার সুযোগ সংবিধানে নেই।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের কাছে এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান তুলে ধরেন আইনমন্ত্রী।
তিনি বলেন, কেবল রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করার জন্য পদত্যাগপত্র দিলেই তা কার্যকর হয়, এক্ষেত্রে তা হয়নি।
এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল বাকিরের পক্ষে অ্যাডভোকেট মো. ফারুক হোসেন মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে একটি উকিল নোটিস পাঠান। মন্ত্রীদের পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার পরও কেন তাদের পদ শূন্য ঘোষণা করা হচ্ছে না- তা জানতে চাওয়া হয় ওই নোটিসে।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে নোটিসের জবাব না দিলে হাই কোর্টে রিট আবেদন করা হবে বলেও নোটিসে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সাংবাদিকদের বলেন, লিগ্যাল নোটিস তিনি পেয়েছেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছেন।
“সাধারণত এ ধরনের উকিল নোটিসের জবাব দেয়া হয় না। এক্ষেত্রে দেয়ার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই। যদি প্রয়োজন হয়ে সেক্ষত্রে জবাব দেয়া হতেও পারে।”
এক প্রশ্নের জবাবে সচিব জানান, কোনো মন্ত্রীর পদত্যাগপত্র এখনো মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে আসেনি।
“মন্ত্রিসভার আকার ছোট হলে প্রধানমন্ত্রী যাদের পদত্যাগপত্র পাঠাবেন, তার সারসংক্ষেপ করে আবার তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলেই এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।”
সর্বদলীয় সরকারে নতুন কাউকে মন্ত্রী করা হলে প্রধানমন্ত্রী সে বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে টেলিফোনে বা লিখিতভাবে জানাবেন বলেও জানান মোশাররাফ।
তিনি বলেন, নতুন মন্ত্রীদের তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর স্বল্পতম সময়ে শপথের ব্যবস্থা করা হবে।
বর্তমান মন্ত্রীদের মধ্যে সর্বদলীয় সরকারে কে থাকবেন, আর কে থাকবেন না- প্রধানমন্ত্রীই তা ঠিক করবেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।