somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মূল্যস্ফীতি ও অর্থনীতি প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুদ্রাস্ফীতি বা মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে আমার সবাই কম বেশি জানি। একটি অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব বিভিন্ন এবং একযোগে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক হতে পারে। এর সবচেয়ে নেতিবাচক প্রভাব হচ্ছে অর্থ ধারনের সুযোগব্যয় বৃদ্ধি যা একটি দেশের অর্থনীতির জন্য অনেক বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে কারণ এতে সঞ্চয়ের প্রবণতা কমে, যার প্রভাব পরে সামগ্রিক অর্থনীতির উপর।
২০০৫-০৬ অর্থবছরের তথ্যকে ভিত্তি ধরে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায় গত ডিসেম্বর মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ। নভেম্বরে এই হার ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ ছিল।
সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরের তথ্যকে ভিত্তি ধরে করা পুরনো হিসাবেও। নভেম্বরের ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ থেকে বেড়ে ডিসেম্বরে হয়েছে ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ এই তথ্য প্রকাশ করেন পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক গোলাম মোস্তফা কামাল।
তিনি বলেন, প্রধানত আটা, ডাল, মাছ, মাংস, মসলা, তেল ও দুধসহ অন্যান্য খাদ্য সমাগ্রীর মূল্য বাড়ায় খাদ্য মূল্যস্ফতি ঘটেছে। এ কারণে সার্বিক মূল্যস্ফীতিও কিছুটা বেড়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নতুন পদ্ধতিতে (২০০৫-০৬ অর্থবছরের তথ্যকে ভিত্তি ধরে) নভেম্বরে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ। ডিসেম্বরে তা বেড়ে ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ হয়েছে।
আর পুরনো পদ্ধতিতে (১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরের তথ্যকে ভিত্তি ধরে) খাদ্য মূল্যস্ফীতি নভেম্বরের ৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
দুই হিসাবেই খাদ্য বহির্ভূত খাতের মূল্যস্ফীতি সামান্য কমে এসেছে। পুরনো হিসাবে নভেম্বরের ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ থেকে কমে ডিসেম্বরে হয়েছে ৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ। আর নতুন পদ্ধতিতে হিসাব করলে এই হার ১০ দশমিক ৬৮ শতাংশ থেকে কমে ১০ দশমিক ০৩ শতাংশ হয়েছে।
এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, পরিধেয় বস্ত্র, অসবাবপত্র ও গৃহস্থালী, পরিবহন, শিক্ষা উপকরণসহ বিবিধ দ্রব্য ও সেবার মূল্যবৃদ্ধির কারণে খাদ্য বহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি ততোটা কমেনি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০০৫-০৬ ভিত্তি বছরের হিসাবে ২০১২ সালে গড় মূল্যস্ফীতি (১২ মাসের হিসাব) হয়েছে ৬ দশমিক ২২ শতাংশ। আর ২০১১ সালে এ হার ছিল ১১ দশমিক ৩ শতাংশ।
অর্বছরের (২০১১-১২) হিসাবে ২০১১ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পরযন্ত (৬ মাসের গড়) মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ১০ দশমিক ৮১ শতাংশ।
আর চলতি অর্বছরের হিসাবে ২০১২ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
অন্যদিকে ১৯৯৫-৯৬ ভিত্তি বছরের হিসাবে ২০১১ পঞ্জিকা বছরে গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ। ২০১২ সালে এর হার ছিল ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
অর্থবছরের হিসাবে গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পরযন্ত গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৬১ শতাংশ। ২০১১ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে এ হার ছিল ১১ দশমিক ৩১ শতাংশ।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, নতুন হিসাবে ডিসেম্বরে গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ১৭ শতাংশ, যা নভেম্বরে দশমিক ৬০ শতাংশ ছিল।
ডিসেম্বরে গ্রামে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে দশমিক ৩১ শতাংশ। আর খাদ্য বহির্ভূত খাতে ৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
আর শহর এলাকায় ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ০৪ শতাংশ। খাদ্য ও খাদ্য বহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতির হার যথাক্রমে ৭ দশমিক ৬৫ এবং ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ হয়েছে।
গত বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল (পুরনো হিসাবে) ১১ দশমিক ৫৯ শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে তা কমে ১০ দশমিক ৪২ শতাংশে দাড়ায়। মার্চ মাসে তা আরও কমে ১০ দশমিক ১০ শতাংশ হয়। আর এপ্রিলে এ হার ছিল ৯ দশমিক ২ শতাংশ।
এভাবে গত ১০ মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমতে থাকলেও নভেম্বর মাস থেকে তা ফের বাড়তে শুরু করে।
২০০৫-০৬ অর্থবছরের তথ্যকে ভিত্তি ধরলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি অক্টোবরের ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ হয়। আর ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরের তথ্যকে ভিত্তি ধরে করা পুরনো হিসাবে ৭ দশমিক ২২ শতাংশ থেকে বেড়ে হয় ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ।
গত ১৮ জুলাই পরিসংখ্যান ব্যুরোর টেকনিক্যাল কমিটির সভায় ২০০৫-০৬ ভিত্তি বছরের সিপিআই (ভোক্তার মূল্য সূচক) অনুমোদন দেয়া হয়। সে ভিত্তিতে ২০০৫-০৬ ভিত্তি বছরের পাশাপাশি ১৯৯৫-৯৬ ভিত্তিবছরের মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রোড জ্যাম ইন ভিয়েতনাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৭



আমার ধারনা ছিল জটিল জ্যাম শুধু বাংলাদেশেই লাগে । কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল । ভিয়েতনামে এরকম জটিলতর জ্যাম নিত্য দিনের ঘটনা । ছবিটি খেয়াল করলে দেখবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×