বিদায়ী টেস্টে ২৬ রানের জন্য শতকের দেখা পাননি শচীন টেন্ডুলকার। তবে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টেও সহজ জয়ের পথে ভারত।
Published : 15 Nov 2013, 09:43 AM
চেতেশ্বর পুজারা ও রোহিত শর্মার শতকের ওপরে ভর করে ৪৯৫ রান করা স্বাগতিকরা ৩১৩ রানের লিড পেয়েছে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে যথারীতি বিপদে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩ উইকেটে ৪৩ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করা ক্যারিবীয়দের ভারতকে আবার ব্যাট করাতে ২৭০ রান প্রয়োজন। অর্থাৎ টেন্ডুলকারের আরেকবার ব্যাট করার সম্ভাবনা ক্ষীণই বলা যায়।
তার অভিষেক ১৯৮৯ সালের ১৫ নভেম্বর, পাকিস্তানের বিপক্ষে করাচি টেস্টে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুই যুগপূর্তির দিনটিতে শতক পেলে বিদায়টা আরো রঙিন হয়ে উঠতো। হলো না একটা ভুল শটের জন্য।
ঘরের মাঠ ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার প্রথম দিন শেষে ৩৮ রানে অপরাজিত ছিলেন টেন্ডুলকার। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা কোটি-কোটি টেন্ডুলকার-ভক্ত ৬২ রানের অপেক্ষায় ছিল। জীবনের শেষ টেস্টে শতক – এর চেয়ে মহিমান্বিত বিদায় আর কী হতে পারে!
শুক্রবার সকাল থেকে আগের দিনের মতোই আত্মবিশ্বাস ফুটে বেরোচ্ছিল তার ব্যাট থেকে। সতর্কতা আর আক্রমণের মিশেলে একটু-একটু করে এগিয়ে যাচ্ছিলেন অভীষ্ঠ লক্ষ্যের দিকে।
অফস্পিনার শেন শিলিংফোর্ডের করা দিনের দ্বিতীয় ওভারেই পর-পর দুই বলে চার মারেন টেন্ডুলকার। দুটোই দৃষ্টিনন্দন শটে। প্রথমটি চপ করে পয়েন্ট দিয়ে, পরেরটি প্যাডল সুইপ করে ফাইন লেগ দিয়ে।
অর্ধশতক পেতেও দেরি হয়নি। দিনের পঞ্চম ওভারের ঘটনা সেটা। টিনো বেস্টকে স্ট্রেইট ড্রাইভে সীমানা পার করার সঙ্গে-সঙ্গে উন্মাতাল হয়ে ওঠে ওয়াংখেড়ে। গ্যালারিতে উদ্বিগ্ন অঞ্জলি টেন্ডুলকার স্বামীর ৬৮তম অর্ধশতক দেখে তখন যত না আনন্দিত, তার চেয়ে অনেক বেশি স্বস্তিতে।
এরপর আরো তিনটি চার এবং তাতে সবার মনে হচ্ছিল একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে ২০০ টেস্ট খেলার অনন্য অর্জন স্পর্শ করা টেন্ডুলকারের শতক শুধুই সময়ের ব্যাপার।
কিন্তু ‘দুর্ঘটনা’ ঘটলো পানি পানের বিরতির পর প্রথম ওভারে। তা-ও আবার নরসিং দিওনারায়ণের নিরীহদর্শন অফস্পিনে।
অফ স্টাম্পের একটু বাইরে পিচ পড়া বলটা খানিকটা লাফিয়ে উঠেছিল। টেন্ডুলকার আপার কাট করতে চেয়েছিলেন। হয়তো ভুলে গিয়েছিলেন স্লিপ ফিল্ডারের কথা। ড্যারেন স্যামির অবশ্য ভুল হয়নি। বেশ কঠিন ক্যাচটা তালুবন্দী করে ইতিহাসের সফলতম ব্যাটসম্যানের ‘বিদায়ঘণ্টা’ বাজিয়ে দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক।
পুরো স্টেডিয়ামে তখন পিন পতন নীরবতা। ফিরে আসার সময় ব্যাট-হেলমেট উঁচিয়ে বিদায়-সম্ভাষণ জানানো টেন্ডুলকারের সম্মানে উঠে দাঁড়ায় হাজারো মানুষ।
১১৮ বলের দারুণ ইনিংসটা সাজানো ১২টি চারে। টেন্ডুলকার ও পুজারার তৃতীয় উইকেট জুটির অবদান ১৪৪ রান।