চট্টগ্রাম ওয়ার সিমেট্রি দামপাড়ায় অবস্থিত। সবুজ ঘাসে পরিবেস্টিত এই সমাধি দেখতে একদম সবুজ চাদরে মোড়া পার্কের মত যা দেখলে নয়ন জুড়িয়ে যায়। পর্যটকদের জন্যে চট্টগ্রামের যে কয়েকটি পরিদর্শনযোগ্য স্থান আছে তার মধ্যে এটি অন্যতম।
ঠিকানাঃ ১৯, বাদশা মিয়া চৌধুরী রোড। ভৌগলিকভাবে বলতে গেলে এটি চট্টগ্রাম বিমান বন্দর থেকে ২২ কিমিঃ উত্তরে এবং পোর্ট থেকে ৮ কিমিঃ উত্তরে।
ইতিহাসঃ
চট্টগ্রাম ওয়ার সিমেট্রি বৃটিশ আর্মি কতৃক নির্মিত। কমনওয়েলথ কতৃক রক্ষণাবেক্ষন করা হয় বলে এটিকে কমনওয়েলথ সমাধিও বলা হয়ে থাকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সৈনিকদের সমাধি এটি যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই কমনওয়েলথ এর আর্থিক সহযোগিতায় পরিচালিত হয়। প্রথমদিকে এটির সমাধির সংখ্যা ছিল মাত্র ৪০০ কিন্তু বর্তমানে এটির সমাধির সংখ্যা ৭৩১ তবে ১৭ টি সমাধির পরিচয় সনাক্ত করা যায়নি। এটির সমাধির সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ হল আসাম, ঢাকা, চট্টগ্রাম, যশোর, চন্দ্রকোণা, খুলনা, ডুলাহাজারী, কক্সবাজার সহ বিভিন্ন ক্যাথলিক সমাধী হতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সৈনিকদের এই সমাধীতে স্থানান্তর করা।
তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে আমরা নিহতদের যে পরিসংখ্যান পেয়েছি তা হল-
সৈন্য সংখ্যা- ৫২৪ জন
বৈমানিক- ১৯৪ জন এবং
নাবিক- ১৩ জন
এদেরকে দেশ অনুযায়ী ভাগ করে আমরা যে পরিসংখ্যান পেয়েছি তা হল-
ইউনাইটেড কিংডম- ৩৭৮ জন
কানাডা- ২৫
অস্ট্রেলিয়া- ৯ জন
নিউ জিল্যান্ড- ২ জন
অবিভক্ত ভারতবর্ষ- ২১৪ জন
পূর্ব আফ্রিকা- ১১ জন
পশ্চিম আফ্রিকা- ৯০ জন
মিয়ানমার- ২ জন
পরিদর্শনের সময়ঃ
সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এবং দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভিজিটরদের জন্য খোলা থাকে। রোগীদের জন্যেও রয়েছে সুব্যবস্থা। সদর ফটক (Main gate) থেকে হুইলচেয়ারে দেখানোর ব্যবস্থাও রয়েছে তবে সেক্ষেত্রে ফোন দিতে হবে এই নাম্বারেঃ 01628 507200
আমরা হয়তো অনেকেই আছি যারা এখনও ঘরের কাছের এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারিনি এই জন্যেই তো কবি বলেছেন,
"দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হইতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
একটি ধানের শীষের উপর
একটি শিশির বিন্দু"