somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিপ ক্যাডেট কলেজস ক্যাম্পেইন - ক্যাডেট কলেজের পুনর্জন্মের ইতিহাস

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এর মূল লেখক মিনু খাদেম, ১৩ তম ব্যাচ, FCC(Faujdarhat Cadet College). লেখাটি তার ব্লগ থেকে অনুদিত ও সংগৃহীত
তার ভাষাতেই এখানে দেওয়া হল।
লেখাটি অনুবাদ করেছেন মুহাম্মদ ভাই (Cadet College Year: 1999-2005)।




১. সঙ্গত কারণেই বিশ্বাস করতে বাধ্য হলাম যে, অন্য সবগুলো ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন ও বর্তমান ক্যাডেটদের কাউকেই বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজের ইতিহাস সম্পর্ক কিছু জানানো হয়নি। স্বাধীন বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজের অস্তিত্বের ইতিহাস বলার দায়িত্ব কেউই নেয়নি।

২. বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজের বিলোপ ও পুনরাবির্ভাবের ইতিহাস সম্বন্ধে বলতে গেলে ফিরে যেতে হবে ১৯৭২-৭৩ সালের যন্ত্রণাদায়ক দিনগুলোতে। আমি মনে করি, এই ইতিহাস অন্য সবগুলো ক্যাডেট কলেজে পৌঁছিয়ে দেয়ার দায়িত্ব ফৌজিয়ান ও সিসিসিএল (ক্যাডেট কলেজ ক্লাব লিমিটেড) এর সদস্য সবার উপরই বর্তায়। ১৯৭২-৭৩ সালে ক্যাডেট কলেজের ভাগ্য নির্ধারণকারী বেশ কিছু ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনাগুলোর যতটুকু মনে আছে ততটুকুই সংক্ষেপে তুলে ধরার চেষ্টা করছি:

ক) বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সহকারী জনাব তোফায়েল আহমেদ ১৯৭২ সালে ছাত্রদের রাজনৈতিক উইং তৈরীর উদ্দেশ্যে এফসিসি সফর করেন।

খ) আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে আমরা পাঁচজন সেই সময়কার “শাহজাহান হাউজ”-এ এক বৈঠকে মিলিত হই। এই বৈঠকে আমি ও আনোয়ারুল হক ছাড়া উপস্থিত অন্য তিনজন ছিলেন মরহুম কাইয়ুমুল হুদা, এম এ তারেক ও এম নুরুর রহমান। আমি ছাড়া সবাই ১২তম ব্যাচের। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, এফসিসিতে কোনভাবেই ছাত্র রাজনীতি প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না। শুধু এফসিসি না, কোন ক্যাডেট কলেজেই ছাত্র রাজনীতিকে অনুমোদন দেয়া যাবে না। এজন্য আমরা অনতিবিলম্বে এফসিসি’র দ্বাদশ থেকে সপ্তদশ ব্যাচের সবাইকে তোফায়েল আহমেদের রাজনৈতিক সভায় যোগদান থেকে বিরত থাকতে বলার ব্যাপারে সম্মত হই। শুধু বলা নয়, সেদিন সবাইকে অডিটোরিয়ামে না যাওয়ার ব্যাপারে রাজি করানোরও সিদ্ধান্ত হয়।

গ) এম আনোয়ারুল হক আমাকে ১৫, ১৬ ও ১৭তম ব্যাচের সবার মন, হৃদয় ও আত্মায় “ছাত্র রাজনীতিমুক্ত ক্যাডেট কলেজ” এর ধারণা বদ্ধমূল করে দেয়ার দায়িত্ব দেন। কারণ, এই জুনিয়র ব্যাচগুলোর সাথে আমার সম্পর্ক খুব ভাল ছিল। তারা আমাকে “ওস্তাদ” ডাকতো। আজও তাদের সবাইকে খুব ভালবাসি। সে সময় আমার দায়িত্ব ছিল অডিটোরিয়ামে তোফায়েল আহমেদের সভা বর্জনের ব্যাপারে এই ব্যাচগুলোর সবাইকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করে তোলা। “ছাত্র রাজনীতিমুক্ত ক্যাডেট কলেজ” এর সমর্থনে তখন অনেকেই এগিয়ে এসেছিল। তাদের সবার প্রতিই আমি কৃতজ্ঞ। অবশ্য সবার নাম মনে নেই। এই মুহূর্তে যাদের নাম পড়ছে তারা হল: ১৫তম ব্যাচের আনোয়ার শহীদ, ক্যাপ্টেন (অবঃ) আমিন ও কর্নেল (অবঃ) রহমান; ১৬তম ব্যাচের মরহুম মিজানুর রহমান, মাহবুব আনাম, আহমেদ ইসমাইল হোসেন, জাকারিয়া মান্নান, ব্রিগেডিয়ার মোল্লা ফজলে আকবর, মেজর জেনারেল ইকবাল করিম ভূইয়া, মজুমদার, মঈন, মোস্তাক ও ইফতেখার; ১৭তম ব্যাচের আহমেদ ইউসুফ হোসেন ও ব্রিগেডিয়ার সোহেল। আমরা শিক্ষকদের মধ্যেও এই চেতনা ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জনাব এম নাসির চৌধুরীর মাধ্যমে সব শিক্ষকদের জানানো হয়েছিল যেন তারা কেউ সেদিন অডিটোরিয়ামে না যান।

ফলাফল: ১০০% সফলতা। এক ব্যাচের মাত্র ৫ থেকে ৬ জন ক্যাডেট অংশ নিয়েছিল। তোফায়েল আহমেদকে খালি হাতে ফিরে যেতে হয়েছিল। তিনি সব ক্যাডেট কলেজের প্রতি রাগান্বিত হয়েছিলেন।

ঘ) এর মাত্র ১০ দিন পর, রেডিও-টিভি-সংবাদপত্রের মাধ্যমে আমরা খবর পেলাম যে, সব ক্যাডেট কলেজকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এখন থেকে সেগুলোকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে সাধারণ “সরকারী কলেজ” হিসেবে বিবেচনা করে হবে।

ঙ) ক্যাডেট কলেজের বিলুপ্তি ও সবগুলোকে (তখন ক্যাডেট কলেজ ছিল চারটি, এফসিসি ছিল প্রতিষ্ঠার দিক দিয়ে প্রথম) সাধারণ সরকারী কলেজের সাথে একীভূত করার খবরে আমরা প্রচণ্ড মর্মাহত হয়েছিলাম। আমাদের হৃদয় ভেঙে পড়েছিল, আমাদের আত্মায় রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছিল, আমরা তীব্র মানসিক যাতনার শিকার হয়েছিলাম। আমাদের মনোবল ভেঙে পড়েছিল। অনেকে (তাদের নাম বলছি না) বলছিল, “সরকারী সিদ্ধান্তই তো চূড়ান্ত, আমাদের কি-ই বা করার আছে”।

চ) সরকারের ক্যাডেট কলেজ বিলোপের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্যাডেটদের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া আসার প্রয়োজন ছিল, প্রয়োজন ছিল দৃঢ় সিদ্ধান্ত গ্রহণের। সবচেয়ে সিনিয়র হিসেবে এফসিসি’র প্রাক্তন ও বর্তমান (তৎকালীন) ক্যাডেটরা এক্ষেত্রে হার মানেনি। তারা প্রচণ্ড উদ্যমের পরিচয় দিয়েছিল।
প্রাক্তন ক্যাডেট বা অন্যান্য ক্যাডেট কলেজের মধ্যে যারা সিসিসিএল এর সদস্য তাদের কেউ কি এ খবর জানে? আমার মনে হয় না।

ছ) আমাদের নেতা ফৌজিয়ান এম আনোয়ারুল হক ভাই “শাহজাহান হাউজ”-এ সেই পাঁচজনের আরেকটি বৈঠকের আয়োজন করেন। এই বৈঠকের বিষয় ছিল, “বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজ টিকিয়ে রাখার জন্য আমাদের কি করা উচিত এবং কি অবশ্যই করতে হবে?”

জ) আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল, কলেজের সব ব্যাচের সব ক্যাডেটদের কাছ থেকে ক্যাডেট কলেজ টিকিয়ে রাখার পক্ষে মতামত সংগ্রহ করা। সব ক্যাডেটদেরকে ক্যাডেট কলেজ টিকিয়ে রাখার পক্ষে মতামত প্রদানে উৎসাহ দেয়াটাও আমাদের কাজের মধ্যে ছিল। আমরা এই উদ্যোগের নাম দিয়েছিলাম, “কিপ ক্যাডেট কলেজেস ক্যাম্পেইন”।

ঝ) দ্বাদশ থেকে শুরু করে সপ্তদশ পর্যন্ত এফসিসি’র প্রতিটি ব্যাচের প্রতিটি ক্যাডেট আমাদের এই প্রচারাভিযানকে সমর্থন করেছিল। আর সর্বসম্মতিক্রমে আমাদের এই অভিযানের নেতা মনোনীত হয়েছিলেন এম আনোয়ারুল হক ভাই। আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল একটাই: “কিপ ক্যাডেট কলেজেস ক্যাম্পেইন”।

ঞ) আমরা প্রথমেই ফৌজদারহাটের দুজন শিক্ষকের সাথে এ বিষয়ে কথা বলি। শিক্ষক দুজন ছিলেন: মরহুম এম জাকিরুল্লাহ এবং জনাব মাহবুব আলম ভূইয়া। তারা আমাদের এই উদ্যোগকে মনেপ্রাণে সমর্থন করেন যা আমাদের উদ্যম আরও বাড়িয়ে দেয়। সে সময়ে এফসিসি’র সব শিক্ষকই আমাদের সমর্থন করেছিলেন, সবার কাছ থেকেই আমরা উৎসাহ পেয়েছিলাম। অবশ্য তাদের মধ্যে কয়েকজন বেশী উৎসাহী হয়ে কলেজের চারটি হাউজের নামই পরিবর্তন করার কাজে লেগে গিয়েছিলেন।
এবং সে সময়কার চারজন সিনিয়র শিক্ষকের মধ্যে অধ্যক্ষ পদ নিয়েও দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছিল।

ট) আমরা চট্টগ্রাম ও ঢাকায় বসবাসরত এফসিসি’র অনেক এক্স-ক্যাডেটের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলাম। তাদের সবাই কায়মনোবাক্যে বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজ রক্ষার উদ্দেশ্যে পরিচালিত এই অভিযানকে সমর্থন করেন ও বিভিন্নভাবে উৎসাহ যোগান। আমাদের কয়েকজনকে মাঝেমধ্যেই ৩-৪ দিনের জন্য কলেজ থেকে অন-লিভে চট্টগ্রাম বা ঢাকায় যেতে হতো। সেখানে সরকারী দপ্তর ও সামরিক বাহিনীতে কর্মরত ফৌজিয়ানদের সাথে মিলে “কিপ ক্যাডেট কলেজ ক্যাম্পেইন” এর কাজ করতাম (ফৌজিয়ান সামরিক কর্মকর্তাদের অধিকাংশই পাকিস্তানে বন্দী ছিলেন আর বাংলাদেশে বসবাসরত মুক্তিযোদ্ধা সামরিক কর্মকর্তাদের একেকজন একেক সেনানিবাসে ছিলে।। কর্নেল এ এস এম নাসিম ভাই তখন বঙ্গবন্ধুর এমএসপি ছিলেন। কিন্তু সরকারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কিছু করা তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাই দীর্ঘ কয়েক মাস আমাদেরকে কোন ফলাফল ছাড়াই কাজ করতে হয়েছিল।

ঠ) এক সকালে ফৌজিয়ান চৌধুরী এম মহসিন ভাইয়ের (৪র্থ ব্যাচ) সাথে আমাদের দেখা করার সৌভাগ্য হয়। ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডে তার বাসায়ই আমরা দেখা করি। (স্পষ্ট মনে পড়ে, তিনি গোসল করছিলেন, তার স্ত্রী বাসায় ছিলেন না। এই সুযোগে আমরা ফ্রিজ থেকে প্রায় ৫ কেজি টাঙ্গাইলের রসমালাই ও মিষ্টি খেয়ে সাবাড় করে দিয়েছিলা।। তিনি আমাদেরকে ব্রিগেডিয়ার জিয়াউর রহমানের (পরবর্তীতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি: অক্টোবর ১৯৭৭ – মে ১৯৮১) সাথে দেখা করে তার পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা নিতে বলেন। তার কথামতই আমরা জিয়াউর রহমানের সাথে একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট করি। আনোয়ারুল কবির ভাই, কাইয়ুম ভাই, নুরুর রহমান ভাই, তারেক ভাই ও আমি এক সুন্দর সন্ধ্যায় ঢাকা সেনানিবাসে জিয়াউর রহমানের বাসায় যাই।

ড) সেদিন আমরা বিষয়টা নিয়ে বেশ গভীরভাবে আলোচনা করেছিলাম। ব্রিগেডিয়ার জিয়াউর রহমান ফোনে জেনারেল এম এ জি ওসমানীর (সে সময় বঙ্গবন্ধু কেবিনেটের নৌচালনা মন্ত্রী) সাথে ক্যাডেট কলেজের ভাগ্য ও এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন। ব্রিগেডিয়ার জিয়া দয়াপরবশ হয়ে জেনারেল ওসমানীর সাথে আমাদের একটি সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দেন। পরদিনই সকাল ৭:৩০ এ ওসমানীর মিন্টু রোডের বাসায় (বর্তমানে ঢাকা মেট্রোপলিটনের কমিশনারের কার্যালয়) তার সাথে আমাদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট ঠিক হয়।

ঢ) এখনও স্পষ্ট মনে পড়ে, নুরু ভাই ও কাইয়ুম ভাইয়ের সাথে আমিও সেদিন সিদ্ধেশ্বরীতে আমার বড় ভাইয়ের বাসায় বিনিদ্র রাত কাটিয়েছিলাম। আমাদের ঘুম আসেনি কারণ, আমরা বুঝতে পারছিলাম ওসমানীই আমাদের শেষ ভরসা। তখনকার চারটি ক্যাডেট কলেজেরই ভাগ্য নির্ধারিত হওয়ার কথা পরের দিনটিতে। ব্রিগেডিয়ার জিয়া বলেই দিয়েছিলেন, “জেনারেল ওসমানী না পারলে বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজের বিলুপ্তি কেউই ঠেকাতে পারবে না।”
অবশেষে সেই সকাল এল। স্পষ্ট মনে পড়ে, আমরা পাঁচ জন মিন্টু রোডে ওসমানীর বাসায় যাই সকাল ৭:১০ এর দিকে। গিয়ে দেখি বাসার চাকার-বাকরেরা নিচের তলার হলরুমগুলো পরিষ্কার করার কাজে ব্যস্ত। আমাদেরকে নিচে তার পিএ’র রুমে অপেক্ষা করতে বলা হয়। পিএ আসলে তবেই সাক্ষাতের ব্যবস্থা হবে।

আনুমানিক ৭:৩৫ এর দিকে পিএ উপস্থিত হন। আমরা বলি, “৭:৩০ এ জেনারেলের সাথে আমাদের একটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল।” পিএ সিলেটি বাংলায় বলেন, জেনারেল গোসল করছেন, গোসল শেষে সকালের নাশতা করবেন। এরপর তার সচিবালয় ভবনে যাওয়ার কথা রয়েছে। তিনি আমাদেরকে সচিবালয়ে গিয়ে অপেক্ষা সহ নানা কথা বলতে থাকেন। বাসায় ওসমানীর সাথে আমাদের দেখা করিয়ে দেয়ার ইচ্ছে তার ছিল না।

আমরা উপরের তলা থেকে জেনারেলের গলার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছিলাম। অগত্যা আমরাও পিএ’র সাথে একটু জোড়ে কথা বলতে শুরু করলাম, উদ্দেশ্য জেনারেল ওসমানীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা। ওসমানী সিলেটি বাংলায় তার পিএ-কে জিজ্ঞেস করেন, নিচতলায় কি হচ্ছে? পিএ বলেন, এফসিসি থেকে কয়েকজন ক্যাডেট এসেছে, তারা তার সাথে কথা বলতে চায়। এ শুনে ওসমানী আমাদের উপরতলায় যেতে বলেন। আমরা তড়িঘড়ি করে উপর তলায় চলে গেলাম। গিয়ে দেখি তিনি টেবিলে বসে নাশতা করছেন। আমাদেরকেও নাশতায় অংশ নিতে বলেন। নাশতা হিসেবে ছিল টোস্ট পাউরুটি, ডিম ও চা। আমরা এমনিতে বেশ ক্ষুধার্ত ছিলাম, সানন্দে খাবারের আমন্ত্রণ গ্রহন করলাম।

ণ) আলোচনা করতে গিয়ে বুঝতে পারলাম, কেবিনেটের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও জেনারেল ওসমানী ক্যাডেট কলেজের বিলুপ্তি সম্পর্কিত সরকারী সিদ্ধান্তের কিছুই জানেন না। এটা জানতে পেরে তিনি প্রচণ্ড বিরক্ত হন এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এবং বলেন, তিনি আজই বঙ্গবন্ধুর সাথে এ নিয়ে কথা বলবেন। আমরা আনন্দে উদ্বেলিত হয়েছিলাম। নাশতার পর আমরা জেনারেলের সাথে তার “১৯৬৭ টয়োটা করোনা” মডেলের সাদা গাড়িতে চড়ে বাংলাদেশ সচিবালয়ে যাই। তখন প্রায় ৯:২৫ বাজে। তার ওভারস্মার্ট পিএ যিনি আমাদেরকে তার সাথে দেখা করতে দিতে চাচ্ছিলেন না তিনি অন্য কোন বাহনে (সম্ভবত রিকশা) চড়ে সচিবালয়ে গিয়েছিলেন। তিনিও অবশ্য বেশ তাড়াতাড়িই সচিবালয়ে পৌঁছে যান। আনুমানিক ৯:৩৫ এর দিকে আমরা সচিবালয় ভবনের ১১তম তলায় ওসমানীর নৌচালনা মন্ত্রনালয়ে যাই।

ত) জেনারেল ওসমানী আমাদেরকে মন্ত্রীর চেম্বারেই বসান। আমরা সেখানে বসে থাকি আর প্রতি ৩০-৪০ মিনিট পরপর চা-বিস্কিট খেয়ে খেয়ে সময় কাটাতে থাকি। এরই মধ্যে জেনারেল “রেড ফোন” তুলে বঙ্গবন্ধুকে ফোন করেন, কিন্তু পাননি। কারণ বঙ্গবন্ধু তখনও অফিসে আসেননি। এরপর বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেন, কিন্তু ফলাফল একই। বঙ্গবন্ধুর সাথে কথা বলা যাচ্ছে না। আমরা অবাক হয়ে লক্ষ্য করেছিলাম, জেনারেলের টেবিলে কোন ফাইল-পত্তর নেই, আর তিনি কোন ফাইলে স্বাক্ষর করা নিয়েও কথা বলছেন না। মন্ত্রীর সচিব একটু পর একটি গুরুত্বপূর্ণ ফাইল নিয়ে আসলে ওসমানী বলেন, “আমার সাথে ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের এই ক্যাডেটরা আছে, বঙ্গবন্ধুর সাথে ক্যাডেট কলেজের ভাগ্য নির্ধারণের সুরাহা না করে আজ আমি কোন ফাইলে স্বাক্ষর করছি না।” সচিব আমাদের দিকে তাকিয়ে একটু হেসে চলে যান। আমরা সেদিন বিকেল ৩:৩৫ এ ওসমানীর অফিস ত্যাগ করেছিলাম, এর মধ্যে সচিব আর একবারও আসেননি। তিনি ওসমানীর পিএস-কেও (বর্তমানে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা) বলে দিয়েছিলেন আজ ওসমানী কারও সাথে দেখা করবেন না।

থ) অবশেষে সকাল ১০:৩৫ এর দিকে জেনারেল রেড ফোনে বঙ্গবন্ধুকে পান। তিনি বঙ্গবন্ধুর কাছে জানতে চান, “ক্যাডেট কলেজ বিলুপ্ত করে দেয়ার ব্যাপারে তাকে কে পরামর্শ দিয়েছে এবং তার (ওসমানীর) অগোচরেই কিভাবে ক্যাডেট কলেজ বিলোপের মত কাজটি সম্পাদিত হল?” বঙ্গবন্ধুর সাথে বাংলা ও ইংরেজিতে কথা বলার সময়ে তার বিরক্তি ও উদ্বেগ স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছিল। তিনি ফোনে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় ক্যাডেট কলেজের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং ক্যাডেট কলেজ বিলোপ বিষয়ক পিও টি বাতিল করে দেয়ার কথা বলেন।

বঙ্গবন্ধু ফোনে জেনারেলকে কি বলেছিলেন তা আমরা শুনিনি, আর জিজ্ঞেস করার সাহসও হয়নি। রেড ফোন রেখে দেয়ার আগে ওসমানীর শেষ কথা ছিল, “ক্যাডেট কলেজ থাকলে আমি থাকব, অন্যথায় পদত্যাগ করবো।” এবারও বঙ্গবন্ধু কি বললেন তা আমরা শুনতে পাইনি, আর ওসমানীর গুরুগম্ভীর মুখভঙ্গী দেখে কিছু জিজ্ঞেস করার সাহসও হয়নি।

দ) এরপর জেনারেল তার পিএস-কে ডেকে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় ক্যাডেট কলেজের গুরুত্ব এবং ক্যাডেট কলেজের কার্যকারিতা বিষয়ে ইংরেজিতে একটি নির্দেশনা দেন। এই নির্দেশনাটি টাইপ করে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই পিএস ওসমানীর সামনে নিয়ে আসেন। এই টাইপ করা লেখাটি পড়ে ওসমানী তাতে স্বাক্ষর করেন। এরপর ফাইল হাতে নিয়ে উঠে দাড়ান আর আমাদের দিকে তাকিয়ে বলেন, “বয়েস, উইশ মি লাক”। ১১:১৫ তে তিনি হাতে ফাইল নিয়ে অফিস ত্যাগ করেন, ফাইলের ভেতর ছিল বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজের ভাগ্য ও গুরুত্ব বিষয়ক নির্দেশনা। তার গন্তব্য ছিল বঙ্গবন্ধুর কার্যালয় আর উদ্দেশ্য ছিল ক্যাডেট কলেজের ভাগ্য ও গুরুত্ব নিয়ে তার সাথে চূড়ান্ত আলোচনটা সেড়ে নেয়া। এর পরের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ক্যাডেট কলেজ- এর ইতিহাস, এর ভাগ্য এবং এর গুরুত্ব বিষয়ক সকল রচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহনের কাজ সম্পন্ন হয়। এর কয়েক মিনিট পূর্বেই জেনারেল বলেছিলেন, “If cadet colleges stay, I stay, otherwise, I resign”। তাই এই দিনটিই বাংলাদেশের সব ক্যাডেটের জন্য সবচয়ে ঐতিহাসিক দিন। (ঐ দিনের তারিখটা আমি মনে করতে পারছি না, অথচ মনে করাটা খুব জরুরী। আমাদের “কিপ ক্যাডেট কলেজ ক্যাম্পেইন” এর কেউ কি স্মৃতি থেকে এই তারিখটি বের করে নিয়ে আসতে পারবেন? পারলে খুব ভাল হতো)

ধ) প্রতিটা মিনিট যাচ্ছিল, আর আমাদের মনে হচ্ছিল ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যাচ্ছে। আমাদের শিক্ষায়তনের ভাগ্য, ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ এবং অন্য তিনটি ক্যাডেট কলেজের ভাগ্য তখন দাড়িপাল্লার এক প্রান্তে ঝুলছিল, কোনদিকে পাল্লা ভারী হয় কিছুই বোঝা যাচ্ছিল না। প্রতি মিনিটে আমাদের হৃৎস্পন্দন একটু একটু করে বেড়ে যাচ্ছিল।
ক্যাডেট কলেজে আমার প্রথম দিন (১৯৬৬ সালের ৯ই জুলাই, শনিবার) থেকে সেদিন বিকেল পর্যন্ত সবকিছু একে একে মনে পড়ছিল। আমাদের সমবেত কণ্ঠের চিয়ার্স কানে বাজছিলো (কাম অন ব্লুস.. কাম অন রেড্স.. কাম অন গ্রিন্স.. কাম অন ইয়েলোস.. কাম অন এফসিস।। আরও শুনতে পাচ্ছিলাম, আমাদের সমবেত হাসির শব্দ, আমাদের কষ্ট আর কান্নার শব্দ। ফৌজদারহাটের খেলার মাঠের সব অ্যাডভেঞ্চার, নিয়ম ভাঙার আনন্দ, ব্যাড সাউন্ড আর মিষ্টি মিষ্টি সব স্মৃতি সব মনে পড়ছিলো। সবকিছু ছাপিয়ে ভেসে উঠছিলো এফসিসিতে আমাদের সবচেয়ে ভালবাসা ও কাতরতার ১৮৫ একর জমি। অন্তরের গভীরে আমরা সবাই বুঝতে পারছিলাম, এটাই বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজ টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে আমাদের সব আশা-ভরসার শেষ দিন।

বঙ্গবন্ধু কি তার স্বক্ষর করা “প্রেসিডেনশিয়াল অর্ডন্যান্স” (পিও) উঠিয়ে নিয়ে ক্যাডেট কলেজকে আবার আগে মত কার্যকর করতে সম্মত হবেন? জেনারেল ফিরতে এতো দেরী করছেন কেন? ঘড়ি টিক টিক করে ঘুরেই যাচ্ছিল, মিনিটের পর মিনিট চলে যাচ্ছিল। তখন প্রায় ২:৩৫ বাজে। আমরা এর মধ্যে কয়েকবার লিফ্ট দিয়ে নিচে নেমে দেখেছি জেনারেল ফিরলেন কি না। অবশেষে ৩:১৫ তে হঠাৎ জেনারেলকে দেখলাম, ১১ তলার করিডোরে ফাইল হাতে দাড়িয়ে আছেন।

আমরা দৌড়ে তার কাছে গেলাম। তার অনন্য গোঁফের মিষ্টি হাসি আমাদের অনেকটাই আশ্বস্ত করেছিল, কিন্তু শেষকথা না শুনে কিছুতেই শান্তি পাচ্ছিলাম না। অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে তিনি বললেন, “বয়েস, ক্যাডেট কলেজ থাকছে।” আমি “হিপ হিপ হুররে” বলে যত জোড়ে পারি চেচিয়ে উঠেছিলাম, আমার সাথে বাকিরাও “হিপ হিপ হুররে” ধ্বনি তুলেছিল। ৩৬ বছর পরও সেদিনের সেই ঘটনাগুলো যেন আমার চোখের সামনে ভাসে। আমরা সবাই আমাদের প্রথাগত ভঙ্গিতে জেনারেলকে স্যালুট করেছিলাম। লং লিভ জেনারেল ওসমানী।

আমি মনে করি, জেনারেল ওসমানীকে বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজের জনক হিসেবে আখ্যায়িত করা উচিত, পাকিস্তান আমলে যেমন ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান ছিলেন ক্যাডেট কলেজের জনক।

ন) যদ্দুর মনে পড়ে, এর পরই আমি জেনারেলের অফিস থেকে এফসিসি’র ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জনাব নাসির চৌধুরীকে ফোন করে এই অতি আনন্দের সংবাদটি জানাই। আর তাকে অনুরোধ করি পিও জারির পরই তিনি এফসিসি’র সাইনবোর্ড পরিবর্তন করে যে নতুন নাম লিখা সাইনবোর্ড টানিয়েছিলেন তা খুলে ফেলতে। উল্লেখ্য, পিও জারির পর গ্র্যান্ড ট্রাংক রোডের পাশে এফসিসি’র প্রবেশ পথে স্থাপিত সাইনবোর্ডে ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের বদলে “ফৌজদারহাট সরকারী কলেজ” লেখা হয়েছিল। তিনি বললেন, ব্যবস্থা নেবেন। তিনি কথামতো কাজ করেছিলেন। পরদিন সকালে আমরা কলেজে গিয়ে দেখি নতুন সাইনবোর্ডে ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ লেখা। তিরি আরও বলেছিলেন, “দেখো, আমার চেয়ারটা ঠিক রেখো”।

প) ৩৬ বছর আগে আমাদের সেই উদ্যোগে যারা সহযোগিতা করেছিল তাদের সবার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা রইল। দীর্ঘ ৩৬ বছর পর আমি কেবল ৭-৮ জন ক্যাডেটর নামই মনে করতে পারি। এদের মধ্যে সবাই এফসিসি’র ১২, ১৩, ১৫, ১৬ ও ১৭তম ব্যাচের। “কিপ ক্যাডেট কলেজ ক্যাম্পেইন” এ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে, ঢাকা, চট্টগ্রামে কিংবা এফসিসি ক্যাম্পাসে থেকে যে যেভাবেই আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে অংশ নিয়েছে তাদের সবার প্রতিই আমি কৃতজ্ঞ। ১৯৭২-৭৩ সালের এই “কিপ ক্যাডেট কলেজ ক্যাম্পেইন” এ ফৌজদারহাটের যারা যারা অংশ নিয়েছিল তাদের সবার পূর্ণ নাম আমাদের জানা থাকা উচিত।

ফ) সিসিসিএল এর উচিত এই ক্যাম্পেইনের সাথে যুক্ত সকল ফৌজিয়ানকে বিশেষভাবে সম্মানিত করা, তাদেরকে বিনা অর্থে সিসিসিএল এর আজীবন সদস্য করে নেয়া। কারণ ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের এই প্রাক্তন ক্যাডেটদের আত্মত্যাগী উদ্যোগ ও প্রয়াসের কারণেই আমরা আজ ১২টি ক্যাডেট কলেজ পেয়েছি। তাছাড়া ১৯৭২ সালে অধ্যয়নরত সেই ক্যাডেটদের সক্রিয় সহযোগিতা না থাকলে সিসিসিএল আজ এ পর্যায়ে আসতেও পারতো না। আমাদের পুরো জাতি শেষদিন পর্যন্ত সত্যিকার মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করে যাবে; তবে সিসিসিএল ও বর্তমানের সব ক্যাডেটরা কেন ফৌজদারহাটের সেই প্রাক্তন ক্যাডেটদের সম্মান করবে না যাদের প্রচেষ্টায় ক্যাডেট কলেজ এ পর্যন্ত আসতে পেরেছে?
১৯৭২ সালে যে ক্যাডেট কলেজ ব্যবস্থাকে বিলুপ্ত করে দেয়া হয়েছিলো তা-ই আজ দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ফৌজিয়ানদের সেই প্রচেষ্টা ছাড়া এটা সম্ভব হতো না।

ব) তাছাড়া অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের সব ক্যাডেটদের এই ঐতিহাসিক ঘটনা ও ক্ষণগুলো সম্পর্কে জানা উচিত। এর ফলে বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজের গতিশীলতা বজায় থাকবে। এফসিসি’র যে প্রাক্তন ক্যাডেটরা প্রাণান্ত চেষ্টার মাধ্যমে ফৌজদারহাটের মটো “কথা নয় কাজ” এর মহিমা ধরে রাখার ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন তাদের প্রতি “হ্যাট্স অফ।। তারা কথা নয়, কাজ দিয়েই সবকিছু প্রমাণ করেছিলেন, বাংলাদেশে ক্যাডেট কলেজকে জীবিত রাখার জন্য তাদের সে প্রচেষ্টার গুরুত্ব কোনদিনই হারিয়ে যাবে না।

ভ) অবশেষে সেই সময় এসেছে, বাংলাদেশের সব ক্যাডেট কলেজের সব প্রাক্তন ক্যাডেটদের একত্রিত করার সময়, তাদেরকে ভাই, সহকর্মী ও বন্ধু হিসেবে জড়ো করার সময়। মনে রাখতে হবে, আল্লাহ আমাদেরকে চারপাশটা দেখার জন্য দুটি চোখ দিয়েছেন, যাতে আমরা তার সৃষ্ট প্রকৃতি দেখে তার প্রশংসা করতে পারি। আমি নিশ্চিত, সব ক্যাডেট কলেজের সব ক্যাডেট তাদের নিজ নিজ কলেজের ছাত্র হওয়ার বিষয়টাকে উদার ও বৃহত্তর দৃষ্টিতে দেখবে, সেখানে দৃষ্টির কোন সংকীর্ণতা থাকবে না!!! তাই ফৌজদারহাটের সেই প্রাক্তন ক্যাডেটদের বর্তমানে সিসিসিএল এর নেতৃত্ব দেয়া উচিত, এই ক্লাবকে এমন বৃহত্তর রূপ দেয়া উচিত যাতে তা বাংলাদেশের সব ক্যাডেটের হয়ে উঠতে পারে এবং এটা যেন কর্মের দিক দিয়ে বাংলাদেশের অদ্বিতীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:২২
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×