আসন্ন সাধারণ নির্বাচন মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে বলে আশা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
Published : 17 Nov 2013, 10:19 PM
রোববার রাতে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন বিএনপির সহসভাপতি শমসের মবিন চৌধুরী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিকালে বৈঠকের পর রাজনীতিক, নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ ও সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর নিশা বিসওয়াল বিরোধী নেত্রীর সঙ্গে রাতে দেড় ঘণ্টাকাল বৈঠক করেন।
রাতে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৈঠক শেষে শমসের মবিন চৌধুরী নিশা বিসওয়ালকে উদ্ধৃত করে বলেন,“যুক্তরাষ্ট বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ও স্থিতিশীলতা দেখতে চায়।
“বাংলাদেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন হবে। ওইরকম একটি নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জনগণই গ্রহণ করবে।”
বিরোধীদলীয় নেতা যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেন, “বিএনপি চায়, সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে বর্তমান সংকটের একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান, যার মাধ্যমে সবার অংশগ্রহণে দেশে প্রতিযোগিতামূলক একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
“দেশের বেশির ভাগ মানুষের এটিই চাওয়া। গণতন্ত্রের রীতি অনুযায়ী সরকারের উচিত হবে গণমানুষের এই দাবির প্রতি সম্মান জানানো।”
এক প্রশ্নের জবাবে শমসের মবিন বলেন, “সরকার যদি জনগণের এই দাবি উপেক্ষা করে নির্বাচন করে তাহলে তারা নিজেদের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া জানাবে।”
নিশা বিসওয়াল সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।
শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ককে বিশেষ গুরুত্ব দেয় বিএনপি।
নিশা বিসওয়াল সর্বদলীয় সরকারে যোগদানের বিষয়ে বিএনপিকে কোনো পরামর্শ দিয়েছেন কি না- জানতে চাইলে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের বলেন, “এরকম পরামর্শ দেয়ার প্রশ্নই উঠে না। উনি আমাদেরকে কোনো চাপ বা পরামর্শ দিতে আসেননি।”
বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে বৈঠকে শমসের ছাড়া দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ ও ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা উপস্থিত ছিলেন।
শনিবার দুপুরে ঢাকা পৌঁছান নিশা বিসওয়াল। সেদিন সন্ধ্যায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনার বাসায় তিনি নাগরিক সমাজের একাংশের ছয় ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি শান্তিতে নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গেও বৈঠক করেন।
ড্যান মজীনার বাসায় ওই সব বৈঠকে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বিমানমন্ত্রী ফারুক খান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী ও এইচ টি ইমাম, সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির, বিএনপি নেতা আব্দুল মঈন খান, ওসমান ফারুক, শমসের মবিন চৌধুরী এবং জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার যোগ দেন।
শনিবার সন্ধ্যায় বৈঠকে মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সেক্রেটারি আদিলুর রহমান খান শুভ্র, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ফারুক সোবহান, অ্যাডভোকেট ফৌজিয়া করিম, সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ, সুশাসনের জন্য নাগরিকের বদিউল আলম মজুমদার ও ব্র্যাকের ব্যারিস্টার মঞ্জুর হাসান উপস্থিত ছিলেন।
বিজেএমইএ‘র নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও বৈঠক করে মার্কিন পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী।
রোববার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি ও পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হকের সঙ্গেও দেখা করেন তিনি।