somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আপনার মন্ত্রীত্বের জন্য, ব্যবসার জন্য আপনি পরিবর্তন হতে পারেন, আমি হই না, কারন সত্য পরিবর্তন হয় না।

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ২:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের মানুষের লেবেলিংটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা। সব কিছুই চলে দলীয় পরিচয়ে। ফলে আপনি কখনোই সত্য কথাটা বলতে পারেন না। কথাটা যত সত্যই হোক, যদি আপনার দলের বা গোষ্ঠির বিরুদ্ধে যায়, হয় আপনার মুখ চেপে ধরা হবে, না হলে বলা হবে 'কৌশলগত কারনে এ মুহুর্তে একথাটা বলা ঠিক হবে না, বললে আমাদের বিরোধীরা বেনিফিটেড হবে।' অর্থাৎ সত্য কথাটা বললে যেহেতু বিরোধীরা লাভবান হবে সুতরাং সত্য চেপে যাও। কি অদ্ভুদ, ভন্ডামি! অথচ উন্নত গনতান্ত্রিক দেশসমুহের প্রচলন হলো, আপনি দেশের স্বার্থে যেটা ভালো মনে করেছেন সেটাই বলেছেন, সেটাই করেছেন, এখন সেটা যদি আপনার পক্ষে না যায়, আপনি চলে যান। আপনার জায়গাটা অন্য কাউকে দিয়ে দিন। কারন, কোন ব্যাক্তি অপরিহার্য নয়, দেশের স্বার্থেটাই মুখ্য।

যারা কানাডা আমেরিকায় বাস করেন, তাদের কেউ কি বলতে পারবেন যে বিগত বছরগুলোতে কখনো কোন একটা ইস্যু নিয়ে কোন লিবারেল পার্টি, কনজারভেটিভ পার্টি কখনো রাস্তায় মিছিল করেছে? এইতো সেদিন, টরন্টোর ডাউন টাউনে পুলিশ রাতের আধারে গুলি করে যখন স্ট্রীট কারে একজন সিরিয় বংশোদ্ভুতকে মেরে ফেললো, তার প্রতিবাদে টরন্টোবাসি রাস্তায় নেমে এসেছিল, কিন্তু কই সেই মিছিলে কোন রাজনৈতিক দলের ব্যানার, শ্লোগানতো দেখলাম না। সাধারন নাগরিকদের পক্ষ থেকেই পুলিশের বিরুদ্ধে নানা ধরনের উস্কানিমুলক শ্লোগান দেয়া হলো। লিবারেল, কনজারভেটিভ কিংবা এনডিপি কাউকে দেখলাম না রাজনৈতিক ফায়দা তুলার চেষ্টা করতে। তাহলে বাংলাদেশে কেন হয়? কারন একটাই, ওখানে কখনো কোন কাজ সমস্যা সমাধানের জন্য করা হয় না, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ফায়দা লুটার জন্য 'বেকার' নেতারা ওগুলোর আয়োজন করে থাকেন।

প্রশ্ন হলো, নুতন প্রজন্ম, যারা এক ক্লীকে বিশ্ব দেখে তারা কেন ঐ লেবেলিং এর ব্যবসায় জড়াবে? তাদেরতো সময় থাকার কথা নয়। যেখানে যা ঘটবে, যা দেখবে সেটাই অকপটে বলবে। সেটা এরশাদ, হাসিনা, খালেদা কার পক্ষে গেল, কার বিপক্ষে গেল তার ধার ধারবে না।

২০০১ সালের নির্বাচনের সময় প্রেসিডেন্ট কার্টার যখন বাংলাদেশে এলেন, নির্বাচন নিয়ে নসিহত করলেন, শেখ হাসিনা তাকে তার দেশে সদ্য ঘটে যাওয়া 'বুশের' জালিয়াতির নির্বাচনের ইংগিত করে বললেন, 'মিঃ প্রেসিডেন্ট আমাদেরকেও আপনাদের দেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠাতে হবে....।' শুনে সাথে সাথে মন্তব্য করলাম, বাপের বেটি। বংগবন্ধুর কন্যা বলেই পারলেন বলতে।

তো যখন আমার মন্তব্য আপনার পক্ষে যায়, আমি ঠিক আছি। আবার বিপক্ষে গেলে ঠিক নাই। এটা হতে পারে না। আমিতো যা দেখি সেটাই বলি। আপনিতো ধান্দা খুজেন, কেন বললাম, কোথায় বললাম, কি বললাম, সময়োপযোগী হলো না ইত্যাদি খুজেন। এটা আপনার ব্যারাম। আমার নয়। আমি সমাজতন্ত্র ভালবাসি, কারন ওখানে সাম্যের কথা বলা হয়, আবার সমাজতন্ত্র ভালবাসি না যখন ধর্মকে আফিমের সাথে তুলনা করা হয়, নাস্তিকতা, বস্তুবাদ বনাম ভাববাদ নিয়ে ফতোয়া দেয়া হয়। এই হলাম আমি। সমাজে, পৃথিবিতে আমি আপনি কেউ চিরস্হায়ী নয়। কিছুদিন আগেও আমার অস্তিত্ব ছিল না, আবার কিছুদিন পর এই আমি নাই হয়ে যাবো। তাহলে আমি কেন ভন্ডামি, মিথ্যাকে আকড়ে থাকবো শুধু একারনে যে 'ওহ, ওটা আমার নেতা বলেছেন, সুতরাং ওটা সত্য হোক কিংবা মিথ্যা হোক ওটাই আমাকে বলতে হবে।'

ইন্টারেস্টিং ব্যপার হলো, নেতারা কিন্তু তা বলছেন না। যেমন, কিছুক্ষণ আগে রাশেদ খান মেনন ভাই বলছিলেন, ৮৬ এর নির্বাচন খারাপ ছিল না, ৮৮ এর টা ছিল। কারন ওনারা ওটাতে অংশ নিয়েছিলেন। আবার বিএনপি বলছে, ৮৬ এর নির্বাচন কোন নির্বাচনই ছিল না। বলছেন, কারন তারা সেটাতে অংশ নেন নি বা নিতে পারেন নি।

৭২-৭৫, বংগবন্ধুর সরকারকে যারা এক সময় স্বৈর সরকার বলতেন, এমনকি হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে, আজ তারা বলছেন ভিন্ন কথা। কেন বলছেন, শুধুমাত্র তার নিজের স্বার্থে। তিনি পাল্টেছেন কিন্তু সে সময়কার ঘটনাগুলো, বক্তব্যগুলোতো এখনো আছে। ঐসময় যারা ওনাদের ঐসব বিপ্লবী কথা শুনে আত্নাহুতি দিয়েছেন আজ তাদেরকে যদি কিছু সময়ের জন্য ফিরিয়ে আনা যেত, তারা কি বলতো?

তাই আমি কোন দলের গোলাম নই। যা সত্য সেটাই বলবো, কার পক্ষে গেল না গেল, আই ডু নট কেয়ার। যে কারনে আমার ফেসবুকে লেখা লেখি দেখে সো কলড দলপ্রীতি সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত বন্ধুরা মাঝে মাঝে কনফিউজড হয়ে যান, কিন্ত আমি হই না। আমি জানি আপনারা কেউ ফেরেশতা নন, যখন ভুল করেছেন সে ভুলের কথা আমি অকপটে বলবো। যখন ভাল কথা বলবেন সেটাকে অবশ্যই এপ্রিশিয়েট করবো। আপনার মন্ত্রীত্বের জন্য, ব্যবসার জন্য আপনি পরিবর্তন হতে পারেন, আমি হই না, কারন সত্য পরিবর্তন হয় না।





১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×