somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোটগল্পঃ মিসির আলীর যাদুর ফোনকল

২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লাবন্য আর আমি ব্লগের পাতা খুলে বসে আছি। শীতের শেষবিকেলের কমলা রোদ কাঁচের জানালা ভেদ করে ওর মুখে পড়ছে।শেষ সূর্যরশ্মির আলোতে ওর মুখ যেন হিজল কাঠের মতো রক্তিম হয়ে আছে।কী অপূর্ব এ লাবন্যরুপ।

লাবন্যকে আমি বললাম, দেখলে ।ম্যাজিক প্যাকেটের কতগুন-(পর্বটি এখানে পড়ুন তোমাকে ৭টি আপেল দিলাম। আর ডাক্তার বেটা তোমার আশেপাশেও আসলোনা।

লাবন্য বলে-আচ্ছা তোমার এসব অখাদ্য সিলি যুক্তি ব্লগারদের গিলাতে পারলে?
কেন, অনেকেইতো বেশ প্রশংসা করলো। কেউ কেউ ম্যাসেজে জানালো দারুন লাগছে।
তাই নাকি?
জ্বি তাই।আমিতো মনে করছি-সেই দুঃসহ রাতের কাহিনীটা লিখে ফেলবো।

আচ্ছা লিখো পরে। তার আগে তোমার কি উচিত না সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে গত পর্বের বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা।

জ্বি। এখন তাই করছি। গতপর্বে যারা অংশগ্রহণ করেছেনঃ
অশ্রু কারিগড়,
আমি চাই,
সায়েম মুন,
মামুন রশিদ,
খাঁন রোজেন,
বোধহীন স্বপ্ন,
লাবনী আক্তার,
মদন,
মহামহোপাধ্যায়,
মৌমিতা আহমেদ মৌ ,
স্বপ্নবাজ অভি,
বোকা মানুষ বলতে চায়,
হাসান মাহবুব,
ঢাকাবাসী,
এস এম কায়েস,
শ্যামল জাহির,
স্নিগ্ধ শোভন,
সেলিম আনোয়ার,
মনে নাই,
সদয় খান,
সুমন কর

আপনাদের সবাইকে বিনীত ধন্যবাদ। আর বিশেষ ধন্যবাদ মৌমিতা আহমেদ মৌ'কে ।যদিও এতো দ্রুত জবাব দেয়াটা একেবারে পছন্দই করিনি।

এবারের পর্বঃ ছোটগল্প মিসির আলীর যাদুর কল।

লাবন্য'র দরজার সামনে আমি দাঁড়িয়ে আছি। হাতে ঘড়ি নেই।নিশ্চয় অনেক রাত । ফোনও করবোনা, কলিংবেলও বাজাবোনা দেখি কী হয়?

লাবন্য দরজা খুলে নগ্ন নির্জন হাত বাড়িয়ে দিলো।নিটোল মুক্তা প্রবালের রুপ যেন ওর সমস্ত শরীরে।
আমি হাসলাম।তুমি জানতে আমি আসবো।
জানবোনা কেন? ঠিক সময়েইতো এসেছো।
মানে রাতবারোটা বাজে ।শুভজন্মদিন।

প্রতিজন্মদিনে লাবন্য আর আমি সারারাত ঘুরি। তারপর এক অজানায় কান্তারের পথ ছেড়ে রাতের আঁধারে হাইওয়ের নির্জন পথে হারিয়ে যাই।

স্টীয়ারিংএ আমার এক হাত। পাশের সীটে লাবন্য উন্মন হয়ে আছে। ওর দিকে চেয়ে মনে হয় ভালোবাসার অতি দূর তরঙের জানালায় শুধু ওর ঘুমন্ত চাঁদচোখ দুটি দেখি।

কতদূর পিছনে ফেলে এসেছি জানা নাই । চারপাশে রাত এখন নিকষ কালো অন্ধকারের মতো গভীর। রাস্তার দুপাশে শুধু মনে হয় সারি সারি তৃণ মানুষ ভৌতিক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

এমন সময় গরগরগরগররররররররররররররররররররররর।

একবার মনে করলাম- গাড়ী হয়তো নিজের অজান্তেই মূলসড়কের পার্শ্ব সোলডারে চলে এসেছে।কিন্তু না। গাড়ী দাঁড় করালাম, এক পাশে।

পিছনের সাইডের বাম পাশের টায়ারটি পাংচার হয়ে গেছে।

এমন সময় জরুরী যা করতে হয়-ইমার্জেন্সী লাইটা জ্বালিয়ে সামনের হুড খুলে উঁচু করে রাখলাম। এতে করে অন্য কোনো ড্রাইভারের সহজে চোখে পড়ে। কেউ দয়াপরবশ হয়ে এগিয়ে ও আসে।

লাবন্য আর আমি রাস্তার পাশে বসে আছি। বেশ ভালোই লাগছে। কিন্ত সমস্যা হলো এসব রাস্তায় মাঝে মাঝে ভাল্লুকের উপদ্রব হয়।
অনেকক্ষন কেউ এলোনা। এই গভীর রাতের নির্জনে আসবেই বা কে?

ভালোবাসায় পড়লে যা হয়। বোধশক্তি যেন লোপ পেলো। হঠাৎ করে খেয়াল হলো- আরে গাড়ীর ট্রাঙ্কেইতো একটা স্পেয়ার টায়ার আছে।

লাবন্য আর আমি টুলসবক্স থেকে টুলস বের করে পাঙচার হয়ে যাওয়া টায়ারটি খুলে রাখলাম। টায়ারের চারটি নট দিলাম লাবন্যর হাতে।বললাম, ভালো করে হাতের মুঠোয় রাখো। কারণ এগুলো হারালে যতই টুলসই থাকুক আর টায়ার লাগাতে পারবোনা। তখন-সারারাত এখানে বসে থাকতে হবে । তোমার শাড়ীর আঁচল দিয়ে গিট্টু দিলেও কাজ হবেনা।। আর এটা ইউরোপ আমেরিকা না যে ফোন করলেই পুলিশ আসবে। অথবা টো কোম্পনার গাড়ী আসবে।

এরপর আমি গাড়ীর পিছনের ট্রাঙ্ক খুলে স্পেয়ার টায়ার নিয়ে ফিরছি।
হঠাৎ মাথায় দুষ্টু বু্দ্ধি আসলো- বললাম লাবন্য ভাল্লুক,ভাল্লুক।

লাবন্য গাড়ীর ওপাশ থেকে দৌড়ে আমার কাছে আসলো। আর যা হবার তাই হলো - ওর হাত থেকে চারটি নটই সড়কের পাশের গভীর খাতে গিয়ে ছিটকে পড়লো।

এখন উপায়। কয়েকবন্ধুকে ফোন করলাম। বিপদের সময় কাউকেই পাওয়া যায়না। সবার ফোন বন্ধু।

লাবন্য বললো- তুমি মিসির আলী চাচাকে ফোন করো।উনি নিশ্চয়ই জেগে থাকবেন।
আমি বললাম- চাচা জেগে থাকলেও উনি কি এই রাতে নট নিয়ে হাজির হবেন।
লাবন্য নিজেই ফোন করলো। ফোন শেষ করেই দেখলাম লাবন্যর হাসিমাখা মুখ। আর দশ মিনিটের মধ্যেই আমরা আমাদের গাড়ী নিয়ে ফিরতে পথ ধরলাম। ও বলে রাখা ভালো মিসির আলী চাচার ফোনের পর আমাদের আর কারো জন্য অপেক্ষা করতে হয়নি। কেউ আমাদের সাহায্যের জন্য এগিয়েও আসেনি।

এখন আপনাদের বলতে হবে- মিসির আলী চাচা টেলিফোনে লাবন্যকে কি বলেছিলেন?


© আরিফ মাহমুদ।

এই পর্বে আমি গোহারা হেরেছি।





সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১৫
২৩টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পুরোনো ধর্মের সমালোচনা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেই নতুন ধর্মের জন্ম

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:১৫

ইসলামের নবী মুহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক বছরের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে প্রবেশনে পাঠানোর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×