somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শ্বেত ময়ূরী প্রণরেনী-১

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৭:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সারারাতের বৃষ্টিস্নাত সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে এলো, এখনও অবিরাম বৃষ্টি ঝরছে, এমন বিরামহীন ঝিম-বৃষ্টি দেখলেই স্মৃতির দরিয়ায় দেশটা জেগে উঠে। বৃষ্টির জলে ফুটবল, হাডুডু, দাড়িয়াবাঁধা, গোল্লাছুট খেলে কতবার যে দেহের তাপমাত্রা বাড়িয়ে বাড়ি ফিরেছে তার হিসেব নেই। মমতা মাখা মায়ের আদুরে হাতের সরিষা-রসূন তেলের মালিশে নিদ্রাহীন কত রাত যে কেটেছে, আজ সেইসব দিনগুলি শুধুই স্মৃতির ঘরে জমা পড়ে আছে। ঝিম-বৃষ্টিতে দূর মাঠে রাখাল ছেলেদের দুরন্ত ছুটাছুটি, বৃষ্টি ভেজা গ্রামের পথে গরুর গাড়ি কাঁদা-মাটিতে আটকে যাওয়া, খেঁক শিয়ালের ক্যু-অ্যাঁক্কা-উঁ ডাকে গাছের ডালে পাখীদের নড়েচড়ে বসা, রাস্তার ধারে খাল ও ঝিলের জলে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের ডুব সাতার খেলা, বৃষ্টি ভেজা এমন দৃশ্যগুলো স্মৃতিতে আজও অম্লান, এখনও জীবন্ত হয়ে আছে, শুধু স্মৃতির সেই মানুষগুলোকে এখন আর ছোঁয়া যায়না, ওরা আজ অনেক দূর দেশের বাসিন্দা।

মাঝে মাঝে এই বিদেশ বিভূঁইয়ে জীবনের সবকিছু অনর্থক মূল্যহীন মনে হয়। দেশ মাটি আর পরিবারের সকলের ভালবাসা ছেড়ে, এই যে বিদেশ বিভূঁইয়ের ব্যস্ত জীবন কাটানো, কখনো কখনো সবকিছু ঝেরে-ঝুরে দেশে চলে যেতে ইচ্ছে করে জায়ানের। প্রায় ছয় মাস হল জায়ান এখানে এসেছে, ক্লাস-কাজ আর ক্লাস ঘড়ির কাটায় ধরে ধরে প্রাণহীন জীবনটাকে মাঝে মাঝে অর্থহীন মনে হয়, ভীষণ বিষণ্ণতা এসে চেপে ধরে। কিন্তু যে রেজোল্যুশন নিয়ে সে এখানে এসেছে তা শেষ না করে কিভাবে ফিরবে। তাই তো আবেগে দুর্বল হলেও, বাস্তবতার কাছে হেরে যেতে চায়না, এমন শক্তি তাঁকে আবার আত্মপ্রত্যয়ী সবুজ সতেজ করে তুলে, সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে।

এখানে আসার পর প্রথম কয়েক মাস একটি গ্রীক রেস্টুরেন্টে ওসি-ডিসির কাজ করেছে। এখন সেই কাজটা আর করতে হচ্ছে না, ভার্সিটির এক সিনিয়র ভাই রেডিসন-প্লাজা হোটেলের মিনিবার ও কাস্টোমার সার্ভিসের একটি কাজ জোগাড় করে দিয়েছেন। সেমিস্টার ব্রেকের এই সময়টাতে ফুল-টাইম কাজ করে টিউশন-ফী’টা উঠাতে হবে। প্রায় পাঁচ হাজার ডলার টিউশন-ফী দিতে হয় প্রতি সেমিস্টারে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে এতগুলো টাকা যোগাড় করা সহজ কাজ নয়। দেশ থেকে টাকা এনে পড়ার অবস্থা তাঁর নেই, আর তাছাড়া সেও চায়না কষ্টে অর্জিত বাবার টাকাগুলো এনে বিদেশ-বিভূঁইয়ে লেখাপড়ার খরচ চালাতে। তাই তো এই ভ্যাকেশনে তাঁর আরও একটি কাজ দরকার। ভোর থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত রেডিসন-প্লাজার কাজের পর একেবারে ফ্রিই থাকে, তাই তো রাতে আরও একটি কাজ হলে খুব ভাল হয়।

সেমিস্টার ব্রেকের সময় বেশী বেশী কাজ করে পুরো টিউশন-ফী’টা উঠাতে পারলে সেমিস্টার চলাকালীন সময়ে আর কোন টেনশন থাকেনা। তাই তো গ্রীক রেস্টুরেন্টের সেই আগের কাজটি আবারও নিয়েছে। এখন রেডিসন-প্লাজার কাজের পর তাঁকে একেবারে দৌড়ে দৌড়ে ট্রেন ধরতে হয়। একটুও সময় নষ্ট করতে চায়না, ঘরে ফিরে রান্না গোসল সেরে ঝটপট খেয়ে দেয়ে আবার রেস্টুরেন্টের কাজে বেড়িয়ে যেতে হয় জায়ানের। এভাবেই চলবে সামার ভ্যাকেশনের দিনগুলো। রাত এগারটায় মধ্যে ঘরে ফিরে নাকে মুখে খাওয়া দাওয়া শেষে ঘুমিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না। বিশ্রাম না নিলে সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে কাজে যাওয়া কষ্ট হয়ে যায়। আর এই সময়টায় এসে কাজগুলো হারাতে চায়না জায়ান।

ইতোমধ্যে ভার্সিটির ডরমিটরি ছেড়ে চলে এসেছে, তিন বন্ধু মিলে দু রুমের একটি এপার্টমেন্ট ভাড়া নিয়েছে। ওরা সবাই একই ভার্সিটির ছাত্র, তবে ওঁদের মাঝে পড়ালেখার চেয়ে ডলার কামানোর নেশাটাই বেশী। ওঁদের দেখে মনে হয় যেন ওরা কাজ করার জন্যই এখানে এসেছে। ওঁদের কাউকেই জায়ানের মত ডেডিকেটেড স্টুডেন্ট মনে হয় না। স্টুডেন্টশীপটা কোন রকম রক্ষা করে, কাজ করে যাওয়া আর ডলার কামানোই যেন ওদের সবার একমাত্র লক্ষ্য। তাই পড়াশোনার প্রতি ওঁদের তেমন মাথাব্যথা নেই। রাতদিন ডলার কামানো আর সপ্তাহান্তে নাইট-ক্লাবে বেয়ারের গ্লাসে ডুবে থাকা, এমন জীবনই যেন ওঁদের চাওয়া। কিন্তু তেমন জীবন জায়ানকে একেবারেই টানে না।

জায়ান অনেকটাই অন্য রকম। এই ছয় মাসে তাঁর অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। তাছাড়া দেশে থাকতেও তো মোটামুটি বেশ ভালই অভিজ্ঞতা ছিল। সেই জ্ঞানগুলোও এখানে বেশ ভালই কাজে দিচ্ছে। তাছাড়া প্রতি সেমিস্টারে ফেল মেরে কষ্টে উপার্জিত হাজার হাজার ডলার জলাঞ্জলি দেয়ার কোন যৌক্তিকতা খুঁজে পায় না জায়ান। তাই সেমিস্টারের সময় পড়াশোনায় একেবারেই অবহেলা করেনা। এরই মধ্যে সে নিশি-ক্লাবে যে যায়নি তা নয়, নিশি-ক্লাবের রঙ্গিলা ঝলমলে আলোতে সবাইকে কেন যেন ফ্র্যাসট্রেটেড মনে হয়েছে। মাতাল-নেশা আর বাদ্য-নৃত্যের তাল দেখে মনে হয়েছে, সবাই যেন নিজেকে সত্য থেকে লুকানোর চেষ্টা করছে। দুঃখগুলো ঢেকে, বেদনা আর মিথ্যে হাসির আড়ালে অচেনাকে সুখ নিবেদন করে মগ্ন থাকছে, ছুটে চলছে অজানা উদ্দেশ্যহীন পথে।

আজ রবিবার, সারাটা দিন কর্মহীন অলস হয়েই কাটল। বন্ধুদের ব্যস্ততা আর নিজের অলসতার কারণে কোথাও যাওয়া হয়নি। আর যাবেই বা কোথায়, এই ছয়মাসে আশে-পাশের সব দেখা হয়েছে, ব্লু-মায়ুনটেন, কেয়ামা, বন্দাই বীচ, ক্রুনলা, ম্যানলি বীচ, লাপ্যারোজ, ভিক্টোরিয়া, ওয়েস্ট-ফিল্ডের পেল্লয় সপিংমল, সবই তাঁর দেখা হয়ে গেছে।

জায়ানের প্রিয় একটি যায়গা হচ্ছে সিডনী অপেরা-হাউস। অপেরা-হাউসের বেদীতে বসে জলের বুকে সন্ধ্যের আলো আঁধারের বিচ্ছুরণ বেশ উপভোগ করে, হার্বারের জলে পা ডুবিয়ে জলের উপর আলো আঁধারের খেলা দেখতে দেখতে একান্তে অজানায় হারিয়ে যাওয়া যায়। অপেরা-হাউজের দেয়ালে হেলান দিয়ে হার্বারের জলে পা ভেজানোর চমৎকার অনুভূতি খুব উচ্ছ্বাসিত করে জায়ানকে। সেই অনুভূতিটা মনের কোণে দোলা দিতেই ঝটপট তৈরি হয়ে চলে আসে সার্কুলার-ক্যিতে। সার্কুলার-ক্যি থেকে দু কদম হাঁটলেই সিডনী হার্বার। জায়ানের এপার্টমেন্ট থেকে কয়েকটি স্টেশন পরেই সার্কুলার ক্যি, সেখান থেকে অপেরা-হাউস মাত্র কয়েক মিনিটের হাঁটার পথ।

সন্ধ্যের পর এই সময়টায় অপেরা হাউসের পিছনে খোলা যায়গাটা বেশ শান্ত থাকে। গুটিকয়েক কপোত-কপোতী ছাড়া তেমন কাউকে দেখা যায়না। সন্ধ্যের এই শান্ত সময়টায় অপেরা-হাউসের বেদীর উপর বসে হার্বারের জলে পা ডুবিয়ে জায়ান চুপচাপ বসে থাকে।

মনে হচ্ছে আজ ফুলমুন। চারিদিকে ঝকঝকে জোছনা, বিশাল এই চাঁদটা যেন জায়ানের দিকে তাকিয়ে হেসে উঠেছে, বিশাল ঐ চাঁদটা আর জায়ান একেবারেই মুখোমুখি। পূর্ণিমায় জোছনার প্লাবনে হঠাৎ তাঁর নোয়ার কথা মনে পড়ে যায়, নোয়া ও এরিয়লের বাগদানের অনুষ্ঠানে তাঁদের সাথে শেষ দেখা হয়েছিল, তারপর আর দেখা হয়নি। মাইনিঙের কাজ নিয়ে ওরা দুজন ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়াতে চলে গেছে, সেখানে যাওয়ার পর আর কখনো ওঁদের সাথে যোগাযোগ হয়নি। এই দুটো মেয়ের উপস্থিতি জায়ানের জীবনে বিশেষ প্রভাব আছে।

সভ্য সমাজে এই যে সমকামিতার বৈধতা একে অসভ্যতা ছাড়া আর কি বলা যায়, সমকামিতা জায়ানের কাছে একটি মানসিক রোগ বলে মনে হয়। সম-লিঙ্গের নারী-পুরুষের সমকামিতাকে ওর কাছে একেবারেই অগ্রহণযোগ্য মনে হয়, এসব অপ্রকৃতস্থ লাগে। এখানকার সভ্য সমাজের বৈধ এই অসভ্যতাকে কোন ভাবেই মেনে নিতে পারেনা জায়ান। তবে এটাও ভাবে যে প্রতিটি মানুষের নিজস্ব মানসিকতা ভিন্ন, এই ভিন্নতাই মানুষকে স্বতন্ত্র করে, অন্য আর একজন থেকে আলাদা করে। সেইজন্য ওঁদের এই অপ্রকৃতস্থ সামাজিকতা নিয়ে তেমন কোন মাথাব্যথা নেই জায়ানের। কিন্তু ভিনদেশ থেকে আসা কেউ কেউ এখানে এসে সমকামী বলে বৈধতা নিয়ে নেয়। এখানকার নাগরিকত্বের জন্য কত কি যে করে, না বললেই নয়। জীবনের উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে পার্থিব মায়ার বিভ্রমে, মিথ্যে চাকচিক্যের প্রবঞ্চনায় জীবনকে বিলিয়ে দেয়। আবার কেউ কেউ এখানকার নাগরিকত্বের জন্য চুক্তিবদ্ধ বিয়েও করে, আবার কেউ কেউ উত্তাল অতি আধুনিকতার স্রোত দাঁড়াতে না পেড়ে, স্রোতে গা ভাসিয়ে দিয়ে জীবনটাকে নষ্ট করে দেয়। তাঁদের মধ্যে এমন একটি ভাব যেন জন্ম থেকেই ওরা এমনই সমাজে অভ্যস্ত ছিল। পিছনে ফেলে আসা জীবনের কথা ভুলেই যায়, ভুলে যায় প্রতিশ্রুত পরিবারের বাঁধনের কথা। অলীক স্বপ্নের মাঝে স্বপ্ন দেখে সময় কাটিয়ে দেয় আর এমন ভাবে চলে যেন এটাই ওঁদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। অস্থির বাঁধন হীন এই অর্থহীন জীবনকে জীবনের একমাত্র ব্রত বলেও মনে করে, মনে করে এটাই তাঁর জীবনের একমাত্র পথ।

এসব ভাবতে থাকে আর এদিকে সময় এগিয়ে যায়, সময়ের গতিতে আস্তে আস্তে চাঁদটাও মাথার উপরে চলে আসে। ধীরে ধীরে রাত বাড়ে, রাত বাড়ার সাথে সাথে হার্বার ব্রিজের উপর দিয়ে ধ্যেয়ে চলা বাহনগুলোর চাকার আওয়াজ স্পষ্ট হতে থাকে। বহুদূরে টার্কিশ রেস্টুরেন্ট থেকে ব্যালে-বাদ্য আর নৃত্য-উল্লাসের ধ্বনিও ভেসে আসে। সার্কুলার-ক্যি রেলস্ট্যাশনে সিটি-ট্রেনগুলোর থমকে চলার আওয়াজও স্পষ্ট হতে থাকে। জোছনার আলোতে ম্যানলি এক্সপ্রেসের শেষ ফেরীটা জলে ভাসা চাঁদটায় হঠাৎ দোলা দিয়ে যায়, সেই দোলায় চাঁদের আলোটার সাথে সাথে নিজের ছায়াটাও দিক-বিদিক ছুটাছুটি করে। ধীরে ধীরে আবার জলের বুকে চাঁদের ছায়াটা স্থির হয়ে জ্বলে উঠে, জায়ানের চোখে মুখেও সেই চাঁদের আভা পড়ে। এমন শূন্যতায় পূর্ণিমা-স্নাত রাতের জোছনায় জ্যোৎস্না-স্নানে কাটিয়ে দেয় মধ্যরাত পর্যন্ত।


আজও সকাল হতে বৃষ্টি হচ্ছে, প্রথমে গুড়ি গুড়ি, তারপর মুষলধারে। বেলা গড়ানোর সাথে সাথে মনে হল গোটা আকাশটা যেন মাটিতে নেমে আসছে। এমন বিরামহীন লাগাতার বর্ষণ অনেকদিন দেখেনি জায়ান। কনকনে শীত আর কাঠফাটা গরমের পাল্টাপাল্টিতে বর্ষা নামের একটা যে ঋতু আছে তা ব্যারোমিটারের ওঠানামায় চাপা পড়ে যায়। অথচ বাংলাদেশের ক্যালেন্ডারে বর্ষাকাল কত স্পষ্ট, এখানে বর্ষাকালের সেই স্বকীয়তা নেই, এইজন্যই এখানকার ললনারা নাকি হঠাৎ এই রোদ এই বৃষ্টির মত, ঠিক যেন ঋতু-হীন বর্ষাকালের মত।

অনেকক্ষণ হলো ট্রেন আসছে না, ট্রেন ট্র্যাকে কাজ চলছে, তাই ট্রেনের এই দীর্ঘ বিরতি। জায়ান বার্তা-বুথে গিয়ে জানতে পাড়ল, এমন অপ্রত্যাশিত বিলম্ব হতে পারে বলেই কয়েকদিন আগে নাকি কমিউটারদের জানানো হয়েছে।

প্ল্যাটফর্মে এদিক ওদিক অস্থির হাটা-হাটি করতে করতে জায়ান একটি বেঞ্চের একপ্রান্তে বসে পড়ল। আজ একটা ইম্পরট্যান্ট ক্লাস ছিল তাই অস্বস্তিটা কোন ভাবেই কাটানো যাচ্ছে না। তাছাড়া ক্লাসের পর এসাইনমেন্ট নিয়ে বসবে বলে এক সহপাঠীকে কথাও দিয়েছিল, তাই তো অস্থিরতা ক্রমেই বাড়তে লাগল। ভার্সিটির কথা ভাবতে ভাবতে বেঞ্চের অপর প্রান্তে চোখে পড়ল একটি মেয়ে, সাদা কাগজ দিয়ে পাখির মত কি যেন বানিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি বসলেও এতক্ষণ চোখ পড়েনি মেয়েটির দিকে, কিন্তু জায়ানের কাছে মনে হল কিছুক্ষণ আগেও শুভ্র শান্ত এই মেয়েটিকে এখানে দেখেনি, মনে হয় ক্লাসের ভাবনায় ডুবেছিল বলে লক্ষ্যই করেনি ওঁকে। বেঞ্চের অপর প্রান্তে বসা মেয়েটির উপর হঠাৎই জায়ানের চোখ দুটি আটকে গেল। এতো চমৎকার শুভ্রয় মেয়েটি শান্তভাবে একটা কিছু বানিয়ে যাচ্ছে। সেই শুভ্রতা আর কাগুজে স্ক্লাপচারের দ্বৈত আকর্ষণে জায়ানের চোখ দুটো মেয়েটির উপর আটকে গেল, একেবারে পলকহীন চেয়ে রইল।

বৃষ্টিতে ঝাপসা হয়ে আসা প্লাটফর্মের একপ্রান্তে তাকিয়ে থাকা ট্রেনের অপেক্ষায় ক্লান্ত তামাটে চোখ দুটো যেন সবুজ সতেজ হয়ে উঠল। রেশমি চুলগুলো ফর্সা কাঁধ বেয়ে পিঠের উপর এসে থেমে গেছে। কোমল নিশ্চুপ নির্মল বড় বড় চোখ দুটো কাগজের স্ক্লাপচারে স্থির হয়ে আছে। শান্ত শুভ্র ক্লান্তিহীন একাগ্র হাতের বুননের দিকে বেশ কিছুক্ষণ চুপচাপ তাকিয়ে রইল জায়ান। মেয়েটি হঠাৎ চোখ মেলে দিল জায়ানের দিকে। মায়া-মায়া টানা-টানা নীল মণির ভাসা-ভাসা দুটো চোখ। অসম্ভব সুন্দর চমৎকার দুটো চোখ, এমন দুটো চোখ যেন প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ার মত। মেয়েটির চোখগুলো দেখেই সাদা কাগজের স্ক্লাপচারের চেয়ে মেয়েটির প্রতি আগ্রহটা এবার বেড়ে গেল জায়ানের। মনের মাঝে এমনভাবে দোলা দিয়ে গেল, মনে হল কল্পনায় হঠাৎ যেন কোন প্রণরেনীর সাক্ষাৎ পেয়ে গেছে জায়ান।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৭:৪০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমাকে লিখলাম প্রিয়

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০২ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০১


ছবি : নেট

আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

×