somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাত্রাতিরিক্ত প্রযুক্তিবিদ.......

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কাল (২৩ নভেম্বর) রাত থেকে একটা বিষয় মাথায় ঘুরছে। ভাবছি সবার সাথে শেয়ার করা দরকার। তাই না লিখে পারছি না। এবার আসল কথায় আসি, যা বলা দরকার। বাসায় ফিরে টেলিভিশন চ্যানেল টিউন করতে করতে একসময় বাংলাদেশের এনটিভি চলে আসে। তখন রাত আনুমানিক দশটা বেজে পনের মিনিট। একটা নাটক চলছে। সিরাম নাটক। তথ্য-প্রযুকিত ভিত্তিক। তাই ভাবলাম একটু না দেখলেই নয়। দেখতে থাকলাম। যতোই দেখছি আর বিস্মিত হচ্চি। কি আজব প্রযুক্তি। মাঝে মাঝে মনে হচ্ছিলো মাটি দুইভাগ হলে আমি পালিয়ে যেতাম। যাহোক, শুরুটা যদিও দেখতে পারিনি তাই শেষ না দেখে উঠতে মন চাইলো না। কি হয় দেখতে হবে। নাটকের নাম সম্ভবত "এন্টিভাইরাস"। এনটিভির কোন বিবেকবান ব্যাক্তি এই লেখাটা পড়লে তাঁর কাছে আমার কিছু সবিনয় অনুরোধ থাকবে, যা লেখার শেষ বলবো।

আমি যতটুকু দেখেছি তা থেকে এবার বলিঃ
ঘটনা-১_ লক্ষ্য করলাম, ল্যাপটপ অন করার সময় স্টার্টআপ স্ক্রিনে পরিষ্কার দেখাচ্ছে যে, উইন্ডোজ সেভেন স্টার্ট হচ্ছে এবং ইউজার লগিন স্ক্রিনেও সেভেন পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে। কিন্তু ডেস্কটপ আসলো উইন্ডোজ এক্সপি'র। এটা কিভাবে সম্ভব হয়ত একমাত্র ওই নাটকের লেখক বা পরিচালকই জানেন।
ঘটনা-২_ জনৈক নায়ক, তার একটি ল্যাপটক কম্পিউটারে ভাইরাস দেখা দেয়। ভাইরাসটি হলো এমন যে, হঠাত করে একটা মেষে পর্দায় ভেসে ওঠে এবং তার সাথে কি সব কথা বলে। প্রায়ই ঘটনা টা ঘটতে থাকে। পুরো স্ক্রিন জুড়ে কি যেন একটা মোশন ব্যাকগ্রাউন্ড গ্রাফিক্স থাকে তার উপর মেয়েটার ছবি ভেসে ওঠে। যা ইহজগতে আমি কোনদিন দেখিনি তো বটে শুনিও নি।
ঘটনা-৩_ কোন এন্টিভাইরাস এই ভাইরাসকে ধরতে পারছে না, নায়ক ব্যাটার তো মাথায় বাঁশ। বেঁধে দেওয়া একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই ভাইরাস মারতে হবে। সে আরো একজন মহিলা বিশেষজ্ঞ জোগাড় করে। হয়ত তার আগের পরিচিত। সে যাই হোক আমার লক্ষ্য হলো তারা কি বুঝাতে চায় তাই দেখা। অতঃপর তারা গেলো এন্টিভাইরাস কিনতে বিসিএস কম্পিউটার সিটিতে। সেখানে গিয়ে দেখলাম যেসব দোকানে পাইরেটেড বিভন্ন ধরনের গেম বা সফ্টওয়্যার বিক্রি করে ওখানে এন্টিভাইরাস খুজতে। লাইসেন্সড এন্টিভাইরাস ওভাবে কখনো বিক্রি হয় বলে আমার জানা নাই। তার পর তারা গেলো তাদের পরিচিত কোন ব্যাক্তির কাছে যিনি এন্টিভাইরাস বানিয়েছেন এবং উনি নিশ্চয়তা দিয়েছেন এই এন্টিভাইরাস দিয়ে কাজ হবে। যাহোক সেই এন্টিভাইরাস নিয়ে তারা খুব দ্রুত সাইকেল চালিয়ে বাসায় আসে।
ঘটনা-৪_ বাসায় এসে ল্যাপটপ অন করতে যাবে এমন সময় দেখলো যে বাসায় বিদ্যুত নাই। খুব বিরক্তির প্রকাশ হলো। ল্যাপটপের বাটন চেপেও লাভ হলো না কারণ চার্জ নাই। নায়ক বললো ভূল করে ল্যাপটপ বন্ধ না করেই রেখে গিয়েছিলাম, তাই সব চার্জ শেষ হয়ে গেছে। এখন কি করব। হাতে সময় আছে মাত্র তিন মিনিট, এরই মধ্যে এন্টিভাইরাস ইনস্টল শেষ করতে হবে।
(দ্রঃ ল্যাপটপ যদি অন করে বেশি কাজ না করে রেখে দেওয়া হয় এবং বিদ্যুত চলে যায় তাহলে ৫-১০ মিনিট পরে ওটা স্ট্যান্ডবাই হয়ে যাবে এবং আরো ২০-৩০ মিনিট পরে স্লিপ মুডে চলে যাবে। এখানে ব্যাটারীর সব চার্জ কিভাবে শেষ হয় আমি বুঝলাম না।)
ঘটনা-৫_বিকল্প উপায় খুজে পেল মেয়ে বিশেষজ্ঞ। সাইকেলের ব্যাটারী দিয়ে ল্যাপটপ অন করবে তারা।
(দ্রঃ সাইকেলে সাধারণত কোন ব্যাটারী থাকে না। কোন কোন ক্ষেত্রে সামনের টর্চ লাইট আর পিছনের ব্যাক লাইট জ্বালানোর জন্য ছোট কোন ব্যাটারী থাকতে পারে, যা দিয়ে কখনোই ল্যাপটপ অন করা সম্ভব না।)
নিয়ে আসা হলো সাইকেল, ল্যাপটপের এসি এডাপটার লাগানো হলো সাইকেলের সাথে। মেয়ে বিশষজ্ঞ সাইকেলের প্যাডেল ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করছে। সেই বিদ্যুৎ দিয়ে বেচারা ল্যাপটপ অন করলো।
(দ্রঃ তারা কিন্তু বলেছিলো সাইকেলের ব্যাটারী দিয়ে ল্যাপটপ অন করবে। তা কিন্তু করেনি। যেহেতু প্যাডেল ঘুরাচ্ছে, তার মানে সাইকেলে ব্যবহৃত ডায়নামো বা জেনারেটর দিয়ে ল্যাপটপে পাওয়ার দিচ্ছে। কিন্তু ঘটনা হলো সাইকেলের জেনারেটরে তো মাত্র ৬ভোল্ট আর ১২ভোল্ট এসি উৎপন্ন হয়। তা দিয়ে কিভাবে এসি এডাপটর চলে, আমি বুঝি না।)
যাহোক সবশেষে এক মিনিটের জন্য তারা এন্টিভাইরাস ইনস্টল শেষ করতে পারলো না।
(দ্রঃ কোন এন্টিভাইরাস ইন্সটল করার সাথে সাথেই ভাইরাস মরে যায় এমন ঘটনাও আমি জীবনে শুনিনি।)

এনটিভির কোন বিবেকবান ব্যাক্তি যদি লেখাটি পড়ে থাকেন তাহলে তাঁর কাছে আমার জানার বিষয় হলো, কত টাকার বিনিময়ে এই জাতীয় নাটক অন-এয়ার করা হয়েছে, একটু বলবেন প্লিজ।

আমার মতো কোন দর্শক যদি এই নাটক দেখে কিছু বুঝে থাকেন, তাহলে দয়া করে আমাকে জানালে বাধিত হবো।

দর্শকদের কি মনে করে এই ধরণের হেরোইন খোর গল্প অন-এয়ার হলো, তাও আবার ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে এনটিভির মতো জনপ্রিয় একটি চ্যানেলে তাই জানতে মন আকুলি বিকুলি করছে।
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×