somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ড. জাফর ইকবালের খোলা চিঠি

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ২:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রিয় শাবিপ্রবি- শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা আমাদের জীবনের সবচেয়ে বেশি সময় এক জায়গায় কাটিয়েছি, আমরা দু’জনেই এ সময়ের প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করেছি। আমাদের ছাত্রছাত্রী এবং সহকর্মীরা আমাদের এ জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তুলেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো আমাদের কোন ভাষা নেই। খুব স্বাভাবিকভাবেই এ দীর্ঘ সময়ে আমরা নানা ধরনের ঘাত-প্রতিঘাতের সম্মুখীন হয়েছি। নিজেদের বিশ্বাসের প্রতি আমাদের আস্থা ছিল বলে আমরা সবকিছু সহ্য করেছি- এমনকি আমরা আমাদের সন্তানদের বছরের পর বছর ঢাকায় রেখে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কাজ করেছি। আমরা সব সময়েই জেনে এসেছি কিছু মানুষ আমাদের বিরোধিতা করেছে, এর সঙ্গে সঙ্গে এটাও জেনে এসেছি এখানকার অসংখ্য মানুষ আসলে আমাদের পাশে আছেন। দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা প্রস্তুতি যখন একেবারেই শেষ পর্যায়ে তখন হঠাৎ করে আমরা দেখতে পেলাম যারা এত দিন সব সময়ে আমাদের পাশে ছিলেন, তারা আমাদের পাশে নেই। সমন্বিত ভর্তি প্রক্রিয়ার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের স্বকীয়তা পুরোপুরি বজায় রেখে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবে। শুধু একদিনে এক প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হবে এবং দেশের অসংখ্য ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদের ছোটাছুটি করতে হবে না। এ চমৎকার পদ্ধতিটি নিয়ে কারও কোন দুর্ভাবনা থাকতে পারে- সেটি আমরা কখনও কল্পনাও করিনি। আমরা পুরোপুরি বিশ্বাস এবং বিস্ময় নিয়ে আবিষ্কার করলাম বামপন্থি এবং জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলো প্রথমে বিরোধিতার সূচনা করল এবং স্বাভাবিকভাবে সেটি অন্যরা গ্রহণ করলো। অর্থমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রী যখন এ পদ্ধতিটির বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেন- তখন আমাদের মনে হয়েছে আমাদের সবকিছু নতুন করে ভেবে দেখার সময় হয়েছে। যারা সব সময়েই আমাদের সবকিছুর বিরোধিতা করে, আমরা তাদের বিরোধিতার বিরুদ্ধে এত দিন কাজ করে এসেছি। কিন্তু যারা আমাদের স্বজন, যাদের পাশে নিয়ে কাজ করে এসেছি তারা যদি আমাদের পাশে না থাকেন তা হলে বুঝতে হবে অবশ্যই এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের বিদায় নেয়ার সময় হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম-কানুন মেনে সব সিদ্ধান্ত নেয়ার পরও অতীতে শুধু আমাদের উপস্থিতির জন্য অনেকবার বিশ্ববিদ্যালয়কে জিম্মি করে ছাত্রছাত্রীদের ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের নয়, সারা দেশের অসংখ্য ছেলেমেয়েকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হলো। আমাদের মনে হয় আমরা যদি বিদায় নেই তাহলে ভবিষ্যতে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের এ ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অবসর নেয়ার কথা ছিল, আমরা সেভাবে আমাদের ভবিষৎ করে রেখেছিলাম। সমপ্রতি শিক্ষকদের অবসর নেয়ার সময় ৬৫ বছর করার কারণে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল, এখন মনে হয় সেটি আবার গুছিয়ে নেয়া। আমাদের একজনের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে উপন্যাস লেখার ইচ্ছা, সেটিতে হাত দিতে পারছি না। শিশু-কিশোরদের চিঠিপত্রে উত্তর লিখে সময়ের অভাবে তাদের উত্তর দেয়া সম্ভব হচ্ছিল না- এখন সেটি সম্ভব হবে। আমাদের একজনের নির্যাতিতা মহিলাদের জন্য কাজ করার পরিকল্পনা ছিল। এখন সেই পরিকল্পনা জন্য কাজ করতে পারবে। এ ছাড়া আমাদের গবেষণা ও উদ্ভাবনীমূলক কাজ নিয়ে অনেক স্বপ্ন রয়েছে। আমরা তা এখন করতে পারবো। বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের নিয়ে পরিপূর্ণ জীবন উপহার দিয়েছে। অপূর্ব অভিজ্ঞতায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিদায় নিতে যাচ্ছি, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা- এই বিশ্ববিদ্যালয় যখন পৃথিবীর একটি সর্বশ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হবে তখন আমরাও গর্ব করে বলতে পারব একসময় এখানে আমরাও শ্রম দিয়েছিলাম।
প্রিয় শাবিপ্রবি- শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা আমাদের জীবনের সবচেয়ে বেশি সময় এক জায়গায় কাটিয়েছি, আমরা দু’জনেই এ সময়ের প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করেছি। আমাদের ছাত্রছাত্রী এবং সহকর্মীরা আমাদের এ জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তুলেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো আমাদের কোন ভাষা নেই। খুব স্বাভাবিকভাবেই এ দীর্ঘ সময়ে আমরা নানা ধরনের ঘাত-প্রতিঘাতের সম্মুখীন হয়েছি। নিজেদের বিশ্বাসের প্রতি আমাদের আস্থা ছিল বলে আমরা সবকিছু সহ্য করেছি- এমনকি আমরা আমাদের সন্তানদের বছরের পর বছর ঢাকায় রেখে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কাজ করেছি। আমরা সব সময়েই জেনে এসেছি কিছু মানুষ আমাদের বিরোধিতা করেছে, এর সঙ্গে সঙ্গে এটাও জেনে এসেছি এখানকার অসংখ্য মানুষ আসলে আমাদের পাশে আছেন। দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা প্রস্তুতি যখন একেবারেই শেষ পর্যায়ে তখন হঠাৎ করে আমরা দেখতে পেলাম যারা এত দিন সব সময়ে আমাদের পাশে ছিলেন, তারা আমাদের পাশে নেই। সমন্বিত ভর্তি প্রক্রিয়ার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের স্বকীয়তা পুরোপুরি বজায় রেখে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবে। শুধু একদিনে এক প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হবে এবং দেশের অসংখ্য ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদের ছোটাছুটি করতে হবে না। এ চমৎকার পদ্ধতিটি নিয়ে কারও কোন দুর্ভাবনা থাকতে পারে- সেটি আমরা কখনও কল্পনাও করিনি। আমরা পুরোপুরি বিশ্বাস এবং বিস্ময় নিয়ে আবিষ্কার করলাম বামপন্থি এবং জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলো প্রথমে বিরোধিতার সূচনা করল এবং স্বাভাবিকভাবে সেটি অন্যরা গ্রহণ করলো। অর্থমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রী যখন এ পদ্ধতিটির বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেন- তখন আমাদের মনে হয়েছে আমাদের সবকিছু নতুন করে ভেবে দেখার সময় হয়েছে। যারা সব সময়েই আমাদের সবকিছুর বিরোধিতা করে, আমরা তাদের বিরোধিতার বিরুদ্ধে এত দিন কাজ করে এসেছি। কিন্তু যারা আমাদের স্বজন, যাদের পাশে নিয়ে কাজ করে এসেছি তারা যদি আমাদের পাশে না থাকেন তা হলে বুঝতে হবে অবশ্যই এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের বিদায় নেয়ার সময় হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম-কানুন মেনে সব সিদ্ধান্ত নেয়ার পরও অতীতে শুধু আমাদের উপস্থিতির জন্য অনেকবার বিশ্ববিদ্যালয়কে জিম্মি করে ছাত্রছাত্রীদের ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের নয়, সারা দেশের অসংখ্য ছেলেমেয়েকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হলো। আমাদের মনে হয় আমরা যদি বিদায় নেই তাহলে ভবিষ্যতে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের এ ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অবসর নেয়ার কথা ছিল, আমরা সেভাবে আমাদের ভবিষৎ করে রেখেছিলাম। সমপ্রতি শিক্ষকদের অবসর নেয়ার সময় ৬৫ বছর করার কারণে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল, এখন মনে হয় সেটি আবার গুছিয়ে নেয়া। আমাদের একজনের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে উপন্যাস লেখার ইচ্ছা, সেটিতে হাত দিতে পারছি না। শিশু-কিশোরদের চিঠিপত্রে উত্তর লিখে সময়ের অভাবে তাদের উত্তর দেয়া সম্ভব হচ্ছিল না- এখন সেটি সম্ভব হবে। আমাদের একজনের নির্যাতিতা মহিলাদের জন্য কাজ করার পরিকল্পনা ছিল। এখন সেই পরিকল্পনা জন্য কাজ করতে পারবে। এ ছাড়া আমাদের গবেষণা ও উদ্ভাবনীমূলক কাজ নিয়ে অনেক স্বপ্ন রয়েছে। আমরা তা এখন করতে পারবো। বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের নিয়ে পরিপূর্ণ জীবন উপহার দিয়েছে। অপূর্ব অভিজ্ঞতায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিদায় নিতে যাচ্ছি, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা- এই বিশ্ববিদ্যালয় যখন পৃথিবীর একটি সর্বশ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হবে তখন আমরাও গর্ব করে বলতে পারব একসময় এখানে আমরাও শ্রম দিয়েছিলাম।
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×