অনেক সাধ করে এক জোড়া বাটার জুতা কিনছিলাম গত তিন/চার দিন আগে। দাম ৭৯০/- । এর আগে ফুটপাত থেকেই ১৫০-২০০ টাকার মধ্যে জুতা কিনে পরতাম। ভাবলাম, অনার্স তো প্রায় শেষ হয়ে এল, এখন পোশাক-পরিচ্ছদে একটু সিরিয়াস হই। তাই পাঁচটি জুতার দাম দিয়ে একটি ভালমানের জুতা কিনলাম। যদিও তা আমার কৃষ্ণ পায়ের সাথে বেমানান। এটা পায়ে জড়ানোর পর প্রথম প্রথম নিজেকে একটু অন্য রকম মনে হত। হেঁটে যাবার সময় মনে হত নায়কের মতো। অনেকে ভাবতে পারেন, সামান্য একটা বাটার জুতা পরেই এই ধরনের ফিলিংস। এমন অনুভবের কারণ হল, হঠাৎ বড় কিছু মানুষ পেলে এমনটাই হয়ে থাকে। যাক সে কথা।
আসল কথা বলি, আজ (৮-১-২০১৩) দুপুরে হলের মসজিদে জোহরের নামাজ পড়ার জন্য যাই। জুতা খুলে মসজিদের ভেতর রাখি। যতটুকু নিরাপত্তায় রাখা যায়। নামাজ শেষ করে বের হতে গিয়ে দেখি জানে আমার পানি নাই! কলিজা শুকাইয়া গ্যাছে। শীতের মধ্যেও বিশ্বাস করুন, আমার কপালে বিন্দুর মতো ঘামের চিহ্ন টের পেয়েছিলাম। বুঝতে দেরি হয় নাই, কারণ, এটা বাংলাদেশ। হলে থাকতে আগে ভাবতাম, বাংলাদেশের চেহারা আর যাই হোক, অন্তত, আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চেহারা আয়নার মতো স্বচ্ছ। কিন্তু বিধি বাম। গরিবের পেটে আর ঘি সইল না। এটাই হয়তো চেইন অব কমান্ড, যে খেয়েছে তাকে আবার খেতে দেয়া, আর যে না খেয়েছে তাকে বিদায় দেয়া।
হায় বাংলাদেশ, হায় ইউনিভার্সিটি-স্টুডেন্ট! জুতাচোরদের জয় সর্বত্র। মসজিদে কিংবা প্রশাসনে, ক্ষুদ্র বিষয়ে কিংবা পুকুর চুরিতে, হাত পাকাতে হলে জুতা চুরি কিংবা কচু কাটতে কাটতেই ডাকাত হতে হয়।