somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুক্তিযুদ্ধঃ থিসিসের বিপরীতে এন্টি-থিসিস

০২ রা মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এদেশে মুক্তিযুদ্ধের ক্ষেত্রে রাশিয়াপন্থীরা নিজেদের অবস্থান ধরে রাখার জন্য আওয়ামী লীগের সঙ্গে চীনাপন্থীদের দুরত্ব তৈরি করে চীনাপন্থীদেরকে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে দেয় নাই। এই দুরত্ব চীন-রাশিয়া দুই ভাগে বিভক্তির পর থেকেই শুরু। অবশ্যই সকল চীনাপন্থী গ্রুপ-উপগ্রুপ আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব মেনে যোগ দিতেও চায় নাই। নকশালপন্থীরা যোগ দেবেনা একথা কে না জানে! আওয়ামী লীগের উপরে ভর করে নিজেদের মনোবাঞ্চা পুরনের ইচ্ছে আর কি! হয়েছেও তাই-ই।

মুক্তিযুদ্ধের পরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ক্ষেত্রেও আগের ধারা বহাল রইল। রুশপন্থী বামেরা আওয়ামী লীগের উপরে ভর করে চীনাপন্থী মুক্তিযোদ্ধাদের সরকার থেকে দূরে সরিয়ে দিলো। চীনাপন্থীরা শুরু করলো অপপ্রচার আর মিথ্যা প্রপাগান্ডা। মুসলিম লীগের পয়সায় পরিচালিত জাসদের ভুমিকা হয়ে উঠলো আরো জঘন্য। সারাদেশে নকশালপন্থী, গনবাহিনী ও সর্বহারাদের তান্ডবে নবগঠিত দেশের অবস্থাকে করে তুললো নাজুক। এরসঙ্গে পত্রপত্রিকায় অপপ্রচার অবিরত।

এই অপপ্রচারের দলিলগুলোই পুজি হয়ে দাড়ালো মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের। পচাত্তর পরবতী সময়ে আগের অপপ্রচারগুলোর পত্রিকার দলিল দস্তাবেজ ব্যাপক প্রচারিত হলো রাষ্ট্রীয় সহায়তায়। একটান চলল ২১ বছর। এমনিতেই যারা মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী তারা বিশ্বাস করছে। এরসঙ্গে যোগ হয়েছে নানা কারনে বঙ্গবন্ধুর সরকারের উপরে অভিমান করে থাকা অনেক দেশপ্রেমিক মানুষও বিশ্বাস করেছে। ব্যক্তিগত সুবিধা-অসুবিধার প্রশ্নে অনেকে বিশ্বাস করে নাই, কিন্তু সেই অপপ্রচারকে সত্য বলে আরো অধিক হারে প্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। গোয়েবলসের উক্তির মতোই বিষয়টি।

আজকে যুদ্ধাপরাধী, তাদের দোসর ও ছাগুছানা থেকে শুরু করে ক্ষমতা কেন্দ্রীক রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্ধীরাও সেইসব অপপ্রচারকে আওয়ামী লীগকে ঘায়েল করতে নির্বিচারে ব্যবহার করে যাচ্ছে। যুক্তি ও নৈতিকতা এক্ষেত্রে সুদুর পরাহত।

আসলে থিসিসের বিপরীতে এন্টি-থিসিস অনেকদিন ধরে চলতে থাকলে সেটাকে মানুষের মগজ থেকে সরানো খুব কঠিন। ফেসবুক ও ব্লগ এক্ষেত্রে দারুন ভুমিকা রাখছে। কিন্তু তবুও কিছুটা থেকেই যাবে যে!

বাস্তবতা হলো, সেই সব অপপ্রচারের হোতাদের অনেকেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে একজোটে এসেছে, কিন্তু সর্বনাশের আগুনে এখন তারাও পুড়ছে, জ্বলছে।

রবি ঠাকুরের ভাষায়... পুরোনো সেই দিনের কথা ভুলবি কি-রে হায়...


নির্মম সত্য হলো, আওয়ামী লীগকে একাই পথ চলতে হয় অবশেষে।

কেননা, এখনো এদেশের মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল একমাত্র আওয়ামী লীগ। কারন, এদেশে জনমুখী রাজনীতি করে আওয়ামী লীগ। এজন্য আওয়ামী লীগ নিজেদের অতীত নিয়ে অহংকার করতেই পারে। মুক্তিযুদ্ধের অধিনায়কত্ব করেছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্র জন্মের কারিগরির নেতৃত্ব দিয়েছে। হ্যা, বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন বিষয় ও ঘটনার প্রেক্ষিতে বিতর্ক থাকতেই পারে। কিন্তু অর্জন এত বেশি যে, স্বাধীন বাংলাদেশের ধারাবাহিকতা যতকাল থাকবে অহংকার করার মতো অহংবোধ আওয়ামী লীগের থাকবেই।
যদিও স্বাধীন বাংলাদেশের ক্ষমতা কেন্দ্রীক রাজনীতিতে নানান মেরুকরন ও ঘটনাপ্রবাহ নানান নতুনত্বের জন্ম দিয়েছে। এসবের ক্ষেত্রে 'সবাই সমান' এহেন তকমার যতই হুড়োহুড়িময় গদ্য রচনা করা হোক না কেন একটি দলের সমগ্র জীবনকালের মুল্যায়নই হলো প্রকৃত সত্য। খন্ডিত মুল্যায়ন আক্ষরিক অর্থেই ভিত্তিহীন।

হ্যা, আওয়ামী লীগের মতো আরো কয়েকটি দলের জাতীয়তাবোধের বিকাশ ও মুক্তিযুদ্ধের ভুমিকা নিয়ে গর্ব করার অহংকার অবশ্যই রয়েছে। কিন্তু জনমুখী অর্থাৎ ক্ষমতামুখী রাজনৈতিক দলের মধ্যে একমাত্র আওয়ামী লীগই প্রধান ও অপ্রতিদ্বন্ধী দল, যাদের রয়েছে অহংকার করার মতো অহংবোধ।
স্যালুট আওয়ামী লীগ।

জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গাজার যুদ্ধ কতদিন চলবে?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৮ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার আগে মহাবিপদে ছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু৷ এক বছর ধরে ইসরায়েলিরা তার পদত্যাগের দাবিতে তীব্র বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন৷ আন্দোলনে তার সরকারের অবস্থা টালমাটাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্যামুয়েল ব্যাকেট এর ‘এন্ডগেম’ | Endgame By Samuel Beckett নিয়ে বাংলা ভাষায় আলোচনা

লিখেছেন জাহিদ অনিক, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৮



এন্ডগেম/ইন্ডগেইম/এন্ডগেইম- যে নামেই ডাকা হোক না কেনও, মূলত একটাই নাটক স্যামুয়েল ব্যাকেটের Endgame. একদম আক্ষরিক অনুবাদ করলে বাংলা অর্থ হয়- শেষ খেলা। এটি একটা এক অঙ্কের নাটক; অর্থাৎ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রায় ১০ বছর পর হাতে নিলাম কলম

লিখেছেন হিমচরি, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১

জুলাই ২০১৪ সালে লাস্ট ব্লগ লিখেছিলাম!
প্রায় ১০ বছর পর আজ আপনাদের মাঝে আবার যোগ দিলাম। খুব মিস করেছি, এই সামুকে!! ইতিমধ্যে অনেক চড়াই উৎরায় পার হয়েছে! আশা করি, সামুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

পজ থেকে প্লে : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

লিখেছেন বন্ধু শুভ, ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১৫


.
একটা বালক সর্বদা স্বপ্ন দেখতো সুন্দর একটা পৃথিবীর। একজন মানুষের জন্য একটা পৃথিবী কতটুকু? উত্তর হচ্ছে পুরো পৃথিবী; কিন্তু যতটা জুড়ে তার সরব উপস্থিতি ততটা- নির্দিষ্ট করে বললে। তো, বালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামে ভুল থাকলে মেজাজ ঠিক থাকে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৫


বেইলি রোডে এক রেস্তোরাঁয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে একজন একটা পোস্ট দিয়েছিলেন; পোস্টের শিরোনামঃ চুরান্ত অব্যবস্থাপনার কারনে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডকে দূর্ঘটনা বলা যায় না। ভালোভাবে দেখুন চারটা বানান ভুল। যিনি পোস্ট দিয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×