somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্মঘটে ‘অচল’ শাহজালাল

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাত দফা দাবিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মচারীদের লাগাতার ধর্মঘটে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

বিমানবন্দরের ইলেকট্রনিক বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকাল থেকে কুয়েত ও সিঙ্গাপুরের পথে বিমানের দুটি ফ্লাইট ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেগুলো বিলম্বিত হয়েছে।

সকালের নির্ধারিত চারটি ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ করলেও যাত্রীদের লাগেজ নামানো, উড়োজাহাজ থেকে টার্মিনালে আনাসহ অন্যান্য সেবা বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

ফ্লাইট বিলম্বিত হওয়ায় টার্মিনালের ভেতরেই বিক্ষোভ শুরু করেছেন বহির্গামী যাত্রীরা। পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় বেলা ১১টার দিকে দাঙ্গা পুলিশ ঢুকেছে টার্মিনাল ভবনের ভেতরে।

প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, বিমানমন্ত্রী ফারুক খান ও স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক সকালেই বিমানবন্দরে আসেন। টার্মিনাল ভবনের ভেতরে আন্দোলনরত শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

সভাপতির বিরুদ্ধে বিমান কর্তৃপক্ষের আনা অভিযোগ প্রত্যাহার, আহার ভাতা ও ইউনিফর্ম, ভারত থেকে আনা বিমানের সেটআপ বাস্তবায়ন, কর্মচারীদের ব্যক্তিগত টিপি বাস্তবায়ন, একশ ভাগ চিকিৎসা ভাতা দেয়া এবং ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করা কর্মচারীদের স্থায়ী করার দাবিতে মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে বিমান শ্রমিক লীগের ডাকে কর্মচারীদের এই ধর্মঘট শুরু হয়।

বিমানের বিভিন্ন শাখার শ্রমিক কর্মচারীরা এ আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। তারা বলাকা কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন।

কর্মচারীরা বিমানের ট্রান্সপোর্ট সুবিধা বন্ধ করে দেয়ায় সকালে কেবিন ক্রু বা কর্মকর্তারা বিমানবন্দর বা বলাকা কার্যালয়ে পৌঁছাতে পারেননি। বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংসহ যাত্রীসেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় উড়তে পারছে না কোনো ফ্লাইট।

সকালে বিমানবন্দরের বহির্গমণ টার্মিনালের বাইরে বহু লোক দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তারা জানান, তাদের ভেতরে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না, কর্মকর্তারাও কিছু বলছেন না।

বিমান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা বলছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।

বিমানের অডিট সুপারভাইজার ও বিমান জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি ফিরোজ উজ জামান সাংবাদিকদের বলেন, “সকাল থেকে কোনো ফ্লাইট না ছাড়ায় অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা ভেতরে বিক্ষোভ শুরু করেছেন। পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। এ কারণে নতুন করে কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।”

তিনি জানান, সকাল থেকে চারটি ফ্লাইট বিমানবন্দরে অবতরণ করার পর সিভলে এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের নামালেও তাদের ব্যাগেজ এখনো বিমানেই রয়েছে। এ কারণে যাত্রীরা বিমানবন্দর ছাড়তে পারছেন না।

শ্রমিক লীগের এই ধর্মঘটে শ্রমিক দলও আছে কি না জানতে চাইলে ফিরোজ উজ জামান বলেন, “শ্রমিক লীগ একক সিদ্ধান্তে এই কর্মসূচি ডেকেছে। তবে তারা যে দাবিগুলো দিয়েছে সেগুলো সব শ্রমিকেরই দাবি। সুতরাং এতে ‘না’ বলার সুযোগ নেই।”

একটি সংগঠনের ধর্মঘটে পুরো বিমানবন্দর অচল হয়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এই বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডিলিংয়ের দায়িত্বে আছে বিমানের ক্রুরা। তারা কাজ না করলে অভ্যন্তরীণ বা আন্তর্জাতিক কোনো ফ্লাইটই ছেড়ে যাবে না। অন্যান্য সেবাও বন্ধ থাকবে। এর প্রভাব পুরো কার্যক্রমেই পড়বে।”

সাত দফা দাবিতে সোমবার বিমানের প্রধান কার্যালয় বলাকার সামনে দিনভর অবস্থান কর্মসূচি পালন করে শ্রমিক কর্মচারী লীগ। তারপরও দাবি পূরণের আশ্বাস না পাওয়ায় বিকাল ৫টায় সংগঠনের সভাপতি মশিকুর রহমান লাগাতার ধর্মঘটের ঘোষণা দেন।

মশিকুর রহমান বলেন, “আমরা আন্দোলনে যেতে চাইনি। প্রধানমন্ত্রী ছাড়া সম্ভাব্য সব জায়গায় আমাদের দাবির কথা জানিয়েছি। বিমানমন্ত্রীর নির্দেশনা সত্বেও আমাদের দাবি মানা হয়নি। আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।”

দাবি পূরণের জন্য শ্রমিক লীগের কর্মীরা রোববার বলাকায় বিমানের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ক্যাপ্টেন মোসাদ্দেক আহমেদকে প্রায় ১১ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে রাত ২টার দিকে পুলিশের হস্তক্ষেপে মুক্ত হন এমডি মোসাদ্দেক।

মশিকুর রহমান বলেন, দাবিগুলো নিয়ে তারা রোববার এমডির সঙ্গে আলোচনায় বসেন। কিন্তু এক পর্যায়ে মোসাদ্দেক আহমেদ জানিয়ে দেন, এসব দাবি মানতে তিনি অপারগ।

এরপর সোমবার সকাল থেকে বলাকা ভবনে শুরু হয় কর্মচারীদের অবস্থান ধর্মঘট। তখনই বলা হয়, বিকাল ৫টার মধ্যে দাবি পূরণের ঘোষণা না পেলে মঙ্গলবার থেকে লাগাতার কর্মসূচিতে যাবেন তারা।

গত বছর মার্চে বিমান কর্মীদের একটি সংগঠন চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। মানববন্ধন, সমাবেশ, অবস্থান কর্মসূচির পর এক পর্যায়ে তারা সর্বাত্মক ধর্মঘটের ডাক দেয়। পরে বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে ধর্মঘট স্থগিত করা হয়।
এখানে দেখুন
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জলদস্যুরা কি ফেরেশতা যে ফিরে এসে তাদের এত গুণগান গাওয়া হচ্ছে?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭


জলদস্যুরা নামাজি, তাই তারা মুক্তিপণের টাকা ফেরত দিয়েছে? শিরোনাম দেখে এমনটা মনে হতেই পারে। কিন্তু আসল খবর যে সেটা না, তা ভেতরেই লেখা আছে; যার লিংক নিচে দেওয়া হলো।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×