somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অনিবার্য পরিণতির দিকে দেশ

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনিবার্য পরিণতির দিকে ধাবিত হচ্ছে দেশ। রাজনৈতিক অরাজকতায় লাশের সারিতে দিন দিন লাশের সংখ্যা বেড়েই চলছে। কেউ বা আন্দোলনকারীদের দেওয়া আগুনে, কেউবা ককটেলের আঘাতে আবার কেউবা আন্দোলন করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত হচ্ছেন। প্রতিটি মৃত্যুর সাথেই ঘিরে থাকে বহু মানুষের কান্না। তবে শুধু মৃত্যুই নয়, হাত পা হারানোর সংখ্যাও কম নয়। এর থেকেও বড় বিষয়টি হচ্ছে আতঙ্ক। কোথায় কখন কার উপর মৃত্যু আছড়ে পড়বে তা কেউ জানে না। তাই সকলেই ভুগছেন ভয়াবহ মৃত্যু আতঙ্কে। পথচারী, খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ এই আতঙ্ক নিয়েই চলাফেরার চেষ্টা করছেন। শিকার হচ্ছেন নির্মম মৃত্যুর। বাদ নেই রাজনীতির সাথে জড়িত উচ্চমহলও। কারণ ‘নগর পোড়ালে দেবালয় এড়ায় না’ এই প্রবাদ বাক্য সকল ক্ষেত্রেই অনস্বীকার্য।
ক্রমাগত হরতাল অবরোধ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর এ্যাকশনের ফলে সৃষ্ট পরিবেশের কারণে সারা দেশেই মানুষের স্বাভাবিক চলাচল, আয়-উপার্জন প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। খেটে খাওয়া মানুষেরা পড়েছেন চূড়ান্ত দুরবস্থায়। এদিকে সংঘাত-সংঘর্ষ প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা সামাল দেওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন জেলায় স্থানে স্থানে রাস্তায় বেরিকেড দিয়ে, গাছের গুড়ি ফেলে, টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করা হচ্ছে। স্থানে স্থানে এসব প্রতিবন্ধকতা ডিঙ্গিয়ে আক্রান্ত অঞ্চলে প্রশাসনিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়াও প্রায় মুশকিল হয়ে পড়েছে। শুধুমাত্র ঢাকা ও এর আশে-পাশের এলাকাগুলো ব্যাপক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে বেশ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও দেশের অধিকাংশ এলাকা প্রায়ই এসব কর্মসূচী চলাকালীন সময়ে বেদখল হয়ে পড়ছে। ব্যাপক সদস্য নিয়োগ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হচ্ছে। এদিকে এসব ঘটনায় প্রায়ই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও আহত নিহতের খবর আসছে। অপরদিকে চারদিক থেকে রাজধানী ঢাকাকে অবরুদ্ধ করার একটা পরিকল্পনাও রয়েছে আন্দোলনকারীদের। এটা যদি তারা করতে সক্ষম হয় তাহলে দেশ অচল হয়ে পড়বে। খাদ্য-শস্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে গেলে তখন ঢাকাবাসীকেও প্রত্যক্ষ সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে যেমনটা শিকার হচ্ছেন ঢাকার বাইরের লোকজন।
রাজনৈতিক সঙ্কটের শুরু থেকেই এই পরিণতির কথাটি বিভিন্ন মাধ্যম থেকে উচ্চারিত হয়ে আসছিল। বার বার রাজনৈতিক নেতাদেরকে বিভিন্ন মহল থেকে এই বিভক্তিকরণ প্রসঙ্গে সতর্ক ও সাবধান করা হয়েছিল। বিদেশীদের পক্ষ থেকেও একটি সমঝোতার চাপ ছিল। কিন্তু ক্ষমতালোভী দুটি জোটই এসব কিছুকেই উপেক্ষা করে যার যার অনড় অবস্থানে থেকে একে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে সঙ্কটের মাত্রা বাড়িয়েই গেছেন। প্রথমত, তত্ত্বাবধায় ইস্যুকে কেন্দ্র করে বিরোধী জোটের ক্রমাগত আন্দোলনের হুমকি, অতপর যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া ও জামায়াত- বিএনপির নেতৃস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে আদালত কর্তৃক ফাঁসিসহ বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড প্রদান, শাহবাগ কেন্দ্রীক জাগরণ মঞ্চের উত্থান, স্কাইপ কেলেঙ্কারী, শাপলা চত্ত্বরে হেফাজত কর্মীদের উপর দমনাভিযান প্রভৃতি ঘটনা মিলেই আজকে দেশের এই পরিস্থিতির সূচনা ঘটেছে। এসব বিষয়ে দুই পক্ষের আপসহীন মনোভাবের কারণে পূর্ব সতর্কবার্তা অনুযায়ী দেশ এখন চূড়ান্ত পরিণতির পরিস্থিতিতে পতিত হয়েছে যা প্রায় গৃহযুদ্ধ সমতুল্য। নানা সময় দেশের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ এই বিষয়টিকেই স্মরণ করিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। তাদের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারী বার্তা দেওয়া হচ্ছিল যে ক্রমাগত হারে এই বিভক্তি ও সংঘাত দেশকে একটি গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে। আজকে সিরিয়ায় যে, পরিমাণ হত্যাকাণ্ড ঘটছে, আফগানিস্তান- পাকিস্তানে যে পরিমাণ মানুষ মারা যাচ্ছে এই দেশেও হতাহতের পরিমাণ তার কাছাকাছিই। তাছাড়া যে হারে সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে আগামীতে পরিস্থিতি সকল পক্ষেরই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। শেষ পর্যন্ত কোন অলৌকিক কিছু না ঘটলে দেশকে একটি পূর্ণাঙ্গ গৃহযুদ্ধকেই মোকাবেলা করতে হতে পারে বলে এখন পর্যন্ত আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছেন রাজনীতি সচেতন বিভিন্ন মহল।

সূত্র: Click This Link
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×