somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উন্নয়ন

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এটা এক বুড়ো-বুড়ী দম্পতির গল্প। সেজন্য এ গল্প মজা না লাগাটাই স্বাভাবিক। বুড়ো-বুড়ীরা কোনো নাটক-সিনেমার নায়ক-নায়িকা হলে যেমন তা কারো ভালো লাগে না, তেমনি গল্পের বেলাও নিশ্চয়ই বুড়ো-বুড়ীকে নায়ক-নায়িকা বানানো হলে তা পাঠকদের কাছে ভালো লাগবে না। এজন্য নায়ক-নায়িকারা সাধারণত যুবক-যুবতী হয়। আবার কোনো শিশুর সাধারণ ছবি দশ মিনিট ধরে দেখতেও দর্শকদের ভালো লাগে। এর বিপরীতে কোনো বুড়ো বা বুড়ীর এক মিনিটের চিত্রও কেউ দেখতে চাইবে না।
কিন্তু গল্পটা বুড়ো-বুড়ীর এবং তাদের কোনো নাতী-নাতনীও নেই যে, নাতী-নাতনীকে মূল নায়ক-নায়িকা বানিয়ে বুড়ো-বুড়ীর মাধ্যমে গল্পটা বলার চেষ্টা করা সম্ভব। গল্পের জন্য বুড়ো-বুড়ীর নাম খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয় বিধায় তাদের কোনো নামও আমরা দিলাম না। বুড়ো-বুড়ী বলেই তাদেরকে চালিয়ে দিলাম।

বুড়ো-বুড়ীর এক খণ্ড জমি ছিলো ঢাকা শহরে। আপনারা জানেন যে, বিশ্বের সব চাইতে দামী জমি পাওয়া যায় ঢাকায়। সারা দুনিয়ার মানুষ টাকা বিনিয়োগ করে শিল্প বা প্রযুক্তিতে। কিন্তু এখানকার লোকেরা জমিতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী বেশি। মাটির উপরে টাকা বিছানোর চেয়ে মাটির নিচে টাকা গাদানোয় অভ্যস্ত বেশি তারা। অবশ্য এজন্য এদেশের লোকদেরকে দোষ দেয়া যাবে না। কারণ তাদের পূর্বপুরুষরাও মাটির নিচে টাকা রাখতে পছন্দ করতো। মাটির নিচে মটকি-কলসি-ঘড়ায় টাকা রাখার কাহিনী এখানে অহরহ। এজন্য আপনারা শুনে থাকবেন, এখানকার বিজ্ঞাপনে বলা হয়—‘আমাদের জমির বড় গুণ, বিশ বছরে দাম বেড়েছে একশো গুণ’।
এরকম যেখানে জমির দাম, সেখানে জমির দিক থেকে ধরলে বুড়ো-বুড়ী অনেক ধনী। কিন্তু তাদের হাতে নগদ টাকা তেমন নেই। তাদের আশেপাশের লোকেরা জমি বিক্রি করে এখন পায়ের ওপর পা তুলে বিড়ি ফোঁকে; সেখানে তারা তাদের জমিতে হাঁস মুরগী গরু ছাগল আর শাক-সবজি চাষ করে কোনোমতে খেয়ে-পরে বেঁচে আছে।
জমি বিক্রির প্রস্তাব তারা যে পায়নি, এমনটা নয়। কিন্তু তাতে তারা কান দেয়নি। তাদেরকে উচ্ছেদ করার জন্যও না কি কোম্পানির লোকেরা চেষ্টা করেছিলো। উচ্ছেদের কাজটা সাধারণত এলাকার মাস্তান দিয়েই করা হয়। আর এজন্যই সম্ভবত মাস্তানরা রাজী হয়নি বুড়ো-বুড়ীর দিকে তাকিয়ে। চাষকৃত খাবারের কারণে বুড়ো-বুড়ীকে চিনতো সবাই এবং তাদের প্রতি সবার অন্য রকম একটা মায়া আছে।
শেষ পর্যন্ত একদিন কোম্পানির দুজন লোক তাদের বেড়ার ঘরে এসে মোলায়েম কণ্ঠে বললো, ‘চাচা, এখানে সুন্দর সুন্দর বিল্ডিং উঠছে; আরো উঠবে। সেখানে আপনাদের এই ছাপড়ার ঘর খুব বেমানান। আমরা আপনাদেরকে লেকের ওপারে জমির ব্যবস্থা করে দিচ্ছি; আপনারা জমিটা ছেড়ে দিন।’
লেকের ওপার মানে কোম্পানির মেশিনপত্র, মালামাল এবং ভাঙ্গাচোরা জিনিশপাতি যেখানে রাখা হয়। বুড়ো তখন জিজ্ঞেস করেছিলো, ‘ঐ জমিতে কি এইহানকার মতো সবজি ঐবো?’
কোম্পানির টাই পরা সেই শিক্ষিত ভদ্রলোকেরা হয়তো ভাবতে পারেনি, এই অশিক্ষিত মূর্খ ক্ষ্যাত বুড়ো এরকম একটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিতে পারে। তারা লা-জবাব হয়ে ফিরে গেলো। ফিরে যেতে বাধ্য হলো।
কোম্পানির লোকেরা ফিরে গেলেও কোম্পানি তো আর ফিরে যাওয়ার জন্য আসেনি। তারা এসেছে নগরবাসীকে ‘সবুজের কাছাকাছি’ রাখার প্রত্যয়ে পরিকল্পিত সবুজ নগরী গড়ার জন্য। তাই তারা কী চমৎকার দুটো পাম গাছ লাগিয়েছে দুই হাজার প্লটের প্রকল্পের সামনে। এজন্য তাদেরকে একরের পর একরের ধানক্ষেত আর শত শত গাছের জঙ্গল পরিষ্কার করার পেছনে কত খরচ করতে হয়েছে! প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে। অর্ধেকের বেশি প্লট বিক্রি হয়ে গেছে। প্লট বিক্রি শুরু হওয়ার আগেই মাঝে মাঝে কয়েকটা দালান তুলছে কোম্পানি। সব মিলিয়ে ছয়টা ছয় তলার দালান। কোম্পানির লোকেরা সেখানে থাকে। প্লট বিক্রি করার সময় কোম্পানি ক্রেতাদেরকে বলে, ‘এই যে দেখেন না, লোকজন বাড়ি তুলে থাকাও শুরু করেছে’। সবগুলো দালানের ডিজাইন এক রকম হলেও সবগুলো দালানের কাজ শেষ হয়নি। দুটো দালানের কাজ শেষ করে রঙ করা হয়েছে; একটার তিন তলা পর্যন্ত তুলে পরের কাজ শ্লথ গতিতে করা হচ্ছে। একটা রুম করতে তিন মাস লাগানোর মতো গতি। বাকি তিনটার কাজ আরো কম। দুটো ট্রাকও আছে সারাক্ষণ ইট-বালি টানার জন্য। কোম্পানির ঐসব বিল্ডিংয়ের ইট-বালি টানে ট্রাক দুটো। একই ইট এই দালানের কাছ থেকে নিয়ে ঐ দালানের কাছে রাখা; একই বালি ঐ দালানের কাছ থেকে এনে এই দালানের কাছে রাখা। এটাই কাজ ট্রাক দুটোর। ক্রেতাদেরকে এর মাধ্যমে এটাও বুঝিয়ে দেয়া হয়—কিছু লোক যে বাড়ি তুলছে, শুধু তাই নয়; বাড়ির কাজ শুরু করার জন্য আরো অনেক লোক ইট-বালি জোগাড় করছে।
এরকম একটা গতিশীল প্রকল্পের মধ্যে বুড়ো-বুড়ীর বেমানান ঘর থাকা কী করে সহ্য করা যেতে পারে? তাই কোম্পানির লোকেরা যখন ফিরে গেলো এবং বুড়োর কাছে তারা এসেছিলো—এই কথা আশেপাশের লোকেরা জানতে পারলো, তারা কোম্পানির লোকদেরকে প্রচ্ছন্ন হুমকিও দিলো। আপনারা আগেই জেনেছেন, বুড়ো-বুড়ীর জন্য আশেপাশের লোকদের অন্য রকম একটা দরদ ছিলো। হতে পারে বুড়ো-বুড়ীর বদৌলতে লোকেরা তাদের সন্তানদেরকে খাঁটি দুধ খাওয়াতে পারছে বলে। অথবা তা নাও হতে পারে। মায়া তো এমন এক জিনিশ, যার কারণ অনেক সময় মায়ায় পড়া লোকও জানে না।

এরপর আর কোম্পানির লোকেরা এলো না। বুড়ো সেদিন লাল শাকের আঁটি কাঁধে নিয়ে যাচ্ছিলো। প্রকল্পের গেটে দারোয়ানদের একজন জানালো, ‘চাচা মিয়া, কোম্পানি তাগো গেটের ভিতর দিয়া আপনেরে যাইতে-আইতে মানা করছে’।
এখানে বুড়োর কিছু বলার ছিলো না। কোম্পানির প্রকল্পের রাস্তা দিয়ে কোম্পানি হাঁটতে না দিতেই পারে। তবে নৌকা গড়িয়ে আনা পর্যন্ত এই কয়টা দিন দারোয়ানরা আর কিছু বললো না।
অনেক আগে—যখন আশেপাশে তেমন বাড়িঘরও গড়ে ওঠেনি, তখনও লোকজন নৌকায় আসা-যাওয়া করতো। এখন আবার নতুন করে নৌকা গড়িয়ে আনতে হবে। কারণ সেই নৌকা অনেক দিন পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে গেছে। তখন ধানক্ষেত আর বিলের মাঝখানে দু-একটা বাড়ি ছিলো। প্রত্যেক বাড়ির সামনেই একটা নৌকা বাঁধা ধাকতো। বাড়ি থেকে বড় রাস্তায় যেতে নৌকা লাগতো। বাইরে থেকে কেউ এলে বড় রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাঁক দিতো; বাড়ি থেকে নৌকা বেয়ে তাকে নিয়ে আসা হতো। কখনো কখনো অন্য নৌকাকে অনুরোধ করে আসা যেতো।

গল্প শোনানোর মাঝখানে বিরতি দেয়া হয়। বিরতিতে চা খেতে খেতে গল্পটির প্রাসঙ্গিকতা বলা যায়। লিখিত গল্পের মাঝখানে সেরকম কোনো বিরতির ব্যবস্থা রাখা যায় না। গল্প যদি ম্যাগাজিনে ছাপা হয়, তাহলে বিজ্ঞাপন বিরতি থাকতে পারে। বিজ্ঞাপনের দিকে তাকাতে কিংবা বিজ্ঞাপনের পৃষ্ঠা উল্টে গল্পের পরবর্তী অংশে যেতে তো একটা বিরতি পড়েই। এই গল্পটা যেভাবেই ছাপানো হোক, এর পটভূমিটা জানা দরকার।
গল্পের পটভূমি কখনো বাঁকানো হরফে, কখনো মোটা হরফে, কখনো ছোট ছাঁদের হরফে এবং কখনো ব্রাকেটের মধ্যে লেখা হয়। সাধারণত সম্পাদক বা তরজমাকারীরা তা লিখে থাকেন। তবে এরকম একটা নীরস গল্প কোনো সম্পাদক কিংবা তরজমাকারীর বিবেচনায় আসার সম্ভাবনা যেহেতু খুবই ক্ষীণ, তাই পটভূমিটা এখানে বলে নিই। কারণ গল্পের শেষে বললে আবার তাও কেউ পড়তে চাইবেন না। যেমন প্রধান অতিথির বক্তৃতার পর সভাপতির কথা কেউ শুনতে চায় না।
এই গল্পের পটভূমি বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ফ্লাইওভার।

নৌকা গড়িয়ে আনার পরের দিন সকালে, যখন নৌকাটা উদ্বোধন হবে, তখন বুড়ী মন্তব্য করলো, ‘ভালাই ঐলো এক দিক দিয়া। কোম্পানির পর্জেক্ট ঘুইরা যাইতে তোমার তো অনেক সময় লাগতো। অ্যাহন তো দুই লগিতে দুইডা ঠ্যালা দিয়া লেক পার হলেই বাজার।’
বুড়ো এ কথার কোনো জবাব দিলো না। বুড়ীর দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে দুধের কলসিটা ঘাড়ে নিয়ে বের হয়ে গেলো।

আনাজপাতি বিক্রি করে বুড়ো নৌকায় উঠবে, এমন সময় কোম্পানির দারোয়ানদের মতো একই রঙের পোশাক পরা এক দারোয়ান হাজির। বললো, ‘চাচা মিয়া, এই লেক তো সরকারের কাছ থিকা কোম্পানি ইজারা নিছে।’
‘বুঝলাম না চাচা কী কইলেন।’ চেহারাটা কুঁচকে বুড়ো বললো।
‘মানে সরকার আর কোম্পানি সমান সমান ভাগে এই লেকে মাছ চাষ করবো।’
‘করবো। আমি তো আর মাছ ধরতাছি না।’ মুখে একথা বললেও বুড়োর মনে তখন কামড় দিলো, তাইলে কি এই রাস্তাও বন্ধ কইরা দিবো?
দারোয়ান জানালো, ‘না, ধরতাছেন না। কিন্তু এইহানে কারো নামন মানা। তয় আমগো কেয়ারটেকার স্যারে একটা উপায় বাইর করছে আপনের লাইগা। আপনে মুরুব্বি মানুষ...।’
‘কী উপায় চাচা মিয়া?’
‘লেকে আগামী মাস থিকা আরো নৌকা নামবো। ভাড়ায় চলবো ঐগুলি। কোম্পানিরে প্রতিদিন তাগো পঞ্চাশ টাকা কইরা দিতে হইবো। আপনেও ঐ হিসাবে দিলে আপনের নৌকা চালাইতে আর কোনো ঝামেলা থাকবো না।’

সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৩৩
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×