থাইল্যান্ডের বিগত ৮০ বছরের ইতিহাসে ১৮টি সেনা-অভ্যুত্থান ঘটানো বা ঘটানোর চেষ্টাকারী সেনাবাহিনী দেশটির সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতা থেকে নিজেদের এখনও দূরে সরিয়ে রেখেছে। কিন্তু গুজব আছে, পরিস্থিতি আরো অশান্ত হয়ে উঠলে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক করার অজুহাতে নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করতে পারে সেনাবাহিনী।
Published : 04 Dec 2013, 02:05 PM
বুধবার এমন গুজব উড়িয়ে দিয়েছেন দেশটির নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নারঙ পিপাথানাসাই।
পিপাথানাসাই বলেছেন, যেহেতু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে তাই তিনি এবং তার শীর্ষ সহকর্মীরা হস্তক্ষেপ করার কথা ভাবছেন না।
তিনি জানিয়েছেন, গুজবের প্রেক্ষাপটে তিনি, সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনী প্রধান পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন এবং বিদ্যমান পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করার কোনো ইচ্ছা তাদের নেই।
“প্রত্যেকেই একমত হয়েছেন যে, এই পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী নেতৃত্বের ভূমিকা গ্রহণ করবে না এবং যেহেতু উত্তেজনা কমে আসছে বলে আমরা বিশ্বাস করছি তাই অভ্যুত্থান ঘটারও কোনো সম্ভাবনা নেই, শিগগিরই সবকিছু স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে”
থাই সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন তিনি।
এদিকে, ক্ষমতা থেকে সরকারকে হটানোর চেষ্টাকারী দেশটির সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা বুধবার পুলিশ সদর দপ্তরের দিকে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যায়।
সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের নেতা সুথেপ থাউগসুবান বলেছেন, আন্দোলন স্তিমিত করে দেয়া সত্বেও লড়াই চলবে।
কয়েকদিন সহিংসতা চলার পর মঙ্গলবার পুলিশকে রাস্তা থেকে সব ধরনের অবরোধ সরিয়ে নিয়ে বিক্ষোভকারীদের জন্য রাস্তা ছেড়ে দিতে বলেছিল থাই সরকার। সরকার পতনের লক্ষ্যে বিক্ষোভকারীরা যে সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দখল করতে চায় তা তাদের দখল করার সুযোগ দিতেও বলে দেয় সরকার।
পুলিশের কোনো বাধা না পেয়ে রাজধানী ব্যাংককে নিজেদের ঘাঁটিতে ফিরে আসে বিক্ষোভকারীরা। তারপরও লড়াই শেষ হয়ে যায়নি বলে দাবি করে তারা।
বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডের রাজা ভুমিবল আদুলিয়াদজের ৮৬তম জন্মদিন। এ উপলক্ষ্যে রাজার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রতিবাদ একদিন বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন থাউগসুবান।
এরপর শুক্রবার থেকে প্রতিবাদ আবার শুরু হবে বলে মঙ্গলবার বিকেলে নিজ সমর্থকদের উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বলেছেন তিনি।
থাইল্যান্ডের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতা দেশটির রাজধানী ব্যাংককভিত্তিক অভিজাত শ্রেণী ও প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা ও তার ভাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার সমর্থক দরিদ্রদের মধ্যে দেশটিকে প্রায় বিভক্ত করে ফেলেছে।