somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিখোঁজ

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দুটো জিনিস মানুষ কখনও লুকাতে পারে না । নেশার মত নেশা করলে আর প্রেমের মত প্রেম করলে । সৈকতের ক্ষেত্রে দ্বিতীয়টি ঘটেছে । সে ঢাকার প্রেমে পরেছে । ঢাকার বেশীর ভাগ নাগরিকের ঢাকা আদি নিবাস না হওয়ায় এই শহরকে কেউ ভালবাসে নি । সবাই বারবনিতার মত ঢাকাকে ব্যবহার করেছে কিন্তু বুকে টেনে নেই নি ভালবেসে । সন্ধ্যে বেলার ঢাকার অলিগলি-রাস্তাগুলো ভরে যায় তারুন্যের জোয়ারে । অসংখ্য স্বপ্নদীপ্ত চোখ ঘুরাফেরা করে আশেপাশেই । ভালোই লাগে সৈকতের । আজ বৃহস্পতিবার রাত । , খুব গুরুত্বপুর্ণ আড্ডার সময় এখন বন্ধুদের মাঝে । কত স্বপ্ন যে উঠে আশে পাড়ার মোড়ের চায়ের আড্ডাগুলোতে । অসংখ্য তরুনের মধ্যে অগুনিত মতবাদ প্রকাশিত হয় । কখনও কখনও এখানেই ঘটে যায় ইউরোপের বিপ্লব কিংবা সমাজতন্ত্রের “লবন পরীক্ষা” । এদের মধ্যে উম্মোচিত হয় দেশের জন্য ভাবনা , উদ্দীপনা আর কিছু একটা করে ফেলার তীব্র আকাঙ্ক্ষা । বৃহস্পতিবার মুঠোফোন বারবার বেজে উঠবে বন্ধুদের কলে । সব বন্ধুরা ভেবে মরে । রাস্তা অনেক কিন্তু সঠিক রাস্তা কোনটা । পাওয়া যাবে কি নতুন কোন পথের সন্ধান । আলোর পথ , শান্তির পথ কি সুদূর পরাহত ।
এখন পর্যন্ত মিশন , ভিশন ঠিক হলো না জাতিটার । কোথায় যেন পরেছিলাম স্বাধীনতা অর্জনের অযোগ্যতার মাঝেও আমরা পেয়েছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ অর্জন আমাদের স্বাধীনতা । যুদ্ধে হারাতে হয়েছে অনেক কিছুর মধ্যে আমাদের বুদ্ধিজীবি সুর্য সন্তানদের । হঠাত স্বাধীনতা পেয়েও আমরা পারি নি এতো বছরেও নিজেদের পরিকল্পনাগুলো গুছিয়ে নিতে । আমাদের পরে স্বাধীনতা অর্জন করে অনেক জাতি আমাদের থেকে অনেক উন্নত জীবন অতিবাহিত করছে । তরুনরা অনেক ইতিবাচক চাই যোগ্য নেতৃত্ব । যখন মাহাথির মোহাম্মদ মালয়েশিয়ায় গোটা দেশব্যাপী তৈরী করছিলেন বিশাল বিশাল রাস্তা , এয়ারপোর্ট আর সমুদ্রবন্দর তখন থেকে আজও আমরা সেই একই রাজনৈতিক সমস্যায় পরে আছি । গনতন্ত্র কে গ্রহন করার যোগ্যতাও রাখি না আবার ত্যাগ করার ক্ষমতাও নেই ।

কোথায় যেন বারবার খেই হারায় ফেলি জাতীয় জীবনে আমরা । কিসের যেন না পাওয়া আর অতৃপ্তি তাড়া করে আমাদের । দেশকে আমরা মৃন্ময়ী ভাবতেই বেশী পছন্দ করি । দেশ কে পূজা করি । দেশের কাছে অনেক চাওয়া আমাদের । অনেক আশায় আমরা দেশের পানে হাত পেতে বসে রই আর ভাবি কই দেশতো কিছুই দিচ্ছে না কিন্তু এই আমাদের নিয়েই যে আমাদের দেশ এটা বুঝতে চাই না । আমি চুরি করি মানে দেশ চুরি করে । আমি অন্যায় করি মানে দেশ অন্যায় করে । আমি একা সুখে থাকা মানে কিন্তু দেশ সুখে থাকা নয় । দেশের ব্যাপারে আমাদের ছাড় দেওয়ার প্রবণতা একেবারে শুন্য । ভারতে দেখেছি দেশের ব্যাপারে কেউ খারাপ কিছু বললে তাঁরা ছেড়ে কথা বলে না । সব কিছুর উপর তাদের দেশ । তাই গনতন্ত্রকে তাঁরা ধারন করতে পেরেছে সফল ভাবে ।

সৈকত ভেবেই পায় না আজ তরুনরা যদি দেশের এই অপ সিস্টেম কে ক্লেইম করে সারাক্ষন , রাজনীতিকে ঘৃনা করে আর দেশমাতৃকা কে তুলে দেই দুষ্টদের হাতে প্রতিবার তবে সে প্রতিবাদ , প্রতিরোধ না করার অপরাধে সেই তরুনও সমান অপরাধী । আদর্শের , দর্শনের ও কর্মের সঠিক ব্যাখ্যা পেলো না যে যুবক সে কি ভেবেছে তার পূর্বপুরুষের কথা । সে তার এক হাজার বছরের গৌরবের ইতিহাসকে নাকি যে নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে সেটাই দেখে দেখে অভ্যস্থ হওয়ার রোগে পেয়েছে তরুনদের ।

গোড়ায় গলদ হচ্ছে নাকি ?? সৈকত ভেবে পায় না আর দশজনের মত । ভাল একটা অক্ষরজ্ঞানের বই নেই আমাদের এই শিক্ষা ব্যবস্থায় । “অ” তে অজগর । “অজগর টি ঐ আসছে তেড়ে” । অজগর তেড়ে আসার ভয় নিয়েই শুরু হয় আমাদের শিক্ষা নামের আলোর পথের যাত্রা । বৈজ্ঞানিক ও আধুনিক একটা আদর্শলিপি তৈরী করাটাই এখন মূল কাজ হয়ে দাড়িয়েছে । পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নে যেমনে রাজনৈতিক নোংরামী এই জাতি করেছে তাতে এই আশায় গুড়ে বালি । কিন্তু আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার ইতিহাস অতিপুরোনো । আমরা অনেক আগে থেকেই শিক্ষাগ্রহন প্রচলিত রেখেছি আমাদের সামাজিক ব্যবস্থায় । শতশত বছর আগেও এই দেশে শিক্ষার জন্য মানুষ দূর দূরান্ত যেত । গুরুগৃহ তে চলত পাঠদান । এখন দুনিয়া যেটাকে বিশ্ববিদ্যালয় বলছে তার ইতিহাস অনেক আগের আমাদের রয়েছে । পশ্চিমারা যেই ব্যাচেলর ডিগ্রির কথা বলে তার বাংলা মানে হলো স্নাতক । কেউ কি জানে এই স্নাতক মানে কি ??
শতশত বছর আগে দীর্ঘদিন শিস্য গুরুগৃহে যখন বিশ্ব, ভুগোল, বিজ্ঞান , কলা সম্পর্কে সম্মক জ্ঞান লাভ করতো তখন গুরু তাকে নদী থেকে স্নান বা গোসল করে আসতে বলতেন । সেই স্নান সম্পন্ন করা শিস্য কে বলা হতো স্নাতক । সেই কালের স্নাতক আর আজকের স্নাতকে বড় তফাৎ । ওই যে অজগর তেড়ে আশার দরুন পলায়ন প্রবৃত্তি কাজ করে শিক্ষার্থিদের মাঝে ।

এরকম অসংখ্য ছোটখাট সমস্যা কে এইসব পাড়া মহল্লার আড্ডাতেই আলোচিত হতে দেখে ভাবে জোয়ার একদিন আসবে । আর দাবিয়ে রাখা যাবে না ছাই চাঁপা আগুন । পরক্ষনই অপশক্তিদের পেশীশক্তি, আর্থিক বলের কাছে হেরে যেতে দেখে অপতিরোধ্য যৌবনকে । ঢাকার ছাত্র-চাকরীজীবিদের মেস গুলো যেন এক একটা বোমা’র মত । কত স্বপ্নবাজ, সৃষ্টিশীল , কর্মঠ কিছু কর্মী এই মাটির জন্য কাজ করে যাছে অনেকেই জানে না ।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×