নির্বাচন সামনে রেখে বিরোধী দলের ‘সহিংস আন্দোলন’ এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ‘অত্যধিক বলপ্রয়োগ’ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’।
Published : 05 Dec 2013, 09:09 AM
ওয়াশিংটনভিত্তিক এই সংস্থার এশিয়া বিভাগের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বুধবার এক বিবৃতিতে বলেন, আরো মৃত্যু, আরো সহিংসতা বন্ধে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের ‘জরুরিভিত্তিতে’ পদক্ষেপ নিতে হবে।
“বাংলাদেশে নির্বাচনপূর্ব সহিংসতায় ইতোমধ্যে বহু প্রাণ ঝরে গেছে। কেবল দায়িত্বশীল নেতৃত্বই এভাবে প্রাণহানি বন্ধ করতে পারে।”
নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে প্রধান দুই দলের বিরোধকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় এ পর্যন্ত ৪০ জনেরও বেশি লোক নিহত হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে এইচআরডব্লিউ বিবৃতিতে বলা হয়, বিক্ষোভের মধ্যে অধিকাংশ হতাহতের ঘটনায় ‘আন্দোলনকারীরাই দায়ী’।
“আন্দোলনকারীদের ছোড়া বোমায় অন্তত চার শিশু দগ্ধ হয়েছে। আহত হয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বহু সদস্য। নিহতদের মধ্যে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরাও আছেন- এমন তথ্য নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদনগুলোতে এসেছে।”
এই সহিংসতায় বিরোধীদলের ভূমিকার সমালোচনা করে ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, “সহিংসতাকে উস্কে দেয়া বিরোধীদলের নেতাদের কোনোভাবেই উচিৎ নয়। বরং আন্দোলন যাতে শান্তিপূর্ণ হয় তা নিশ্চিত করা তাদের দায়িত্ব।
“যখন কোনো কর্মী অপরাধ করে, রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্ব তাদের বিচারের মুখোমুখী করতে কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করা।”
ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, “নির্বাচনকেন্দ্রিক উত্তেজনা এক বিস্ফোরোন্মুখ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই অবস্থায় বিরোধী দলের ওপর বেআইনি বলপ্রয়োগের ইতিহাস মুছে ফেলে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পেশাদারিত্ব ও নির্দলীয় অবস্থান থেকে নিজেদের ভূমিকা পালন করতে হবে।”
বিগত সরকারের সময়ে বিরোধীদলে থাকার দিনগুলোতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ‘যে অবিচারের শিকার হতে হয়েছিল’, তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আইনের মধ্যে থেকে দায়িত্ব পালনে বাধ্য করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এইচআরডব্লিউর পরিচালক।
২৮ নভেম্বর শাহবাগে চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলায় তিন জনের প্রাণহানি ও ১৫ জনের দগ্ধ হওয়া, বুধবার গাইবান্ধায় রেললাইনে নাশকতায় ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে চার জনের মৃত্যু এবং ফেনীতে বিএনপির মিছিল থেকে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার পর সংঘর্ষে এক যুবদল নেতা নিহত হওয়ার বিষয়গুলোও এইচআরডব্লিউ তাদের বিবৃতিতে তুলে ধরেছে।
পাশাপাশি আন্দোলনকারীদের সহিংসতা এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ‘আইনবহির্ভূত’ বলপ্রয়োগের বিষয়গুলোর ‘নিরপেক্ষ তদন্ত’ দাবি করেছে সংস্থাটি।
বিবৃতিতে বলা হয়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যাতে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে জাতিসংঘ নীতিমালা অনুসরণ করে, সেজন্য সরকারের প্রকাশ্যে আদেশ জারি করা উচিৎ।