somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হ ম এরশাদের শাসনামল - ৭

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হ ম এরশাদের শাসনামল - ৭
---------------------- ডঃ রমিত আজাদ


(পূর্ব প্রকাশিতের পর থেকে)

স্বৈরাচারী এরশাদ ক্ষমতায় আসার এক বৎসরের মধ্যেই ঘটে একটি ভয়াবহ ঘটনা। ঘটনাটি ঘটেছিলো ১৯৮৩ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারী। হ ম এরশাদ ক্ষমতা দখলের পর সভা সমাবেশ মিছিল মিটিংসহ মত প্রকাশের সব ধরনের মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হয়। সেই সময় রাজনৈতিক দলগুলো এরশাদের এই অবৈধ ক্ষমতা দখলকে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে স্বৈরশাসন মেনে নেয়। কিন্তু বাংলাদেশের চিরকালের সচেতন তথা অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে কাউন্টার ফোর্স ছাত্রসমাজ মাথা নত করেনি। তাই স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের শুরু হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এরশাদের সামরিক শাসন জারির প্রথম দিনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করে।

সরকারি আইন জারির কারণে সে সময় সরাসরি রাজনৈতিক কর্মকান্ড প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এরশাদের সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা দেয়াল লিখন চালিয়ে যেতে থাকে। ছাত্রদের সেই দেয়াল লিখন সমানে মুছতে থাকে সামরিক সরকারের তল্পিবাহক পুলিশ বাহিনী। পুলিশ যত দেয়াল সাদা চুন টেনে মুছে ফেলে, ছাত্ররা ততই দেয়াল লিখন চালিয়ে যেতে থাকে। এভাবেই এরশাদের সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে চলছিল দীর্ঘমেয়াদি সংগ্রামের প্রাথমিক প্রস্তুতি। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে বিবৃতি প্রদান করা হয়। সেটাই ছিল এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে প্রথম লিখিত প্রতিবাদ।আগের একটি পর্বে উল্লেখ করেছিলাম যে, ২৪ মার্চ কলাভবনে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে পোস্টার লাগাতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয় ছাত্রনেতা শিবলী কাইয়ুম, হাবিব ও আ. আলী। পরে সংক্ষিপ্ত সামরিক আদালতে তাঁদের সাত বছরের কারাদন্ড হয়। সেই থেকে শুরু হয় এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্রদের আপোষহীন লড়াই।

পাকিস্তান শাসনামলে পূর্ব বাংলার ছাত্রদের প্রধান দাবি ছিল একটি সুলভ, সার্বজনীন, বৈষম্যহীন, বৈজ্ঞানিক ও গণতান্ত্রিক শিক্ষানীতি। এ সময় পূর্ব পাকিস্তান সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ১১ দফা দাবি প্রণয়ন করেছিল। এরশাদ ক্ষমতায় আসার পরপরই তাঁর শিক্ষামন্ত্রী ডঃ মজিদ খান নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়ন করে। কিন্তু এর বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধ হয়। ছাত্রদের মতামত ছিলো যে, সাম্প্রদায়িকতা, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ আর শিক্ষা সংকোচন মজিদ খান প্রণীত শিক্ষানীতির ভিত্তি। এ নীতিতে শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকেই বাংলার সঙ্গে আরবি ও ইংরেজি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়। এ নীতি ছিল শিক্ষা অর্জনের জন্য মাতৃভাষার গুরুত্ব উপেক্ষা এবং ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহারের দৃষ্টান্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন খর্ব ও শিক্ষার ব্যয়ভার যারা ৫০% বহন করতে পারবে তাদের রেজাল্ট খারাপ হলেও উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হয় এই শিক্ষানীতিতে। ফলে শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হতো দরিদ্র মানুষ। ছাত্ররা এ নীতির ব্যাপক বিরোধিতা করে। ১৯৮২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বরের শিক্ষা দিবসে এ শিক্ষানীতি বাতিল করার পক্ষে ছাত্র সংগঠনগুলো একমত হয়।

১৯৮২ সালের ২১ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে গণসাক্ষরতা অভিযান চলে। দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মজিদ খান শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার কাজও শুরু হয়। এ সংগ্রামকে প্রতিরোধ করতে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি খন্দকার মোহাম্মদ ফারুককে গ্রেপ্তার করলে ছাত্ররা আরো ফুঁসে ওঠেন। তাঁর গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ২৭ ও ২৮ জানুয়ারি সারা দেশে ছাত্র ধর্মঘট পালিত হয়। এবার ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি হাতে নেয়। সেই দিনটিই ছিল ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৩। ছাত্ররা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিলে যোগ দেয়। হাইকোর্টের গেট ও কার্জন হল-সংলগ্ন এলাকায় মিছিলে ব্যারিকেড দেয়া হয়। ছাত্ররা ব্যারিকেড ভাঙার কোন চেষ্টা করেনি। নেতারা তারকাঁটার ওপর উঠে বক্তৃতা দিতে শুরু করে।

কিন্তু কোনো উসকানি ছাড়াই পুলিশ তারকাঁটার ব্যারিকেড সরিয়ে রায়ট কার ঢুকিয়ে দেয়। রঙিন গরম পানি ছিটাতে শুরু করে। এরপর বেধড়ক লাঠিচার্জ শুরু করে। সাধারণ ছাত্ররা তখন এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। শুরু হয় পুলিশের প্রতি ইট-পাটকেল নিক্ষেপ। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এক পর্যায়ে পুলিশ ছাত্রদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন জয়নাল। পুলিশ সেদিন জয়নালকে গুলিবিদ্ধ করেই ক্ষান্ত হয়নি, তাঁর শরীর বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। বেয়নেট ফলা আর জয়নালের শরীর থেকে চুইয়েপড়া রক্ত রাজপথ ভাসিয়ে দেয়। শুধু জয়নাল নয়, ছাত্রদের ওপর পুলিশি তান্ডবের সময় শিশু একাডেমীতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা দিপালী নামের এক শিশু গুলিবিদ্ধ হয়। তবে দিপালীর লাশ পুলিশ গুম করে ফেলে। জয়নাল পড়েছিলেন কার্জন হলের মধ্যে। তাঁকে ঢাকা মেডিক্যালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। আরো অনেকে নিখোঁজ হয়। তাদের জীবিত বা মৃত কোনো অবস্থায়ই পাওয়া যায়নি। এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে যেসব ছাত্র সকালে মিছিলে আসেননি, তাঁরা বিকেলে জয়নালের জানাজায় বটতলায় উপস্থিত হন। হাজার হাজার সাধারণ মানুষও উপস্থিত হয়।

পুলিশ সেদিন শুধু হত্যা করেই স্থির থাকেনি, বিকেলে ক্যাম্পাসে একটি যুদ্ধ-পরিস্থিতি তৈরি করে সেনাবাহিনী। যতদূর জানা যায় নির্দেশ এসেছিলো জেনারেল আবদুর রহমানের কাছ থেকে। ঐ জেনারেলের আদেশেই সৈন্যরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এমনকি শিক্ষকদের উপরেও ঝাপিয়ে পড়ে। জানা যায় যে অনেক শিক্ষক পরিচয়পত্রও প্রদর্শন করেছিলো যে তিনি শিক্ষক, তারপরেও তাদের লান্ছিত করা হয়। সৈন্যদের সঙ্গে যোগ দেয় বিডিআর ও পুলিশ। শাহবাগ, টিএসসি চত্বর, কলাভবনের সামনে, নীলক্ষেত, কাঁটাবনের রাস্তা ধরে পুরো অঞ্চল তারা ঘেরাও করে ফেলে। অপরাজেয় বাংলার সমাবেশে পুলিশ অতর্কিত লাঠিচার্জ শুরু করে। এ সময় বহু ছাত্রনেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। উপাচার্যের কার্যালয়ে ঢুকে পুলিশ ছাত্রছাত্রীদের মেরে হাত-পা ভেঙে ট্রাকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে এই জাতীয় বর্বরতা ছিলো এই প্রথম। এ ঘটনার প্রতিবাদে তৎকালীন উপাচার্য পদত্যাগ করেন।

ছাত্ররা জয়নালের লাশ লুকিয়ে ফেলে। লাশের খোঁজে পুলিশ চারুকলায় ঢুকে ছাত্রদের নির্যাতন ও গ্রেপ্তার করে। অবশেষে মুহসীন হলের ডাইনিংয়ে লাশ পাওয়া গেলে অন্যান্য হলে লাশের তল্লাশি বন্ধ করা হয়। কিন্তু গ্রেপ্তার করে দুই সহস্রাধিক ছাত্র-জনতাকে। সরকারি হিসাবেই এ সংখ্যা এক হাজার ৩৩১ জন। গ্রেপ্তারকৃতদের প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় শাহবাগের পুলিশ কন্ট্রোল রুমে। এরপর তাঁদের তুলে দেওয়া হয় সেনাবাহিনীর হাতে। বন্দি ছাত্র-জনতার ওপর প্রথমে পুলিশ ও পরে সেনাবাহিনী নির্যাতন চালায়। মেয়েদেরও গ্রেপ্তার করে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রবল চাপের কারণে তাঁদের ১৫-১৬ তারিখের মধ্যে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। যেসব ছাত্র গ্রেফতার হয়েছিলো তাদের অনেকের পিতা-মাতাই ভেবেছিলো তারা আর ফিরে আসবে না। ব্যপক নির্যাতনের পর তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। যারা সেই নির্যাতনের শিকার হয়েছিলো তারা পরবর্তিতে বলেছিলো, "এই রকম আজাব আর হয় না!"

মধুর কেন্টিনের কর্ণধার অরুণ কুমার দে সেদিনের কথা স্মরণ করতে গিয়ে বলেন, সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে ১৪ তারিখ সকাল ১১টার দিকে কলাভবনের সামনে ২০-২৫ হাজার শিক্ষার্থীর সমাবেশ হয়। এরপর ছাত্ররা মিছিল করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দিকে যান। হাইকোর্টের গেটে সংঘর্ষ হয়। বিকেল ৫টার দিকে দরজা ভেঙে পুলিশ মধুতে ঢুকে রান্নাঘরে গিয়ে কর্মচারীদের নির্মমভাবে পেটায়। ওরা আমাকে পুলিশভ্যানে করে নিয়ে যায় শাহবাগের কন্ট্রোল রুমে। কন্ট্রোল রুমের মাঠে নিয়ে সবাইকে আবার মারে। এরপর গরম লবণ-পানি খেতে দেয়, যাতে আমাদের শরীর ফুলে না যায়। কিছুক্ষণ পর আর্মির লোক এসে অকথ্য ভাষায় গালি দেয়। ওই রাতেই সংক্ষিপ্ত সামরিক আদালতে আমাদের ধরে নিয়ে যায় আর্র্মি। সকালে রুটির ট্রাক আসে। আমি বন্দি ছাত্রদের রুটি ভাগ করে দিতে যাই। তাতেও ক্ষিপ্ত হয় সেনারা। তারা আবার আমাকে পেটায়। সন্ধ্যায় একটা গাড়িতে করে আমাদের নিয়ে যায় ট্রানজিট ক্যাম্পে। সেখানে চলে আবারও নির্যাতন। এ সময় ছাত্রদের মাথা ধরে দেয়ালে আঘাত করে সেনারা।

১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে লাহোর রক্ষা করেছিলো ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট। প্রতারক ইংরেজ জাতি বাঙালীদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করেছিলো যে, বাঙালী মার্শাল রেস না। সেই অপবাদ মুহুর্তেই দূরীভূত হয় যখন সদ্য প্রতিষ্ঠিত অল্প বয়সী ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট অপরিসীম বীরত্ব দেখায়। তরুণ সেনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান এই যুদ্ধে পেয়েছিলেন সর্বচ্চো পদক 'হেলাল-ই-জুরাত'। তিনি ছাড়া আরো অনেক অফিসার ও সৈনিক নানা স্তরের পদক পেয়েছিলেন।১৯৭১ সালে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট-এর অফিসার ও সৈনিকরা যেভাবে মাতৃভূমি তথা তাদের ভাই-বোনদের জীবন রক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো তাতো কিংবদন্তী হয়ে আছে। সৈনিক ও জনতা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রচনা করেছিলো মহান মুক্তিযুদ্ধের মহাকাব্য। সেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ১৯৭২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী বাংলা একাডেমীতে একটি অনুষ্ঠানে সকল সেক্টর কমান্ডারদের দাওয়াত দেয়া হয়েছিলো। সেখানে গুনীজনদের সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরাও উপস্থিত হয়ে সেনা কর্মকর্তা সেক্টর কমান্ডারদের এতো ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। পরবর্তিতে ১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বরও সৈনিক জনতা সন্মিলিতভাবে ঘটিয়েছিলো 'সীপাহী-জনতার বিপ্লব' যাকে 'স্বাধীনতা সুরক্ষা দিবস'-ও বলা হয়। ট্যাংকের উপর দাঁড়িয়ে সৈনিকদের গলায় মালা পড়িয়ে দিয়েছিলো উল্লসিত জনতা। এভাবে আমাদের দেশের সৈনিক ও অসৈনিকদের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ। অথচ সেই ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টকেই আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করলো অমুক্তিযোদ্ধা জেনারেল এরশাদ (বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে যার কোন সমর্থন ছিলো না)। দেশের জনগণের মন এই প্রথম বিষিয়ে উঠলো সেনাবাহিনীর প্রতি। সে সময় একজন জুনিয়র সেনা কর্মকর্তাকে আমি বলেছিলাম, "এসব কি হচ্ছে বলেন তো!" তিনি দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বলেছিলেন আমরা আমাদের সিভিলিয়ান ভাই-বোনদের ভালোবাসি, বাট হোয়াট উই ক্যান ডু, ইফ আওয়ার চীফ ইজ দ্যাট!" একটা দেশের জন্য এটা যে কতটা দুঃখজনক ও ঝুঁকিপূর্ণ তা বলে শেষ করা যাবেনা।

১৪ ই ফেব্রুয়ারীর আন্দোলন ছিলো, স্বৈরাচারি এরশাদের বিরুদ্ধে প্রথম ব্যাপকতর বিদ্রোহ। এর আগে এত বড় বিদ্রোহ আর হয়নি। এর বাঁধভাঙা ঢেউ লাগে চট্টগ্রামেও। এই ঘটনার প্রতিবাদে মেডিক্যাল ও অন্যান্য কলেজের শিক্ষার্থীরা মিছিল শুরু করে। সেই মিছিলেও পুলিশ গুলিবর্ষণ ও লাঠিচার্জ করে। এতে শহীদ হয় কাঞ্চন। অসংখ্য মানুষ প্রাণ দেয় এ আন্দোলনে। তবে আন্দোলনটি সফল হয়। আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রদের তিনটি মৌলিক দাবিতে মজিদ খানের শিক্ষানীতি স্থগিত হয়ে যায়। ছাত্রবন্দিদের মুক্তি দাবীতে তিনজন বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়। এরশাদের সামরিকতন্ত্রের অবসান না হলেও ঘরোয়া রাজনীতির অধিকার দিতে বাধ্য হয় এরশাদ।

আন্দোলনের সামনে সামরিক স্বৈরাচার মাথা নত করে। ১৭ ফেব্রুয়ারি ছেড়ে দেওয়া হয় এক হাজার ২১ জনকে এবং আটক রাখে ৩১০ জনকে। ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন স্থগিত করে সরকার। তারপর থেকেই ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে পালন করা হতো।

এবার স্বভাবতঃই প্রশ্ন জাগে, কি ছিলো এই মজিদ খানের শিক্ষা নীতি? আমাদের দেশে যেটা বরাবরই হয়ে থাকে তা হলো, যে কোন গৃহীত সরকারী নীতি তখন তখন বিস্তারিতভাবে জন গণকে জানানো হয়না। মজিদ খানের শিক্ষা নীতি সম্পর্কে যতটুকু জানা গেছে নিচে তা তুলে ধরলামঃ

মজিদ খান শিক্ষানীতি :
প্রেক্ষাপট
১৯৮২ সালের ৭ নভেম্বর স্বৈরাচার এরশাদের শিক্ষামন্ত্র্রী ড. আব্দুল মজিদ খান অত্যন্ত- নগ্নভাবে সাম্প্রদায়িক শিক্ষার প্রসার এবং সরকারি শিক্ষা সংকোচন নীতি অবলম্বন করে শিক্ষানীতি ঘোষণা করে। প্রথম শ্রেণী থেকেই বাংলার সঙ্গে আরবি এবং দ্বিতীয় শ্রেণী থেকে ইংরেজী অর্থাৎ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনটি ভাষা বাধ্যতাম‚লক করা হয়। এসএসসি কোর্স ১২ বছর, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন খর্ব ও শিক্ষার ব্যয়ভার যারা ৫০% বহন করতে পারবে তাদের রেজাল্ট খারাপ হলেও উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেয়ার কথা বলা হয়। ছাত্রসমাজ এই শিক্ষানীতিকে গণবিরোধী মনে করে তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। ছাত্র সমাজকে আন্দোলনের জন্য ঐক্যবদ্ধ করে। ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্র“য়ারী শিক্ষানীতি বাতিল ও সামরিক আইন প্রত্যাহার দাবিতে স্মরণকালের বৃহত্তম ছাত্র মিছিল হয়। সেদিন আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের উপর ট্রাক উঠিয়ে দেয় এরশাদ সরকারের পুলিশ বাহিনী। শহীদ হয় দিপালী, কাঞ্চন সহ আরো অনেকে। শুধু শিক্ষানীতির আন্দোলন নয়, শিক্ষাঙ্গনের সুষ্ঠ পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রণয়ন, ক্লাসরুম সংকট নিরসন, সেশন জ্যাম নিরসন, শিক্ষার্থিদের ইউনিফর্ম নিশ্চিতকরণ, ক্লাস শুরুর পূর্বে এসেম্বলি, শিক্ষকদের জীবনমান উন্নতকরণ, সুলভমূল্যে শিক্ষা উপকরণ নিশ্চিতকরণ, বিজ্ঞান গবেষণাগার-কম্পিউটার ল্যাব নিশ্চিতকরণ, শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়াসহ শিক্ষা সংক্রান্ত আরো কিছু দাবী নিয়ে ছাত্ররা আন্দোলন করে।

মজিদ খান শিক্ষনীতির সুপারিশমালা

বিষয়বস্তু
শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য যে কোন সমস্যা ও সংকট মোকাবেলার জন্য ভবিষত বংশধরদের জ্ঞান স্পৃহা ও প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনের জন্য শিক্ষানীদের প্রস্তুতকরন।
প্রাথমিক শিক্ষা - প্রাথমিক শিক্ষা সকল নাগারিকের জন্য কমপক্ষে ৫ বছরের সার্বজনীন করা হয়ে এবং ভবিষ্যতে এটা ৮ বছরে করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
মাধ্যমিকশিক্ষা - প্রস্তুতি স্তরের পরবর্তী পর্যায়ে ৪ বছরের মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা করা। এতে চূড়ান্ত পরীক্ষার ব্যবস্থাসহ নবম-দশম শ্রেণীতে সমন্বিত শিক্ষা কর্ম প্রবর্তিত হবে।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা - উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষায় একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর পাঠসূচীকে ৫ টি প্রধান শাখার বিভক্ত থাকবে
ক) প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষন
খ) কারিগরী
গ) সাধারন ও কারিগরি উভয় ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির যোগ্যতা নির্ধারন।
খ) ব্যবসা বানিজ্য ও ব্যবস্থাপনা
ঙ) নার্সিং
উচ্চশিক্ষা - উচ্চশিক্ষার জন্য বিশেষ পাঠ্যক্রম নির্বাচনে। এবং এর জন্য যোগ্যতার একটা নূন্যতম মান নির্ধারন
ক্রীড়া শিক্ষা প্রথম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত খেলাধুলা কর্মসূচীর জন্য ৫ ঘন্টার কার্যক্রম প্রবর্তন করা।
ভোকেশনাল/কারিগরি শিক্ষাঃ ভোকেশনাল ও ইনস্টিটিউট গুলো আগে শক্তিশালী করা ও নতুন ইনস্টিটিউট স্থাপন
শিক্ষকদের মান্নোয়ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষন ও ভাষা শিক্ষা ও উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণীর শিক্ষকদের মানন্নোয়নের জন্য মুদ্রিত ও ইলেকট্রনিক উপাকরন ব্যবহারে প্রশিক্ষা দান।

এই নীতির ইতিবাচক দিক:

১. সরকারী খরচে প্রথমে ১ম ও ২য় শ্রেণীর জন্য এবং ক্রমান্বয়ে সকল শ্রেণীর হবে।
২. বিদ্যালয়ে শারীরিক শিক্ষা ও খেলাধুলার সরঞ্জামের ব্যবস্থা করা হবে।
৩. প্রাথমিক শিক্ষদের জন্য দুই বছর প্রশিক্ষনের মেয়াদ বাড়ানো হবে।
৪. প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মহিলা শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে।
৫. বিদ্যালয়ে অভিভাবক-শিক্ষক সমিতি গঠনে উৎসাহিত করা হবে। এব্যাপারে ১৯৮৬ সাল থেকে একটি পাইলট প্রকল্প শুরু হবে।
৬. বিদ্যালয়ে নতুন পাঠপুস্তক প্রবর্তন করার পূর্বে পাঠ্যপুস্তকের প্রাক-নিরীক্ষা ও চুড়ান্ত মুল্যায়নের ব্যাপারে সকল বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জড়িত করার জন্য কর্মসূচি তৈরী করা হয়েছে।
৭. সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণীর বিদ্যালয়ত্যাগী শিক্ষার্থী এবং বা তাদের পিতা মাতাদের সুযোগ প্রদনের জন্য কম্যুনিটি স্কুল প্রকল্পের মাধ্যমে ৫টি (২ টি মহিলাদের জন্য ও ৩টি পুরুষদের জন্য) বিভিন্ন ট্রেড কোর্সের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।

নেতিবাচক দিক:

১. শিক্ষানীতিটির কোন সুনির্দিষ্ট দর্শন নেই
২. শিক্ষাস্তরগুলোর বিস্তারিত বর্ণনা সুস্পষ্ঠভাবে উল্লেখ নেই
৩. শিক্ষার মানন্নোয়নের কোন সুনির্দিষ্ঠ দিক নির্দেশনা নেই
৪. মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নের কথা বলা হয়নি।
৫. ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাব্যবস্থা কেমন হবে তা বলা হয় নি।
৬. শিক্ষকদের মানন্নোয়নের সুনিদিষ্ঠ দিক নির্দেশনা নেই।
৭. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে রাজনীতি দূর করা হবে বলা হলেও প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা নাই।
৮. শিক্ষকদের সংখ্যা কিভাবে বাড়ানো হবে তার দিক নির্দেশান নেই

সমালোচনা

প্রস্তাবিত শিক্ষানীতির প্রধান বৈশিষ্ঠ্য হচ্ছে সামাজিক অর্থনৈতিক এবং শিল্প বানিজ্যের উন্নয়নের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা ব্যবস্থাকে পুনবির্ন্যস্ত করা। বৃত্তি মুলক এবং কারিগরী শিক্ষাকে উৎপাদন পদ্ধতি ও বাস্তব পেশাসমূহের সংগে নিবিড়ভাবে সংযুক্ত করা হবে। বানিজ্যিক ভিত্তিতে শিক্ষা উপকরণ উৎপাদন ও সরবরাহ করার জন্য সরকার শিল্প স্থাপন করেন। এতদ্ব্যতীত নির্বাচিত মাধ্যমিক স্কুল গুলিতে খন্ডকালীন চাকুরীর সমন্বয়ে বৃত্তি মূলক কোর্সের প্রবর্তন করা হবে। উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বেশকিছু সংখ্যক জুনিয়ার টেকনিকাল স্কুল খোলা হবে। এই ফ্যাক্টরীযুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলি যথাসময়ে দেশের শিল্পন্নোয়নের সহায়তা করবে।

দেশের সর্বত্র শিক্ষার জন্য মানের সমন্বয় সাধন একটি কঠিন সমস্যা এর সমাধান না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষাব্যবস্থার সঠিক উন্নতি সম্ভব নয়। একটি দূর শিক্ষণের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এই কার্যক্রম পত্র-পত্রিকা ডাক, রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদির মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন দূর দুরান্তে অবস্থানরত প্রাথমিক শিক্ষকগণ শিক্ষার আধুনিক ভাবধারা লাভ করবে। এছাড়া মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকদের ভাষা শেখানো এবং উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষকদের শিক্ষকতার মানউন্নয়নে দূর শিক্ষণে সাহায্য করবে।

মজিদ খানের শিক্ষানীতিতে খারাপের পাশাপাশি ভালো অনেক কিছুও ছিলো। সেই ভালোগুলোকে রেখে খারাপগুলোকে সংশোধন করে একটা নতুন শিক্ষানীতি চালু করা যেত। তাহলে ছাত্ররা হঠাৎ এতো উত্তাল হয়ে উঠলো কেন? আসলে গভীরতার মধ্যে না গিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায়ও অনেক কিছু হয়। তাছাড়া মূল সমস্যা ছিলো অনির্বাচিত সরকার কর্তৃক এই নীতি গৃহিত হয়েছিলো। এরশাদ দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার ধুঁয়ো তুলে ক্ষমতায় এসেছিলেন। তিনি কোন নীতি নির্ধারক না। নির্বাচিত গণতান্ত্রীক সরকারই কেবল এই জাতীয় ভাইটাল নীতি প্রণয়নের অধিকার রাখে, তাও জাতীয় সংসদে তর্ক-বিতর্ক সহ দীর্ঘ প্রোসেসের মধ্যে দিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে হয়। কিন্তু এই নীতি বাস্তবায়নে একরোখা অবস্থান নিয়ে এরশাদ তার সীমা অতিক্রম করেছিলেন। এখানেই ছিলো ছাত্রদের প্রবল আপত্তি। এই আন্দোলন যতটা না শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে ছিলো তার চাইতে বেশী ছিলো এরশাদের স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে।

সোনার বাংলাদেশে ঋতুরাজ বসন্ত আসে রঙের পুষ্পবাহার নিয়ে। উচ্ছল তরুণ-তরুণীরা সেই রঙের বাহারে নিজেদের হারিয়ে ফেলে। আর ১৯৮৩ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারী সেই বসন্তরাঙা দিনে, এরশাদের নির্মমতা ও নির্দয়তার কারণে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছিলো ছাত্র-ছাত্রীদের রক্তে।


(চলবে)

তথ্যসূত্রঃ কিছু বই, সামু ব্লগে ও ইন্টারনেটে প্রাপ্ত কিছু আর্টিকেল। আমি লেখকদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
Click This Link
Click This Link



(আমি আর্টিকেলটি লেখার সময় যথাসম্ভব চেষ্টা করেছি তা ত্রুটিমুক্ত রাখতে, তারপরেও কোন ত্রুটি বা তথ্যগত কোন ভুল থাকলে তা অনিচ্ছাকৃত, ভুলটি আমাকে জানাবেন, আমি তা সংশোধন করে নেব।)


সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১৫
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন কী পোড়ানো যায়!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেঞ্চুরী’তম

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


লাকী দার ৫০তম জন্মদিনের লাল গোপালের শুভেচ্ছা

দক্ষিণা জানালাটা খুলে গেছে আজ
৫০তম বছর উকি ঝুকি, যাকে বলে
হাফ সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি;
রোজ বট ছায়া তলে বসে থাকতাম
আর ভিন্ন বাতাসের গন্ধ
নাকের এক স্বাদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোথাও ছিলো না কেউ ....

লিখেছেন আহমেদ জী এস, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৯




কখনো কোথাও ছিলো না কেউ
না ছিলো উত্তরে, না দক্ষিনে
শুধু তুমি নক্ষত্র হয়ে ছিলে উর্দ্ধাকাশে।

আকাশে আর কোন নক্ষত্র ছিলো না
খাল-বিল-পুকুরে আকাশের ছবি ছিলো না
বাতাসে কারো গন্ধ ছিলোনা
ছিলোনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×