‘দেহতত্ত্বের’ গান-‘পিরীতের খ্যাতা দিয়া জাইত্যা ধইরা মাইরা ফালা তুই যে আমারে’- অতি পরিচিত। ভার্সিটি লাইফে ট্যুরে গেলে বড় ভাইয়েরা গাইতেন , আমরা গলা মেলাতাম।
মাইন্ড খাইলেন? কিচ্ছু করার নাই। দেশে এখন মাইন্ড খাইবার কোনো ফুরসত নাই। 'হর্স পাওয়ার' ক্যামনে বাড়বে তার বর্ণণা সমেত কলিকাতা হারবালের বিজ্ঞাপন দাতা দেশের লোকজন দৃশ্যমান।
উপলক্ষ- জাতীয় নির্বাচন। এটা লইয়া তারা খেইলতেছেন। ‘হর্স পাওয়ার’ বাড়াবার দাওয়ায় নিয়া সর্বশেষ আইছেন বিদেশ মন্ত্রকের সচিব সুজাতা সিং।
তার একদিনের সফরের জন্য সবাই রেডি। কারো সিডিউল পেতে সমস্যা হয় নাই। প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী নেত্রী এবং কাগু এরশাদ। আর নিজের রাষ্ট্রের পরের মন্ত্রী মানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তো এক পায়ে খাড়া ছিলেন।
মান্নাদের গানের নায়িকা সুজাতা এসেছেন- বিশেষ বিমানে, বিশেষ সফরে, বিশেষ মিশনে। কিন্তু বিষুদবার সক্কালে ফিরেন- বিক্ষিপ্ত মন নিয়ে। বেচারির জন্য কষ্ট লাগছে।
একজন জাঁদরেল ইনডিয়ান আমলা তার দেশের স্বার্থে পছন্দের সরকার চাইছেন। চাইতেই পারেন। তবে তার জন্য এতটা খুলে দেয়া ঠিক ছিল বলে মনে হয় না।
দল গুনে নিব্বাচনের কথা বলেছেন। বিম্বি গেলে গেলো না গেলে কি, চাটুয্যে মহাশয় সিইসি রকিব তো জানাইছে ২০টা দল নির্ব্বাচনে অংশ নিচ্ছে। ১১ শ প্রার্থী। তো ‘ঘণতন্ত্র’ চর্চায় কোনো সমস্যা নাই।
নিজের দ্যাশের উদহারণও দিছেন সুজাতা সিং। সেখানে নির্দলীয় সরকার নাই। তিনি যেটা বলেননি ,তার দেশের আমলাদের পরিপক্কতা, রাজনীতিকদের দূরদর্শিতা এবং ভ্যাজিটিরিয়ানদের উত্থানের সাথে বাংলাদেশের হঠাৎ বিত্তে ফুলে ওঠা রাজনীতিকদের... সাথে তুলনা যৌক্তিক কি-না তা সুজাতার আন্তাজেই আছে বলে মনে হয়।
আনন্দ বাজার পত্রিকায় খবর- হিন্দুরা নাকি আম্লীগ ক্ষমতায় না আইলে ইনডিয়া যাইবো। আহাম্মকি কারে কয়। তাদের কি আনন্দবাজার বাংলাদেশের নাগরিক মনে করে না। সব নাগরিকের কাছে স্বদেশই শেষ গন্তব্য। যে রকম কাশ্মীর কিম্বা অন্য কোনো প্রদেশ_ মুসলিমরা মার খাচ্ছে। পালাচ্ছে না। যাদের স্বামী গুম হয়েছে, কথায় কথায় গুলি চলে- তার পরেও কি তারা পালিয়ে যাচ্ছে পাপিস্তান কিম্বা বাংলাদেশে। এটা হয় না।
যাক সেই কথা। সুজাতা ক্রাইসিস কমিউনিকেশনে এসেছেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর সরকারি অফিস ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে’ মিটিং করেছেন। ২০ মিনিট ওপেনে। ৩০ মিনিট গোপনে। বিএনপির চেয়ারপার্সনের অফিসেও মিটিং করছেন। কাগুর বাসায় প্রেসিডেন্ট পার্কেও।
ঘটনা হলো- ‘হর্স পাওয়ার বাড়ানোর’ যে ‘দাওয়ায়’ নিয়া আফা আইসা ছিলেন সে দাওয়ায় কাজ হয় নাই বলে আপাত চোখে মনে লয়।
‘হারবালে’ কাজ করে দেরীতে, দেশে এখন ‘ইয়াবা’ পাওয়া যায়- (সৌজন্যে- আম্লীগের সাবেক এমপি বদি ভাই।)।
কাগু সুজাতারে কইছেন দ্যাশে এত সোন্দর সোন্দর জিনিস। তুমারে....!। গোস্সা হইছেন সুজাতা। এর পর পরই পুলিশ র্যাব কাগুর নিরাপত্তার দায়িত্ব লইছেন।
হঠাৎ কাগুর নিরাপত্তার মহান দায়িত্ব লইয়া র্যাবের এক কর্মকর্তা কইছেন- কূটনৈতিক পাড়ায় বসত করা লোকদের যে কল্যাণ সমিতি আছে উনারা কইছেন নিরাপত্তার লাগি তাগো দরকার। তাই ত্যানারা সেখানে জমায়েত।
শেষ পর্যন্ত কি অইবো কে জানে।
কাগুর বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা কইরতে বইলতেছেন আম্লীগের নেতারা। মনে লয় কাগুরে হান্দায়া দেবার ডর লাগায় ধরবো। আবার নাও ধরতে পারে। খেলাটা কোথায় গিয়া ঠ্যাকে কে জানে।
হুমমম...চোখের সামনে পোড়া স্বজনের লাশ, দলান্ধ-দলকানা গণমাধ্যম, বিত্ত বাঁচানোর ভয়ে ভীত রাজনীতিক- কেবল নূর হোসেনরা জীবন দিচ্ছে। জল্লাদরা উন্মত্ত নৃত্যে। ক্ষমতার হিসাব কষছে, ভীরু কারপুরুষ-লোভি, প্রতারক, গণতন্ত্রের ফেরিঅলারা। আমরা আম জনতা ভাবছি- কবে এই ঘোর অমানিষার অবসান।