somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন্ধকারাচ্ছন্ন বাস্তবতা

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

=হ্যালো
=> কোথায় তুমি ?
=বাইরে আছি, গাড়ীর শব্দ শুনতে পাচ্ছো না?
=> কোথায় যাচ্ছো?
=> তুমি কি সব জায়গায় যাওয়ার সময় আমাকে বলে যাও, আমি কেন কৈফিয়ত দিবো তোমাকে?
= অনেক পাকনা হয়ে গেছো!
=> সেটা আরো আগেই হওয়ার দরকার ছিলো, তাহলে তোমার সাথে তাল মেলাতে পারতাম আর এখন এই দিন দেখতে হতো না।
যাগগে নিজের কাজে বের হয়েছি। তোমার হানিমুন কেমন হলো?
= প্রমান ছাড়া আজেবাজে কথা বলো না
=> আমি যদি যেদিন প্রমান দেবো হাতে নাতে দেবো এবং সব কিছুর ফয়সালা জায়গায় দাড়িয়ে করে আসবো।
= ঠিক আছে করো যা পারো

****************************************

ফোন রেখে গাড়ীর জানালা দিয়ে তাকিয়ে দশ বছর পেছনের সময়ে চলে যায় নিশা। পারিবারিক ভাবেই বিয়ে হয়েছিলো শান্তর সাথে। বিয়ের পরে আস্তে আস্তে প্রকাশ পায় শান্ত-ভদ্র চেহারার আড়ালের শান্তর আসল রুপ। মদ ও পরনারীর প্রতি আসক্ত প্রচন্ড ভাবে। অনেক চেষ্টা করেও নেশা ফেরাতে পারেনি শান্তকে। এর মাঝেই কোল জুড়ে আসে একমাত্র মেয়ে নুসাইবা। ভেবেছিলো মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে হয়ত এবার ভাল হয়ে যাবে। কিন্তু না, কুকুরের লেজ নাকি বারো বছর সোজা নলের ভেতর রাখলেও সোজা হয়না কখনো। দু'বছর একটু ভাল থাকলেও পরে যেই সেই । বাহ্যিক ভাবে অশান্তি পারিবারিক ভাবে মেটানোর চেষ্টা করা হলেও মানসিক যে অশান্তি সেটা নিশা কাকে বলবে? কিভাবে বাবা-মা বা শ্বশুর বাড়ীর লোকদের বলবে যে শান্ত তাকে শারীরিক ভাবে অপমানিত করে প্রতিনিয়ত। পর্ণে আসক্ত শান্তকে কোন ভাবেই বোঝাতে পারেনা সেসব ছবির মেয়েরা মডেল আর নিশা একজন সাধারন মেয়ে, তাদের মতন হওয়া নিশার পক্ষে সম্ভব নয়!
নুসাইবার জন্মের সময় শান্তর নির্দেশ ছিলো নরমাল ডেলিভারি করানো যাবে না এতে নাকি নিশার ফিজিক্যাল সোন্দর্য নষ্ট হয়ে যাবে! কথাটা শুনে নিশার দুনিয়া কেঁপে উঠেছিলো! নিশার কোন কথা-যুক্তি মানতে নারাজ ছিলো শান্ত। ভাগ্য ভাল ছিলো হসপিটালে যাওয়ার পরে ডক্টর বলেছেন সিজারিয়ান দরকার হবে না। তাৎক্ষনিক নিশা বেঁচে গেলেও যার ঝাল প্রতি মুহুর্তে মেটায় শান্ত। পুরোপুরি সাইকো একটা লোক!

গাড়ীর হর্ণে ধ্যান ভংগ হয়ে যায় নিশার। বাস্তবে ফিরে আসে।
ফোন বের করে কল দেয় শান্তর বড় বোনের বরের কাছে
=> হ্যালো নাজিম ভাই, কেমন আছেন?
= ...........
=> শুনলাম সে নাকি রেণু আপার বাসায় আছে, আপা আমাকে ফোন দিয়েছিলো। বললো বউ নিয়ে-ই এসেছে। খুব জোর করে আপা রেখেছে। আমি খুব ভোরে গেলে নাকি পাবো। আপনার কি মনে হয় অত ভোরে গেলে পাবো?
=..................
=> সে জন্যেই তো ভয় হচ্ছে, কিন্তু হাতে নাতে ধরতেই হবে আমাকে, আমাকে সে চ্যালেন্জ করেছে। প্রমান দিতে পারলে নাকি শাস্তি যা দেবো মেনে নেবে।
এখন যেতে পারলে ভাল হতো কিন্তু সম্ভব না। আছে ভাই আমি কাল সকালেই পৌছে যাবো।

*********************************
= হ্যা মাহতাব, তোমার ভাইয়া তো রেণু আপার বাসায় উঠেছে তোমার নতুন ভাবীকে নিয়ে।
=> ..............
= আরে না না আমি অনুমান করে বলছি না, সিওর আমি। সে তো আমাকে চ্যালেন্জ করেছে, হাতেনাতে ধরতে পারলে সে নাকি যেকোন শাস্তি মেনে নেবে।
=> ................
= কি করবো বল তো ? জায়গায় দাড়িয়ে সম্পর্ক শেষ করে আসবো।
=>........
= না ভাই তোমাদের তো অনেক জ্বালালাম। আমি তোমাদের কিছুই দিতে পারিনি। নতুন ভাবী আসবে, সে অনেক ভাল হবে।
=>......
= আচ্ছা রাখি কাল তাহলে রাণু আপার বাসায় দেখা হচ্ছে। থেকো তাহলে।

************************************
= আবার কেন ফোন দিয়েছো?
=>..........
= আমি কোথায় তা দিয়ে তোমার কি দরকার। ঢাকা আসতে পারো নিশ্চিন্তে, আমি মা'র বাড়ী যাচ্ছি।
=> ........
= তুমি বললে আসবো না! সেকি বলছো। ইনফ্যাক্ট তোমার সাথে শেষ বারের মতন দেখা হওয়াটা আমার তো জরুরী।
=>........
= ওকে হ্যাভ আ নাইস টাইম উইথ ইওর নিউ হানী, বাই।

******************************

ফাইনাল ডিসিশন নিয়ে ফেলেছে নিশা। কাল শান্তর বড় বোনের বাসায় গিয়ে হাতে নাতে ধরবে শান্তকে নতুন বিয়ে করা বউয়ের সাথে। এবং সেখানেই ডিভোর্স দিয়ে সব সম্পর্ক শেষ করে আসবে। এভাবে আর চলতে পারে না। ড্রাইভারের কথায় সম্বিৎ ফিরে পায় নিশা। ব্যাগ নিয়ে নেমে ফ্ল্যাটের দিকে পা বাড়ায়। আজকের রাতটাই শেষ রাত এই ফ্ল্যাটে



গল্পটা আরো বর্ণনামুলক করা উচিত ছিলো। কিন্তু ধৈর্য্যে কুলায়নি। তার চেয়ে বড় কথা চেয়েছিলাম পাঠকের উপর ছেড়ে দিতে। সব সময়তো পাঠকরা পরেই যান। এবার নাহয় পড়ার সাথে সাথে নিজের মত করে একটু ভেবে নেবেন।

======================
শিরোনাম কৃতজ্ঞতা: স্বপ্নবাজ অভি
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩০
২৬টি মন্তব্য ২৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×