১৭ জেলার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল

প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ পাওয়ায় ১৭ জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Dec 2013, 09:24 AM
Updated : 8 Dec 2013, 10:56 AM

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এস এম আশরাফুল ইসলাম রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এসব জেলায় নতুন করে পরীক্ষা নেয়া হবে।”

১৫ দিনের মধ্যে এসব জেলায় নতুন করে পরীক্ষা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব সন্তোষ কুমার অধিকারী।

আশরাফুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সরকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার সাত সেট প্রশ্নের মধ্যে ‘হুয়াংহু’ ও ‘মেসিসিপি’ সেট ফাঁস হয়েছে বলে তদন্তে প্রমাণ মিলেছে।

ঢাকা, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, শেরপুর, কক্সবাজার, লালমনিরহাট ও নারায়ণগঞ্জে হুয়াংহু সেটে পরীক্ষা হয়েছিল। আর মেসিসিপি সেটে পরীক্ষা হয় সাতক্ষীরা, পাবনা, ঝিনাইদহ, রাজবাড়ী, মেহেরপুর, খুলনা, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে।

এসব জেলার পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে বলে আশরাফুল জানান।

প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ তদন্ত করতে গত ১২ নভেম্বর উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সাবেক মহাপরিচালক মো. আলমগীরকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

ওই কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই ১৭ জেলার পরীক্ষা বাতিল করা হলো।

আশরাফুল বলেন, “তদন্ত কমিটি প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করতে পারেনি। তবে কিছু মোটিভ উদ্ধার করেছে, আইনশৃঙ্খলা সংস্থার মাধ্যমে এর তদন্ত করতে হবে।”

“যাদের সন্দেহ করা হচ্ছে কীভাবে তাদের সনাক্ত করা যায় তা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।”

সন্তোষ কুমার জানান, এই তদন্তে কয়েকটি টেলিফোন ও মোবাইল নম্বর এবং ই-মেইল ঠিকানা ‘ট্র্যাক’ করতে হবে। অধিকতর তদন্তের জন্য বিষয়টি গোয়েন্দা পুলিশ ও র‌্যাবের হাতে দেয়া হবে।

বিজি প্রেস এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের লোকজনও প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে সন্দেহ প্রকাশ করেছে।

গত ৮ নভেম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিতে সরকারী শিক্ষক নিয়োগে এক হাজার ৩৬২টি কেন্দ্রে লিখিত পরীক্ষা হয়। এতে নয় লাখ ৬৮ হাজার ১২৭ জন অংশ নেন।

পরীক্ষার আগের রাতে দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠলে পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করে। বেশ কয়েকটি সেটের প্রশ্নে ওই পরীক্ষা নেয়া হয়।

প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিতে প্রায় সাত হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগে গত ২ জুলাই বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৩) আওতায় এ পরীক্ষার মাধ্যমে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান বাদে দেশের অন্য সব জেলা থেকে শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।