somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সানডে নাইট ব্লগারস আড্ডা - সাথে আছেন তন্ময় ফেরদৌস

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পোস্টের শুরুতে স্মরণ করছি সামুর উজ্জ্বল নক্ষত্র প্রয়াত ব্লগার ইমন জুবায়েরকে ।

তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি ।


সানডে নাইট ব্লগারস আড্ডার ২০১৩ সালের প্রথম পর্বে এসেছেন ব্লগার তন্ময় ফেরদৌস । যিনি তার মিডিয়া সংশ্লিষ্ট নানান তথ্যমূলক পোস্ট দিয়ে সবার নজর কেড়েছেন । কিছুদিন আগে তিনি ব্লগে দুইবছর পূর্ণ করেছেন । কেমন ছিল তার এই পথ চলা ? কি ভাবেন তিনি এই ব্লগকে নিয়ে ? নিজেকে নিয়ে ? চলুন জেনে আসি ।

সানডে নাইট - তন্ময় ফেরদৌস , প্রথমেই সানডে নাইট ব্লগারস আড্ডার পক্ষ থেকে আপনাকে ব্লগে দুইবছর পূর্তির শুভেচ্ছা ।

তন্ময় ফেরদৌস - অনেক ধন্যবাদ । তোমাকেও শুভেচ্ছা এরকম একটা আয়োজন চালিয়ে যাওয়ার জন্য।

সানডে নাইট - দেখতে দেখতে তো দুই বছর কাটিয়ে ফেললেন , শুরুর দিকের কথা বলুন । সামু ব্লগের সাথে যুক্ত হলেন কিভাবে ?

তন্ময় ফেরদৌস - ফেসবুকে লিঙ্ক থেকে প্রথম সামুর দেখা পাই। এর আগে অবশ্য টেকটিউনস ফলো করতাম। কিন্ত সেটা তো একটা নির্দিষ্ট বিষয়ে। সামুতে এসে প্রথম কমিউনিটি ব্লগের কনসেপ্ট টা ক্লিয়ার হয়। অনেক দিন পড়েছি, ট্রেন্ড টা বুঝার চেষ্টা করেছি। তারপর রেজিসস্ট্রেশন করে ফেলি সাহস করে। সেই থেকে আছি...


সানডে নাইট - আপনার প্রথম পোস্ট ছিল সুপার হিরো নিয়ে । নিজেকে কি সুপার হিরো ভাবতে পছন্দ করেন ?


তন্ময় ফেরদৌস - আমার মনে হয় একটা মানুষের ইচ্ছাশক্তি তার সবচাইতে বড় সুপার পাওয়ার। সেই অর্থে সুপারহিরো না হলেও সুপার হিউম্যান বিং ভাবতে আমার সমস্যা নেই

সানডে নাইট - ব্লগে আসার পর থেকেই লেখালেখি শুরু নাকি আগে থেকেই লিখতেন ?

তন্ময় ফেরদৌস - ব্লগে আসার পর একটা স্থায়ী প্লাটফর্মে লেখা শুরু। এর আগে ছাড়াছাড়া ভাবে লিখতাম। আইস টুডে তে লেখা হতো, পত্রিকা ম্যাগাজিনেও টুকটাক লিখেছি।

সানডে নাইট - ব্লগিং বলতে মূলত অনেকে সিটিজেন জারনালিজম কে হাইলাইট করে থাকেন ।
আপনার কাছে ব্লগিং মানে কি ?


তন্ময় ফেরদৌস - একটু ইতিহাস টানা প্রয়োজন। ব্লগের প্রথম কনসেপ্ট টা ছিলো মূলত সিটিজেন জার্নালিজম নিয়ে। হাফিংটন ব্লগ বা এইজাতীয় বিখ্যাত ব্লগ গুলো মূলত পলিটিক্যাল এবং সোস্যাল ইস্যু নিয়েই ছিলো। তবে কনসেপ্ট টা চেঞ্জ হয়ে যায় কমিউনিটি ব্লগিং শুরু হবার পর থেকে। একটা কমিউনিটিতে নানা ধরনের, নানা রকমের, নানা চিন্তাধারার মানুষ আছে। তাদের সবার অভিজ্ঞতা কিংবা পছন্দ একই রকম নাও হতে পারে। কেউ শুধুই সাহিত্যচর্চা হিসেবে ব্লগ লেখে, আবার কেউবা ভার্চুয়ালি পার্সোনাল ডায়েরী হিসেবে। আগে বিষয়ভিত্তিক লেখালেখি চলতো ফোরামে। পরে ব্লগেও এর বিস্তৃতি ঘটে।

আমার মনে হয়, ব্লগ মূলত অনলাইনে সকল রকম চিন্তার প্রকাশ। তবে সিটিজেন জার্নালিজম এর মূল শক্তি। একটা আইডিয়া ছড়িয়ে দেয়ার জন্য ব্লগ বা সোস্যাল মিডিয়ার কোন শক্তিশালি বিকল্প নেই। মধ্যপ্রাচ্যে রিতীমত ক্যু হয়ে গেছে কিছু দেশে, শুধুমাত্র ব্লগিং তথা অনলাইন নেটোয়ার্কিং এর মাধ্যমে। কাজেই নাগরিক সাংবাদিকতাকে ফোকাস করে ব্লগ কে ইফেক্টিভ লি ব্যাবহারের সূযোগ আছে। তাই বলে অন্যান্য ব্যাপারগুলোকেও বাদ দেয়া যায় না। সিটিজেন জার্নালিজম, সাহিত্যচর্চা, ইনফরমেশন সোর্স এবং আইডিয়া শেয়ার, সবক্ষেত্রেই ব্লগ কে একটি এফিশিয়েন্ট মাধ্যম হিসেবে চিন্তা করি।


সানডে নাইট - ভালো কিছু কথা বলেছেন ।

আপনার কি মনে হয় , সামহ্যোয়ার ইন ব্লগে সিটিজেন জারনালিজম , সাহিত্য চর্চা সহ অন্যান্য বিষয়ে সমান ভাবে ব্লগিং করার সুযোগ রয়েছে ?


তন্ময় ফেরদৌস - আমার মনে হয় সেই সুযোগ আছে। সামুতে যেহেতু বিষয় ভিত্তিক গ্রুপ ব্লগপোস্ট খুব একটা জনপ্রিয় হয়নি, তাতে বলা যায় সবাই আসলে প্রথম পাতায় সব কিছু নিয়েই লেখা পেতে চায়। তাছাড়া ব্লগারদের ভার্সেটালিটি তাই প্রমান করে। সামুর স্টিকি পোস্ট গুলার দিকে নজর দিলেও এটা খেয়াল করা যায়। গত বছর স্টিকি পোস্টগুলোর মাঝে পলিটিক্যাল ইস্যু নিয়ে যেমন লেখা স্টিকি হয়েছে, পরিবেশ নিয়েও লেখা স্টিকি হয়েছে। সাহিত্য নিয়ে পোস্ট স্টিকি হয়েছে, আম জনতার প্রতিকৃয়া নিয়ে পোস্ট স্টিকি হয়েছে, ক্রিকেট নিয়ে হয়েছে। আরো নানান বৈচিত্রময় বিষয়ে সামু পোস্ট স্টিকি করে এবং নির্বাচিততে সিলেক্ট করে প্রমান করেছে সব ধরনের সুস্থ লেখাকেই সামহ্যোয়ার ইন উৎসাহিত করে।


সানডে নাইট - স্টিকি পোস্টের কথা যখন আসলো ই , তখন জিজ্ঞেস করি ,
ব্লগে একটা পোস্ট স্টিকি হওয়ার জন্য আপনার মনে সেই পোস্টের কনটেন্ট কি হওয়া উচিত ?


তন্ময় ফেরদৌস - যে কোন নির্দিষ্ট একটা বিষয়ে নজরে আসার মত তথ্য । লেখকের নিজের পয়েন্ট অফ ভিউ থাকলে আরো ভালো হয়। আর যদি ক্রিয়েটিভ রাইটিং হয়, তাহলে বিতর্কিত হবার সূযোগ থাকে। কারন সকলের পছন্দ এক নয়। স্টিকি পোস্টের উপরে পিনড করা থাকে "দৃষ্টি আকর্ষন", তার মানে দৃষ্টি আকর্ষিত হবার মত কন্টেন্ট অবশ্যই থাকা উচিত। এটা আসলে কোন রুলজ মেনে করা কঠিন, সময়োপোযোগি হয়া উচিত, এটুকুই বলবো।

সানডে নাইট - ব্লগে স্টিকি পোস্ট যেমন দৃষ্টি আকর্ষণ লেখা থাকে , তেমন ই ইদানীং 'নির্বাচিত পোস্ট' নামে আরও একটি ট্যাব পোস্ট সংকলন থাকে ,

এই ট্যাব নিয়ে আপনার কি মত ?


তন্ময় ফেরদৌস -
কঠিন একটা প্রশ্ন। আসলে ব্যাপারটা অনেক কারনেই বিতর্কিত এবং কমপ্লিকেটেড। ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করি ব্লগার এবং মডু দু দিক থেকেই-

যখন কোন ব্যাপারে নির্বাচনের প্রশ্ন আসবে, তখনি নির্বাচকের প্রশ্নটিও চলে আসবে প্রাসিঙ্গিক ভাবে। আসলে ব্যাপারটা একটু কমপ্লিকেটেড। কোন মানুষ ই
নিরপক্ষ নয়। যারা পোস্ট নির্বাচনের দায়িত্বে আছেন, তারা কিছুটা বায়াসড হয়ে পোস্ট নির্বাচন করলে আসলে দোষ দেয়া যায় না। আমার ক্ষমতা আছে, আমি সেই ক্ষমতাটা আমার প্রিয় বা পছন্দের মানুষের ব্যাপারে কাজে লাগাতে চাইবো, এইটাই হিউম্যান সাইকোলজি। মডারেটরদের যেমন নির্দিষ্ট একটা কোড আছে, নিয়ম ভংগ করলে ব্লক করে দিতে পারবে, নির্দিষ্ট নীতিমালা আছে। পোস্ট নির্বাচিত করার এমন কোন নিতীমালা আছে বলে আমার জানা নাই। সামুতে ব্লগারের সঙ্খ্যা এতই বেশি যে, প্রতি মিনিটে মিনিটেই পোস্ট আসে। এত পোস্ট পড়ে সেটাকে যথাযথ মূল্যায়ন করা কিছুটা টাফ বৈকি। তাছাড়া, পোস্ট নির্বাচক বানানো হয় সাধারন ব্লগার দের। এটা একটা অনারারি স্ট্যাটাস। স্যালারি বেজড জব হলে হয়তো নির্বাচক রা আরো সতর্ক হতো পোস্ট নির্বাচনে।

সিপ্লিফাই করলে দুটো ব্যাপার ঘটতে পারে। আমি একটা পোস্ট দিলাম, সেটা আমার কাছে এবং আরো কিছু মানুষের কাছে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ন মনে হচ্ছে। বাট রেস্ট অফ দ্যা ব্লগার্সদের কাছে মনে হলো না। তাহলে পোস্ট নির্বাচক ও কিন্ত এই দুই ক্যাটাগরির এক ক্যাটাগরিতে পড়বে। মানে তার পোস্ট টা হয় তার ইম্পর্টেন্ট মনে হবে, অথবা হবেনা। হিসাব সিম্পল, তার কাছে ইম্পর্টেন্ট মনে হলে নির্বাচিত পাতায় লেখাটা যাবে। কিন্ত যদি সেরকম মনে না হয় তাহলে ?

একজন মানুষের পক্ষে কখনোই সবাইকে খুশি করা সম্ভব নয়।নির্বাচক যদি হয় মুক্তমনা, তাহলে নাস্তিকতা সম্পর্কিত সুস্থ পোস্ট কে সে নির্বাচিততে নিতেই পারে। কিন্ত আরো হাজারো আস্তিক ব্লগার রা তখন অপোজ করবে।
এবং ভাইস ভার্সা। কাজেই ব্যাপারটা খুব জটিল। আবার আরেকটা ঝামেলা হতে পারে। পাঠকদের হাতে সব ক্ষমতা থাকলে, মানে হিট বা প্লাস দিয়ে পোস্ট নির্বাচিততে নিলে অনেক সিন্ডিকেট ব্লগার নিজেরা পিঠ চুলকা চুল্কি করে কোয়ালিটির বারোটা বাজিয়ে দিবে। কাজেই, এটাও কোন সমাধান না।

হয় নানা মতের নির্বাচকের সঙ্খ্যা বাড়াতে হবে। যেমন যিনি সিনেমাখোর, তিনি সিনেমা বিষয়ক পোস্ট গুলা নির্বাচন করবেন। যিনি কবিতা বা গল্প ভালো লেখেন, তিনি নির্বাচন করবে গল্পের পোস্ট গুলো। তারমানে যুক্তি বলে, বিষয়ভিত্তিক গ্রুপ ব্লগিং টা চালু করা জরুরী। তাতে করে সকল পাঠকরাই পছন্দের বিষয়ে পছন্দের লেখাকে সাপোর্ট দিতে পারবে। সব লেখক রা তাদের পোস্টে ট্যাগ দিয়ে দিতে পারবে, এটা কোন বিষয়ের পোস্ট। সেই বিষয় অনুযায়ী অভিজ্ঞরা ভালো লেখাকে নির্বাচিত করতে পারে। নির্বাচকদের সময় ভাগ করে দেয়া যেতে পারে। তাতে করে কোন পোস্ট ই যাতে মিস না হয়।

আবার নির্বাচিত পোস্ট যদি না থাকতো, তাহলে হাজার পোস্টের ভিড়ে ভালো পোস্ট বের করাও অনেক টাফ হয়ে যেত। তারমানে ব্লগারদের বেলায় সুচিন্তিত ভাবে সেফ করা এবং ভালো করে লেখা পড়ে নির্বাচন করতে হবে। তাইনাই (কপি-পেস্ট, দুই লাইনের পোস্ট, মডু ঘুমায়, রি পোস্ট, অনলাইন আয়, এটাকিং পোস্ট ইত্যাদি) পোস্টগুলাকে ওয়ার্নিং দিয়ে নিরুৎসাহিত করা যেতে পারে। এইটা আসলে কতৃপক্ষ সবার সাথে আলোচনা করে ঠিক করলে ভালো হয়।

মোস্ট ইম্পর্ট্যান্টলি ছাগু পোস্ট এবং নারী উত্তক্তকরন পোস্ট কে কঠোর মডারেশনের আওতায় আনা এবং মডারেশনে পূর্ন সচ্ছতা চাই।


সানডে নাইট - একটা অভিযোগ প্রায় ই শোনা যায় যে মডারেটর নিজের পোস্ট নিজেই নির্বাচিত পাতায় ঝুলিয়ে রাখেন , এর প্রেক্ষিতে আপনি কিছু বলবেন ?

তন্ময় ফেরদৌস - এইটা আসলে আমার জানার বাইরে। হতে পারে, আবার একজন মডারেটর অন্য মডারেটরের পোস্ট ও ঝুলিয়ে দিতে পারে (যদি চেনা থাকে), তবে মানসম্মত পোস্ট হলে তো কোন সমস্যা দেখিনা।



সানডে নাইট - আপনার লেখালেখির বিষয়ে আসি । মিডিয়ার সাথে সম্পৃক্ত থাকায় আপনি মিডিয়া নিয়ে বেশ কিছু পোস্ট লিখেছেন , সেই সাথে সমসাময়িক আরও বিষয়ে লিখেছেন । সংকলন পোস্ট , সামু পিডিয়া বানিয়েছেন ।

এতকিছুর মধ্যে আপনি কোন বিষয়ে লিখতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন ?


তন্ময় ফেরদৌস - মজার প্রশ্ন। আমি প্রথমে কিছুদিন চেষ্ট করেছি ইনফরমেটিভ টাইপের পোস্ট দেয়ার। তারপর চেষ্টা করালাম রিভিউ পোস্ট দেয়ার। তারপরে সিরিজ পোস্ট, গল্প, কবিতা, ফিচার, মীথ, ফেমিনিজম, ছবি ব্লগ ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে কোন জনরাতেই নিজেকে সেট করতে পারি নাই। আমি যে কোন ধরনের ব্লগার, সেইটাই বুঝে উঠতে পারলাম না । ক্রিয়েটিভ রাইটিং যে আমাকে দিয়ে হবেনা, তা এতদিনে বুঝে গেছি। :(
পরে যখন মিডিয়া এবং বিভিন্ন ইস্যুতে নিজের ভাবনার কথা লেখা শুরু করলাম, তখন দেখলাম, এই ব্যাপারগুলা আমার ভালো আসে। মানে মিডিয়া আসলে শুধু আমার ইন্সটিটিউশনাল ব্যাকগ্রাউন্ডের কারনে না, আসলেই এডভার্টাইজিং, ব্রান্ডিং, কমিউনিকেশন এই ব্যাপারগুলা আমার খুব ভালোলাগা আর প্যাশনের যায়গা। তাই সাচ্ছন্দ বোধ করি। সবাই খুব উৎসাহিতও করে।
আরেকটা ব্যাপার টের পেয়েছি, মানুষ ব্লগে বা ফেবুতে কিতাবি লেখা পছন্দ করেনা। তাই নিজে যা ভালো বুঝি, তা অন্যকে নিজের মত করে বুঝানোর চেষ্টা করি। বাস্তব উদাহরন দিয়ে লেখার চেষ্টা করি। এই ব্যাপারটা কাজে এসেছে। তবে অনেক ব্যাপারে আমার জানার পরিধী সীমাবদ্ধ। এই কারনে চেষ্টা করি আগে ভালোভাবে জেনে নেয়ার, বুঝে নায়ার। ব্লগার রা এখন অনেক ইনফরমেটিভ, তাদের ভুল তথ্য দেয়ার কোন সুযোগ নেই।
সব মিলিয়ে নানা বিষয়ে লিখলেও কমিউনিকেশন এন্ড ম্যাস মিডিয়া নিয়ে লিখতেই সাচ্ছন্দ বোধ করি। আর সবাই এই ধরনের লেখায় পজেটিভ ফিডব্যাক দেয়। এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওনা। নিজের যায়গাটা সেট করে নেয়ার ব্যাপারে আমার সমস্ত পাঠকদের এই পোস্টের মাধ্যমে ধন্যবাদ জানাই। :)


সানডে নাইট - কোন বিষয় নিয়ে সিরিজ পোস্ট করা বেশ ব্যাপার । লং জার্নি । কিন্তু আপনি একটি সিরিজ বেশ সফলতার সাথে চালিয়ে যাচ্ছেন । এই সিরিজ লেখার আইডিয়া কিভাবে আসলো ?

তন্ময় ফেরদৌস - প্রথম সিরিজ পোস্ট টা লিখেছিলাম মিথলজি নিয়ে। বিভিন্ন যায়গা থেকে অনুবাদ করে করে। ২য় সিরিজটা লিখেছিলাম টিভি সিরিয়াল নিয়ে, কারন আমি অনেক সিরিয়াল দেখতাম। ৩য় সিরিজটা লিখেছিলাম নিউজ রিপোর্টিং নিয়ে, আগ্রহ পাইনাই। লাস্ট সিরিজ টা লিখলাম এডভার্টাইজিং নিয়ে, কারন আমি নিজেই এই ফিল্ডে অনেক আগ্রহী। তারমানে দাড়ালো, নিজের আগ্রহের যায়গাটাতেই মানুষ সবচাইতে ভালো করে। এ কারনেই সফলভাবে (!) চালিয়ে যেতে পারছি।
প্রথম পোস্ট টা সিরিজ পোস্ট দিবো ভেবে লিখিনি। আমি তখন একটা এড নিয়ে কাজ করছিলাম। মজার কিছু ব্যাপার শেয়ার করতে চেয়েছিলাম সবার সাথে, পরে আরো ডিটেইলস এ যেতে যেতে সিরিজ হয়ে গেলো। এই পোস্ট যেমন পাঠকের জন্য, তামনি আমার নিজেরো।


সানডে নাইট - সিরিজটাকে কত দূর নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে আছে ?

তন্ময় ফেরদৌস - যতদিন আমি শিখবো, ততদিন সবার সাথে শিখাটাকে শেয়ার করার চেষ্টা করার ইচ্ছা আছে, যদি সবাই সাপোর্ট করে। কোন স্কেল ঠিক করিনি কতদুর নিবো।

সানডে নাইট - একটা ব্লগে নানান ধরনের , নানান মতের মানুষ আছে । একজনের সাথে আরেকজনের মতের মিল না হতেই পারে । এই ব্যাপারটা অনেক সময় ঝগড়ায় রুপ নেয় । গালাগালি , আক্রমণাত্মক পোস্ট দিয়ে থাকেন অনেক ব্লগার ।
এই সব ব্যাপারে প্রায় ই সিনিয়র ব্লগার এবং ব্লগ কর্তাদের চুপ থাকতে দেখা যায় । এই সব সমস্যা নিরসনে তাদের ভুমিকা প্রশ্নবিদ্ধ নয় কি ?


তন্ময় ফেরদৌস - ব্লগে যারা লেখতে আসে, তারা একটা নির্দিষ্ট বয়সসীমার মধ্যে। ইটস এবাউট ম্যাচিউরিটি। মতের মিল না হলেই ব্যাক্তি আক্রমন বা ঝগড়া, গালাগালি শুরু হলে ধরে নিতে হবে দে আরেন্ট গ্রোন আপস এনাফ। এ ব্যাপারে আসলে কারো কিছু করার নাই।
আর সিনিয়ার ব্লগার শব্দটা কেমন যেন। নবীন, প্রবীন ব্লগার বলা যেতে পারে। যারা সাধারনত ব্লগে পুরাতন, তাদের অনেক কষ্ট করে নিজের একটা ক্রেডিবিলিটি তৈরি করে নিতে হয়েছে। অন্যের ঝামেলায় জড়িয়ে সেইটা নষ্ট করতে চান না অনেকেই। তাছাড়া পুরাতন ব্লগারদের কেন এগিয়ে আসতে হবে, নতুন রা কি তাহলে যথেষ্ট যোগ্য নয় ব্লগার হিসেবে ?
ব্লগকর্তাদের বেলায় বলতে হয়, তারা একটা ডিস্ক্লেইমার দিয়ে রেখেছে, " প্রকাশিত সকল কন্টেন্টের দায়িত্ব লেখকের" , কাজেই টেকনিক্যালি তারা রাইট। তবে আপত্তিকর বা নিতীমালা ভংগ করলে রিপোর্ট দিলে কিন্ত কাজ হয়। এইটা চেক করেই বলছি। আর অনেকেই মনে করেন, সামু নিজেদের হিট বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে কেওস ক্রিয়েট করে, বা থামানোর চেষ্টা করেনা। তাই যদি হয়, তাহলে এটা সামুর জন্য খুবি খারাপ। কারন গুডউইল নষ্ট হয়ে গেলে হিট দিয়ে কাজ হবেনা। সামু তার যায়গাটা হারিয়ে ফেলবে, এবং অনেকখানি হারিয়ে ফেলেছেও। এই ব্যাপারেও সচ্ছ ও কঠোর মডারেশন চাই।


সানডে নাইট - ব্লগে ঝগড়া বা ক্যাচালের মধ্যে একটা ব্যাপার বেশ লক্ষ্য করা যায় , সেটা বল 'ট্যাগিং' । একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সমর্থকরা এই কাজটি বেশি করে থাকেন । প্রায় ই দেখা যায় যে যার সাথে মতের মিল হল না , তাকে একটি দেশের দালাল কিংবা ওই ধরনের কিছু বলা হয় । এই কাজটি করা হয় আবার দল বেঁধে । ব্লগে যাকে সিন্ডিকেট বলা হয় । উপযুক্ত কারণ ছাড়া এই ধরণের ট্যাগিং সমর্থন করেন কি ?
এই ব্যাপারে ব্লগ কর্তা কিংবা 'প্রবীণ' স্বচ্ছ ব্লগারদের কি কিছুই করার নেই ?


তন্ময় ফেরদৌস - নিজের লেখা কয়েকটা লাইন কোট করি-
"রাজাকারের বিরুদ্ধে বললে ভারতের পা-চাটা কুকুর, ভারতের বিরুদ্ধে বললে রাজাকার, ইসলামের একটা ত্রুটি বের করার সামান্য প্রচেষ্টা করলেও নাস্তিক, ইসলামের একটি ভালো দিক তুলে ধরা পোস্ট করলেও মৌলবাদী, বিএনপির বিরুদ্ধে বললে আওয়ামীপন্থি, আওয়ামী লিগ নিয়া কথা বললে বিএনপি'র
পোষা কুকুর, জামাতের পক্ষে বললে রাজাকার, বিপক্ষে বললে নিজেই রাজাকারদের টার্গেট, আমরা আম ব্লগার রা কই যাবো? "
ট্যাগিং সুস্থ ব্লগচর্চার ক্ষেত্রে সবচাইতে বড় অন্তরায়গুলোর মাঝে একটি। যত্র তত্র ট্যাগিং দিয়ে আমরা ট্যগকৃত শব্দটির আবেদন কমিয়ে দেই (যেমন-ছাগু, তবে রিয়েল ছাগুকে ছাগু বলা যায়েজ আছে। কারনে এবং অকারনে ট্যাগিং এর মেরুকরন টা বুঝতে হবে), এর যত্রতত্র এবং ব্যাক্তিগত কারনে ট্যাগিং এর দায়েই কিন্ত "এ-টিমের" মত একটা দল ব্লগ ছাড়া। আরো খেয়াল করলে দেখা যায় কিছু মাল্টি নিক থেকে এই কাজগুলো করা হয়। আসল নামে ডিরেক্ট ট্যাগিং খুব কম মানুষই দেয়। ট্যাগিং করাটা নতুন ব্লগারদের স্বাধীন মত প্রকাশের জন্যেও একটা বাধা।
সরাসরি ব্যাপার ছাড়া ব্যাক্তিগত বিরোধ বা অন্য কারনে ট্যাগিং একেবারেই সমর্থন করিনা। সুস্থ বিতর্ক আশা করি আমরা সবাই।
এই ব্যাপারে, প্রবীন ব্লগার রা অনেক বলেছেন, এখনো বলছেন। এমন কি ব্লগ ডের শেষে শরৎদা সহ আমরা কিছু ব্লগার এই ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনাও করি। আমার মনে হয় ক্যাচালের উদ্দেশ্যে মাল্টিনিক এর ব্যাপারে কতৃপক্ষের ব্যাবস্থা নেয়া উচিত।




সানডে নাইট - আপনার একটা লাইন ধরছি ' আমরা আম ব্লগার রা কই যাবো''
আম ব্লগারদের জন্য সামুতে এখন সুস্থ পরিবেশ আছে বলে মনে করেন ?



তন্ময় ফেরদৌস - ঠিক অসুস্থ পরিবেশ বলবো না। বরং মেসি বলা যেতে পারে।
সামু বাংলা ব্লগস্ফিয়ারের সবচাইতে বৃহত্তম প্লাটফর্ম। এইটা একটা ছোটখাটো ভার্চুয়াল বাংলাদেশ। কাজেই এখানে আম ব্লগারের সঙ্খ্যাই সবচাইতে বেশী। এ কারনে মেস ও বেশী। গন্ততন্ত্র, ম্যাস পিপল, আম জনতা, এই কথাগুলোর সাথে সুস্থতা খুব একটা যায় না। কারন যেখানেই আমজনতার, আম চিন্তাধারার প্রাধান্য থাকবে, সেখানেই কোয়ালিটি ফল করবে। এটাই স্বাভাবিক। সচলের মত হয়তো নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করা যায়, তবে সেটা হলে সামু আর বাংলাদেশের আম মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেনা।
ব্লগ কক্তৃপক্ষের অত্যন্ত কৌশুলি হওইয়া উচিত। সামুর উচিত একটা ভিশন ফিক্স করা, ৫ বছর পর সামু নিজেকে কোথায় দেখতে চায়। সেই অনুযায়ি দরকার একটা ইফেক্টিভ প্ল্যান এবং নীতিমালা। সেইটার যথাযত প্রয়োগ। তাহলে ব্লগে হয়তো সুস্থ পরিবেশ ফিরে আসবে, বলা ভালো ওয়েল অর্গানাইজড হবে, ব্যারাছেরা অবস্থাটা দূর করা যাবে।


সানডে নাইট - একটু আগে আপনি মাল্টী নিকের কথা বললেন , এই মাল্টী নিক ব্যবহার করাটাকে কি আপনি সমর্থন করেন ?? বিশেষ করে মাল্টি নিক যখন ক্যাচাল , গালাগালি করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ?


তন্ময় ফেরদৌস - হাসান মাহবুব ভাইয়ের একটা মাল্টি আছে। লিটল হামা। মেইন নিক থেকে হাসান ভাই শুধু গল্প লিখে। আর মাল্টি থেকে লিখে লিরিক, কবিতা, রম্য বা অন্যান্য। আবার লিচু গাছের ও আইডি আছে অনেক গুলা। যার প্রতিটাই ভয়ানক ভাবে ব্লগদূষন করে।
উদাহরন থেকে ব্যাপারটা স্পষ্ট, কেউ ভালো কাজে মাল্টি ব্যাবহার করে, কেউ ক্যাচালের কাজে। যার উদ্দেশ্য ভালো, তার জন্য ইটস ওকে। এটা সামুর নিতীমালার বাইরেও নয়। যার উদ্দেশ্য খারাপ, আসল নিকে প্লাস দিয়ে, মাল্টিতে এসে গালি দেয়, তাদের ব্যাপারে কিছু বলার নাই। একজন মানুষের পারসোনা ফুটে উঠে তার নিকে, লেখাতে। কাজেই ক্যাচালবাজ মাল্টিদের ব্যাপারে আর কিছু বলার থাকেনা। ইটস ভেরি মাচ সুপারফিশিয়াল, হোয়াট দে আর...


সানডে নাইট - প্রায় ই ব্লগারদের নানান বিষয়ে প্রতিবাদী হতে দেখা যায় । যেমন কয়েকদিন আগে আপনি সহ আরও কয়েকজন ব্লগার ব্লগে স্বাধীনতাবিরোধীদের নিক বাতিলের দাবীতে নিজেদের পোস্ট ড্রাফট করেছেন । প্রতিবাদ করার আরও পথ থাকতে পোস্ট ড্রাফট করলেন কেন ?


তন্ময় ফেরদৌস - প্রতিবাদের ভাষা হতে পারে অনেক রকম। আমি যখন ঢাকা কলেজে বা সরকারি মেডিকেলে পড়েছি, তখন সোশ্যাল ইস্যুগুলোতে রাস্তায় নামতাম। এখন এক্টিভিজম টা অনেকটাই সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে অনলাইনে। তারপরেও চেষ্টা করি, সব ধরনের ইস্যুকে ভার্চুয়াল জগত থেকে রিয়েলিটিতে নিয়ে আসার।

তবে ব্লগে যে ব্যাপারে প্রতিবাদ করেছি, সেই স্বাধীনতা বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার যায়গাটা খুব সেন্সেটিভ। এটা রিয়েলিটিতে হলে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করতাম। কিন্ত সমস্যা যখন ব্লগে, এইটা নিয়ে বাইরে প্রতিবাদ করে কোন লাভ ই হতো না। তাই মডারেশনের উপর অভিমান এবং নিজেদের খারাপ লাগার যায়গাটা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানোর জন্য এই মৌন প্রতিবাদ।

মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, যুদ্ধপরাধ, জাশি এইসব ব্যাপার নিয়েতো আমরা ব্লগার রা কম বলিনি। কিন্ত নিকগুলোর আচরনের চেয়ে অথরিটির ভূমিকা আমাদের বেশি কষ্ট দিয়েছে। তাই পোস্ট ড্রাফট করে সাধারন ব্লগার এবং অথরিটির দৃষ্টি আকর্ষন করার চেষ্টা করেছি। এখানে অন্য কোন মাল্টি দিয়ে আক্রমন করে বা গালাগালি করে ব্লগের পরিবেশ আরো খারাপ করতে চাইনি।

অথরিটি কিন্ত শেষ পর্যন্ত নজর দিয়েছে। অনেক গুলো নিক ব্যান হয়েছে। তারমানে মৌন হলেও এই প্রতিবাদ স্বার্থক।

সানডে নাইট - প্রতিবাদ সার্থক তবে পোস্ট ড্রাফট করে ময়দান ছেড়ে যাওয়াটা কি উচিত ছিল ? আপনারা পোস্ট ড্রাফট করলে তো তারা ফাঁকা মাঠে গোল মারতে পারবে । ময়দান ছেড়ে না গিয়ে নিয়মিত পোস্ট দেওয়াটা যৌক্তিক ছিল না ? এবার আপনারা পোস্ট ড্রাফট করে কিংবা ব্লগ কুইট করে সার্থক প্রতিবাদ করলেন , পরের বার এই ধরণের প্রতিবাদে স্বাধীনতা বিরোধীরা ফায়দা নিতেও তো পারে , তাই না ?


তন্ময় ফেরদৌস - বুঝতে ভুল করেছ।

প্রতিবাদ করে নিয়মিত অসঙ্খ্য পোস্ট এবং কমেন্ট দেয়া হয়েছে। ফিডব্যাক এবং রিপোর্ট করা হয়েছে। যেখানে আপত্তিকর কমেন্ট বা পোস্ট দেখা গেছে, সেখানেই প্রতিবাদ হয়েছে। এবং সেটা সব সাধারন ব্লগার রা মিলেই করেছে। লাভ হয়নিতো।

আর ময়দান ছেড়ে দিয়েছি কে বললো ? জাস্ট পোস্ট ড্রাফট করেছি, কমেন্ট করা তো বন্ধ করিনি। রিপোর্ট করাও বন্ধ করিনি। আর ফাকা মাঠে গোল দিবে কেন ? আই মীন মাঠ কেন ফাকা থাকবে ? বাকিরা ছিলো না ? তাহলে কি ধরে নিব মাঠের সিংহভাগ নিক ই স্বাধীনতা বিরোধীদের ? তা তো না, আমরা পোস্ট ড্রাফট করার পরো অনেকেই এইটা নিয়ে লিখেছে। জানা আপু নিজে কমেন্ট করে বলেছে ব্যাপারটা নজরে আনবে।

ব্যাপারটা একটু বুঝ, আমি একা ড্রাফট করলে হয়তো নজরে আসতো না। কিন্ত আরো অনেকেই করেছে। এবং সেটা একত্রে, একটা দাবীকে সামনে রেখে। সবাই যার যার মত পোস্ট দিলে সেই পোস্টে কিছু ক্যাচাল তৈরি হয়া ছাড়া আর কিছু হতো না। কন্টিনিউয়াসলি পোস্ট দিলেও সেটা দেয়া হতো যার যার মত করে, স্ক্যাটার্ড হতো । কিন্ত এক্ষেত্রে ব্যাপারটা স্ক্যাটার্ড হয়নি। নজরে পড়ার মত হয়েছে।

সবাই একই উদ্দেশ্য নিয়ে একটা দাবীকে সামনে রেখে একই ধরনের প্রতিবাদ করলে, সেই প্রতিবাদের শক্তি অনেক বেড়ে যায়। প্রতিবাদের ভাষা যাই হোক না কেন ।


সানডে নাইট - নিজের দুই বছরের ব্লগীয় জীবনকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন ?


তন্ময় ফেরদৌস - দুইটা বছরে প্রাপ্তির হিসাব টা আসলে অনেক বড়।

ব্লগ থেকে অনেক কিছু শিখেছি, অনেক কিছু জেনেছি, অনেক কিছু পেয়েছি । সবচাইতে গুরত্বপুর্ন যেই জিনিসটা শিখেছি, তা হলো অনেক গুলো মানুষ মিলে যখন একত্রে একটা কমিউনিটি তৈরি করে, একটা প্লাটফর্মে কাজ করে তখন তারা অনেক শক্তিশালি, অনেক ক্ষমতাবান। সেই ক্ষমতা দিয়ে সমাজ ও দেশ কে পরিবর্তন করে ফেলা যায়। একজন রুশান কে বাচিয়ে তোলার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা যায়, পরিমলের মত লোক কে আইনের হাতকড়া পরিয়ে দেয়া যায়। আড়িয়াল বিলের মত বড় প্রজেক্ট থামিয়ে দেয়া যায়, সরকার কে নাড়িয়ে দেয়া যায়। ব্লগের ক্ষমতাকে কোন ভাবেই ছোট ভাবা উচিত হবেনা। শুধু সেই সময়টার অপেক্ষা করছি, যখন ব্লগার্স কমিউনিটির মানুষগুলো একটা যুদ্ধপরাধীদের বিচার কিংবা একটা ইস্যুতে সবাই মিলে একটা দাবী তুলবে।




ব্লগ আমাকে মানুষের বৈচিত্রতা শিখিয়েছে, রাজনীতি ও ইতিহাস সচেতন করেছে। প্রতিনিয়ত আপডেট করেছে আমাকে। দূখ শুধু একটাই, অন্তর্জালের মত ইনফরমেশনের খনি থাকতেও অনেকেই প্রিজুডিস কিংবা ধর্মান্ধতায় প্রি প্রগ্রামড হয়ে বাকিদের চেষ্টাটাকে বাধাগ্রস্ত করছে।

তবে আমি আশাবাদী, ৭১ এও এমনটা হয়েছিলো, কতিপয় কিছু অমানুষের জন্য আমরা পিছিয়ে পড়েছিলাম। তবে আমরা স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি।
এখনো তাই হবে। কতিপয় সেই মানুষগুলার মুখে থুথু দিয়ে আমরা নিজেদের স্বাধীনতা রক্ষা করবো। আমার মনে হয় এই যুগের রেভ্যুলিউশন টা আসবে ব্লগ থেকে, নেট থেক, সোশাল মিডিয়া থেকে। আমি এর একটা পার্ট হতে পেরে গর্বিত বোধ করছি।

সানডে নাইট - এতো দিন ব্লগিং করে নিশ্চয় কিছু পছন্দের ব্লগার কিংবা বন্ধু পেয়েছেন , কয়েকজনের নাম কি বলবেন ?

তন্ময় ফেরদৌস - পছন্দের ব্লগারের চেয়ে পছন্দের ব্লগ বলতে আসলে বেশি সাচ্ছন্দ বোধ করি। কারন এমন অনেক ব্লগার আছে। যাদের মাত্র একটা লেখা পড়েই তাদের পছন্দের তালিকায় ঠাই দিয়ে দিয়েছি। আর বেশিরভাগ ব্লগারের সাথে আমার বাস্তবেও সুসম্পর্ক আছে, বন্ধুক্ত আছে। আমি সেই লাকি ব্লগারদের মাঝে একজন, যার রিয়েল লাইফ আর ভার্চুয়াল লাইফের বন্ধুদের সাথে কোন বিভাজন রেখা নাই। নবীন প্রবীন মিলিয়ে এইসব ব্লগারদের সবাই আমার অনেক প্রিয়। স্পেশালি কারো নাম না বলি।


সানডে নাইট - আপনার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কিছু বলুন ।?


তন্ময় ফেরদৌস - ব্যাক্তিগত জীবনে আমি খুব বিন্দাস টাইপের একটা মানুষ। সবকিছুই খুব ইনজয় করে করি। একটা এড ফার্মে আছি প্লানিং এন্ড স্ট্রাটেজিতে মেকার হিসেবে। আমার অনেক বন্ধুবান্ধব, এবং লাকিলি এরা প্রত্যেকেই খুবি ভালো, সাপোর্টিভ। এই মুহুর্তে দীর্ঘ প্রেমের পর সিঙ্গেল আছি। তবে মাঝে মাঝে টুকটাক ডেট করি। আমি সিরিয়াস ফান লাভিং, পার্টি লাভিং । যে কোন ক্রিয়েটিভ কাজ ই আমার হবির মধ্যে পড়ে।
ফ্যামিলির দিক দিয়ে আমি অনেক লাকি। আমার পরিবার টা আজব কিসেমের হলেও সবার মাঝে আন্তরিকতার কোন ঘাটতি নেই। আমরা দুই ভাই এক বোন। আমরা ভাই বোন বাবা মা মিলে ডিনার শেষে প্রতিদিন পান খাই। এই স্পেশাল পান টা বানান আমার বাবা। মানুষের আইডল থাকে মহামনিষীরা, আমার আইডল আমার বাবা। আর মা হচ্ছে আমার দেখা বেস্ট ম্যানেজার হু ক্যান ম্যানেজ এভরিথিং। বাবা আর্কিটেক্ট, মা শিক্ষক। ছোট ভাই বোনরাও বড়ই আদরের।
অনেক আগে আমি গাড়ি নিয়ে রাত দুইটা তিনটার দিকে বেরিয়ে যেতাম লং ড্রাইভে। সেই সময়টা আমার অনেক আনন্দের। রিলেশনশিপে থাকা ৫টি বছরে প্রতিটা মুহুর্ত মজা করেছি। এখন আমি অনেক স্যাটেল মাইন্ডের। রাত করে বাড়ি ফিরিনা, গাড়ি নিয়ে ড্রাইভে যাওয়া টা তো পরের কথা। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই দুই ধরনের লাইফ ই আমি দুই রকম ভাবে ইনজয় করি। তার মানে আমি আসলে অস্থির জীবন থেকে স্থির হয়েছি। আই এম গ্রোন আপস নাও। এন্ড আই ডোন্ট হ্যাভ এনি রিগ্রেশন।
সামনে অনেক প্ল্যান আছে, সেগুলোকে বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি এখন। আশা করি জীবনে সফল হবো। :)


সানডে নাইট - আপনার জীবন সুখী হোন এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সফল হোন এই প্রত্যাশা করি ।
অনেক ধন্যবাদ আমাদের সময় দেওয়া জন্য । আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা ।


তন্ময় ফেরদৌস - নিজেকে খুব পপুলার সেলিব্রেটি টাইপের মনে হচ্ছে। এই অন্যরকম অনুভুতির সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ সৌরভ।
তোমার সার্বিক মঙ্গল কামনা করি। সকল পাঠকদের ও ধন্যবাদ জানাই.
--------------------------------------------------------------------


সানডে নাইট ব্লগারস আড্ডা’র প্রথমভাগের কিছু পোস্ট ।

ব্লগারস আড্ডা - নোমান নমি

ব্লগারস আড্ডা - রাজসোহান

ব্লগারস আড্ডা - গ্লিওসিন অথবা গ্লসিয়ার

ব্লগারস আড্ডা - বেঈমান আমি

ব্লগারস আড্ডা - দূর্বা জাহান

ব্লগারস আড্ডা - শায়মা

ব্লগারস আড্ডা - নিশাচর ভবঘুরে

ব্লগারস আড্ডা - হাসান মাহবুব
ব্লগারস আড্ডা - চেয়ারম্যান ০০৭
৪৩টি মন্তব্য ৪০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন কী পোড়ানো যায়!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেঞ্চুরী’তম

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


লাকী দার ৫০তম জন্মদিনের লাল গোপালের শুভেচ্ছা

দক্ষিণা জানালাটা খুলে গেছে আজ
৫০তম বছর উকি ঝুকি, যাকে বলে
হাফ সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি;
রোজ বট ছায়া তলে বসে থাকতাম
আর ভিন্ন বাতাসের গন্ধ
নাকের এক স্বাদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোথাও ছিলো না কেউ ....

লিখেছেন আহমেদ জী এস, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৯




কখনো কোথাও ছিলো না কেউ
না ছিলো উত্তরে, না দক্ষিনে
শুধু তুমি নক্ষত্র হয়ে ছিলে উর্দ্ধাকাশে।

আকাশে আর কোন নক্ষত্র ছিলো না
খাল-বিল-পুকুরে আকাশের ছবি ছিলো না
বাতাসে কারো গন্ধ ছিলোনা
ছিলোনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×