যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকরের ঘোষণা দেয়া স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু এবং আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, রায় বাস্তবায়নে বাধা আসতে পারে এমন কোনো বক্তব্য দায়িত্বশীলদের দেয়া উচিত হয়নি।
Published : 11 Dec 2013, 03:24 PM
বুধবার ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১৪ দলের এক বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
নামিম বলেন, “এই মুহূর্তে দায়িত্বশীল পদে থেকে এমন কোনো বক্তব্য দেয়া উচিত নয় যাতে রায় বাস্তবায়নে বাধা আসতে পারে। মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থেকে গতকাল (মঙ্গলবার) দুইজন যা বলেছেন তা ঠিক হয়নি। আশা করি সতর্ক হবেন।”
মঙ্গলবার আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামের বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু বলেন, মঙ্গলবার রাতেই কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হবে।
ওই সংবাদ সম্মেলনে আইন প্রতিমন্ত্রী জানান, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমার আবেদন করার কথা কাদের মোল্লাকে জানানো হলেও তিনি তা করতে রাজি হননি।
কারা কর্তৃপক্ষের সব প্রস্তুতি শেষ করার মধ্যেই মঙ্গলবার রাতে চেম্বার জজের আদেশে কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় স্থগিত করা হয়। স্থগিতাদেশ এবং রায় পুনর্বিবেচনার ওপর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে বুধবার শুনানি হয়। বৃহস্পতিবার পর্য়ন্ত এই শুনানি মুলতবি করেছে আদালত।
১৪ দলের বৈঠক শেষে জোটের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেন, “আদালতের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। রায় কার্যকর হবে।”
সংবিধানের বাইরে সমাধান নয়
এদিকে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ-তারানকোর ‘মধ্যস্থতায়’ চলমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংলাপকে স্বাগত জানালেও ১৪ দল বলেছে, সংবিধানের বাইরে কোনো সমাধান তারা মেনে নেবে না। নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেকে শেখ হাসিনাকেই চায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন এই জোট।
বুধবার বৈঠক শেষে ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেন, “সংকটের সমাধান হোক এটা আমরা চাই। কিন্তু সংবিধানের বাইরে কোনো সমাধান ১৪ দল মেনে নেবে না। নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান থাকবেন শেখ হাসিনা।”
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, “আমরা আলোচনায় ডাকলাম তখন আসলেন না। বিদেশিরা যখন দূতিয়ালি করছে তখন বসলেন। এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়াকে জামায়াতের সঙ্গ ‘ত্যাগ’ করার আহ্বানও জানান নাসিম।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শীর্ষ নেতারা মঙ্গলবার দুপুরে বৈঠক করে সংকট নিরসনে আলোচনা চালিয়ে যেতে সম্মত হন।
নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে চার দিন ধরে দফায় দফায় বৈঠকের পর মঙ্গলবার বিকালে এই ঐকমত্যের কথা জানান ফার্নান্দেজ-তারানকো।
গণআজাদী লীগের সভাপতি আব্দুস সামাদের সভাপতিত্বে ১৪ দলের বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিএম মোজাম্মেল হক, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মল্লিক, জাসদ নেত্রী শিরীন আক্তার, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ওয়াজেদুল ইসলাম খান প্রমুখ।